বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হতে হবে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি। হতে হবে সকল প্রেরণার উৎস। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের এই দর্শনের নিহিত রয়েছে আত্মসামাজিক, আর্থসামাজিক রাজনৈতিক কর্মসূচি, যা দেশের ঐক্যবদ্ধ জনগণকে সমকালীন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির সময় উপযোগী শান্তিপূর্ণ নিরব উন্নয়নের বিপ্লবের কর্মসূচি বাস্তবায়নে উদ্বুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সুসংবদ্ধ করবে। জাতিকে পৌঁছে দিবে সুনিশ্চিতভাবে অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির দ্বারপ্রান্তে এবং বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে মর্যাদা ও গুরুত্বের আসনে সুপ্রতিষ্ঠিত করবে।
আমাদের বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের মূলে রয়েছে শোষণ এবং শোষক মুক্ত সমাজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন। তাকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে পরিকল্পিত পদ্ধতিতে, জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। শোষণমুক্ত সমাজ বলতে মূলত বোঝায় বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য খাদ্য বস্ত্র ও পরিবার পরিকল্পনার চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা। মূলত এ বিষয়টির সাথে জড়িয়ে আছে আনুষাঙ্গিক অনেক বিষয়। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হচ্ছে শোষণমুক্ত সমাজ তা অত্যন্ত বাস্তব প্রগতিশীল একটি সমাজব্যবস্থা যাতে থাকবে সমতা অপেক্ষতা ন্যায় বিচার।
সাতটি মৌলিক বিবেচ্য বিষয়ঃ
(১) বাংলাদেশ ভূমি অর্থাৎ আন্তর্জাতিক সীমানার মধ্যবর্তী আমাদের ভৌগলিক রাজনৈতিক এলাকা।
(২) ধর্ম গোত্র নির্বিশেষে দেশের জনগণ।
(৩) আমাদের মাতৃভাষা।
(৪) আমাদের জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা উদ্দীপনা ও আন্তর্জাতিকতার কারক ও বাহক নিজস্ব কৃষ্টি ও সংস্কৃতি।
(৫) ২০০ বছর উপনিবেশ থাকার প্রেক্ষাপটে বিশেষ অর্থনৈতিক বিবেচনায় বৈপ্লবিক দিক।
(৬) আমাদের ধর্ম প্রতিটি নারী ও পুরুষের অবাধে নিজ নিজ ধর্মীয় অনুশাসন ও রীতিনীতি পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা।
(৭) ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ যার মধ্য দিয়ে আমাদের বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের দর্শন বাস্তব ও চূড়ান্ত রুপ লাভ করেছে।
বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বাংলাদেশের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থানের কথা উল্লেখ করা যায়। উত্তরে হিমালয় দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের মাঝখানে সংকীর্ণ পরিসরে এই দেশের পূর্বে- এশিয়া, পশ্চিমে দক্ষিণ এশিয়া। বাংলাদেশ এ দুটি অঞ্চল বা দুটি উপমহাদেশের সেতুবন্ধন সরুপ। এ কারণে আঞ্চলিকভাবে এবং সার্বিক বিশ্ব পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের বিশেষ কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে। এ কারণেই সুদূর অতীত থেক এই গুরুত্বপূর্ণ সেতুবন্ধনের দখল কর্তৃত্ব লাভের জন্য পূর্ব ও পশ্চিম থেকে এদেশ বারবার আক্রান্ত হয়েছে। শুধু তাই নয়, এদেশের জমির উর্বরাশক্তি এবং প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য শতবর্ষ ধরে বারবার আক্রমণকারীদের এদেশ আক্রমণে করতে প্রলুব্ধ করেছে। এ কারণে শতাব্দীর পর শতাব্দী শতাব্দী ধরে উপনিবেশিক শাসন ও পরিপূর্ণ শিকার হয়েছি এই মহান এর জনগণ দুর্বল হয়ে থাকলে ভবিষ্যতেও দুর্বল হয়ে থাকা থাকলে ভবিষ্যতেও সাম্রাজ্যবাদ সম্প্রসারণবাদী নাব্য উপনিবেশবাদ সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদের শিকার হয়ে পড়তে পারে। সেজন্য এদেশের জনগণকে নিজেদের সত্তা রক্ষা এবং দেশের প্রতিটি ইঞ্চি জমি রক্ষার ব্যবস্থা শিখতে হবে।
(বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হিজবুল বাহার জাহাজে দেওয়া বক্তব্য থেকে...)
আজ তাঁর শাহাদাৎ বার্ষিকীতে আমরা কেবল একজন শহীদকে স্মরণ করছি না; আমরা স্মরণ করছি একটা আদর্শকে, একটা নির্ভীকতা-গাঁথাকে, একটা প্রশ্নহীন কর্তব্যবোধকে।
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৬