কেয়ামত সম্পর্কে কোরআন এবং হাদিসের পরষ্পর বিরোধী প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ইসলামী জ্ঞানের একটি গভীর বিষয়। কোরআন ও হাদিসের মধ্যে এই ধরনের আপাতবিরোধিতা মনে হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু বিষয়টি ভালোভাবে পর্যালোচনা করলে এর একটি সুস্পষ্ট সমাধান পাওয়া যায়।
কোরআনের নির্দেশ:
কোরআনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে কেয়ামত সম্পর্কে নবী (সাঃ) কে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য দেওয়ার জন্য নিষেধ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, "তারা তোমাকে কিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বল, তার সম্পর্কে শুধু আল্লাহই জানেন।" (সূরা আল-আ'রাফ, আয়াত ১৮৭)
হাদিসে বর্ণিত বিষয়:
অন্যদিকে, বিভিন্ন হাদিসে কেয়ামতের বিভিন্ন লক্ষণ, ঘটনা এবং সময় সম্পর্কে নবী (সাঃ) এর উক্তি বর্ণিত হয়েছে।
এই দুইটি বিষয়ের মধ্যে আপাতবিরোধিতার সমাধান:
এই আপাতবিরোধিতার সমাধানের জন্য আমাদের বিভিন্ন দিক বিবেচনা করতে হবে:
* আয়াতের অর্থ: উপরোক্ত আয়াতে নবী (সাঃ) কে কেয়ামতের নির্দিষ্ট সময়, তারিখ বা ঘটনা সম্পর্কে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য দেওয়ার জন্য নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু কেয়ামতের সাধারণ লক্ষণ, মানুষের জন্য সতর্কবাণী এবং ইসলামী বিশ্বাসের মূলনীতিগুলো ব্যাখ্যা করতে তিনি নিষেধ ছিলেন না।
* হাদিসের প্রকৃতি: হাদিসে বর্ণিত অনেক ঘটনা সাধারণ লক্ষণ, উপমা বা সতর্কবাণীর মাধ্যমে বর্ণিত হয়েছে। এগুলো সবসময় সরাসরি কেয়ামতের সময় বা ঘটনার নির্দিষ্ট বিবরণ নয়।
* জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা: মানুষের জ্ঞান সীমিত। আল্লাহ তাআলাই একমাত্র সবকিছুর জ্ঞাতা। তাই কেয়ামতের সম্পূর্ণ বিষয়টি মানুষের বুদ্ধির আওতা বাইরে।
* বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ: কোরআন ও হাদিসকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয়। কখনো কখনো এই ব্যাখ্যায় ভিন্নমত থাকতে পারে।
উপসংহার:
সুতরাং, কোরআন ও হাদিসের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। বরং বিভিন্ন আয়াত ও হাদিসের অর্থকে সঠিকভাবে বুঝতে হবে। কেয়ামত সম্পর্কে নবী (সাঃ) এর উক্তিগুলো মানুষকে সতর্ক করার এবং ইসলামী বিশ্বাসকে শক্তিশালী করার জন্য ছিল। তিনি কখনোই কেয়ামতের নির্দিষ্ট সময় বা ঘটনা সম্পর্কে কোনো নিশ্চিত তথ্য দেননি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



