somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অগন্ড ভিসি আর তাদের বিচি

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শহীদ তিতুমীরকে আপনি মাথায় তুলে রাখেন কারন সে তার সর্বশক্তি দিয়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়েছিলো ! আপনি তিতুমীরকে সমর্থন দিয়ে দোষ দিলেন ব্রিটিশদের !
.
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার-মাষ্টারদা সূর্যসেনের নামে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের নামকরন করে তাদেরকে মনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে, তো তাদের অবদান কি ছিল এই বাঙলায়?
.
ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম ! আপনি এখন প্রীতিলতা-সূর্যসেনকে সর্মথন দিয়ে দোষ দিতে জানলেন ব্রিটিশদের, বুঝতে শিখলেন ব্রিটিশদের হটাতে হবে !
.
২১ শে ফেব্রুয়ারী খালি পায়ে হেঁটে শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাই কারন শফিক-বরকত-রফিকেরা পাকি প্রেতাত্বার লেলিয়ে দেওয়া পুলিশবাহিনীর সামনে তাদের বুক পেতে দিয়েছিলো, সেই তাজা রক্তের বিনিময়ে বাঙলায় কথা বলার আইনগত অধিকার পেয়েছিলাম, এটুকুকে স্বরন করার জন্যেই খালি পায়ে হাটি ! রফিককে ধন্যবাদ জানিয়ে ঘৃণা করি পাকিস্তানীদের !
.
আপনি শহীদ আসাদের নামে 'আসাদগেট' বানিয়েছেন, তো আসাদের অবদান কি ছিল বাংলায় ? ৬৯'র ২০ জানুয়ারী (তারিখটা বিসিএস পরীক্ষার্থীদের কাজে লাগতে পারে) পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন, তার রক্ত ঢেলে দেওয়ার বিনিময়ে ৬৯'র গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত হয়ে গেলো, বাঙলীর স্বাধীনতার জন্যে লম্বা একটা প্রশস্ত পথ পেয়ে গেলো ! রচিত হলো 'আসাদের টি-শার্ট', 'চিলেকোঠার সেপাই' 'প্রথম আলো'.... আসাদকে মাথার মুকুট বানিয়ে পাকিস্তানীদের ঘৃণা করতে শিখলাম আমরা ! বুঝতে শিখলাম, পাকিস্তানি তাড়াতে হবে !
.
যদি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কথা বলি, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর হাতে যে মানুষটা তার রাজনৈতিক জীবনের ৪৬৮২টা দিন শুধু জেলখানাতেই কাটিয়ে দিয়েছিলেন, তার কন্ঠের দাপটে আইয়ুবের হাত-পা কাপাকাপি শুরু হয়ে যেতো, তাকে পাকিস্তানীরা কি উপাধি দিয়েছিলো? দেশের সাধারন জনগণের অধিকারের জন্যে লড়তে গিয়ে তিনি পাকি প্রেতাত্বাদের কাছ থেকে উপাধি পেয়েছিলেন 'দেশদ্রোহী', দেশবিরোধী-নালায়েক ইত্যাদি...... আপনি বলতে শিখলেন, ব্রিটিশদের খেদিয়েই আমরা মুক্তি পেয়ে যাই নি, এই পাকিস্তানীদেরকেও দূর করতে হবে !
.
শেখ মুজিব আজ আমাদের মাথার মুকুট, আর তাকে 'দেশদ্রোহী' আখ্যা দেওয়া তৎকালীন শাষকরা আমাদের কাছে আজ 'পাকি প্রেতাত্বা-হানাদারবাহিনী' হিসেবে পরিচিত !
.
অবশেষে স্বাধীনতা পেলাম ! আজ যখন SUST এ পুলিশ রাবার বুলেট-টিয়ার শেল ছুড়ে শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত করে শুধুমাত্র একজন অপদার্থ ভিসির গদি টিকিয়ে রাখার জন্যে, তখন আপনি কাকে দোষ দেবেন ? ব্রিটিশরা তো নাই- পাকিস্তানীরাও পালিয়েছে ৫০ বছর আগে, এখন কার বিরুদ্ধে আন্দোলন করবেন ?
.
আমাদের শিক্ষকেরা আমাদের মাথার মুকুট হওয়ার কথা ছিল, বাদশাহ আলমগীর হারিয়ে গেলে কি হবে, তার শিক্ষাটা অন্তত তার শিক্ষার্থীরা ধারন করতে পারতো যদি শিক্ষাগুরুটা সেই আলমগীরের শিক্ষকের মতো হতো ! আজ দেশের সবকডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের দিকে তাকান, একজন ভিসির প্রতিও তার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট কি না জানার চেষ্টা করেন, মোটা দাগে উত্তর পাবেন "এই ভিসি আমরা চাই না'' কোথাও গণআন্দোলনের সুযোগটা দানা বেধে উঠলেই কেবল তার প্রতিচ্ছবিটা ভেসে ওঠে ! কিন্তু তাদের ক্ষমতা ধরে রাখার সিস্টেমটা এখনো এনালগ'ই থেকে গেলো ! তারা এখনও শিখতে পারলেন না যে, 'রাবার বুলেট-টিয়ারশেল ছুড়ে কেও কোনোদিন তার ক্ষমতা আকড়ে ধরে রাখতে পারে নি, সেও পারবে না ! অথচ কতো সহজে শিক্ষার্থীদের দাবিটার সমাধান করা যেতো ! জাস্ট ভিসি স্যার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সামনে গিয়ে যদি হাত উচিয়ে বলতেন, 'তোমাদের কি সমস্যা আমাকে বলো', তাহলে কি আপনাকে শিক্ষার্থীরা পিটিয়ে মেরে ফেলতো ? আমার বিশ্বাস আপনার সাথে সেই শিক্ষার্থীরা উচু কন্ঠে কথা বলারও সাহস পেতো না কারন আমাদের শিক্ষার্থীরা এতোটা বেয়াদব এখনো হয় নি, কিন্তু আপনি উল্টা পথ ধরলেন, ভেবেই নিলেন, রাবার বুলেটই শিক্ষার্থীদের কন্ঠ থামিয়ে দেবে, হলো না তো কারন তা তো কোনোদিনই হয় নি ! আজ শিক্ষার্থীরা এক দফা দাবি করছে, 'ভিসির পদত্যাগ' বাকী সব দাবি বাদ ! স্লোগানটা শোনেন, 'এক দফ এক দাবি-ফরিদ তুই কবে যাবি'! চিন্তা করেন, কি চেয়েছিলেন আর কি ঘটলো ! একজন ভিসি'র সম্মান কি আজ এতোটাই নিচে যে তারই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাকে তুই তোকারী করে ! কিন্তু ফরিদ স্যার সেটাই করতে বাধ্য করলেন ! আজ শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকেরা আলাপ করতে এসেছিলেন, ছাত্ররা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে! শিক্ষার্থীদের এমন বেয়াদব বানিয়েই 'ক্ষমতা ছাড়বেন', অথচ কতোশত পথ আপনার সামনে খোলা ছিল, এখন শুধু পেছনের দরজা দিয়ে পালানো ছাড়া বাকী সব বন্ধ !
.
আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকেরা সবসময় ভেবেই নেন, তিনিই সর্বময় ! শিক্ষার্থীরা তার হাতের পুতুল! তার কথাই শেষ কথা, তার দেওয়া গ্রেডই শেষ গ্রেড, তার করা ঔদ্ধত আচরনটাই শেষ আচরন, এটুকু স্বৈরাচারীতা না দেখালে আবার শিক্ষক হওয়ার নাম কি !
.
অথচ সেই সব আচরনের দায় তার কাধে একদিন না একদিন আসেই, কেও ধুপ করে আকাশ থেকে পাতালে পড়ে-কেও ধীরে ধীরে পড়ে কিন্তু পতনটা তার হয়ই ! তাহলে সেই 'স্বৈরাচারীতা' দেখিয়ে আপনার লাভটা কি ?
আমার মনে হয়, এই শেষ প্রশ্নটার জবাব আপনার কাছে সংরক্ষিত আছে, আর না থাকলে ইতিহাসের বই তো আছেই, ক্লাস সিক্স-সেভেন-এইট যে কোনো বই খুললেই পাবেন ! অপেক্ষা শুধু সময়ের !
.
'শিক্ষকতা মহান পেশা, শিক্ষকেরা জাতি তৈরীর কারিগর' থেকে কবে না জানি 'শিক্ষক' শব্দটাই একটা 'গালি'তে পরিণত হয়ে যায় !
.
''আমার শিক্ষকদের অন্তস্থল থেকে সম্মান করতে চাই''
এই চাওয়াটা কি খুব বেশী চাওয়া স্যার ?

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৪৫
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইরান ইসরাইলের আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ আর আমাদের সুন্নী-শিয়া মুমিন, অ-মুমিন কড়চা।

লিখেছেন আফলাতুন হায়দার চৌধুরী, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩০

(ছবি: © আল জাযীরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক)

শ্রদ্ধেয় ব্লগার সামিউল ইসলাম বাবু'র স্বাগতম ইরান পোষ্টটিতে কয়েকটি কমেন্ট দেখে এই পোষ্ট টি লিখতে বাধ্য হলাম।
আমি গরীব মানুষ, লেখতে পারিনা। তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৯




আমরা পৃথিবীর একমাত্র জাতী যারা নিজেদের স্বাধীনতার জন্য, নিজস্ব ভাষায় কথা বলার জন্য প্রাণ দিয়েছি। এখানে মুসলিম হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান চাকমা মারমা তথা উপজাতীরা সুখে শান্তিতে বসবাস করে। উপমহাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্যা লাস্ট ডিফেন্ডারস অফ পলিগ্যামি

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০


পুরুষদের ক্ষেত্রে পলিগ্যামি স্বাভাবিক এবং পুরুষরা একাধিক যৌনসঙ্গী ডিজার্ভ করে, এই মতবাদের পক্ষে ইদানিং বেশ শোর উঠেছে। খুবই ভালো একটা প্রস্তাব। পুরুষের না কি ৫০ এও ভরা যৌবন থাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রিয় কাকুর দেশে (ছবি ব্লগ) :#gt

লিখেছেন জুন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৩



অনেক অনেক দিন পর ব্লগ লিখতে বসলাম। গতকাল আমার প্রিয় কাকুর দেশে এসে পৌছালাম। এখন আছি নিউইয়র্কে। এরপরের গন্তব্য ন্যাশভিল তারপর টরেন্টো তারপর সাস্কাচুয়ান, তারপর ইনশাআল্লাহ ঢাকা। এত লম্বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেরত

লিখেছেন রাসেল রুশো, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:০৬

এবারও তো হবে ইদ তোমাদের ছাড়া
অথচ আমার কানে বাজছে না নসিহত
কীভাবে কোন পথে গেলে নমাজ হবে পরিপাটি
কোন পায়ে বের হলে ফেরেশতা করবে সালাম
আমার নামতার খাতায় লিখে রেখেছি পুরোনো তালিম
দেখে দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×