somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

একটি অরাজনৈতিক গল্প.....

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক অন্ধ ভিখারি ভিক্ষা করতে করতে একদিন রাজপ্রাসাদে
ঢুকে পড়লো। রাজার মনে দয়া এলো।
রাজামশাই মন্ত্রী-কে ডেকে বললেন-
"'জানো হে, এই ভিক্ষুক জন্মান্ধ নন, একে চিকিৎসা করানো হোক। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, চিকিৎসা করানো হলে এর দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসবে।"

রাজ-বৈদ্য কে ডাকা হলো।
রাজ-বৈদ্য এসে অন্ধের চোখ পরীক্ষা করে বললেন-
"মহারাজ, আপনার অনুমান সত্যি, ইনি দৃষ্টি শক্তি ফিরে পাবেন, কিন্তু চিকিৎসা সময় সাপেক্ষ আর ব্যায়বহুল।

রাজামশাই বললেন- কোনো সমস্যা হবে না, বৈদ্য-রাজ, আপনি চিকিৎসা শুরু করুন।

বৈদ্য-রাজ চলে গেলেন, আগামী কাল থেকেই চিকিৎসা শুরু করা হবে। অন্ধকে রাজপ্রাসাদের কোনে, একটা ছোট্ট কুটিরে থাকার ব্যাবস্থা করে দেওয়া হলো।

রাতের খাবার খেতে খেতে মন্ত্রী বললেন-
"মহারাজ, একটা কথা বলার ছিলো।"
-"নির্ভয়ে বলুন মন্ত্রীমশাই।"
রাজামশাই অভয় দিয়ে বললেন।

মন্ত্রী বললেন-
"রাজামশাই, ভিক্ষুকের চেহারা-টা কিন্তু দশাসই, যদি দৃষ্টি-শক্তি ফিরে পায়, তাহলে- আপনার দূর্নীতি, স্বজনপোষণ, আপনার আয়েশ-আরাম, এসব দেখে ফেলবে, প্রতিবাদ করবে....
শুধুশুধু শত্রু বাড়াতে যাবেন কেন?
বরং একে অন্ধ করেই রেখে দিন, দুবেলা দুমুঠো খেতে দিন, সারাদিন ওকে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে আপনার মহত্ত্ব প্রচার করতে দিন। আপনার গুনগান গাইতে থাকুক। প্রয়োজনে- দেশে যতো অন্ধ আছে, সবাইকে এক জায়গায় করা হোক। একটা বড়ো হলঘরে সকলের থাকার ব্যাবস্থা করুন। সকালবেলা ভরপেট খেয়ে বেরিয়ে যাক, সারাদিন আপনার গুনকীর্তন করে, সন্ধাবেলা ফিরে এসে, ভরপেট খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ুক। আবার সকালবেলা.....

রাজামশাই মাথা নেড়ে, বললেন- "আইডিয়া-টা মন্দ নয় হে, তোমার।"
মন্ত্রী অট্টহাসি হেসে বললেন- "মহারাজ, আমি যোগ্য রাজার উপযুক্ত মন্ত্রী, সবই আপনার করুনা।"

সকল অন্ধ এক জায়গায় হয়ে, প্রতিদিন এক এক এলাকায় গিয়ে, রাজার মহিমা, গরিমা, প্রচারের কাজে লেগে গেলো। বিনিময়ে দুবেলা দুমুঠো অন্ন। প্রজাদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ, মান-অভিমান, জ্বালা-যন্ত্রণা, সবকিছু অন্ধদের গুনকীর্তন -এ চাপা পড়ে গেলো।

অন্ধ-গুলো বুঝতেই পারলো না, রাজার ছল-কপট,ধূর্ত রাজার
কৌশল। দুবেলা দুমুঠো খেতে পেয়েই তারা সন্তূষ্ট।

অথচ--
দৃষ্টি শক্তি ফিরে পেলে, তারা নিজের শরীরকে কাজে লাগিয়ে বহু রোজগার করতে পারতো, সুন্দর পৃথিবীর অপরুপ সৌন্দর্য
চাক্ষুষ দেখতে পেতো।

কিন্তু, নির্বোধ তারা, সামান্য দান-খয়রাত, ভিক্ষাশ্রী -ভোজনশ্রী
নিয়েই মেতে রইলো। সমানে চলতে থাকলো- রাজ-বন্দনা, রাজার গুনকীর্তন।

বর্তমানে -
দেশে-বিদেশে এভাবেই চলছে রাজকার্যক্রম, দেশ ও জনসেবা।
ফোকটে কিছু পাইয়ে দিচ্ছে, অথবা ভবিষ্যতে কিছু পাওয়ার লোভ দেখিয়ে চলেছে।
কিন্তু,
চোখের জ্যোতি , অর্থাৎ শিক্ষা এবং রোজগারের দিশা দেখাচ্ছে না। সবাই সঠিক শিক্ষা পেলে এবং
সবার হাতে কাজ থাকলে, রাজার সমালোচক উত্তরোত্তর
বৃদ্ধি পাবে, আর সেটা রাজার জন্য বিশেষ সুখকর হবে না।

(একটি অরাজনৈতিক গল্প)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:১১
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মায়ের শূন্যতা

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১৪ ই জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৯



যেদিন ভোরবেলা আব্বা মারা গেলেন, মা আমাদের চার ভাইকে মুরগির ছানার মতো বুকে জড়িয়ে হাউমাউ করে কাঁদছিলেন। তার কান্নায় কেবল অসহায়ত্ব নয়, মিশে ছিল এক বুক গভীর শূন্যতা। বারবার বলছিলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।।এক রাতেই বদলে গেল হাসিনার ইতিহাসের গতি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০১



সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত সংবাদ সম্মেলন নিয়ে সারাদিন ধরে অপেক্ষায় ছিল গোটা দেশ। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজের আশা ছিল, আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে হয়তো কোনো ইতিবাচক বার্তা আসবে। কিন্তু রাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবার তোরা মানুষ হ

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৪ ই জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৬


আবু সাইদের আত্মত্যাগ কি শুধু বৈষম্যহীন এক সমাজের স্বপ্ন দেখিয়েছিল, নাকি তা এখন নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টির এক ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে? জুলাই অভ্যুত্থানের সেই রক্তক্ষয়ী দিনগুলোর এক বছর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নেতৃত্ব না ‘পূজার আসন’? বিএনপির ভেতরেই কি এক নতুন ‘ফেরাউন’ উঠে আসছে?

লিখেছেন স্পর্শ, ১৫ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৩:১৫






নেতৃত্ব না ‘পূজার আসন’? বিএনপির ভেতরেই কি এক নতুন ‘ফেরাউন’ উঠে আসছে?

সম্প্রতি কওমি ভিশনের একটি পোস্টার সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সেখানে উঠে এসেছে বিএনপি-সংশ্লিষ্ট কিছু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি ভিক্ষা দিচ্ছেন মানে আপনি জাতিকে পঙ্গু করছেন

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১:০৫


ভিক্ষা হলো একটি সংস্কৃত শব্দ এর অর্থ হলো চাওয়া বা প্রার্থনা করা যা ভারতীয় ধর্ম যেমন জৈনধর্ম, বৌদ্ধধর্ম ও হিন্দুধর্মে ভিক্ষাকরা বা চাওয়ার কাজকে বোঝাতে ব্যবহৃত হতো। প্রাচীনকালে ভিক্ষা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×