somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুপ্ত-সুপ্তির গল্প

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(কিছুদিন আগে প্রকাশিত ''মায়া মাখানো মায়াবতী...'' গল্পের পরবর্তী পর্ব এটি)

মিতা মেয়েটার সবচেয়ে বড় গুন হচ্ছে সব কিছু অনেক সহজ ভাবে ভাবতে পারা।ওকে যতো জটিল সমস্যাই ধরিয়ে দেই না কেন,একটা সহজ উপায় সে বের করবেই।হুট করে এই দেশে থেকে যাওয়াতে অভিভাবকহীন হয়ে পড়লো।দূরসম্পর্কের এক ফুফু ছাড়া দেশে আর কেউ রইল না।স্বভাবতই ওকে বিয়ে করা ছাড়া আমার উপায় ছিল না।কিন্তু ও আমাকে একবারের জন্যও চাপ দিল না।অথচ বিয়ের জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।ব্যবসায়ী বাবার একমাত্র ছেলে হলেও পারিবারিক সচ্ছলতা তেমন নেই।বিশেষ করে শেয়ার ব্যবসা আমাদের একেবারে কোণঠাসা করে দিয়েছে।আর বাবা-মা মুখে না বললেও একমাত্র ছেলের জন্য নিজে মেয়ে খোজার আকাংখা আমার চোখ এড়ায়নি।স্বাভাবিকভাবেই কঠিন সংকটের মধ্যে পরে গেলাম।কি করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না।মিতা ব্যাপারটা এতো তরল করে দিবে ভাবতেও পারিনি।স্বর্ণের গহনা,বিয়ের শপিং কোনটাতেই আমাকে তেমন খরচ করতে দিল না।মাকে রাজি করানোর ব্যাপারে ভাল চিন্তাতেই ছিলাম।সাহস করে মাকে বললাম।মুখে তেমন কিছু না বললেও মা যে ব্যাপারটা সহজভাবে নিতে পারেনি সেটা বুঝতে পারলাম।কিন্তু মিতা প্রথমদিন এসেই মায়ের মন জয় করে নিবে ভাবতেও পারিনি।

অতিসাধারণ ভাবে আমাদের বিয়েটা হলেও এই নিয়ে আমার একটুও দুঃখ ছিল না।বলা যায় মিতাই সেটা রাখতে দেয়নি।বাসররাতে মিতাকে আগ্রহভরে জিজ্ঞেস করলাম,আমাকে কি দেখে পছন্দ করলে?কিন্তু মিতার উত্তর আমাকে রীতিমতো অবাক করে দিল।বাচ্চাদের প্রতি আমার ভালোলাগাটাই নাকি ওকে বেশি আকর্ষণ করেছে।৩-৪টা মাস যখন মিতার সাথে সাথে বস্তিতে ঘুরেছি,তখনি ভাললাগাটা তৈরি হয়েছিল।কিন্তু নিজের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে কখনও সেটা মুখ ফুটে বলেনি।যাবার ১৫ দিন আগে দাদীকে ভাললাগার কথাটা বলেই ফেললো।কিন্তু দাদী কিছুতেই রাজি না।যে দাদিটা ২ বছরের মা মরা মেয়েটাকে নিজের বুকে আগলে রেখে বড় করেছে,সেই দাদীর অবাধ্য হওয়ার শক্তি মিতার ছিল না।শেষ ১৫টা দিন ভিতরে ভিতরে নিজেই পুড়েছে,কিন্তু মুখ ফুটে কাউকেই বলেনি।যাবার ৫ দিন আগে মিতাকে ফোনে হেসে হেসে কথা বলতে দেখে একটু অবাকই হলেন।মিতার কথাবার্তা শুনে সেটা কে আর বুঝতে বাকী রইল না।কিন্তু কাছে এসে দেখলেন,মেয়েটা হেসে হেসে কথা বলছে ঠিকই কিন্তু চোখ থেকে টপ টপ করে পানি পরেই যাচ্ছে।মা-মরা মেয়েটাকে এভাবে কখনো তিনি কাঁদতে দেখেননি।এই মেয়েটা কোনদিন তার কাছে কোনদিন কিছু আবদার করেনি।ছোটোবেলায় খাবার নিয়ে কোনদিন বিরক্ত করেনি।ক্ষুধা পেলে শুধু মুখের বার বার শুধু মুখ তুলে তাকাতো।ওই রাত্রেই তিনি অনেক ভেবেচিন্তে ঠিক করলেন মেয়েটার এই আবদারটা তিনি অপূর্ণ রাখবেন না।ভোর বেলায় অন্য দিনের মতই মেয়েটাকে ঘুম থেকে জাগাতে গেলেন।নিস্পাপ মেয়েটার মুখের দিকে তার বুকের গভীরে কেমন যেন কান্না উগলে উঠলো।মেয়েটাকে বুকে জড়িয়ে ধরতে গিয়ে দেখতে পেলেন বালিশটা ভিজে আছে।চোখ খুলে নিজেকে দাদীর কোলে পেয়ে মিতা যারপরানাই অবাক হল।দাদী শুধু মুখ ফুটে তার ভালোলাগার মানুষটার নম্বর চাইল।সারারাত কেদে কেদে মিতা বালিশটা ভিজিয়েছিল।সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই দাদীর বুকটা আবার সুখের কান্নায় ভেজাতে হল।সেই দাদিই প্ল্যান করেছেন কিভাবে হাসানকে(আমাকে)চমকে দিতে হবে।দাদীকে আমেরিকার প্লেনে উঠিয়ে দিতে ঠিকই এয়ারপোর্টে এসেছিল মিতা।৩ মাস পর এই দাদীই আমাদের বিয়ের সব জোগাড়যন্ত্র করেছিলেন।

বিয়ের পর আমি মহাঝামেলায় পরে গেলাম!!একমাত্র ছেলে হিসেবে বাবা মার কাছে একচেটিয়া আদর পেতাম।আর সেই আদরের সিংহ ভাগ কেড়ে নিল মিতা একাই।অল্পদিনেই আব্বু-আম্মু মিতার এতো ভক্ত হয়ে গেল বাসায় আমি মোটামুটি অপাংক্তেয় হয়ে গেলাম।ছোট্ট সংসারটা সুখেই কাটছিল।ছোট্ট ছোট্ট খুনসুটি আর অভিমানগুলো নিয়েই কাটছিল দিনগুলো।বিয়ের প্রথম থেকেই মিতার ইচ্ছা ছিল মা হওয়ার।কিন্তু আমার অনিচ্ছায় সেটা আর হয়ে উঠেনি।মিতা বলতো আমাদের প্রথম বেবিটা ছেলে হবে,আর বলতাম মেয়ে হবে।ও আমাকে সুপ্তর বাপ বলে ডাকতো,আর আমি ডাকতাম সুপ্তির মা।মায়ের প্রবল ইচ্ছায় বিয়ের ৭ মাসের মাথায় সন্তান নেবার সিদ্ধান্ত নিলাম।ভাগ্যদেবী বোধ হয় সুপ্ত অথবা সুপ্তিকে দুনিয়াতে পাঠাতে চাইলেন না।বিয়ের ২ বছর হয়ে গেল কিন্তু আমরা সন্তান নিতে পারলাম না।মিতার ধৈর্য ধরতে পারল না। ৯ মাসে ঢাকার বিখ্যাত গাইনি ডাক্তার দেখিয়ে ফেললাম।কিন্তু কিছুতেই কিছু হল না।শেষ মিতাকে নিয়ে কলকাতায় গেলাম।সেখানেও সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদটা শুনলাম।ওরা প্রায় ৩ মাস জুড়ে বিভিন্ন টেস্ট করে বলল,মিতা কখনই মা হতে পারবে না।পুরোবাসায় সুখ নামক বস্তুটি বিদায় নিল।সবাই কম বেশি শোকার্ত হলেও মিতা একেবারে ভেঙ্গে পরল।শেষে মিতার দাদী চিকিৎসার জন্য আমাদের আমেরিকা যাবার ব্যবস্থা করে দিলেন।আমেরিকার ভার্জিনিয়ার হোপ ফার্টিলিটি সেন্টারে মিতার চিকিৎসা হল।ডা প্রিসিলা আমাদের ক্লমিফেন থেরাপির জন্য সময় চাইলেন।পুরোটা সময় মিতাকে শান্ত রাখতে আমাকে লেগে থাকতে হয়েছে।

কোন একটা মেঘলা সকালে মিতাকে নিয়ে হপকিন্স লেকের পাড় ধরে হাঁটছিলাম।মিতার মন ভয়ঙ্কর খারাপ আর আমি ওর মন ভালো করার ব্যর্থ চেষ্টা করেই যাচ্ছিলাম।হঠাত ও মাথা চেপে ঘাসের উপর শুয়ে পড়ল।আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না।পাশের একটা কটেজ থেকে ৯১১ তে ফোন দিলাম।ওই দিন রাতেই ডাঃ প্রিসিলা আমাদের জীবনের সেরা সংবাদটা দিলেন।বাবা হবার আনন্দ যে মানুষকে এতো পুলকিত করতে তা আমার ধারনা ছিল না।৫ মাস পর যখন প্রিসিলার কাছে শুনলাম আমরা টুইন বেবি পেতে যাচ্ছি,তখন কমলাপুর বস্তির সেই জমজ দুটার কথা মনে পরল,যাদের দেখে মিতারও জমজ বাচ্চার সাধ জেগেছিল।আমরা বোধহয় আমাদের জীবনের সবচেয়ে সেরা সময় তখনি কাটিয়ে ফেলেছিলাম।পরে সনোগ্রাম করে জানতে পেরেছিলাম একজন ছেলে,একজন মেয়ে।মিতা মার্কেট ঘুরে ঘুরে আমাদের সুপ্ত-সুপ্তির জন্য জামা কাপড়,খেলনা এমনকি ছবিযুক্ত বই পর্যন্ত কিনে রেখেছিল।আমেরিকায় চিকিৎসার খরচের বেয় বাহুল্যতা সবারই জানা।সেই জন্যই একটা ফুডকর্নারে খণ্ডকালীন চাকরী নিয়েছিলাম।সারাদিনের হাড়ভাঙ্গা খাটুনি খেটে বাসায় ফিরে যখন মিতার পেতে কান রেখে সুপ্ত-সুপ্তির হৃদয়ের শব্দ পেতাম তখন সব ক্লান্তিগুলো কোথায় যে হারিয়ে যেতো।মিতার পেটে হাত রেখে যখন সুপ্ত-সুপ্তির খুনসুটি টের পেতাম তখন অদ্ভুত ভাললাগায় মনটা ভরে যেতো।প্রতিটা রাত আমি আর মিতা ওদের সাথে কতো যে গল্প করেছি।মিতাকে আরও ভালবাসতে ইচ্ছে হতো।এই অদ্ভুত শিহরন জাগানো ভালবাসাটা আমি কোনদিনই কলমের কালিতে এঁকে বুঝাতে পারবো না।

বিধাতার বোধহয় একটু অন্যভাবেই ভেবে রেখেছিলেন।মিতার ডেলিভারির তখনও দেড় মাস বাকি।টাউনসার্ভিসে করে শিকাগোতে মিতাকে ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় ফিরছিলাম।আমাদের সামনেই জনসন স্কয়ারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটনা।আমাদের ড্রাইভার অনেক দক্ষ হওয়াতে সময়মত হার্ডব্রেক করাতে বড় বাচা বেচে গেলাম।বাসের কারোরই তেমন ক্ষতি হয়নি।আল্লাহর কাছে হাজারো শুকরিয়া জানালাম।কিন্তু বাসায় এসে আমার জীবনের কেয়ামত শুরু হয়ে যাবে তা কি জানতাম?বাসায় ফিরে আমি আর মিতা ড্রইং রুমে বসে ছিলাম।প্রায় ১০ মিনিট পর মিতা বলল ওর মাথাটা ঘুরাচ্ছে।আমি ওকে গোসল করে আসতে বললাম।কিন্তু মিতা যেতেই দেখলাম ড্রইং রুমের কার্পেটে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ।বাথরুমের সামনে আমার সামনে আরো ভয়ংকর কিছু অপেক্ষা করছিল।সেখানে দেখি মিতা মুখ থুবড়ে পরে আছে।আমেরিকায় ৯১১ সিস্টেমটা না থাকলে মিতার জন্য আমার কিছুই করার থাকতো না।এর পরের ৩টা ঘণ্টা আমি এখনও স্মরণ করতে পারিনা।২২ মিনিটের মাথায় মিতাকে ইমারজেন্সির লোকজন ডাঃ প্রিসিলার ওখানে নিয়ে গেল।ওই টাউনসার্ভিসের বাসটা যখন হার্ডব্রেক কষেছিল,তখন মিতা পেটে কিছুটা আঘাত পেয়েছিল।সে থেকেই রক্তক্ষরণের শুরু।প্রচণ্ড রক্তক্ষরণের জন্য মিতা শকে চলে গেলো।৭ ব্যাগ রক্ত দেবার পরও ওর অবস্থার উন্নতি হল না।রক্ত শূন্যতার জন্য ওর বাচ্চার নড়াচড়া একেবারে বন্ধের পথে।ঠিক তখনি প্রিসিলা জানালো,মিতার অপারেশন লাগবে কেননা ইন্টারনাল ব্লিডিং কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছে না।ওটিতে প্রিসিলা জানিয়ে গেল মিতা বাচাতে গেলে হয়তো সুপ্তসুপ্তিকে বাঁচানো যাবেনা।৬ ঘণ্টার অপারেশনের পর প্রিসিলা ওটি থেকে বেরিয়ে এল।ওর মুখ দেখে কিছুই অনুমান করতে পারলাম না।ম্লান মুখে বলল,your wife is safe now।কিন্তু ওর মুখের ম্লানতার কারনটা ধরতে পারলাম না।ওর পেছনে ছোট্ট স্ট্রেচারে রাখা পাশাপাশি দুটো ছোট্ট শরীর সাদা ধবধবে চাদর দিয়ে ঢাকা।সাদা চাদরের আড়ালে ছোট্ট একটা হাত বেড়িয়ে আছে।সাদা চাদর উঠিয়ে যা দেখলাম,তা বোধহয় পৃথিবীর কোন বাবাই দেখেননি।রক্তে মাখামাখি সুপ্তসুপ্তি নিথর হয়ে শুয়ে আছে।কাল কুচকুচে চোখ,কাজল টানা সুপ্ত যেন আর আমারই ছোটকালের রূপ ধরে শুয়ে আছে।আর সুপ্তির মায়ের আর যাই পাক না কেন,ওর মিষ্টি হাসিটা যে পেয়েছে তা ওর ঠোঁট ছোঁয়া হাসিটা দেখেই বুঝা যায়।তখনও আমি বিশ্বাস করতে চাই নি,সুপ্ত-সুপ্তি কখনও আমাকে বাবা না ডেকেই দুনিয়া থেকে বিদায় নেবে।ওয়ার্ড-বয় যখন স্ট্রেচার এগিয়ে নেবার জন্য ধাক্কা দিল,তখন মনে হলো কেউ আমার কেউ আমার কলজেটা টেনেহিঁচড়ে ছিড়ে নিচ্ছে।সুপ্তর ছোট্ট হাতখানা তখনও সাদা চাদরের ফাঁক দিয়ে বেড়িয়ে আছে।সেই হাতটায় জুড়ে আছে কাউকে ছুতে না পারার অদম্য আকাঙ্খা।আমার মনে হচ্ছিল সুপ্ত যেন আমাকেই ছুঁয়ে দেবার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।আস্তে আস্তে আমার সুপ্তমনির বাড়িয়ে দেয়া হাতটা আমার চোখের আড়ালে চলে যাচ্ছে,আর হতভাগা বাবা হয়ে আমি তা দেখছি।পৃথিবীর কোন বাবাই বোধহয় এরকম মর্মান্তিক দৃশ্য দেখেনি।


গত ৩টা মাসে মিতা একটা কথাও বলেনি।প্রিসিলার কথামতো সাইকিয়াট্রিস্ট দেখিয়েছিলাম।এর মাঝে প্রিসিলা আমাকে আরও একটা দুঃসংবাদ দিল যে মিতা আর কখনই মা হতে পারবে না।অপারেশনের সময় ওর জরায়ু কেটে ফেলে দিতে হয়েছে।৩ মাস পর মিতা এলোমেলো কথা বলতে শুরু করলো।সুপ্তসুপ্তির জন্য কিনে রাখা খেলনা,জামা কাপড় গুলো নিয়ে একা হেসে হেসে কথা বলে তখন আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনা।যে মেয়েটা অনাথ বাচ্চাদের জন্য সারাটা জীবন উৎসর্গ করলো,সেই মেয়েটিই আর কখনো মা হতে পারবে না।হয়তো এজন্যই মাঝে মাঝে বিধাতার অংকগুলো বড্ড কঠিন মনে হয়।

এই কথা যখন লিখছি তখন ঘড়ির কাটা প্রায় রাত ৩টা ছুঁয়ে গেছে।আমার দুচোখের পাতা আজ যেন একহবে না বলে পন করে নিয়েছে।আমি তাকিয়ে আছি মিতার নিস্পাপ মুখের দিকে।দু হাতে সুপ্তসুপ্তির জন্য কেনা বড় পুতুল দুটোকে পরম মমতায় জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে।মাঝে মাঝে রাতের বেলা মিতা ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখে জেগে উঠে আমাকে জড়িয়ে ধরে।তখন ঘুমন্ত মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে তার নিস্পাপ মুখের দিকে তাকিয়ে বিধাতার কাছে একটাই প্রার্থনা করি যেন,এই মেয়েটাকে এভাবেই বুকে ধরে সারাটা জীবন পার করে দিতে পারি,আমার আর কোন সুপ্তসুপ্তি চাই না।এই জীবনটা পার করে দেয়ার জন্য আমার মায়াবতীর মায়ামাখানো মিষ্টি মুখের সেই হাসিটাই যথেষ্ট...আর কিছুই চাই না আমি...
মিতা মেয়েটার সবচেয়ে বড় গুন হচ্ছে সব কিছু অনেক সহজ ভাবে ভাবতে পারা।ওকে যতো জটিল সমস্যাই ধরিয়ে দেই না কেন,একটা সহজ উপায় সে বের করবেই।হুট করে এই দেশে থেকে যাওয়াতে অভিভাবকহীন হয়ে পড়লো।দূরসম্পর্কের এক ফুফু ছাড়া দেশে আর কেউ রইল না।স্বভাবতই ওকে বিয়ে করা ছাড়া আমার উপায় ছিল না।কিন্তু ও আমাকে একবারের জন্যও চাপ দিল না।অথচ বিয়ের জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।ব্যবসায়ী বাবার একমাত্র ছেলে হলেও পারিবারিক সচ্ছলতা তেমন নেই।বিশেষ করে শেয়ার ব্যবসা আমাদের একেবারে কোণঠাসা করে দিয়েছে।আর বাবা-মা মুখে না বললেও একমাত্র ছেলের জন্য নিজে মেয়ে খোজার আকাংখা আমার চোখ এড়ায়নি।স্বাভাবিকভাবেই কঠিন সংকটের মধ্যে পরে গেলাম।কি করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না।মিতা ব্যাপারটা এতো তরল করে দিবে ভাবতেও পারিনি।স্বর্ণের গহনা,বিয়ের শপিং কোনটাতেই আমাকে তেমন খরচ করতে দিল না।মাকে রাজি করানোর ব্যাপারে ভাল চিন্তাতেই ছিলাম।সাহস করে মাকে বললাম।মুখে তেমন কিছু না বললেও মা যে ব্যাপারটা সহজভাবে নিতে পারেনি সেটা বুঝতে পারলাম।কিন্তু মিতা প্রথমদিন এসেই মায়ের মন জয় করে নিবে ভাবতেও পারিনি।

অতিসাধারণ ভাবে আমাদের বিয়েটা হলেও এই নিয়ে আমার একটুও দুঃখ ছিল না।বলা যায় মিতাই সেটা রাখতে দেয়নি।বাসররাতে মিতাকে আগ্রহভরে জিজ্ঞেস করলাম,আমাকে কি দেখে পছন্দ করলে?কিন্তু মিতার উত্তর আমাকে রীতিমতো অবাক করে দিল।বাচ্চাদের প্রতি আমার ভালোলাগাটাই নাকি ওকে বেশি আকর্ষণ করেছে।৩-৪টা মাস যখন মিতার সাথে সাথে বস্তিতে ঘুরেছি,তখনি ভাললাগাটা তৈরি হয়েছিল।কিন্তু নিজের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে কখনও সেটা মুখ ফুটে বলেনি।যাবার ১৫ দিন আগে দাদীকে ভাললাগার কথাটা বলেই ফেললো।কিন্তু দাদী কিছুতেই রাজি না।যে দাদিটা ২ বছরের মা মরা মেয়েটাকে নিজের বুকে আগলে রেখে বড় করেছে,সেই দাদীর অবাধ্য হওয়ার শক্তি মিতার ছিল না।শেষ ১৫টা দিন ভিতরে ভিতরে নিজেই পুড়েছে,কিন্তু মুখ ফুটে কাউকেই বলেনি।যাবার ৫ দিন আগে মিতাকে ফোনে হেসে হেসে কথা বলতে দেখে একটু অবাকই হলেন।মিতার কথাবার্তা শুনে সেটা কে আর বুঝতে বাকী রইল না।কিন্তু কাছে এসে দেখলেন,মেয়েটা হেসে হেসে কথা বলছে ঠিকই কিন্তু চোখ থেকে টপ টপ করে পানি পরেই যাচ্ছে।মা-মরা মেয়েটাকে এভাবে কখনো তিনি কাঁদতে দেখেননি।এই মেয়েটা কোনদিন তার কাছে কোনদিন কিছু আবদার করেনি।ছোটোবেলায় খাবার নিয়ে কোনদিন বিরক্ত করেনি।ক্ষুধা পেলে শুধু মুখের বার বার শুধু মুখ তুলে তাকাতো।ওই রাত্রেই তিনি অনেক ভেবেচিন্তে ঠিক করলেন মেয়েটার এই আবদারটা তিনি অপূর্ণ রাখবেন না।ভোর বেলায় অন্য দিনের মতই মেয়েটাকে ঘুম থেকে জাগাতে গেলেন।নিস্পাপ মেয়েটার মুখের দিকে তার বুকের গভীরে কেমন যেন কান্না উগলে উঠলো।মেয়েটাকে বুকে জড়িয়ে ধরতে গিয়ে দেখতে পেলেন বালিশটা ভিজে আছে।চোখ খুলে নিজেকে দাদীর কোলে পেয়ে মিতা যারপরানাই অবাক হল।দাদী শুধু মুখ ফুটে তার ভালোলাগার মানুষটার নম্বর চাইল।সারারাত কেদে কেদে মিতা বালিশটা ভিজিয়েছিল।সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই দাদীর বুকটা আবার সুখের কান্নায় ভেজাতে হল।সেই দাদিই প্ল্যান করেছেন কিভাবে হাসানকে(আমাকে)চমকে দিতে হবে।দাদীকে আমেরিকার প্লেনে উঠিয়ে দিতে ঠিকই এয়ারপোর্টে এসেছিল মিতা।৩ মাস পর এই দাদীই আমাদের বিয়ের সব জোগাড়যন্ত্র করেছিলেন।

বিয়ের পর আমি মহাঝামেলায় পরে গেলাম!!একমাত্র ছেলে হিসেবে বাবা মার কাছে একচেটিয়া আদর পেতাম।আর সেই আদরের সিংহ ভাগ কেড়ে নিল মিতা একাই।অল্পদিনেই আব্বু-আম্মু মিতার এতো ভক্ত হয়ে গেল বাসায় আমি মোটামুটি অপাংক্তেয় হয়ে গেলাম।ছোট্ট সংসারটা সুখেই কাটছিল।ছোট্ট ছোট্ট খুনসুটি আর অভিমানগুলো নিয়েই কাটছিল দিনগুলো।বিয়ের প্রথম থেকেই মিতার ইচ্ছা ছিল মা হওয়ার।কিন্তু আমার অনিচ্ছায় সেটা আর হয়ে উঠেনি।মিতা বলতো আমাদের প্রথম বেবিটা ছেলে হবে,আর বলতাম মেয়ে হবে।ও আমাকে সুপ্তর বাপ বলে ডাকতো,আর আমি ডাকতাম সুপ্তির মা।মায়ের প্রবল ইচ্ছায় বিয়ের ৭ মাসের মাথায় সন্তান নেবার সিদ্ধান্ত নিলাম।ভাগ্যদেবী বোধ হয় সুপ্ত অথবা সুপ্তিকে দুনিয়াতে পাঠাতে চাইলেন না।বিয়ের ২ বছর হয়ে গেল কিন্তু আমরা সন্তান নিতে পারলাম না।মিতার ধৈর্য ধরতে পারল না। ৯ মাসে ঢাকার বিখ্যাত গাইনি ডাক্তার দেখিয়ে ফেললাম।কিন্তু কিছুতেই কিছু হল না।শেষ মিতাকে নিয়ে কলকাতায় গেলাম।সেখানেও সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদটা শুনলাম।ওরা প্রায় ৩ মাস জুড়ে বিভিন্ন টেস্ট করে বলল,মিতা কখনই মা হতে পারবে না।পুরোবাসায় সুখ নামক বস্তুটি বিদায় নিল।সবাই কম বেশি শোকার্ত হলেও মিতা একেবারে ভেঙ্গে পরল।শেষে মিতার দাদী চিকিৎসার জন্য আমাদের আমেরিকা যাবার ব্যবস্থা করে দিলেন।আমেরিকার ভার্জিনিয়ার হোপ ফার্টিলিটি সেন্টারে মিতার চিকিৎসা হল।ডা প্রিসিলা আমাদের ক্লমিফেন থেরাপির জন্য সময় চাইলেন।পুরোটা সময় মিতাকে শান্ত রাখতে আমাকে লেগে থাকতে হয়েছে।

কোন একটা মেঘলা সকালে মিতাকে নিয়ে হপকিন্স লেকের পাড় ধরে হাঁটছিলাম।মিতার মন ভয়ঙ্কর খারাপ আর আমি ওর মন ভালো করার ব্যর্থ চেষ্টা করেই যাচ্ছিলাম।হঠাত ও মাথা চেপে ঘাসের উপর শুয়ে পড়ল।আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না।পাশের একটা কটেজ থেকে ৯১১ তে ফোন দিলাম।ওই দিন রাতেই ডাঃ প্রিসিলা আমাদের জীবনের সেরা সংবাদটা দিলেন।বাবা হবার আনন্দ যে মানুষকে এতো পুলকিত করতে তা আমার ধারনা ছিল না।৫ মাস পর যখন প্রিসিলার কাছে শুনলাম আমরা টুইন বেবি পেতে যাচ্ছি,তখন কমলাপুর বস্তির সেই জমজ দুটার কথা মনে পরল,যাদের দেখে মিতারও জমজ বাচ্চার সাধ জেগেছিল।আমরা বোধহয় আমাদের জীবনের সবচেয়ে সেরা সময় তখনি কাটিয়ে ফেলেছিলাম।পরে সনোগ্রাম করে জানতে পেরেছিলাম একজন ছেলে,একজন মেয়ে।মিতা মার্কেট ঘুরে ঘুরে আমাদের সুপ্ত-সুপ্তির জন্য জামা কাপড়,খেলনা এমনকি ছবিযুক্ত বই পর্যন্ত কিনে রেখেছিল।আমেরিকায় চিকিৎসার খরচের বেয় বাহুল্যতা সবারই জানা।সেই জন্যই একটা ফুডকর্নারে খণ্ডকালীন চাকরী নিয়েছিলাম।সারাদিনের হাড়ভাঙ্গা খাটুনি খেটে বাসায় ফিরে যখন মিতার পেতে কান রেখে সুপ্ত-সুপ্তির হৃদয়ের শব্দ পেতাম তখন সব ক্লান্তিগুলো কোথায় যে হারিয়ে যেতো।মিতার পেটে হাত রেখে যখন সুপ্ত-সুপ্তির খুনসুটি টের পেতাম তখন অদ্ভুত ভাললাগায় মনটা ভরে যেতো।প্রতিটা রাত আমি আর মিতা ওদের সাথে কতো যে গল্প করেছি।মিতাকে আরও ভালবাসতে ইচ্ছে হতো।এই অদ্ভুত শিহরন জাগানো ভালবাসাটা আমি কোনদিনই কলমের কালিতে এঁকে বুঝাতে পারবো না।

বিধাতার বোধহয় একটু অন্যভাবেই ভেবে রেখেছিলেন।মিতার ডেলিভারির তখনও দেড় মাস বাকি।টাউনসার্ভিসে করে শিকাগোতে মিতাকে ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় ফিরছিলাম।আমাদের সামনেই জনসন স্কয়ারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটনা।আমাদের ড্রাইভার অনেক দক্ষ হওয়াতে সময়মত হার্ডব্রেক করাতে বড় বাচা বেচে গেলাম।বাসের কারোরই তেমন ক্ষতি হয়নি।আল্লাহর কাছে হাজারো শুকরিয়া জানালাম।কিন্তু বাসায় এসে আমার জীবনের কেয়ামত শুরু হয়ে যাবে তা কি জানতাম?বাসায় ফিরে আমি আর মিতা ড্রইং রুমে বসে ছিলাম।প্রায় ১০ মিনিট পর মিতা বলল ওর মাথাটা ঘুরাচ্ছে।আমি ওকে গোসল করে আসতে বললাম।কিন্তু মিতা যেতেই দেখলাম ড্রইং রুমের কার্পেটে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ।বাথরুমের সামনে আমার সামনে আরো ভয়ংকর কিছু অপেক্ষা করছিল।সেখানে দেখি মিতা মুখ থুবড়ে পরে আছে।আমেরিকায় ৯১১ সিস্টেমটা না থাকলে মিতার জন্য আমার কিছুই করার থাকতো না।এর পরের ৩টা ঘণ্টা আমি এখনও স্মরণ করতে পারিনা।২২ মিনিটের মাথায় মিতাকে ইমারজেন্সির লোকজন ডাঃ প্রিসিলার ওখানে নিয়ে গেল।ওই টাউনসার্ভিসের বাসটা যখন হার্ডব্রেক কষেছিল,তখন মিতা পেটে কিছুটা আঘাত পেয়েছিল।সে থেকেই রক্তক্ষরণের শুরু।প্রচণ্ড রক্তক্ষরণের জন্য মিতা শকে চলে গেলো।৭ ব্যাগ রক্ত দেবার পরও ওর অবস্থার উন্নতি হল না।রক্ত শূন্যতার জন্য ওর বাচ্চার নড়াচড়া একেবারে বন্ধের পথে।ঠিক তখনি প্রিসিলা জানালো,মিতার অপারেশন লাগবে কেননা ইন্টারনাল ব্লিডিং কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছে না।ওটিতে প্রিসিলা জানিয়ে গেল মিতা বাচাতে গেলে হয়তো সুপ্তসুপ্তিকে বাঁচানো যাবেনা।৬ ঘণ্টার অপারেশনের পর প্রিসিলা ওটি থেকে বেরিয়ে এল।ওর মুখ দেখে কিছুই অনুমান করতে পারলাম না।ম্লান মুখে বলল,your wife is safe now।কিন্তু ওর মুখের ম্লানতার কারনটা ধরতে পারলাম না।ওর পেছনে ছোট্ট স্ট্রেচারে রাখা পাশাপাশি দুটো ছোট্ট শরীর সাদা ধবধবে চাদর দিয়ে ঢাকা।সাদা চাদরের আড়ালে ছোট্ট একটা হাত বেড়িয়ে আছে।সাদা চাদর উঠিয়ে যা দেখলাম,তা বোধহয় পৃথিবীর কোন বাবাই দেখেননি।রক্তে মাখামাখি সুপ্তসুপ্তি নিথর হয়ে শুয়ে আছে।কাল কুচকুচে চোখ,কাজল টানা সুপ্ত যেন আর আমারই ছোটকালের রূপ ধরে শুয়ে আছে।আর সুপ্তির মায়ের আর যাই পাক না কেন,ওর মিষ্টি হাসিটা যে পেয়েছে তা ওর ঠোঁট ছোঁয়া হাসিটা দেখেই বুঝা যায়।তখনও আমি বিশ্বাস করতে চাই নি,সুপ্ত-সুপ্তি কখনও আমাকে বাবা না ডেকেই দুনিয়া থেকে বিদায় নেবে।ওয়ার্ড-বয় যখন স্ট্রেচার এগিয়ে নেবার জন্য ধাক্কা দিল,তখন মনে হলো কেউ আমার কেউ আমার কলজেটা টেনেহিঁচড়ে ছিড়ে নিচ্ছে।সুপ্তর ছোট্ট হাতখানা তখনও সাদা চাদরের ফাঁক দিয়ে বেড়িয়ে আছে।সেই হাতটায় জুড়ে আছে কাউকে ছুতে না পারার অদম্য আকাঙ্খা।আমার মনে হচ্ছিল সুপ্ত যেন আমাকেই ছুঁয়ে দেবার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।আস্তে আস্তে আমার সুপ্তমনির বাড়িয়ে দেয়া হাতটা আমার চোখের আড়ালে চলে যাচ্ছে,আর হতভাগা বাবা হয়ে আমি তা দেখছি।পৃথিবীর কোন বাবাই বোধহয় এরকম মর্মান্তিক দৃশ্য দেখেনি।


গত ৩টা মাসে মিতা একটা কথাও বলেনি।প্রিসিলার কথামতো সাইকিয়াট্রিস্ট দেখিয়েছিলাম।এর মাঝে প্রিসিলা আমাকে আরও একটা দুঃসংবাদ দিল যে মিতা আর কখনই মা হতে পারবে না।অপারেশনের সময় ওর জরায়ু কেটে ফেলে দিতে হয়েছে।৩ মাস পর মিতা এলোমেলো কথা বলতে শুরু করলো।সুপ্তসুপ্তির জন্য কিনে রাখা খেলনা,জামা কাপড় গুলো নিয়ে একা হেসে হেসে কথা বলে তখন আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনা।যে মেয়েটা অনাথ বাচ্চাদের জন্য সারাটা জীবন উৎসর্গ করলো,সেই মেয়েটিই আর কখনো মা হতে পারবে না।হয়তো এজন্যই মাঝে মাঝে বিধাতার অংকগুলো বড্ড কঠিন মনে হয়।

এই কথা যখন লিখছি তখন ঘড়ির কাটা প্রায় রাত ৩টা ছুঁয়ে গেছে।আমার দুচোখের পাতা আজ যেন একহবে না বলে পন করে নিয়েছে।আমি তাকিয়ে আছি মিতার নিস্পাপ মুখের দিকে।দু হাতে সুপ্তসুপ্তির জন্য কেনা বড় পুতুল দুটোকে পরম মমতায় জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে।মাঝে মাঝে রাতের বেলা মিতা ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখে জেগে উঠে আমাকে জড়িয়ে ধরে।তখন ঘুমন্ত মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে তার নিস্পাপ মুখের দিকে তাকিয়ে বিধাতার কাছে একটাই প্রার্থনা করি যেন,এই মেয়েটাকে এভাবেই বুকে ধরে সারাটা জীবন পার করে দিতে পারি,আমার আর কোন সুপ্তসুপ্তি চাই না।এই জীবনটা পার করে দেয়ার জন্য আমার মায়াবতীর মায়ামাখানো মিষ্টি মুখের সেই হাসিটাই যথেষ্ট...আর কিছুই চাই না আমি...
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×