সাবধান.....
আগে রাজার ছেলে রাজনীতি করে ফকির হয়ে যেতো। আর এখন ফকিরের ছেলে রাজনীতি করে বাদশাহ্ হয়ে যাচ্ছে।
আগে রাজনীতিবিদগণ বিভিন্ন পেশা থেকে আসতেন। নিজেদের পেশার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আর রাজনীতি ছিল তাদের কাছে সমাজ সেবা বা দেশ সেবার অংশ।
রাজনীতি কখনোই পেশা হতে পারে না। কিন্তু এখন রাজনীতি পেশায় রূপান্তরিত হয়েছে। রাজনীতির মাধ্যমে সহজ পথে অর্থ-বিত্ত অর্জনের সুযোগ পাওয়া যায়। রাজনীতি থেকে যদি অর্থ-বিত্ত অর্জনের পথ বন্ধ করা যেতো তাহলে অনেকেই রাজনীতি ত্যাগ করতেন। কারণ তাদের সংসার চালানোর জন্য অন্য কোনো পেশায় যেতে হতো। সেই অচলায়তন ভেংগে দিয়েছে ছাত্রজনতার ৩৬ জুলাই ২০২৪ বিপ্লব। ফ্যাসিস্টকূল শিরোমনি শেখ হাসিনা ছাড়াও গোটা শেখ পরিবার পালিয়ে গেলেও তাদের সহযোগী, সুবিধাভোগী দানবরা সবাই যারযার অবস্থানে বহাল তবিয়তেই আছে।
মোদ্দা কথা, প্রশাসনে আওয়ামী সন্ত্রাসী লীগের পা' চাটা অনুগামী, বিভিন্ন বাহিনীতে উর্ধতন পদে আসীন লোকগুলো মহা দাপটের সাথে স্ব স্ব কর্মস্থলে বহাল থেকে ছাত্র জনতার বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিপ্লবকে নস্যাৎ করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে এবং প্রত্যেক ক্ষেত্রে সফল হচ্ছে। তাদের সাথে যোগ দিয়েছে গত ১৬ বছরে রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থাকা বড় রাজনৈতিক দলের রাষ্ট্র ক্ষমতালোভী উর্ধতন নেতারা।
উপদেষ্টা পরিষদে ছাত্র জনতার প্রতিনিধি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, মাহফুজ আলম, নাহিদ ইসলাম এখন প্রায় কোনঠাসা। এরা প্রশাসনে বাংলাদেশপন্থী কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সেক্টরে পদায়নে বাধা পাচ্ছেন। এতেই ক্ষান্ত হচ্ছেনা এই অপশক্তি। তারা সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করছে ছাত্র জনতার বিপ্লবের সমন্বয়কদের মধ্যে বিভ্রান্তি এনে বিভেদ সৃষ্টি করতে। দেশ পরিচালনার সবগুলো সেক্টরে আওয়ামী অপশক্তির অনুসারীদের প্রাধান্য এখন স্পষ্ট। তাদেরকে প্রশ্রয় দিচ্ছে প্রথম আলো সম্পাদকের নেতৃত্বে এদেশের ভারতীয় এজেন্টরা।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস সচেতন বা অবচেতন ভাবে আওয়ামী প্রশাসনের উপরই নির্ভর করছেন। তিনি ছাত্র জনতার মহা অভ্যুত্থানের মহানায়ক সমন্বয়কদেরকে অনেকটাই এড়িয়ে চলছেন তা ক্রমেই স্পষ্ট দৃশ্যমান হচ্ছে। আওয়ামী সন্ত্রাসী লীগের নিয়োগকৃত প্রশাসনের অপতৎপরতায় ছাত্র জনতার চরম আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত মুক্তি দ্রুত ব্যার্থতায় পর্যবাসিত হতে যাচ্ছে। পতিত, পরাজিত পলাতক রক্তপিপাসু আওয়ামী সন্ত্রাসী লীগের সাথে যুক্ত হচ্ছে স্বার্থান্বেষী কিছু মিডিয়া। লক্ষ হাজার কোটি টাকার আওয়ামী বাজেট ব্যবহার করে এদের সম্মিলিত শক্তি নিয়োগ করছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে দেশপ্রেমিক তরুণ নেতৃত্বের উত্থানকে ঠেকিয়ে দিতে। এদের অপতৎপরতা এখন আর তেমন একটা অপ্রচ্ছন্ন নেই।
ফ্যাসিস্ট হাসিনার এবং তার দোসরদের কোনো ভাবেই ছাড় দেওয়া চলবেন। বলতে দ্বিধা নেই, আওয়ামী লীগ সম্পর্কে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য বা মনোভাব অত্যন্ত বেদনাদায়ক হলে(আন্তর্জাতিক শক্তিও চায়না আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক)। তাদেরকে যেকোনো ভাবেই স্পেস দেওয়া হবে- জুলাই শহীদদের সাথে সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতা। এটা হবে বিএনপির অসংখ্য শহীদ কর্মীর সাথে সবচেয়ে বড় গাদ্দারি। গত ১৫ বছরে বিএনপির যত কর্মী আওয়ামী লীগের হাতে নিহত হয়েছে, তাদের সাথে গাদ্দারি। স্পষ্টত বোঝায় যে, বিএনপি সবচেয়ে বড় দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে সবচেয়ে বেশি সময় বা সুযোগ দিল শ্বাস নেওয়ার জন্য! আমি জানিন্স, এই বিষয়ে যুবদল, ছাত্রদল সহ বিএনপির অন্যসব সহযোগী সংগঠনের মতামত কী? তবে এটা জানি, নেতাদের মতামতের সাথে কর্মীদের মতামত মেলে না। দয়া করে আমাদের রাজনীতি শেখাতে আসবেন না, আমাদের মেরুদণ্ডহীন গণতন্ত্র শেখাতে আসবেন না। দয়া করে এটা বলবেন না যে সরকার চাইলে এটা করতে পারতো! সরকারের ব্যর্থতার দায় সরকারের ঘাড়েই থাকুক, নিজেদের অক্ষমতা লুকাতে অন্যের উপর দায় চাপাবেন না।
আমাদের মনে রাখতে হবে- একটি জাতির গঠনে তরুণের উদ্যম, যুবকের শক্তি ও সাহস, প্রৌঢ়ের প্রজ্ঞা, বৃদ্ধ'র বিশ্রাম যুক্ত না হলে সেই জাতির গঠন পূর্ণতা পায় না। তরুণ, যুবক, প্রৌঢ়, বৃদ্ধ'র মিলিত আচারধর্ম- একটি পূর্ণাঙ্গ জাতির স্বরূপ। এদের সম্মিলিত প্রয়াসেই দেশ ও দেশের মানুষ নিরাপদ থাকবে।
অতএব, সাবধান দেশবাসী, সাবধান ছাত্র জনতার সমন্বয়করা, বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রাম গঞ্জে, শহরে বন্দরে, পাড়া মহল্লায় এখনই নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করতেই হবে। সামান্য শীথিলতা দেশ জাতির জন্য মহাবিপদ ডেকে আনবে।
বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।
বিপ্লব অপশক্তিমুক্ত হোক।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



