somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুরআন শরিফের ৩০ আয়াত দ্বারা ঈসা (আঃ)-কে মৃত প্রমাণ করার কাদিয়ানী অপব্যাখ্যার জবাব

০৮ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



একটি প্রতীকী ছবিঃ আল্লাহতায়ালা ঈসা (আঃ)-কে নিজের সান্নিধ্যে উঠিয়ে নেন! (কুরআন ৪ঃ১৫৮)

শুরুকথাঃ- ইসলামের অনেকগুলো অকাট্য আকীদা বিশ্বাসের অন্যতম - হযরত ঈসা (আঃ) সহ ইতিপূর্বে যত নবী রাসূল প্রেরিত হয়েছিলেন তাঁদের প্রত্যেকের প্রতি ঈমান আনয়ন করা ও ভক্তি শ্রদ্ধা করা ফরজ! ইসলামের প্রথম যুগ থেকে তাওয়াতূর তথা ধারাবাহিকভাবে যে সমস্ত আকীদাগত বিষয় আমাদের পর্যন্ত চলে আসছে এর মধ্যে একটি হচ্ছে, এই পৃথিবীতে শেষ যুগে হযরত ঈসা (আঃ) এর দ্বিতীয় আগমন। তিনি আকাশ থেকে ফেরেশতার মাধ্যমে অবতরণ করবেন। তাঁর অবতরণকরার পূর্বেই হযরত ইমাম মাহদীর আত্মপ্রকাশ হবে। বহু সহীহ হাদীসে আছে, হযরত ইমাম মাহদী (রাঃ) আহলে বায়েত (নবী বংশ) থেকে হবেন এবং মদীনায় জন্মিবেন। তিনি মক্কায় প্রথম বাইয়াত গ্রহণ করবেন। তার নাম আর পিতার নাম যথাক্রমে রাসূল (সাঃ)-এর নাম আর পিতার নামের সাথে মিলে যাবে! আজকের লিখাটিতে মির্যা কাদিয়ানীর স্ববিরোধী কথাবার্তা, ঈসা (আঃ) এর জীবিত থাকার বিরুদ্ধে আরোপিত দলিল(?) আর যুক্তির খন্ডন করব, ইনশাআল্লাহ।

মির্যা কাদিয়ানীর বই থেকেঃ ঈসা (আঃ) এর দ্বিতীয় আগমন করার বিষয়টি মুসলিম উম্মাহার সর্বসম্মত ও তাওয়াতূরের পর্যায়ভুক্ত বলে-ই স্বীকারোক্তি স্বয়ং মির্যা কাদিয়ানীর বইতেও রয়েছে। দেখুন রূহানী খাযায়েন খন্ড ৩ পৃষ্ঠা নং ৪০০। আর ইসলামের সর্বসম্মত তথা ইজমায়ী আকীদার অস্বীকারকারী সম্পর্কে স্বয়ং মির্যার বইতে-ই লিখা আছে যে, এমন ব্যক্তির উপর আল্লাহ, ফেরেশতা এবং সমস্ত মানুষের অভিশাপ বর্ষিত হোক। দেখুন, রূহানী খাযায়েন খন্ড ১১ পৃষ্ঠা ১৪৪। মির্যা কাদিয়ানীর আরেকটি লিখাতে সুস্পষ্টভাবে আরো লিখা আছে, তাওয়াতূরের অস্বীকারকারী ইসলাম থেকে খারিজ ব্যক্তির ন্যায়। দেখুন রূহানী খাযায়েন খন্ড ১৩ পৃষ্ঠা ২০৬।

তো এবার সমীকরণ কিভাবে মিলাবেন? স্ববিরোধী প্রবক্তা মির্যা কাদিয়ানী পরবর্তীতে নিজেই নিজের বিশ্বাস বদলে ফেলেন। যেই ঈসার দ্বিতীয় আগমনকে একটি সর্বসম্মত আর তাওয়াতূর পর্যায়ের আকীদা বললেন, পরে ফতুয়াবাজি করে নিজেই লিখলেন, কুরআনের ত্রিশ (৩০) আয়াত দ্বারা ঈসা (আঃ) মৃত প্রমাণিত; তিনি আর আসবেন না! যার ফলে বলা যায় যে, তিনি নিজেই নিজের ফতুয়াতে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গেছেন!

প্রথমে জেনে রাখা দরকার যে, হযরত ঈসা (আঃ)- কে পবিত্র কুরআনে মোট চারটি নামে ডাকা হয়েছে। এর মধ্যে ঈসা নামটি কুরআনে এসেছে ২৫ বার আর ‘মাসীহ’ নাম এসেছে ১১ বার। আরো জানা কথা ঈসা (আঃ) এর নাম ‘ঈসা ইবনে মরিয়ম’ রেখেছেন স্বয়ং আল্লাহই। এমনকি হযরত মরিয়ম (আঃ) এর নামটিও রেখেছেন মহান আল্লাহ। এবার দেখুন, পবিত্র কুরআনে ঈসা (আঃ) সম্পর্কে কিরূপ মর্যাদাপূর্ণ উক্তি রয়েছে।

পবিত্র কুরআনে হযরত ঈসা (আঃ) এর মর্যাদার বর্ণনাঃ পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, যখন ফেরেশতারা বলল, হে মরিয়ম! আল্লাহ তোমাকে নিজের পক্ষ থেকে কালেমার সুখবর দিচ্ছেন, যার নাম ‘মাসীহ ঈসা ইবনে মরিয়ম’। সে দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মানিত এবং সান্নিধ্যপ্রাপ্তদের অন্যতম। (সূরা আলে ইমরান-৪৫)। এই আয়াতে পরিস্কারভাবে ঈসা (আঃ)-এর জন্মের সুসংবাদ ও তাঁর অতিব মর্যাদার বিষয় আলোচিত হয়েছে। এবার দেখুন, এরকম একজন সম্মানিত রাসূল সম্পর্কে কাদিয়ানের মির্যা গোলাম আহমদ (১৮৩৮-১৯০৮ইং) কেমন অপ্রীতিকর উক্তি করেছেন!

কাদিয়ানীদের তথাকথিত ইমাম মাহদী ও কৃষ্ণ মির্যা গোলাম আহমদ লিখেছেন, ঈসা (আঃ) মদ খেতেন (নাউযুবিল্লাহ)। এটি লিখা আছে তারই রচিত ‘কিশতিয়ে নূহ’ ৮৭ নং পৃষ্ঠায়। বইটি আহমদিয়া বাংলা ওয়েবসাইটেও পাওয়া যাবে। [আরো দেখুন 'রূহানী খাযায়েন খন্ড নং ১৯ পৃষ্ঠা নং ৭১] এখন চিন্তার বিষয় যে, একজন সম্মানিত নবীর অবমাননা এর চেয়ে বেশি আর কী হতে পারে!?
মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর কৃষ্ণ দাবীর ডকুমেন্ট



তারপর ঈসা (আঃ)-কে 'মদ্যপ' আখ্যা দেয়ার ডকুমেন্টের জন্য মির্যা কাদিয়ানীর রচিত ৮৩টি বইয়ের সমষ্টি ২৩ খন্ডে প্রকাশিত রূহানী খাযায়েন এর ১৯ নং খন্ডের ৭১ নং পৃষ্ঠাটির স্কিনশর্ট নিচে দেখুন



চিন্তা করুন! যে রাসূলের জন্মের সুসংবাদ দিয়েছেন আল্লাহ নিজেই, যাঁর নামটাও রেখেছেন তিনি নিজে এবং ঘোষণা দিয়েছেন যে, ঈসা (আঃ) দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মানিত এবং সান্নিধ্যপ্রাপ্তদের অন্যতম; কাজ্জাব মির্যা কাদিয়ানী তাঁকে (আঃ) অপমান করতে 'মদ্যপ' বলে আখ্যায়িত করার মানেটা কী? সাধারণ মানুষের অন্তরে তাঁর প্রতি ঘৃণাবোধ সৃষ্টি করার দুরভিসন্ধি নয় কি? অধিকন্তু কাদিয়ানিদের তাবলীগী পকেটবুক (ঊর্দু) বইতেও লিখা আছে যে, মদ পান করা ঈসায়ীধর্মেও অবৈধ ছিল। এবার তাহলে ঈসা (আঃ) নিজে খোদ কিভাবে মদ পান করতে পারেন? অপ্রিয় হলেও সত্য এটাই যে, মির্যা কাদিয়ানী নিজেই ছিল ‘আফিমখোর’। যেজন্য নবীদের উপর অপবাদ রটিয়ে প্রকারান্তরে সে নিজেকেই রক্ষা করতে চেয়েছিল! উল্লেখ্য, মির্যার প্রধান শিষ্য হাকিম নূর উদ্দীনের উদ্ধৃতি দ্বারা মির্যার আফিম খাওয়া প্রমাণিত। (বিস্তারিত সীরাতে মাহদী দ্রষ্টব্য)।

মির্যা কাদিয়ানীর বইতে ২৬টি ঈমান বিধ্বংসী কথাবার্তার একটি ডকুমেন্টারি তালিকা
এখানে ক্লিক করুন

মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে কাদিয়ানিদের প্রতি আমার একটি প্রশ্ন
মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী সাহেব তিনি মুজাদ্দিদ দাবির ভেতর ১০ বছর অতিবাহিত করার পরেও জীবনে কখনো বলেন নি যে, ঈসা (আঃ) মৃত্যুবরণ করেছেন, তিনি আকাশ থেকে আসবেন না। বরং মির্যার ছেলে মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ তার "হাকিকাতুন নবুওত" বইতে লিখেন, মির্যা সাহেব তার মাসীহ খেতাব পাওয়া সত্ত্বেও ১০ বছর পর্যন্ত এটাই বিশ্বাস করে আসছিলেন যে, ঈসা (আঃ) জীবিত এবং সশরীরে আকাশে আছেন। (হাকিকাতুন নবুওতঃ ১/৪৬৩)।

কিন্তু ১৮৯১ সালের পর মির্যা কাদিয়ানী নিজেকে মাসীহ ঈসা দাবী করলেন। আর তারপর কুরআনের নাম ভেঙ্গে বলতে লাগলেন ঈসা (আঃ) মারা গেছেন, তিনি আকাশে নন। এখন প্রশ্ন হল, মির্যা সাহেব যেসব আয়াত দিয়ে ১৮৯১ সালের পরবর্তী সময় ঈসাকে মৃত প্রমাণ করতে চাইছেন সেসব আয়াত কি ইতিপূর্বে পবিত্র কুরআনে ছিল না? নাকি তিনি তখন আয়াতগুলো দেখেন নি? অথবা দেখে থাকলেও বুঝেননি? অথচ মির্যা সাহেব মুজাদ্দিদ দাবী করে এও লিখেছেন যে, মুজাদ্দিদকে আল্লাহতালা কুরআনের বুঝ দান করে থাকেন। (রূহানী খাযায়েন ১৪/২৮৮)। আরেক জায়গায় তিনি নিজের ব্যাপারে লিখেছেন 'আল্লাহ তায়ালা আমাকে ভুলের উপর এক মুহূর্তও স্থির রাখেন না। আমাকে প্রত্যেক ভুল ভ্রান্তি থেকে রক্ষা করেন।' (রূহানী খাযায়েন ৮/২৮৮)। সুতরাং তিনি ইতিপূর্বে আয়াতগুলোর প্রকৃত মর্মার্থ বুঝতে পারেননি বা তার ইজতিহাদী ভুল হয়েছিল, এধরণের কথা বলার আর কোনো সুযোগ থাকল না। জবাব দেবেন এমন কি কেউ আছেন? সুতরাং বুঝা গেল যে, পবিত্র কুরআনের ৩০ আয়াত দ্বারা ঈসা (আঃ)-কে মৃত সাব্যস্ত করতে চাওয়া মির্যার ভুল ও উদ্দেশ্যমূলক বৈ কিছুই না। নিজেকে কথিত রূপক ঈসা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা-ই ছিল তার আসল লক্ষ্য!

মূল আলোচনা শুরুঃ আমরা জানি যে, কুরআন এবং হাদীসের প্রায় বেশিরভাগ স্থানে ঈসা (আঃ)-কে ‘ঈসা ইবনে মরিয়ম’ নামেই ডাকা হয়েছে। এর কারণ, এটা আল্লাহর দেয়া নাম আর ঈসা (আঃ) যে ‘কুমারী মাতা’ মরিয়ম (আঃ) থেকে জন্ম নিয়েছেন তার ওপর জোর দেয়ার জন্য! হযরত মরিয়ম (আঃ)-এর মর্যাদা জানান দিয়ে পবিত্র কুরআন বলেন-

(আয়াত) "অতঃপর যখন তাকে প্রসব করল, তখন বলল, হে আমার রব! আমি এক কন্যা প্রসব করেছি! তাঁর প্রসব সম্পর্কে আল্লাহই ভালো জানেন, ‘ছেলে তো কন্যার মত নয়’ আর আমি তাঁর নাম মরিয়ম রাখলাম” (সূরা আলে ইমরান ৩৬)

কাজ্জাব মির্যা কাদিয়ানি সে এইসব সত্যকে পাশ কাটানোর জন্য এবং নিজেকে মাসীহ সাব্যস্ত করার জন্য একটা রসালো গল্প সাজিয়েছিল। তার ভাষায় -

"তিনি (আল্লাহ) বারাহীনে আহমদিয়ার তৃতীয় অংশে আমার নাম রেখেছেন মরিয়ম। অতঃপর যেমন বারহীনে আহমদীয়ায় প্রকাশিত হয়েছে, দু’বছর পর্যন্ত আমি মরিয়মের গুণাবলী সহকারে লালিত হই...অতঃপর মরিয়মের ন্যায় ঈসার রূহ [আত্মা] আমার মধ্যে ফুঁৎকারে প্রবেশ করানো হয় এবং রূপকভাবে আমাকে গর্ভবতী করা হয়। অবশেষে কয়েকমাস পরে যা দশ মাসের চাইতে বেশী হবেনা, সেই এলহামের মাধ্যমে যা বারহীনে আহমদিয়ার চতুর্থ অংশে উল্লেখ হয়েছিল। আমাকে মরিয়ম থেকে ঈসায় পরিণত করা হয়েছিল। এ ভাবেই আমি হয়ে গেলাম ঈসা ইবনে মরিয়াম।" (মির্যা গোলাম কাদিয়ানির এই ছিল নিজের মাসীহ হবার কল্পিত-নির্ভর ব্যাখ্যা) কী আর বলব!!

শুধু এইটুকুই বলি, মির্যা কাদিয়ানি ছিল মূলত ব্রিটিশদের দালাল ও তাদের লাগানো চারাগাছ এবং অস্বাভাবিক মাতাল! কারণ, তার পুত্র মির্যা বশির আহমদ এম.এ রচিত সীরাতে মাহদী দেখুন! মির্যা কাদিয়ানী হিস্টোরিয়া (মস্তিষ্ক বিকৃতি) ব্যাধিতে আক্রান্ত ছিল।

মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর বইতেই তার নিজের ব্যাপারে বৃটিশ সরকারের লাগানো চারাগাছ বলে স্বীকারোক্তির প্রমাণ
এখানে ক্লিক করুন
পবিত্র কুরআন এবং সহীহ হাদীস সমূহে হযরত ঈসা (আঃ) এর দ্বিতীয় আগমন করার পক্ষে ইংগিত থাকার প্রমাণ
এখানে ক্লিক করুন

হযরত ঈসা (আঃ)-কে আকাশে নিয়ে যাওয়া সংক্রান্ত কুরআনের আয়াত-

আয়াতঃ "(ইহুদীরা বলল) আমরা আল্লাহর রাসূল ঈসা মাসীহকে হত্যা করেছি; (তাদের খন্ডন করে আল্লাহ বলেন) তারা না তাঁকে হত্যা করেছে, আর না শূলে চড়িয়েছে; বরং তাদের কাছে এরূপই একটা কিছু মনে হয়েছিল। আর যারা তাঁকে নিয়ে মতভেদ করেছিল তারা এ ব্যাপারে সন্দেহে ছিল। অনুমান ব্যতীত কোনো সঠিক জ্ঞানই তাদের ছিল না। তবে নিশ্চিতই যে, তারা তাঁকে (ঈসা) হত্যা করেনি।" (সূরা নিসা ১৫৭)।

বরং আল্লাহ তাঁকে নিজের কাছে উঠিয়ে নিয়েছেন। আর আল্লাহ হলেন মহা পরাক্রমশালী।(সূরা নিসা-১৫৮)।

কাদিয়ানিদের একটি ভুল ব্যাখ্যা ও তার খণ্ডনঃ কাদিয়ানিরা এখানে বলে, রাফা'আ মানে তুলে নেয়া নয়। তার মানে তাঁর সম্মান বৃদ্ধি করা হয়েছে। অথচ এটা সম্পূর্ন ভুল অনুবাদ। কারণ, সকল নবী-ই আধ্যাত্মিকভাবে পরিপূর্ণ উন্নীত লাভ করেই নবুওত লাভ করে থাকেন। সুতরাং এখানে 'রাফা'আ' শব্দের প্রকৃত অর্থ ত্যাগ করে রূপক অর্থ তথা আধ্যাত্মিক উন্নতি অর্থ নেয়া সর্বতোভাবে পরিত্যাজ্য। আগেই বলেছি, কাদিয়ানিরা কুরআনকে রূপক বই বানিয়ে নিয়েছে। তাই তারা সব কিছুরই নিজস্ব অর্থ দাঁড় করতে চেষ্টা করে। এবার তাদের রাফা'আ শব্দের অভিনব ব্যাখ্যার খন্ডন দেখে নিন!

প্রথমতঃ রাফা'আ (رفع) অর্থ (কাউকে ওপরে উঠানো) ইংরেজীতে বলে he was raised

দ্বিতীয়তঃ ১৫৭ নং আয়াতে বলা হচ্ছিল কাফেররা তাঁকে হত্যা করতে এসেছিল। প্রখ্যাত যুগ ইমাম ইবনে কাসীর (রহঃ) তাঁর তাফসীর গ্রন্থে লিখেছেন : ইহুদীরা তাঁকে হত্যার জন্য যখন তাঁর বাড়ী ঘিরে রেখেছিল, তখন তিনি তাঁর একজন হাওয়ারী (সাহাবী)-কে বললেন, কে আছ যাকে আমার চেহারার মতো করে দেয়া হবে......! অতঃপর আল্লাহ তখন তাঁকে আকাশে উঠিয়ে নিয়েছেন। অত:পর যাকে তাঁর (ঈসা) অনুরূপ বানিয়ে দেয়া হয়েছিল কাফেররা তাঁকে ঈসা ভেবে হত্যা করে আত্মপ্রসাদ নিয়েছিল। (দ্রষ্টব্যঃ আলে ইমরান ৫২- ৫৩)

প্রণিধানযোগ্য যে, এখানে ১৫৮ নং আয়াতে সমাধান দেয়া হয়েছে। যেহেতু ১৫৭ নং আয়াতে বলা হচ্ছে তাঁকে হত্যা করা হয়নি, শূলেও চড়ানো হয়নি। তাহলে তাঁকে কী করা হয়েছিল কিংবা তিনি সেখান থেকে কীভাবে রক্ষা পেয়েছেন? সম্মানের দিক থেকে উন্নীত করানো বুঝালে তাঁকে তখন আল্লাহ কীভাবে রক্ষা করেছিলেন তার কোনোই সমাধান পাওয়া যাবেনা। এছাড়া ১৫৮ নং আয়াতে ‘সম্মানের দিক থেকে উন্নীত (রাফা'আ)’ বুঝানোর দরকারটাই বা কী যেখানে তিনি কিভাবে ইহুদীদের পাকড়াও থেকে রেহাই পেয়েছিলেন তাঁর সমাধান দেয়া হচ্ছে!

ব্যাপারটা এই রকম, কারো বাসায় আগুন লেগেছে এবং সেখানে একজন মানুষ আটকা পড়েছে আর আপনি তার উদ্ধারের ব্যবস্থা না করে তাঁকে মোবাইল করে বললেন, তোমার মান সম্মান বৃদ্ধি করা হয়েছে, তোমার নামে স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে দেয়া হবে!! কাদিয়ানিদের 'রাফা'আ' শব্দের কৃত রূপকার্থ - আধ্যাত্মিক উন্নতি ঠিক যেন বাসায় আগুনে আটকা পড়া লোকটির মত!

অধিকন্তু আল্লাহ এখানে সমাধান দিতে চাচ্ছেন যে তিনি সেই সময় কীভাবে তাঁকে ইহুদিদের পাকড়াও থেকে রক্ষা করেছিলেন! যেমন তিনি সমাধান চিয়ে বলছেন : “বরং আল্লাহ তাঁকে নিজের কাছে উঠিয়ে (রাফা’আ) নিয়েছেন, আল্লাহ পরাক্রমশালী” (সূরা নিসা-১৫৮)। আরো সুস্পষ্ট করে বলা হয়েছে, আল্লাহ পরাক্রমশালী। তার মানে আল্লাহর জন্য তাঁকে আকাশে তুলে নেয়া কোনো ব্যাপারই না।

তৃতীয়তঃ রাফা'আ অর্থ শারীরিক তোলা নয়, আধ্যাত্মিকভাবে মর্যাদা উন্নীত করা; কিন্তু এই থিউরী ১৯০০ সালে মির্যা কাদিয়ানীর মস্তিষ্কপ্রসূত একটি নব থিউরী। তার জন্য দুঃসংবাদ এই কারণে যে, কুরআনের সঠিক ব্যাখ্যা ইসলামের আদিম যুগ থেকেই দেয়া হয়ে গেছে। ফলে আদিম কোনো ব্যাখ্যার বিরুদ্ধে নতুন কোনো ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য হবেনা, এটাই সর্বজন স্বীকৃত মত। জ্ঞানীদের নিকট গোপন থাকেনি যে, ইসলামের সব জ্ঞান ও বিজ্ঞান নিয়ে পবিত্র কুরআন আজ থেকে চৌদ্দশত বছর আগে নবীপাক (সাঃ) এর জীবদ্দশাতেই পূর্ণতা লাভ করেছিল। আল ইয়াওমা আকমালতু লাকুম দীনাকুম... অর্থাৎ আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছি। (সূরা মায়িদা-৩) আমাদের শিক্ষার জন্য এটাই যথেষ্ট।

অধিকন্তু পবিত্র কুরআনের ১০০% নির্ভুল ব্যাখ্যা দেয়ার অধিকার হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এরই রয়েছে। সূরা নাহাল আয়াত নং ৪৪ আমাদের এই কথাই শিক্ষা দেয়। কাজেই কুরআনের যেসব আয়াত মর্মের দিক থেকে অস্পষ্ট সেসব আয়াত সহীহ সূত্রে বর্ণিত হাদীস দ্বারাই আমাদের সুস্পষ্ট করে নিতে হবে। সূরা নিসার ৫৯ নং আয়াত দেখে নাও।

চতুর্থতঃ কাফেররা যেখানে বাইরে অপেক্ষা করছিল ঈসা (আঃ)-কে পাকড়াও করে শূলিবিদ্ধ করার জন্য, সেখানে তিনি ঘর থেকে বের হয়ে কিবা শূলিবিদ্ধ অবস্থায় রক্তাক্ত বদনে তাদের সামনে দিয়ে সবার দৃষ্টিকে ফাঁকি দিয়ে প্রায় ৩০০০ (তিন হাজার) কিঃ মিঃ দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে কাশ্মির বা তিব্বত এলাকায় চলে যাবেন, কেউ টেরও পাবেনা; এটা একদম ভিত্তিহীন আর গাঁজাখুরি কথা ছাড়া আর কিছুনা! নতুবা পবিত্র কুরআনের ১৫৮ নং আয়াতে আল্লাহ কেন বলে দিলেন না ঈসা (আঃ)- কে কাফিরদের পাকড়াও থেকে রক্ষা করে কাশ্মির পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। অথচ দেখা যাচ্ছে যে, আল্লাহ তাঁকে (ঈসা) নিজের কাছে তুলে নেয়ার কথাই সুস্পষ্টভাবে বলে দিচ্ছেন। কাদিয়ানিদের দাবী যদি সঠিক হত তাহলে এভাবে বলার কোনো মানেই ছিলনা। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল, ইহুদীরা ঈসাকে শূলে চড়াবে তো দূরে থাক, তারা তাঁর কাছেও ঘেষতে পারেনি। আল্লাহ ইহুদীদের পাকড়াও থেকে তাঁকে নিবৃত রেখেছিলেন। পবিত্র কুরআন অন্ততপক্ষে আমাদের একথাই শিক্ষা দেয়। সূরা মায়েদা আয়াত নং ১১০ দেখে নাও।

আবার ফিরে এলাম আগের কথায়। আলোচ্য সূরা নিসার ১৫৮ নং আয়াতের শুরুতে উল্লিখিত 'বাল' হচ্ছে 'retraction particle' যা পূর্ববর্তী কথা 'নাকচ' করে দিয়ে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম একটা কিছু বুঝাতে ব্যবহৃত হয়।

খেয়াল করুন এখানে ১৫৭ নং আয়াতে বলা হচ্ছিল, তারা না তাঁকে 'শূলে' চড়ালো, না হত্যা করল; (বাল) বরং আল্লাহ তাঁকে তাঁর নিজের দিকে [আকাশে] উঠিয়ে নিয়েছেন। এখানে 'রাফা'আ মানে 'মর্যাদায়' উন্নীত বুঝালে পূর্বের আয়াতের অর্থ 'নাকচ' করেনা। কারণ 'মর্যাদায়' উন্নীত হলে এখানে 'বাল' শব্দটি কখনোই ব্যবহৃত হতোনা। আগেই বলেছি, ঘটনার বিবরণীর সাথে 'রাফা'আ এর রূপক অর্থ আধ্যাত্মিক উন্নীত'র কোনোই সম্পর্ক থাকতে পারেনা। কেননা এখানে আল্লাহ সমাধান দিতে চেয়েছেন ও ঈসাকে তখন ইহুদীদের পাকড়াও থেকে কিভাবে রক্ষা করেছেন তা জানান দিলেন।

পঞ্চমতঃ রাসূল (সাঃ) হযরত ঈসা (আঃ) এর আগমণ সংক্রান্ত কয়েক শত সহীহ হাদীস ইরশাদ করে গেছেন। বহু হাদীস-গ্রন্থে সেগুলো বিধৃত হয়েছে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত অন্য পোস্টে দেখা যেতে পারে।

আপনি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যত হাদীসই দেখবেন প্রায় সব হাদীসে আপনি পাবেন যে, ঈসা (আঃ) এর আগমন একটি পুনঃ আগমন। তিনি নাযিল হবেন তথা অবতরণ করবেন। তিনি ‘আকাশ’ থেকে অবতরণ করবেন। জানা কথা যে, আকাশকে আরবীতে ‘সামা’ বলে। আর এই 'সামা' শব্দটি প্রায় কমবেশি ৪ খানা সহীহ হাদীসে উল্লেখ রয়েছে। মুসলিম শরীফের কিতাবুল ফিতান অংশে (হাদীস নং ৫০১) একদম সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, 'ওয়াদ্বিহান কাফফাইহি আ'লা আযনিহাতি মালাকাঈনি' অর্থাৎ ঈসা (আঃ) দুজন ফেরেশতার দুই বাহুর উপর আপনা দুই হাত রেখে নাযিল হবেন। মজার ব্যাপার হল, মির্যা গোলাম কাদিয়ানীর আগমন না পুনঃ আগমন ছিল আর না সে আকাশ থেকে অবতরণ করল! বরং সে পাঞ্জাবে জন্ম নিয়েছিল। সেখানেই ছোট থেকে বড় হয়েছিল।

ষষ্টতঃ কুরআনের সূরা নিসার ১৫৯ নং আয়াত “প্রত্যেক আহলে কিতাবী ঈসার মৃত্যুর পূর্বে অবশ্যই তাঁর উপর ঈমান আনবে আর কিয়ামতের দিন তিনি তাদের (ঈমানের) ব্যাপারে সাক্ষ্য দিবেন”। এই আয়াত দ্বারাও মির্যার মাসীহ দাবী মিথ্যা প্রমাণিত হচ্ছে। কেননা মির্যা-ই যখন সেই অত্যাসন্ন ঈসা তখন তো সকল আহলে কিতাবি-ই ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমান হয়ে যাওয়ার কথা। অথচ আমরা দেখছি এখনো ইহুদী-নাসারা জাতি যেই লাউ সেই কদুই রয়ে গেছে। বলতে গেলে খ্রিস্টানরা তো ঈসাকে আজও ঈশ্বরের পুত্র মেনে বসে আছে। কবি এখানে সত্যি নিরব!

কাদিয়ানিদের আরো দাবী : আল্লাহ হযরত ঈসা সম্পর্কে 'মুতাওয়াফফীকা' বলেছেন। তার মানে তিনি ঈসাকে মৃত্যু দেবেন। আর আরবীতে ‘তাওয়াফফা’ অর্থ মৃত্যুদেয়া। আর যেহেতু আল্লাহ বলেছেন ঈসা (আঃ)- কে মৃত্যু দিবেন সেহেতু ঈসার মৃত্যু হয়ে গেছে”। (কাদিয়ানিদের ‘ওফাতে ঈসা ও মাসীলে ঈসা’ ৭ নং পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য)।

শায়খ ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) এর বই থেকে 'তাওয়াফফা' শব্দের আভিধানিক ও পারিভাষিক অর্থ কিরকম তা পড়তে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করুন

আমি তাদের এই দাবীর প্রতিউত্তরে বলে থাকি যে, যদি আল্লাহ তায়ালা ঈসাকে "মৃত্যু দেব" বলেও থাকেন এতে ঈসা (আঃ) অচিরেই মৃত্যুবরণ করবেন, জাস্ট এটুকুই প্রমাণিত হবে। কারণ, "মুতাওয়াফফী" এটি ইসমে ফায়েল (اسم فاعل /কর্তৃকারকে বিশেষ্যপদ)। যার অর্থের মধ্যে Tanse বা কালটি হচ্ছে ভবিষ্যতকালবাচক। ফলে আল্লাহর এই কথা দ্বারা ঈসা (আঃ) অলরেডি আজকেই মারা গেছেন - এমনটি মনে করার কারণ কী? কাদিয়ানিরা হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর ব্যাখ্যামূলক বর্ণনা يعني رافعك ثم متوفيك في آخر الزمان "ইয়া'নী রাফেউকা ছুম্মা মুতাওয়াফফীকা ফী আখেরিয জামান" তথা তোমাকে উঠিয়ে নেব অতপর তোমাকে শেষ যুগে মৃত্যু দান করব - মর্মে হাদীসগুলো কি দেখেনা? (দেখে নাও ইমাম সুয়ূতী রচিত 'দুররে মানছূর', সূরা আলে ইমরান)। নাকি কাদিয়ানিদের নিকট ভবিষ্যৎকাল আর অতীতকাল সব-ই এক সমান?

"মুতাওফফিকা" (متوفيك) শব্দ নিয়ে বলতে গেলে, প্রথমতঃ মুতাওয়াফফিকা শব্দটি এসেছে ‘তাওয়াফফা’ থেকে। যার শাব্দিক অর্থ 'নিয়ে নেয়া, পূর্ণকরা’। পবিত্র কুরআনের সূরা নিসার ১৫ নং আয়াতটি দেখে নাও। পরিষ্কার উল্লেখ আছে : 'হাত্তা ইয়াতাওয়াফফাহুন্নাল মওতু' অর্থাৎ মৃত্যু তাদেরকে নিয়ে নেয়া পর্যন্ত। এই আয়াতে 'তাওয়াফফা' (توفي) শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, 'নিয়ে নেয়া' অর্থে। আর 'মৃত্যু' অর্থের জন্য তো 'মওতু' শব্দ আছেই। কাদিয়ানিরা বলার চেষ্টা করে কুরআনের সব স্থানেই 'তাওয়াফফা' মৃত্যু অর্থের জন্য এসেছে। এবার প্রমাণ পেলেন তো তাদের এই দাবীও সঠিক নয়! মজার ব্যাপার হল, কুরআনের সূরা যুমারের ৪২ নং আয়াতেও ‘তাওয়াফফা’ শব্দটি মৃত্যু অর্থের জন্য নয়। যেমন আল্লাহতালা বলেছেন : আল্লাহ মানুষের প্রাণ নিয়ে নেন মৃত্যুকালে আর যে মরেনা তাঁর নিদ্রাকালে।

তাছাড়া অন্যান্য জায়গায় তাওয়াফফা শব্দটি হতে রূপক অর্থ মৃত্যু নেয়া হলেও সমস্যা কোথায়? তাই বলে ঈসা (আঃ)-এর ব্যাপারেও তাওয়াফফা শব্দটি মৃত্যু অর্থে হতে হবে এমনটা ভাবা মূর্খতা ছাড়া আর কী হতে পারে?

আমাদের দেখতে হবে প্রিয়নবী মুহাম্মদে আরাবী (সাঃ) আর তাঁর সাহাবীগণ এর অর্থ কী করেছেন? কিংবা তিনি ঈসা (আঃ)-এর অবতরণ সংক্রান্ত কোনো হাদীস বলে গেছেন কিনা? হ্যাঁ বলেছেন। তাহলে কথা সোজা, ঈসা (আঃ)-এর ক্ষেত্রে তাওয়াফফা শব্দকে রূপকার্থে মৃত্যু অর্থে নেয়া ভুল। যেহেতু পবিত্র কুরআন আমরা প্রিয়নবী মুহাম্মদে আরাবী (সাঃ) আর তাঁর সাহাবীদের চেয়ে বেশী বুঝিনা।

প্রণিধানযোগ্য, খ্রিস্টানদের আকীদা হল, ঈসা (আঃ) ঈশ্বর বা ঈশ্বর পুত্র (নাউজুবিল্লা)। যদি ঈসা (আঃ) আসলেই মারা যেতেন, তাহলে এই আয়াতে আল্লাহ নিশ্চয় বলতেন - যাও ঈসার কবর দেখে এসো! যিনি মৃত্যুবরণ করলেন এবং কবরে শুয়ে আছেন তিনি কীভাবে ঈশ্বর হতে পারেন? কিন্তু আল্লাহ কিজন্য এমন বললেন না? জ্ঞানীদের ভাবিয়ে তুলে কিনা?

উল্টো পবিত্র কুরআনে ঈসা (আঃ) এর পুনঃ আগমন সম্পর্কে ইংগিত রয়েছে। সূরা আলে ইমরান আয়াত ৪৬, সূরা নিসা ১৫৯ এবং সূরা যুখরূফ আয়াত ৬১ দেখে নাও।

“প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে”। তাই আমাদেরও ঈমান যে, ঈসা (আঃ) তিনিও অদূরভবিষ্যতে শেষযুগে মারা যাবেন। তবে পৃথিবীতে তাঁর পুনঃ আগমণের পর।

এখানে আমি আরবদের (sahih international) কুরআনের একটি অনুবাদ দিব যা সমগ্র বিশ্বে গ্রহণযোগ্য। সাথে ইউসুফ আলীর বিশ্ববিখ্যাত অনুবাদটিও...... তারা 'মুতাওয়াফফীকা' অর্থ কি করেছে? এও দেখে নিন আরবরা এর কেমন অর্থ করতেন? আপনিও নিশ্চয় একমত হবেন যে, আরবরা অবশ্যই কাদিয়ানিদের থেকে আরবি ভাল বুঝেন!

সূরা আলে ইমরান ৫৫ নং আয়াত...

Sahih International [Mention] when Allah said, "O Jesus, indeed I will take you and raise you to Myself and purify you from those who disbelieve and make those who follow you [in submission to Allah alone] superior to those who disbelieve until the Day of Resurrection.

সহীহ ইন্টারন্যাশনাল এই ইংলিশ অনুবাদে O Jesus, indeed I will take you and raise you to Myself এর অর্থ - হে ঈসা! নিশ্চয়ই আমি তোমাকে নিয়ে নেব এবং আমার নিজের কাছে উঠিয়ে আনব।

Then to Me is your return, and I will judge between you concerning that in which you used to differ.

একই অনুবাদ ইউসুফ আলীর কৃত অনূদিত অংশেও। দেখুন -

Yusuf Ali Behold! Allah said: "O Jesus! I will take thee and raise thee to Myself and clear thee (of the falsehoods) of those who blaspheme; I will make those who follow thee superior to those who reject faith, to the Day of Resurrection: Then shall ye all return unto me, and I will judge between you of the matters wherein ye dispute.

তারপর ঈসা (আঃ) এর অবতরণ সংক্রান্ত কুরআনের আয়াত...... সে (ঈসা ইবনে মরিয়ম) হবে কেয়ামতের একটি নিদর্শন, তোমরা সে (কেয়ামতের) ব্যাপারে কখনো সন্দেহ পোষণ করোনা...... (আল যুখরূফ-৬১)

ঈসা (আঃ) কেয়ামতের পূর্বে পৃথিবীতে অবতরণ করবেন কেয়ামতের নিদর্শন হিসেবে, মানে তখন কেয়ামতের খুব বেশী দেরী থাকবেনা। “প্রত্যেক কিতাবী ঈসার মৃত্যুর পূর্বে অবশ্যই তাঁর উপর ঈমান আনবে আর কিয়ামতের দিন তিনি তাদের (ঈমানের) ব্যাপারে সাক্ষ্য দিবেন”। (সূরা নিসা-১৫৯)

ঈসা (আঃ) সংক্রান্ত কাদিয়ানিদের ৩০ আয়াত এর সংক্ষিপ্ত জবাব

প্রথমত বলে রাখা ভালো, কাদিয়ানিরা ঈসা (আঃ) এর মৃত্যু সংক্রান্ত যেসব আয়াত দেখায় তার কোথাও ঈসা (আঃ) এর মৃত্যু হয়েছে এমনটি লিখা নেই। আর এর বেশীরভাগই ঈসা (আঃ) সংক্রান্ত আয়াত নয়। আমি আগেই বলেছি, মূসা (আঃ) সংক্রান্ত আয়াত ঈসা (আঃ) এর বেলায় টেনে এনে জোড়াতালি দ্বারা কোনো একটা ব্যাখ্যার যে কেউ দিতেই পারে। কিন্তু আমাদের দেখতে হবে আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তিনি হযরত ঈসা (আঃ) এর আগমণ সম্পর্কে কোনো কিছু বলে গেছেন কিনা?

অধিকন্তু কাদিয়ানিদের এসব লেখাতে পবিত্র কুরআনের ব্যাখ্যা বা তাফসীরের সুপ্রতিষ্ঠিত কোনো নিয়ম নীতিরই তোয়াক্কা করা হয়নি। যাইহোক, এরপরেও তাদের ৩০ লাইনের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করলাম। এই উত্তরগুলো অনেক ব্যাখ্যা সহকারে লিখার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু লেখার পরিধি বড় হয়ে যাওয়ায় সংক্ষেপে লিখলাম।

কাদিয়ানিবন্ধুরা এক আয়াত বাড়তি যোগ করে রেফারেন্স দেখবেন -

১। সূরা আলে ইমরানঃ ৫৫ (এর ব্যাখ্যা আগেই দিয়েছি)।

২। সূরা নিসা ১৫৮; (এর ব্যাখ্যাও দিয়েছি)।

৩। সূরা আল মায়েদা, আয়াত ১১৭-১১৮। এই বাক্যটিকে ঈসা (আঃ) এর মৃত্যুর জন্য প্রমাণ করা তাদের কাজ যারা কুরআন এবং হাদীস সম্পর্কে কোনো জ্ঞান রাখেনা। এখানে ঈসা (আঃ) এবং আল্লাহর মধ্যে কথোপকথনটি হবে কেয়ামতের দিন। যার আগেই ঈসা (আঃ) পৃথিবীতে অবতরণ করে মৃত্যুবরণ করবেন। আয়াতটির পূর্ব আয়াত পড়লেই এটি বোঝা যাবে।

৪। সূরা নিসা ১৫৯; (এর ব্যাখ্যাও দিয়েছি)।

৫। সূরা মায়িদা ৭৫; “মরিয়মের পুত্র মাসীহ্ কেবল একজন রসূল। তাঁর পূর্বে সব রসূল অবশ্যই গত হয়ে গেছেন। তাঁর আম্মা ছিল একজন সিদ্দিকাহ্ (সত্যবাদিনী)। তাঁরা উভয়েই খাবার খেত। দেখ! কিভাবে আমরা তাদের জন্য নিদর্শনাবলী সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করছি। আবার দেখ! তাদেরকে কিভাবে বিপথগামী করা হচ্ছে”।

এই আয়াতে কোথাও বলা নেই ঈসা (আঃ) মৃত। বলা আছে তাঁর পূর্বের রাসূলগণ গত হয়ে গেছেন। আর কাদিয়ানিরা ব্যাখ্যা করেছে, তিনি যেহেতু খাবার খেতেন এবং মরিয়ম (আঃ)-ও খাবার খেতেন; সেহেতু যখন মরিয়ম (আঃ) মৃত, তাই ঈসা (আঃ)-ও মৃত প্রমাণিত হল। আর নবীরা খাবার না খেয়ে বাঁচতে পারেন না (আহমদিয়া বাংলা ওয়েবসাইট থেকে)।

বোকামীরও একটা সীমা থাকা উচিৎ! এই আয়াত শুধুকেবল খ্রিস্টানদের ত্রিত্ববাদ খন্ডন করার উদ্দেশ্যে। কেননা তারা হযরত ঈসা (আঃ) এবং মরিয়ম উভয়কেই স্রষ্টা বলে দাবি করত এবং বলত মরিয়ম হচ্ছেন স্রষ্টার মা (নাউযুবিল্লাহ) , এই জন্য তারা তাঁর পূজাও করত। আল্লাহ এই আয়াত দ্বারা বুঝাতে চেয়েছেন, দেখ! এরা উভয়েই কিন্তু খাবার খায়। আর স্রষ্টা খাবার খায়না। কারণ স্রষ্টার খাবারের দরকার নাই। এভাবে খ্রিস্টানদের বুঝাতে চেয়েছেন যে, দেখ! এরা কেউই ঈশ্বর নয়। পরন্তু আর নবী রাসূল সবাই খাবার খায়। তারা কেউ ফেরেশতাও নন! এটা প্রমাণের জন্যেই আল্লাহ কুরআনের অত্র আয়াতে নবী রাসূলদের এই সকল বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন। যেহেতু কাফেররা অহর্নিশি বলত, নবী রাসূল হবে ফেরেশতা, মানুষ কীভাবে নবী রাসূল হয়!

যাইহোক, এই সংক্রান্ত আয়াত আমি আগেই আলোচনা করেছি। আর এই সব বৈশিষ্ট্য যতদিন নবী রাসূলগণ পৃথিবীতে থাকবেন তাদের জন্য প্রযোজ্য, আসমানে থাকা অবস্থায়ও তাদের খেতে হবে এটা কাদিয়ানিরা পেল কোথায়??

৬। সূরা আম্বিয়া ৯; এই আয়াতও একই রকম। কাদিয়ানিরা বলছে, এই আয়াতে বলা হয়েছে, কেউই চিরকাল বেঁচে থাকবে না। (আহমদিয়া বাংলা ওয়েবসাইট)

তো এই কথা কি ঈসা (আঃ) এর আকাশে উঠা বাতিল করে?? কিংবা কেউ কি বলছে যে ঈসা (আঃ) মৃত্যুবরণ করবেনা?? উনি মারা যাবে কেয়ামতের পূর্বে পৃথিবীতে আগমনের পর।

৭। সূরা আলে ইমরান ১৪৪; “ মুহাম্মদ একজন রসূল ছাড়া আর কিছুই নন। নিশ্চই তাঁর পূর্বের সব রসূল গত হয়ে গেছেন” এই আয়াতেও কাদিয়ানিরা কুরআন বিকৃতি করেছে।

এখানে সব রাসূলের কথা বলা হয়নি, সঠিক অনুবাদ ‘অনেক রাসূল গত হয়ে গেছেন’। কারণ অনুবাদের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট একটি নিয়ম মানা জুরুরী। আর তা হচ্ছে, কুরআনের অপরাপর আয়াতের বর্ণনাভঙ্গি এবং সহীহ সুন্নাহ'র ইংগিত। এরূপ নিয়মের ভিত্তিতেই সালফে সালেহীনগণ অনুবাদ করে গেছেন। ফলে কুরআনের কোনো কোনো জায়গায় "রসুল" (رسل/الرسل) শব্দ বহুবচন হওয়া সত্ত্বেও তার অনুবাদ করতে হয়েছে 'বহু রাসূল'। সূরা নিসা, আয়াত ১৬৪; সূরা রা'আদ আয়াত ৩৮ দ্রষ্টব্য। আবার কোনো কোনো জায়গায় সেই একই শব্দের অনুবাদ করতে হয়েছে 'সকল রাসূল'। সূরা নিসা আয়াত ১৭১; সূরা আরাফ আয়াত ৩৫ দ্রষ্টব্য। অতএব বুঝতে হবে যে, সুনির্দিষ্ট নিয়ম অমান্য করে যাইচ্ছেতাই অনুবাদ করার কারো অধিকার নেই।

সোজা কথায়, সূরা আলে ইমরান ১৪৪ মতে All Messengers নয়, Many Messengers। নিচে দু’টি অনুবাদ দিলাম।

প্রথমে সহীহ ইন্টারন্যাশনাল (Sahih International)'র অনুবাদ দেখুন -

Muhammad is not but a messenger. [Other] messengers have passed on before him. So if he was to die or be killed, would you turn back on your heels [to unbelief]? And he who turns back on his heels will never harm Allah at all; but Allah will reward the grateful.

এরপর ইউসুফ আলী (Yusuf Ali)'র অনুবাদ দেখুন -

Muhammad is no more than a messenger: many Were the messenger that passed away before him.

If he died or were slain, will ye then Turn back on your heels? If any did turn back on his heels, not the least harm will he do to Allah; but Allah (on the other hand) will swiftly reward those who (serve Him) with gratitude.

৮। সূরা আম্বিয়া-৩৪; কেউই চিরকাল বেঁচে থাকবেনা। ঈসা (আঃ) কে কি কেউ চিরকাল বেঁচে থাকবে বলে দাবী করেছে? তাঁর মৃত্যু হবে কিয়ামতের পূর্বে পৃথিবীতে অবতরণের পর যেইভাবে সহীহ হাদীসে বর্ণিত আছে।

৯। সূরা বাকারা ১৩৪; এই আয়াতে সব নবী রাসূলদের উম্মাতের কথা বল হয়নি। এখানে শুধু ইসমাইল, ইবরাহিম, ইসহাক এবং ইয়াকূব (আঃ) এর উম্মতের কথা বলা হয়েছে (সূরা বাকারা-১৩৩ দেখুন) ।

আর এখানে তাদের উম্মাতদের কথা বলা হচ্ছে, নবী-রাসূলদের কথা নয়।

১০। সূরা মরিয়ম-৩১; আসমানে পৃথিবীর সিস্টেম চলবে, তা কে বলেছে? নামায, রোজা, যাকাত এগুলো পৃথিবীর জন্য, আসমানের সিস্টেম আল্লাহই ভালো জানেন।

১১। সূরা মরিয়ম-৩৩; এখানে মারা যাবে বলা হয়েছে, আর ঈসা (আঃ) অবশ্যই মারা যাবে।

১২। সূরা হাজ্জ-৬; ঈসা (আঃ) অবশ্যই মারা যাবেন কিয়ামতের পূর্বে। আবার বলি কোনো মুসলিমই বিশ্বাস করেনা ঈসা (আঃ) চিরকাল বেঁচে থাকবেন।

১৩। সূরা বাকারা-৩৬; এখানে আদম (আঃ) এর কথা বলা হচ্ছে, আদম (আঃ)-কে বেহেশত থেকে নামিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এখানে বলা হচ্ছেনা মানুষ মাটির দেহ নিয়ে আকাশে যেতে পারবেনা। আদম (আঃ) বেহেশতে কোন দেহ নিয়ে ছিলেন যেখান থেকে তাঁকে নামিয়ে দেয়া হয়েছিল? আর মুহাম্মদ (সাঃ) মেরাজের রজনীতে এই মাটির দেহ নিয়েই আসমানে গিয়েছিলেন কিনা? অবশ্যই গিয়েছিলেন। যেমন সহীহ বুখারীর কিতাবুল আম্বিয়াতে আছে, حتي اتي السماء الثانية অর্থাৎ তিনি দ্বিতীয় আসমানে এসে পৌঁছলেন! (হাদীস নং ৩৩৪২)।

প্রসঙ্গতঃ কেউ কেউ নবীর দৈহিক আসমানী ভ্রমণ আর ইতিপূর্বেকার স্বপ্নযোগের আধ্যাত্মিক ভ্রমণ - এই দুটিকে গুলিয়ে ফেলে।

১৪। সূরা ইয়াসিন-৬৯; এখানে পৃথিবীর আয়ুর কথা বলা হচ্ছে আসমানে অবস্থানরত কারো আয়ুর কথা বলা হচ্ছেনা। আর কাদিয়ানিদের বোকামি সীমা ছাড়িয়েছে, তারা ধরেই নিয়েছে পৃথিবীর ২৪ ঘন্টায় যেমন এক দিন আসমানেও সেই রকম রাত দিন হয়। কত বোকা এরা!

১৫। সূরা রুম ৫৪, ইউনুস ২৪, মুমিনূন ১৫, আয যুমার ২১, ফুরকান-২০, আন-নাহল ২০-২১, সূরা আহযাব-৪০, আন নাহল-৪৩, ফজর-২৭-৩০, রূম ৪০, সূরা আর-রহমান ২৬-২৭, সূরা কামার ৫৪-৫৫, সূরা আম্বিয়া ১০১-১০২, সূরা নিসা-৭৮, সবগুলোর ব্যাখ্যা একই।

কাদিয়ানিরা বুঝাতে চাচ্ছে ঈসা (আঃ)-কে মৃত্যুবরণ করতে হবে, তিনি চিরকাল বেঁচে থাকবেনা। কিন্তু আমরাও বলি, ঈসা (আঃ) অবশ্যই মৃত্যুবরণ করবেন।

আমি বুঝিনা কাদিয়ানিরা কেন ধরে নিচ্ছে, আসমানে থাকতে হলে পৃথিবীর মতো খাদ্যগ্রহণ করতে হবে, কিংবা কুরআন কিংবা ইঞ্জিল এর সকল নিয়ম আসমানের জন্য প্রযোজ্য!

তাদের বলি, সময় উঠা-নামা করে এই পৃথিবীতেই, আসমানে অতীত, ভবিষ্যত বলে কিছু নেই কিংবা সেখানেও পৃথিবীর মতো ২৪ ঘন্টায় দিন হবে এটা যাদের নূন্যতম জ্ঞান নাই তারাই বলে।

কুরআন কিংবা ইঞ্জিল এর নিয়ম অনুযায়ী চলতে বলা হয়েছে পৃথিবীতে, আসমানে নয়। সূরা হাশর ৭; কাদিয়ানিদের এই ব্যাখ্যাও সবধরণের কৌতুককে ছাড়িয়ে গেছে।

এখানে রাসূল (সাঃ) এর আদেশ নিষেধ মানতে বলা হয়েছে, বয়স সম্পর্কে এই আয়াতে কিছু নেই। আর আসমানেও পৃথিবীর মতো সময় গতিশীল - এটা এই বোকারা কোথায় পেল? আর ঈসা (আঃ) তিনি মোহাম্মদ (সাঃ) এর উম্মত হয়েই পৃথিবীতে বাস করবেন এবং কুরআন মেনেই সব করবেন। বুখারীতে অন্তত তাই বলা আছে।

সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত ৯৩; এর ব্যখ্যা আগেই দিয়েছি। যাইহোক, এই ৩০ আয়াতে ব্যাখ্যা আরো বড় করে রেফারেন্স সহকারে দেয়ার ইচ্ছা ছিল। তবে লেখাটি লিখতে লিখতে ক্লান্ত হয়ে যাওয়ায় অতি সংক্ষেপে উত্তর দিলাম। তবে পরবর্তীতে সময় পেলে এই ৩০ আয়াতের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ সহকারে পোস্ট দিব ইনশাআল্লাহ।

পরিশেষে কাদিয়ানীদের উদ্দেশ্যে আমি মাত্র দুটি প্রশ্ন রেখে গেলাম!

(১) সূরা নিসার ১৫৯ নং আয়াতে আল্লাহ্‌ বলেছেন, "আহলে-কিতাবদের মধ্যে এমন কেউ নেই যে, তার [ঈসা আঃ] মৃত্যুর পূর্বে তার প্রতি অবশ্যই ঈমান আনবে না"। যদি ঈসা (আঃ) এর মৃত্যু হয়, তবে আহলে-কিতাবধারী সব ইহুদী কবে ঈসা (আঃ) এর উপর ঈমান এনেছেন?

(২) সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং ৪৬ -তে আল্লাহতায়ালা বলেছেনঃ "তিনি [ঈসা আঃ] দোলনায় এবং পূর্ণ বয়স্ক অবস্থায় মানুষের সাথে কথা বলবেন"। নিঃসন্দেহে দু'টিই অলৌকিক হওয়ার কথা যা আল্লাহ্‌ ঈসা (আঃ) এর জন্য ঘটাবেন। এখানে দোলনায় কথা বলা অলৌকিক। ঈসা (আঃ) দোলনায় কথা বলেছেন যা সূরা মরিয়মের ৩০ নং আয়াতে বলা হয়েছে। সাধারণভাবে পূর্ণ বয়স্ককালে কথা বলা অলৌকিক নয়। তাহলে ঈসা (আঃ) এর ক্ষেত্রে কেন আল্লাহ্‌ এমনটি বললেন? ভাবনার জন্ম দেয় কিনা? তবে হ্যাঁ ঈসা (আঃ) যদি এখনও বেঁচে থাকেন এবং দুনিয়াতে আবার ফিরে এসে কথা বলেন শুধুমাত্র তখনিই তা অলৌকিক হতে পারে, নতুবা নয়। কিন্তু কাদিয়ানিদের বিশ্বাস অনুসারে ঈসা (আঃ) এর মৃত্যু হয়ে থাকলে তখন প্রশ্ন আসবে যে, পূর্ণ বয়স্ককালে ঈসার কথা বলার কোন অলৌকিকতাকে কুরআনের আয়াতে আল্লাহ্‌ উল্লেখ করলেন?

লিখক, প্রিন্সিপাল নুরুন্নবী

আমার ওয়েবসাইট থেকেও পড়তে পারেন (কুরআন শরিফের ৩০ আয়াত দ্বারা ঈসা (আঃ)-কে মৃত প্রমাণ করার কাদিয়ানী অপব্যাখ্যার জবাব) markajomar.com

তারিখ- ০৮/০৩/২০১৯ইং

মোবাইল - ০১৬২৯ ৯৪ ১৭ ৭৩
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ১২:৫৯
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×