”আপনি কখনই ফার্স্ট ইম্প্রেশন তৈরি করার দ্বিতীয় সুযোগ পাবেন না।"
এই জনপ্রিয় প্রবাদটি একটি গভীর সত্য ধারণ করে যা আমরা প্রায়শই অন্যদের সাথে আমাদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে উপেক্ষা করি অথবা যথেষ্ট মনোযোগী হই না।
ফার্স্ট ইম্প্রেশন বস্তুটি কি, এটা কিভাবে ঘটে? এটা হলো এমন একটি বিষয় যখন কারো দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এবং নিজের সম্পর্কে ইমেজ তৈরী করতে আপনি মাত্র কয়েক সেকেন্ড সময় পাবেন । ফার্স্ট ইম্প্রেশন তৈরীর সুযোগের এই কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী সংক্ষিপ্ত উইন্ডোতে আপনাকে অবশ্যই একটি ইতিবাচক, মনে রাখার মত কিছু ছবি তৈরি করতে হবে ।
চাকরির ইন্টারভিউ, নেটওয়ার্কিং ইভেন্ট বা এমনকি বিয়ে-শাদী ইত্যাদী সামাজিক কাজে প্রথমবারের মতো কারও সাথে দেখা হলে, আমরা নিজের সম্পর্কে যে প্রাথমিক ভাবমূর্তি তৈরি করি সেটাই সাধারনত দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে । সূতরাং, এ’সব ক্ষেত্রে সফল হতে হলে অতি অবশ্যি আপনাকে প্রথমেই জয়ী হওয়ার কৌশল নিয়ে এগুতে হবে ।
শেষ বার আপনি নতুন কোন পরিচিত ব্যক্তি সম্পর্কে চিন্তা করুন. আপনার মস্তিষ্ক দ্রুত সেই ব্যক্তির সম্পর্কে তার চেহারা, শারীরিক ভাষা এবং তার কথা বলার স্টাইলের উপর ভিত্তি করে একটি প্রোটোটাইপ আপনার কাছে তুলে ধরবে। এই যে ছোট ছোট স্ন্যাপশট, এগুলো আমাদের সহজাত চিন্তা এবং অবচেতন মনের কাজ, আমাদের বিবর্তনীয় প্রোগ্রামিংয়ের একটি অংশ।
সুতরাং, কেন প্রথম দেখাতেই এটা করতে হবে? কারন হল, প্রথম এবং সর্বাগ্রে, এটি সমস্ত ভবিষ্যতের পারস্পরিক সম্পর্কের জন্য সুর সেট করে। যদি আমরা প্রথম দেখায় একটি ভাল ইমেজ গড়তে ব্যর্থ হই, তবে পরবর্তীতে কারও ধারনা পাল্টানো আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। ধরুন, আমরা একটি চাকরী সুরক্ষিত করার চেষ্টা করছি, নেতা বা প্রভাবশালী কারো আস্থা অর্জন করতে চাই, বা কেবল একটি সুন্দর বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক গড়তে চাই, তা’হলে আমাদেরকে অবশ্যই একটি ভাল ফার্স্ট ইম্প্রেশন দিয়ে শুরু করতে হবে ।
প্রভাবিত করার এই মূল্যবান সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চাইলে এ’বিষয়ে আপনাকে পূর্ন প্রস্তুতি নিতে হবে । তো, এই প্রস্তুতিগুলো কি কি হতে পারে দেখা যাক-
পয়েন্ট-১: স্পষ্টতই, চেহারা-বেশভূষা একটি ভূমিকা পালন করে। যেমন অনুষ্ঠান তেমন পোশাক পরা আপনার কমন সেন্স এবং সামাজিক আদব-কায়দার গুন প্রকাশ করবে ।
পয়েন্ট-২: শরীরের ভাষাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। অব্যক্ত ইঙ্গিত, যেমন অংগ-ভঙ্গি, চোখের চাউনি এবং মুখের অভিব্যক্তি, কথা-বার্তায় আত্মবিশ্বাস, আগ্রহ এবং আন্তরিকতা ব্যাপক অবদান রাখতে পারে। একটি খোলামন এবং সাগ্রহ অবস্থান বজায় রাখা, আই-কন্ট্যাক্ট এবং প্রকৃত উষ্ণ অংশগ্রহন হচ্ছে এর মূল ফর্মূলা ।
পয়েন্ট-৩: সবশেষে, আমরা কথাবার্তায় যে শব্দগুলি বেছে নিই এবং যেভাবে নিজেদেরকে প্রকাশ করি সেটা উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখে। মনে রাখবেন, স্পষ্টভাবে কথা বলা, উপযুক্ত ভাষা ব্যবহার করা, এবং সক্রিয়ভাবে অন্যের কথা শোনা, অন্য ব্যক্তির প্রতি আপনার মনোযোগ এবং সম্মান প্রকাশ করে, যা প্রথম ইমেজের জন্য ভীষনরকম দরকার ।
ক্যারিয়ারের জন্য প্রথম ইম্প্রেশনের গুরুত্ব স্বীকার করে, শারীরিক ও মানসিকভাবে নিজেদের প্রস্তুত করে, এবং মার্জিত অবয়ব ও বেশ-ভুষা, শারীরিক ভাষা এবং স্বত:স্ফুর্ত যোগাযোগের মাধ্যমে আমাদের নিজের সেরাটা জনগনের সামনে হাজির করতে পারি; আর, এর মাধ্যমে আমরা দীর্ঘস্থায়ী এবং ইতিবাচক ইমপ্রেশন তৈরি করতে পারি যা আমাদের জীবনের গতিপথকে সাফল্যের পথে নিয়ে যেতে পারে। সুতরাং, আসুন আমরা প্রতিটি প্রথম সাক্ষাতকে আমাদের সত্যিকারের সম্ভাবনা প্রদর্শন করার এবং একটি দীর্ঘস্থায়ী, ইতিবাচক ছাপ রেখে যাওয়ার সুযোগ হিসাবে ব্যবহার করি।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৫৯