somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

লক্ষণ ভান্ডারী
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন

শারদ অর্ঘ-১৪২৫ (শারদীয়া সংখ্যা)

১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শারদ অর্ঘ-১৪২৫
(শারদীয়া সংখ্যা)


কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারীর
এক গুচ্ছ কবিতা সমগ্র


ভূমিকা
শরতের নীল আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনা। নদীতীরে দুইধারে সাদা কাশের ফুল শোভা দেয়। পূজো এসে গেল। এসে গেল খুশির রঙে মন রাঙিয়ে নেবার দিন। শারদীয়া দুর্গাপূজা জাতীয় জীবনে সর্বাঙ্গীন। তাই এই উত্সবে আমরা সাজিয়েছি শারদ-অর্ঘ-১৪২৫। তাতে আছে কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারীর এক গুচ্ছ কবিতা সমগ্র। আমার এই কবিতাগুলি পাঠক ও কবিমনের কতটা কাব্যপিপাসা মেটাবে তা সঠিক ভাবে বলতে পারি না। তবে চেষ্টা করেছি সেগুলিকে ছন্দে ও ভাষায় হৃদয়গ্রাহী করে তুলতে।

এই কবিতাগুচ্ছ রচনায় যাদের কাছে অসীম ও অনন্ত প্রেরণা পেয়েছি তাঁরা হলেন-
বাংলা কবিতা আসরের মহামান্য এডমিন পল্লব আশফাক মহোদয়,
আমার পথ প্রদর্শক শ্রদ্ধেয় বরেণ্য কবি কবির হুমায়ুন (কাব্য প্রভাকর) মহাশয়,
আমার ছন্দ ও জ্ঞানে ও কাব্যিকতায় যাঁর কাছে আমি চির ঋণী, সেই শ্রদ্ধেয় কবি অজিত কর (ছন্দের যাদুকর)মহাশয়,
আমার কবিতাকে ইউ টিউবে আবৃত্তি প্রকাশ করে জনসমক্ষে তুলে ধরেছেন
সেই সর্ববরেন্য কবি ও আবৃত্তিকার সৌমেন ব্যানার্জী মহাশয়
এবং তত্সহ-
1. কবি সঞ্জয় কুমার কর্মকার ( কবি সম্রাট)
2. কবি পারমিতা ব্যানার্জী (কবি সম্রাজ্ঞী)
3. কবি খলিলুর রহমান মহাশয় ও কবি সুমিত্র দত্তরায় মহাশয়
4. কবি মহম্মদ মনিরুজ্জামান মহাশয় ও কবি গোপাল চন্দ্র সরকার মহাশয়
5. কবি সমীর প্রামাণিক মহাশয়
6. কবি সুজিত বিশ্বাস মহাশয়
7. কবি দীপ্তি রায় মহাশয়া
8. কবি ও আবৃত্তিকার রিঙ্কু বিশ্বাস মহাশয়া
9. নবাগত কবিদ্বয়: কবি মূলচাঁদ মাহাতো ও কবি সানারুল মোমিন মহাশয়
10. কবি মিমি ও কবি রুণা লায়লা মহাশয়া


তাঁদের সকলকেই আমি বাংলা কবিতার আসরের পক্ষ থেকে শারদ সম্মান-১৪২৫ কৃতী-কবিত্ব স্মারক উপাধিতে ভূষিত করার অভিমত ব্যক্ত করি এবং সর্বসমক্ষে কৃতজ্ঞচিত্তে তাঁদের প্রণিপাত করি।

বাংলা কবিতার আসরের জয় হোক, বাঙালির জয় হোক, বাংলার জয় হোক।
বাংলার কবিগণের জয় হোক। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। কবিতা পাঠ করুন, কবিতা লিখুন।
আর চোখ রাখুন, এবারের শারদ অর্ঘ-১৪২৫ আমার এক গুচ্ছ কবিতা সমগ্র।
জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!

বিনীত কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
নতুন দিল্লী-110028
…………………………….

সূচীপত্র

1. পূজোর গান
2. শিউলি ঝরানো শারদ প্রভাতে
3. মহাষষ্ঠী দুর্গাপূজা
4. মহা সপ্তমী দুর্গাপূজা
5. মহাঅষ্টমী দুর্গাপূজা
6. মহানবমী দুর্গাপূজা
7. মহা দশমী দুর্গাপূজা
8. অভিশপ্ত বিজয়াদশমী
9. গাঁয়ের কবিতা
10. ভোরের আলো



পূজোর গান
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

পূজো পূজো আমেজ নিয়ে
শরত্ এসেছে,
কাশ ফুলের পরাগ মেঘে
বাতাস মেতেছে।
এলো এলো পূজো এলো ভাই
……………………..আয় রে ভাই
………….আয়রে সবাই।

মা দূর্গা আসছেন ধরায়
একটি বছর পরে,
লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক,
গণেশ সঙ্গে করে।

আয়রে সবাই মায়ের তরে বরণডালা সাজাই।
এলো এলো পূজো এলো ভাই
……………………..আয় রে ভাই
………….আয়রে সবাই।

পূজো পূজো আমেজ নিয়ে
শরত্ এসেছে,
কাশ ফুলের পরাগ মেঘে
বাতাস মেতেছে।
এলো এলো পূজো এলো ভাই
……………………..আয় রে ভাই
………….আয়রে সবাই।

সোনালি রোদ এঁকে বেঁকে
আঙিনাতে ঝরে,
দু’হাত তুলে নাচছে খুকু
নতুন ফ্রক পরে।

এবার পূজোয় মেলায় তার
রঙিন চুড়ি চাই।
এলো এলো পূজো এলো ভাই
……………………..আয় রে ভাই
………….আয়রে সবাই।

পূজো পূজো আমেজ নিয়ে
শরত্ এসেছে,
কাশ ফুলের পরাগ মেঘে
বাতাস মেতেছে।
এলো এলো পূজো এলো ভাই
……………………..আয় রে ভাই
………….আয়রে সবাই।

বকুল টগর শিউলি ফুলে
বাগান ভরেছে,
শারদ আকাশে সাদামেঘ
পাল তুলেছে।
মাধবী মালতী, টগর যুঁথী
ফুটেছে আঙিনায়।
এলো এলো পূজো এলো ভাই
……………………..আয় রে ভাই
………….আয়রে সবাই।

পূজো পূজো আমেজ নিয়ে
শরত্ এসেছে,
কাশ ফুলের পরাগ মেঘে
বাতাস মেতেছে।
এলো এলো পূজো এলো ভাই
……………………..আয় রে ভাই
………….আয়রে সবাই।

শিউলি ঝরানো শারদ প্রভাতে
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

শিউলি ঝরানো শারদ প্রভাতে
পাখিদের কোলাহল,
সুনীল আকাশে সাদা মেঘেদের
আনাগোনা অবিরল।

কাশের বনে ফুল ফুটেছে
পূজো এসে গেল কাছে,
শিউলি ফুলের গন্ধ মেখে
হৃদয় আমার নাচে।

টগর বকুল জুঁই চামেলি
মাধবী মালতী লতা,
আঙিনাতে তুলসীতলায়
সুনীলা অপরাজিতা।

সাদা মেঘের আনাগোনা
সোনালি রোদ ঝরে,
গাছে গাছে পাখিরা ডাকে
পরাণ পাগল করে।

কমল কাননে মধু আহরণে
ছুটে আসে মধুকর,
মন্দির মাঝে কাঁসর বাজে
প্রফুল্ল সবার অন্তর।

শারদ আকাশে সাদামেঘ ভাসে
পূজোর আনন্দে মাতি,
মা আনন্দময়ীর শুভ আগমনে
ঢাকী ঢাকে দেয় কাঠি।



মহাষষ্ঠী দুর্গাপূজা ( অবতরণিকা)

বাংলার ঋতুচক্র ঘুরে শরত্কায়লের পরেই আসে হেমন্তকাল। আর এই ঋতুই শস্যের উদ্ভবকাল। তারই আগমনী যেন ঘোষিত হয় এই শারদীয়া পুজায়। প্রতিমার পাশে তাই নব পত্রিকা স্থাপন করা হয়। কলা (ব্রক্ষাণী), কচু (কালিকা), হলুদ (দুর্গা), জয়ন্তী (কৌমারী), বিল্ব (শিবা), ডালিম (রক্ত দন্তিকা), অশোক (শোকর হিতা), মানকচু (চামুণ্ডা) এবং ধান (রক্ষ্মী)। এরা বোধনের পর আলাদাভাবে পূজিত হলেও কালক্রমে দুর্গার সঙ্গে সম্মিলিত হয়েছে। শ্বেত অপরাজিতা লতা সর্ববিজয় প্রদায়িনী দেবী মহামায়ার বিশেষ রূপ। তাই এই লতা দিয়ে নবপত্রিকাকে বেষ্টন করা হয়।

মায়ের দশহাতে ত্রিশূল, খড়গ, সুদর্শন চক্র, ধনুর্বাণ, শক্তি খেটক, পূর্নচাপ, নাগতালা, অংকুশ ও পরশু এ ধরনের অস্ত্র দেখা যায় বলে তিনি দশ প্রহরণ ধারিত্রী। মহালয়ার পিতৃপক্ষের তিলাঞ্জলি তর্পনের পর হয় দেবীপক্ষের সূচনা। সৌর আশ্বিনের কৃষ্ণপক্ষের নাম 'মহালয়'। মহালয় শব্দ থেকে 'মহালয়ার' এর উত্পপত্তি।

ষষ্ঠী তিথিতে দুর্গার বোধন সপ্তমীতে মূতির প্রাণ প্রতিষ্ঠা। অষ্টমী ও নবমীতে মহাপূজা ও দশমীতে দেবীর বিসর্জন। এই পূজার বিশেষত্ব হল সন্ধিপূজা অষ্টমী ও নবমী তিথির মিলনক্ষনে সন্ধিপূজা। অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে রামচন্দ্র রাবনের দশটি মুন্ড ছিন্ন করেছিলেন। তাই এই সময়ে পূজার মাহাত্ম্য বেশি।

তবে যাই হোক, দুর্গাপুজো বাঙালির জীবনে অন্যতম উত্সঅব। সারা বছর বাদে বাইরে থেকে এসে বহু মানুষ মিলিত হন এই উত্সযবে। বহু শিল্পীর সারা বছরের রুজি রোজগারও জড়িয়ে থাকে এই ৫ দিনের পুজোর সঙ্গে। তাই আক্ষরিক অর্থেই, দুর্গাপুজো হল বাঙালির শ্রেষ্ঠ উত্সলব।

শারদীয়া দুর্গাপূজা জাতীয় জীবনে সর্বাঙ্গীন। তাই বাংলা কবিতা আসরের সকল কবি ও সহৃদয় পাঠকবৃন্দকে জানাই শুভ মহাষষ্ঠীর শুভকামনা, প্রীতি আর শুভেচ্ছা। বাংলা কবিতার জয় হোক, কবিগণের জয় হোক।

আসুন আমরা সকলেই জাতিধর্ম নির্বিশেষে শক্তির আরাধনায়
রত হয়ে শারদীয়া দুর্গাপূজার আনন্দে মেতে উঠি।
জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!

মহাষষ্ঠী দুর্গাপূজা (কবিতা)
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

ষষ্ঠী কল্পাদি আরম্ভ আজিকার দিনে,
বিল্ব ষষ্ঠী দুর্গাপূজা হয় শুভক্ষণে।
নদীতীর সুশীতল সাদা কাশবন,
দেবীর ঘোটকে হয় শুভ আগমন।

আজি হয় বিধিমতে দেবীর বোধন
শাস্ত্রমতে করে নব পত্রিকা বন্ধন।
মন্দিরেতে পুরোহিত বসিয়া আসনে,
মন্ত্র পাঠ করিছেন ভক্তি যুক্ত মনে।

দেবীর মণ্ডপে কাঁসি, ঢাকঢোল বাজে,
সন্ধ্যার আরতি হয় মন্দিরের মাঝে।
ঘৃতের প্রদীপ শিখা দীপ্ত হয়ে জ্বলে,
শঙ্খ ধ্বনি করে সব এঁয়োগণ মিলে।

তুমি মা আদ্যাশক্তি! শক্তি দাও মোরে,
লক্ষ্মণ লিখিল কাব্য, কবিতা আসরে।

মহা সপ্তমী দুর্গাপূজা (অবতরণিকা)
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

আজ মহা সপ্তমী। দেবী দুর্গতিনাশিনী আদ্যাশক্তি মহামায়ার শক্তির আরাধনা। বিধিমতে সুগন্ধি চন্দন, পুষ্পমালা, ধূপ দীপ, গব্য, ঘৃত, মুক্ত শিশির, গঙ্গাজল সহকারে মাতৃপূজা করা হয়। দেবীর সম্মুখে ঘৃতের প্রদীপ জাজ্বল্যমান। ঢাকীরা বাজায় ঢাক। কাঁসর, ঘন্টা ও শঙ্খধ্বনিতে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়। মায়েরা উলুধ্বনি দেন। দেবীবন্দনায় সকলেই শক্তির আরাধনায় রত হন।
মার্কণ্ডেয় পুরাণ মতে, মহিষাসুর নামক অসুর স্বর্গ থেকে দেবতাদের বিতাড়িত করে স্বর্গ অধিকার করলে দেবতারা ব্রহ্মার শরণাপন্ন হন। ব্রহ্মা এর প্রতিকারের জন্য মহাদেব ও অন্য দেবতাদের নিয়ে বিষ্ণুর কাছে উপস্থিত হন। মহিষাসুর পুরুষের অবধ্য ছিলেন বলে বিষ্ণু দেবতাদের পরামর্শ দেন যে, ‘প্রত্যেক দেবতা নিজ নিজ তেজ ত্যাগ করে একটি নারীমূর্তি সৃষ্টি করবেন।
এরপর সমবেত দেবতারা তেজ ত্যাগ করতে আরম্ভ করেন। যে যে দেবতার তেজ থেকে এই নারী মূর্তির শরীরের বিভিন্ন অংশ তৈরি হলো, তা এ রূপ ‘মহাদেবের তেজে মুখ, যমের তেজে চুল, বিষ্ণুর তেজে বাহু, চন্দ্রের তেজে স্তন, ইন্দ্রের তেজে কটিদেশ, বরুণের তেজে জঙ্ঘা ও উরু, পৃথিবীর তেজে নিতম্ব, ব্রহ্মার তেজে পদযুগল, সূর্যের তেজে পায়ের আঙুল, বসুগণের তেজে হাতের আঙুল, কুবেরের তেজে নাসিকা, প্রজাপতির তেজে দাঁত, অগ্নির তেজে ত্রিনয়ন, সন্ধ্যার তেজে ভ্রূ, বায়ুর তেজে কান এবং অন্যান্য দেবতার তেজে শিবারূপী দুর্গার সৃষ্টি হলো।
এরপর দেবতারা তাকে বস্ত্র, পোশাক ও অস্ত্র দান করলেন। এক্ষেত্রে যারা যা দান করলেন, তা হলো—মহাদেব দিলেন শূল, বিষ্ণু দিলেন চক্র, বরুণ দিলেন শঙ্খ, অগ্নি দিলেন শক্তি, বায়ু দিলেন ধনু ও বাণপূর্ণ তূণীর, ইন্দ্র দিলেন বজ্র, ঐরাবত দিলেন ঘণ্টা, যম দিলেন কালদণ্ড, বরুণ দিলেন পাশ, ব্রহ্মা দিলেন অক্ষমালা ও কমণ্ডলু, সূর্য দিলেন রশ্মি, কাল ও নির্মল চর্ম, ক্ষিরোদ সাগর দিলেন অক্ষয়বস্ত্রসহ বিভিন্ন অলঙ্কার ও আভরণ, বিশ্বকর্মা দিলেন পরশুসহ নানাবিধ অস্ত্র, অভেদ্য কবচমালা, হিমালয় দিলেন সিংহ, কুবের দিলেন অমৃতের পান পাত্র, শেষ নাগ দিলেন নাগহার ও অন্যান্য দেবতা তাদের সাধ্যমতো বিষয় উপহার দিলেন। এভাবে তিনি হয়ে উঠলেন দেবতাদের সম্মিলিত শক্তির প্রতিরূপ।
শারদীয়া দুর্গাপূজা জাতীয় জীবনে সর্বাঙ্গীন। তাই সামহোয়্যার ব্লগের সকল কবি, লেখক ও সহৃদয় পাঠকবৃন্দকে জানাই শুভ মহাসপ্তমীর শুভকামনা, প্রীতি আর শুভেচ্ছা। বাংলা কবিতার জয় হোক, কবিগণের জয় হোক। লেখকগণের জয় হোক।

আসুন আমরা সকলেই জাতিধর্ম নির্বিশেষে শক্তির আরাধনায়
রত হয়ে শারদীয়া দুর্গাপূজার আনন্দে মেতে উঠি।
জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!



মহা সপ্তমী দুর্গাপূজা (কবিতা)
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

মহা সপ্তমীর পূজা ভারি ধূম-ধাম,
ভক্তিভরে সবে করে দেবীরে প্রণাম।

মন্দিরেতে বাজে ঢাক, বাজায় কাঁসর,
পূজার প্যাণ্ডেলে হেরি শোভা মনোহর।

শঙ্খ, ঘণ্টা, ধূপ, দীপ বরণের ডালি,
দেবীর সম্মুখে শোভে প্রসাদের থালি।

পূজান্তে প্রসাদ ভোগ হয় বিতরণ,
মহানন্দে করে সবে প্রসাদ ভক্ষণ।

সন্ধ্যায় ধুনুচি নাচ ঢাক ঢোল বাজে,
ঢাকীরা বাজায় ঢাক সকলেই নাচে।

ধন্য ধন্য দুর্গাপূজা আলোর বাহার,
পুলকে হৃদয় নাচে আজি সবাকার।

সপ্তমীর মহা পূজা হল সমাপন,
কবিতা লিখিল কবি ভাণ্ডারী লক্ষ্মণ।



মহা অষ্টমী দুর্গাপূজা (অবতরণিকা)
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

আজ মহা অষ্টমী। দেবীর দুর্গতিনাশিনী আদ্যাশক্তি মহামায়ার অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে এই পূজা দুর্গাপূজার গুরুত্বপূর্ণ শক্তির আরাধনা। বিধিমতে সুগন্ধি চন্দন, পুষ্পমালা, ধূপদীপ সহকারে মাতৃপূজা করা হয়। হোম যজ্ঞ ও আহুতি প্রদান করা হয়। জগতমাতাকে (দেবী দুর্গা) আমরা আরাধনা করি তিনি সকল নারীর মধ্যে মাতৃরূপে আছেন। এ উপলব্ধি সকলের মধ্যে জাগ্রত করার জন্যই কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। দুর্গা মাতৃভাবের প্রতীক আর কুমারী নারীর প্রতীক। কুমারীর মধ্যে মাতৃভাব প্রতিষ্ঠাই এ পূজার মূল লক্ষ্য। কুমারী পূজার আনুষ্ঠানিকতা সম্পর্কে মহারাজ বলেন, দেবী দুর্গার সামনে বসিয়ে ঠিক যেভাবে তার (দুর্গার) আরাধনা করা হয়, একইভাবে কুমারীকে সে সম্মান প্রদান করা হয়।
অঞ্জলি
অষ্টমী মানেই কিন্তু পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া নতুন জামাকাপড় পড়ে। স্নান করে শুদ্ধ বস্ত্রে ঠাকুরের সামনে বসুন। তিনবার হাতে গঙ্গাজল নিয়ে আচমন করুন। এবার হাতে ফুল নিন ও তিনবার পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র পড়ে ঠাকুরের চরণে তা প্রদান করুন। এবার প্রণাম মন্ত্র অর্থাৎ “ ওঁ সর্বমঙ্গল মঙ্গল্যে শিবে সর্বার্থ সাধিকে, শরণ্যে ত্রম্ব্যকে গৌরী নারায়ণী নমস্তুতে’’ ইত্যাদি বলে অঞ্জলি প্রদান শেষ করুন।

কুমারী পুজো
সকল মেয়েই মা দুর্গার অংশ, তাই মৃন্ময়ী প্রতিমাকে পুজো করার পাশাপাশি কম বয়সের ছোট মেয়েদেরও পুজো করা হয়। বেলুড় মঠে প্রথম কুমারী পূজা করেন ১৯০১ সালে। ষোলো বছরের মেয়ে পর্যন্তই কুমারী হিসাবে পুজো করা যায়। একটি মেয়েকে প্রথমে আমন্ত্রণ করে তাকে শাড়ি ও গয়না উপহার দিতে হয়। সেই তাকে পড়িয়ে মাতৃমূর্তির সামনে এনে উঁচু আসনে বসাতে হয়। কুমারীর পা জল দিয়ে ধুয়ে দেওয়া হয়। তারপর তার পূজা শুরু হয়। তাকে মিষ্টান্নাদি নৈবেদ্য প্রদান করা হয়। তার উদ্দেশে অঞ্জলি দেওয়া হয়। এইদিন ওই কুমারীকে দেবী দুর্গার রূপ হিসাবেই ধরা হয়।
সন্ধি পুজো
এটি দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। মূলত অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিস্থলে অর্থাৎ অষ্টমী শেষ হবার ২৪ মিনিট ও নবমী শুরু হবার ২৪ মিনিট এই সময়ের মধ্যে এই পূজা হয়। এই সময়ে মূলত দেবী চামুন্ডার পূজা করা হয়। এই পূজাতেই ১০৮ টি পদ্মফুল দেবীকে উৎসর্গ করা হয়। এর মূলে রামায়ণের কাহিনী আমরা সবাই জানি। রাবণ বধের জন্য রাম ১০৮ পদ্ম দিয়ে দেবীর পূজা করেন ও তারপর রাবণ নিধন হয়। সেই সূত্রেই এই সন্ধি পূজা করা হয়। দেবীর সামনে নানা রকম খাদ্যদ্রব্য কাঁচা অবস্থায় এবং রান্না করা ভোগ হিসাবেও রাখা হয়। ১০৮ টি মাটির প্রদীপ দেবীর সামনে জ্বালানো হয়। কোনো কোনো জায়গায় এই দিন বলিও দেওয়া হয়। বলি হিসাবে পশুবলি নিয়ে অনেক নিষেধাজ্ঞা জারি আছে বলেই আখ, চালকুমড়ো এইসব বলি হিসাবে প্রদত্ত হয়।


আসুন আমরা সকলেই জাতিধর্ম নির্বিশেষে শক্তির আরাধনায়
রত হয়ে শারদীয়া দুর্গাপূজার আনন্দে মেতে উঠি।
জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!



মহা অষ্টমী দুর্গাপূজা
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

মহা অষ্টমীর পূজা পূণ্য শুভক্ষণে,
মণ্ডপে বাজায় ঢাক যত ঢাকীগণে।
দেবীর মণ্ডপমাঝে শঙ্খ ঘণ্টা বাজে,
আবির্ভূতা হন দেবী অপরূপ সাজে।

হোম যজ্ঞ বিধিমতে হয় সমাপন,
অবশেষে আসে সেই পূণ্য সন্ধিক্ষণ।
মহা অষ্টমীতে করে ছাগ বলিদান,
পশুরক্তে দেবীপূজা শাস্ত্রের বিধান।

শুনহ জীবের জীব আমার বচন,
পশুরক্তে মাতৃপূজা না হয় কখন।
মাতৃপূজা কর জীব বিনা বলিদান,
হত্যায় না হয় কভু পূর্ণ মনস্কাম।

বলিহীন হোক পূজা বিনা বলিদান,
লক্ষ্মণের কাব্য হোক শাস্ত্রের বিধান।



মহানবমী দুর্গাপূজা (অবতরণিকা)
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

আজ মহা নবমী। দেবীর দুর্গতিনাশিনী আদ্যাশক্তি মহামায়ার অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে এই পূজা দুর্গাপূজার গুরুত্বপূর্ণ শক্তির আরাধনা। বিধিমতে সুগন্ধি চন্দন, পুষ্পমালা, ধূপদীপ সহকারে মাতৃপূজা করা হয়। হোম যজ্ঞ ও আহুতি প্রদান করা হয়। জগতমাতাকে (দেবী দুর্গা) আমরা আরাধনা করি তিনি সকল নারীর মধ্যে মাতৃরূপে আছেন।

বিধিমতে সুগন্ধি চন্দন, পুষ্পমালা, ধূপ দীপ, গব্য, ঘৃত, মুক্ত শিশির, গঙ্গাজল সহকারে মাতৃপূজা করা হয়। দেবীর সম্মুখে ঘৃতের প্রদীপ জাজ্বল্যমান। ঢাকীরা বাজায় ঢাক। কাঁসর, ঘন্টা ও শঙ্খধ্বনিতে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়। মায়েরা উলুধ্বনি দেন। দেবীবন্দনায় সকলেই শক্তির আরাধনায় রত হন।
দুর্গাপুজো বাঙালির জীবনে অন্যতম উত্স ব। সারা বছর বাদে বাইরে থেকে এসে বহু মানুষ মিলিত হন এই উত্সৃবে। বহু শিল্পীর সারা বছরের রুজি রোজগারও জড়িয়ে থাকে এই ৫ দিনের পুজোর সঙ্গে। তাই আক্ষরিক অর্থেই, দুর্গাপুজো হল বাঙালির শ্রেষ্ঠ উত্স ব।

শারদীয়া দুর্গাপূজা জাতীয় জীবনে সর্বাঙ্গীন। তাই বাংলা কবিতা আসরের সকল কবি ও সহৃদয় পাঠকবৃন্দকে জানাই শুভ মহাষষ্ঠীর শুভকামনা, প্রীতি আর শুভেচ্ছা। বাংলা কবিতার জয় হোক, কবিগণের জয় হোক।




মহানবমী দুর্গাপূজা
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

মহানবমীর পূজা বিদিত জগতে,
নবমীর পূজা হয় শাস্ত্রবিধি মতে।
মন্দিরেতে পুরোহিত বসিয়া আসনে,
করিছেন মন্ত্রপাঠ শুদ্ধ ভক্তি মনে।

জ্বলিছে প্রদীপ মালা ধূপদানে ধূপ,
নবমীতে হেরি মা’র অপরূপ রূপ।
ধূপ দানে পুড়ে ধূপ সুগন্ধ ছড়ায়,
ঢাকীরা আনন্দে ঢাক কাঁসর বাজায়।

শঙ্খ ঘণ্টা ধূপ দীপ সুগন্ধি চন্দন,
গব্য ঘৃত মধু দিয়ে পূজয়ে ব্রাহ্মণ।
ছাগদি মহিষ যত হয় বলিদান,
জীবরক্তে দেবীপূজা শাস্ত্রের বিধান।

পশুরক্তে দেবীপূজা না হয় কখন,
বলিহীন কর পূজা কহিল লক্ষ্মণ।



মহা দশমী দুর্গাপূজা (অবতরণিকা)
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

আজ বিজয়া দশমী। দুর্গোৎসবের শেষ দিন। বাঙালি হিন্দুসমাজের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের এই শুভক্ষণে আমরা সবাইকে জানাই শারদীয় শুভেচ্ছা। পুরাণ অনুসারে, দুর্গা যেমন অসুরবিনাশী দেবী, তেমনি তিনি দুর্গতিনাশিনী, যিনি জীবের দুর্গতি নাশ করেন। তিনি এবার এসেছেন নৌকায় করে। দেবী দুর্গা অসুরদের দলপতি মহিষাসুরকে বধ করে দেবকুলকে রক্ষা করেছিলেন। তাঁর এই জয়ের মধ্য দিয়ে অন্যায় ও অশুভর বিরুদ্ধে ন্যায় ও শুভশক্তির জয় হয়েছিল।
মাকে বিদায় দিতে সকলের চোখে আজ জল ঝরে। তবু কেন জানি না মৃণ্ময়ী মায়ের চোখেও জল। বিদায় ক্ষণে কান্না ঘেরা দিনটিকে ভুলতে রমনীরা তাই সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন। বিদায় বেলায় সবাই সবাইকে পরস্পর কোলাকুলি করে। ছোটরা বড়দের প্রণাম করে ও আশীর্বাদ মাথায় নেয়।
রাবণ দহন উত্সবে মেতে ওঠে সবাই। দিনের শেষে সাঁঝের বেলায় শারদ আকাশে চাঁদের ফালির সাথে তারাদের মিলন তীর্থ রচিত হয়। তারপরে শোভাযাত্রার মাধ্যমে দেবী বিসর্জনের বাজনা বেজে ওঠে। গঙ্গানদীর অভিমুখে সারি সারি প্রতিমা নিরঞ্জনে এগিয়ে চলে বিশাল জনসমষ্টি। এরপর আবার একটি বছরের প্রতীক্ষা।



মহা দশমী দুর্গাপূজা
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

মহা দশমীর পূজা বিধি মতে হয়,
বিজয়াদশমী আজি সকলেতে কয়।
শঙ্খ ঘণ্টা ধূপ দীপ প্রসাদের থালা,
দেবীকণ্ঠে শোভে হেরি পুষ্পহার মালা।

মন্দিরেতে পুরোহিত স্তব পাঠ করে,
জ্বলিছে প্রদীপ মালা ধূপকাঠি পুড়ে।
সুগন্ধি চন্দন আদি বিবিধ প্রকার,
ঘৃত মধু গঙ্গা জল পূজা উপাচার।

ঢাক বাজে কাঁসি বাজে হয় শঙ্খধ্বনি,
উলুধ্বনি দেয় সবে যতেক রমণী।
সিঁদুর আলতা আর সুগন্ধি চন্দন,
উলুধ্বনি দিয়ে করে দেবীরে বরণ।

আনন্দে সিঁদুর খেলে যত এঁয়োগণ,
শুভ বিজয়ার কাব্য লিখিল লক্ষ্মণ।



অভিশপ্ত বিজয়া দশমী (অবতরণিকা)
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

#অমৃতসর: দশহরার রাতেই অমৃতসরের জোড়া ফটকের কাছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ । রেললাইনের কাছেই রাবণ নিধন দেখতে এসে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রচুর মানুষ । মৃতদের মধ্যে রয়েছেন দলবীর সিং, যিনি এই রামলীলায় রাবণের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন । দলবীরের মা নিউজ ১৮ কে জানিয়েছিলেন রামলীলাতে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন দলবীর কিন্তু এবারেই প্রথম রাবণের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন । অভিনয় দেখার জন্য চেনা পরিচিতদের নিমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ।
তথ্যসুত্র: নিউজ বাংলা

হিন্দু মহাকাব্য রামায়ণে কথিত আছে, দশেরার দিনই যুদ্ধ শেষে রাবণ বধ করেছিলেন রাম। সেই উপলক্ষ্যেই এদিন সারা ভারতেই রাবণের ছবি পোড়ানো হচ্ছে। অমৃতসরের ঝোড়া পাঠক এলাকায় রেল লাইনের ধারেও চলছিল রাবণ পোড়ানোর অনুষ্ঠান। লাইনের ওপর দাঁড়িয়েই সেই অনুষ্ঠান দেখছিলেন কয়েক শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দা। আর সে সময়ই আপ ও ডাউন রেল লাইনের ওপর দিয়ে দুরন্ত গতিতে ছুটে যায় হাওড়া-অমৃতসর এক্সপ্রেস ও অমৃতসর-জলন্ধর ডিজেল মাল্টিপল ইউনিট (ডিএমইউ) ট্রেন। সাথে সাথেই ঘটে যায় বড়সড় দুর্ঘটনা। কেউ চলন্ত ট্রেনের তলায় কাটা পড়ে কেউ বা ট্রেনের ধাক্কায় প্রায় ৫০-১০০ মিটার দূরে গিয়ে ছিটকে পড়ে।

ভারতে রাবণ দহন দেখতে এসে ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের অমৃতসরে এ ঘটনা ঘটে। তবে মৃতের সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি।
এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও প্রায় অর্ধশতাধিক। হতাহতের মধ্যে অনেক কিশোরও রয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা সঙ্কটপূর্ণ। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তথ্যসুত্র: বিডি প্রতিদিন


কবিতা প্রসঙ্গে:
হিন্দু রীতি অনুসারে বিজয়া দশমীর দিনে রাবণকে দহন করা হয়। বিগত বিজয়া দশমীর দিনে অমৃতসরে রাবণ দহনকালে সহসা হাওড়া-অমৃতসর এক্সপ্রেস ও অমৃতসর-জলন্ধর ডিজেল মাল্টিপল ইউনিট (ডিএমইউ) ট্রেন শতাধিক ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

ঠিক ঐ সময়েই আপ ও ডাউন রেল লাইনের ওপর দিয়ে দুরন্ত গতিতে ছুটে যায় হাওড়া-অমৃতসর এক্সপ্রেস ও অমৃতসর-জলন্ধর ডিজেল মাল্টিপল ইউনিট (ডিএমইউ) ট্রেন। সাথে সাথেই ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। কেউ চলন্ত ট্রেনের তলায় কাটা পড়ে কেউ বা ট্রেনের ধাক্কায় প্রায় ৫০-১০০ মিটার দূরে গিয়ে ছিটকে পড়ে।

হায়রে বসুন্ধরা! এই বসুধায় প্রতি পদে পদে হত্যার লীলাভূমি রচিত হয়। রক্তমূল্য দিয়ে যারা প্রাণ দিল রেললাইনে, তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গকে সমবেদনা জানাই।

কবিতাটি পাঠে সকলের মনে একটুখানি করুণার উদ্রেক হলে আমার কবিতা লেখা সার্থক হবে।
পাশে থাকুন, সাথে রাখুন। জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!



অভিশপ্ত বিজয়াদশমী
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

আনন্দে দেখিছে সবে জ্বলিছে রাবণ,
মন্ত্রীপত্নী আসি মঞ্চে দিতেছে ভাষণ।
জন সমারোহ হেরি বিশাল প্রান্তরে,
পুড়িছে আতসবাজি মহা শব্দ করে।

সম্মুখেতে রেলপথ ভাবিয়া না পায়,
দেখিবারে রাবণেরে লাইনে দাঁড়ায়।
সহসা আসিল রেল কাটিল সবারে,
রক্তবন্যা বহে কত লাইনের ধারে।

শতাধিক নিল প্রাণ ভুলিব কেমনে
আনন্দের অশ্রু বহে সবার নয়নে।
সকলেই দেখে যবে পুড়িছে রাবণ,
হায় হায় বলি সবে করিছে ক্রন্দন।

মহানন্দ নিরানন্দ কর কি কারণ?
রাবণ দহন কাব্যে লিখিল লক্ষ্মণ।



গাঁয়ের কবিতা
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

পূবের আকাশ ফরসা হোল
উঠলো রাঙা রবি,
ঊষার আলো মুছিয়ে কালো
আঁকে রঙিন ছবি।


সোনালি রোদ ঘাসের পরে
মুক্তো হয়ে ঝরে,
রাখাল ছেলে বাজায় বাঁশি
চিত্ত ওঠে ভরে।


কেমন করে বাজায় বাঁশি
এ গাঁয়ের রাখাল,
সকাল হলে মাঠেতে চলে
নিয়ে গরুর পাল।


দিঘির বাঁকে মরাল থাকে
পানকৌড়িরা আসে,
নীল আকাশে মেঘেরা ভাসে
ফড়িং লাফায় ঘাসে।

ডুবলে বেলা সাঁঝের তারা
ওঠে সাঁঝ আকাশে,
জোছনা রাতে তারার সাথে,
চাঁদ খুশিতে হাসে।

ভোরের আলো
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

ভোরের আলো ছড়িয়ে দিলো
আলোক ভুবনময়,
পূব আকাশে অরুণ হাসে
প্রভাত হাওয়া বয়।

টগর বেলি জুঁই, শিউলি
ফুটে আছে ফুল বাগে,
তরুর শাখে পাখিরা ডাকে
শীতের আমেজ লাগে।

ঘাসের পরে শিশির ঝরে
সোনালী সকাল বেলা,
ধানের খেতে উঠলো মেতে
সোনা রোদ করে খেলা।

অজয় তীরে স্নিগ্ধ সমীরে
বটগাছ তলে বসি,
মধুর সুরে কেমন করে
বাজায় বাঁশি শশী।

মন মাতানো বাঁশির সুরে
পরাণ পাগল করে,
কলসী কাঁখে গাঁয়ের বধূ
জল নিয়ে যায় ঘরে।

দিঘির বাঁকে মরাল থাকে
পানকৌড়িরা আসে,
নীল আকাশে মেঘেরা ভাসে
ফড়িং লাফায় ঘাসে।

ডুবলে বেলা সাঁঝের তারা
ওঠে সন্ধ্যার আকাশে,
জোছনা রাতে তারার সাথে,
চাঁদ বুঝি তাই হাসে।
--------------------------
খুব শীঘ্রই দীপাবলী সংখ্যা প্রকাশিত হবে। থাকবে কিছু আরও কবিতা।
সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। কবিতা লিখুন, কবিতা পাঠ করুন।
আর চোখ রাখুন আগামী দীপাবলী সংখ্যায়।
জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!


সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫১
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×