somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিপতিত জল ধারার শ্রোতধ্বনি ; হামহাম

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ দুপুর ২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৬ জুলাই ২০১১ খ্রিস্টাব্দ। একটি জাতীয় দৈনিকে খবরটি দেখেই চোখ ছানাবরা। তারপর থেকেই প্রহর গুনতে থাকি ঝুম বৃষ্টির। কারণ শুভলং জলপ্রপাতের শুষ্কতা মনে দাঁগ কেঁটেছিল। বৃষ্টি যৌবনা জলপ্রপাতের ছবি কল্পনায় দৃশ্যমান। তার সাথে ২৫০ ফুট উচ্চতার মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের দৃশ্যও মনে ছিল ক্রিয়াশীল। সুহৃদয় পাঠক নিশ্চয়ই আপনাদের বুঝতে বাকি নেই যে আমরা এক্ষণে নতুন কোন কিশোরী জলধারার কথাই বলছি। হ্যাঁ সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার কুরমা বনবিট এলাকার হামহাম জলপ্রপাত এটি। বই পুস্তকের ভাষায় পাহাড়ের বুক চিরে খাড়াভাবে নিপতিত জলরাশিকে বলা হয় জলপ্রপাত। আর এই নিপতিত দৃষ্টিনন্দন জলের শ্রোতধ্বনিকে ত্রিপুরা অধিবাসীরা বলে হামহাম। ১৩০ ফুট উচ্চতার এ জলধারার রূপকে ঘিরে রেখেছে যে বনবিট এলাকা তার গঠন যে এত চ্যালেঞ্জিং তা আমরা সেখানে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বুঝতে পারিনি। তাই সৌন্দর্যপিপাসু ভ্রমণবিলাসীদের আগাম প্রস্তুতির জন্য আমাদের এ কিঞ্চিত পসরা।

১২ আগস্ট ২০১১ সকাল ৮.৩০ ঘটিকায় নরসিংদী থেকে বাস যোগে আমি এবং অগ্রণী ব্যাংক এর কর্মকর্তা দুই সুহৃদ বন্ধু মিলে রওনা হই। প্রায় ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে শ্রীমঙ্গল, সেখান থেকে কমলগঞ্জবেলা দুই ঘটিকায় কুরমা চেকপোস্ট বাস স্টেশনে মাটিতে পা রাখি সাথে সাথেই এই অঞ্চলের মানুষের সহৃদয় কৌতুহলমাখা আতিথেয়তা আমাদের অভিভূত করে।
নিজ থেকেই এক ভদ্রলোক বলছেন- “ভাইয়েরা হামহাম যাবেন ? এ বেলাতে তো গিয়ে ফিরে আসতে পারবেন না। আজ রাতে কোথাও থেকে কাল সকাল সকাল রওনা দিবেন। তাহলে কোন বিপদ হবেনা।” তার একটু সামনেই হেটে যাওয়ার মত তিন কিলোমিটার পথ ট্যাক্সি ড্রাইভার ন্যায্য ভাড়ার চেয়ে বেশি চাওয়ায় এক ভদ্রলোক ট্যাক্সি ড্রাইভারকে ধমক দিয়ে সঠিক ভাড়ায় গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ দিলেন। আমার কাছে মনে হল আধুনিক শিা ও সুবিধাবঞ্চিত প্রকৃতির কোলে লালিত বিচ্ছিন্ন এই জনবসতি প্রকৃতির এই অমোঘ বিধানকেই ধারণ করে চলছে বহতা নদীর মত যা তথা কথিত শিতি সভ্য সমাজে প্রায় বিরল।

আমরা কুরমা চেকপোস্টের সামনের দোকানে অবস্থানরত এক ভাইয়ের কথায় ভরসা পাই।আমাদেরকে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন উপদেশ দেওয়া দেখে তিনি বললেন “ভাই আপনারা সাহস করে আগান তো, এটাতো দেশের ভিতর, একটা না একটা ব্যবস্থা হবেই”। তাই এই অবেলায় চাম্পারায় চা বাগান শ্রমিক পল্লীতে Paying Guest হিসেবে রাত্রি যাপনের উদ্দেশ্যে রওনা হই। পায়ে হেঁটে তিন কিলোমিটার পথ পাড়ি দেই। আমাদের সাথে যাদিও দেখা হয়নি সেদিন নাকি আরও একটি প্রবাসী (ইটালী থেকে আগত) টিম সকাল আট ঘটিকায় চাম্পারায় পৌঁছে হামহামের পথে পাড়ি জমিয়েছেন দিনে দিনে ফেরত যাবে তারা। চাম্পারায় চা বাগান Workers Quarter (গাইডের ভাষায়)-এর ছোট বাজারে পৌঁছে স্থানীয়দের পরামর্শ অনুযায়ী বাদল পানিকার চায়ের দোকানে বসি। সেখানেও উষ্ণ আতিথেয়তায় আমরা মুগ্ধ হই। আবাসিক হোটেল না থাকলেও অপরিচিত হিসেবে এখানে থাকা অসম্ভব কারো মুখ থেকেই এমন কোন কথা শুনিনি। উপরন্তু সবাই ব্যস্ত কিভাবে কার এখানে থাকার ব্যবস্থা করা যায় এই নিয়ে।
অবশেষে সকলের সম্মতিক্রমে বাদল পানিকা বিপদ মুন্ডা-কে খবর দিয়ে আনেন। তার বাড়িতে আমাদের থাকা খাওয়ার একটা ব্যবস্থা হয়। কত টাকা দিতে হবে এরকম কোন রফা কোন ভাবেই তার সাথে করতে পারলাম না। তার ভাষায় “আমার মুখ দিয়ে আমি চাইতে পারবো না, আপনারা যা দেন”। পরবর্তীতে জানলাম আবাসিক হোটেল না থাকায় এখানে কেউ রাত্রি যাপনের প্ল্যান নিয়ে আসে না। আমরাই প্রথম ট্যুরিস্ট যারা রাত্রি যাপনের উদ্দেশ্যে বিপদ মুন্ডার ইঞ্জিরা-র (ইদারা বা কুয়া) পানিতে গোসল করি। এ পানির শীতলতা, যদি কারও গায়ে না পড়ে তবে বোঝানোর উপায় নেই। অতঃপর গোসল সেরে বেলা চার ঘটিকায় বিপদ মুন্ডাকে নিয়ে পুরো শ্রমিক পল্লীটা ঘুরে দেখি। এ সময় তার কাছ থেকে জানতে পারি এখানকার প্রতিটি পরিবার কোম্পানি থেকে চাষাবাদের জন্য তিন বিঘা ও বসত বাড়ির জন্য এক খণ্ড ভূমি পায় যা আনুমানিক এক বিঘার কাছাকাছি। তিন টাকা পঞ্চাশ পয়সায় এক কেজি আটা ও অন্যান্য সুবিধা পায়। বিপদ মুন্ডা আমাদের একে একে মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কমিউনিটি কিনিক, পূঁজা উৎসবের নাচঘর, খেলার মাঠ, চা বাগান ও গ্রামের এক পাশে ত্রিপুরা সীমান্তের কাঁটা তারের বেড়াসহ সবকিছু দেখিয়ে ইফতারের আগে বাদল পানিকার দোকানে বসায়। সেখানে বিপদ আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় চাম্পারায় চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচিত সভাপতি রামানন্দ বুনার্জি এবং ইউনিয়ন সদস্য বিনয় বাড়ৈ-এর সাথে। তাদের উষ্ণ আতিথেয়তাও আমাদের মুগ্ধ করেছে। সেখানকারই তৈয়বুল্লা নামের এক মুসলমান ব্যক্তির হোটেলে আমাদের জন্য ইফতারের আয়োজন করা হলেও বিদ্যুৎ না থাকায় সেই দোকান থেকে বিপদ নিজে কষ্ট করে ঠান্ডা পানিসহ ইফতার বাদল পানিকার দোকানে নিয়ে আসল। চমৎকার সজ্জিত প্লেটে স্থানীয় ভাষায় চানা, বিরিয়াণী ও পিঁয়াজো (ছোলা, ভুনা খিচুরী ও পিঁয়াজু) সম্বলিত ইফতার আয়োজন এবং নিজ থেকেই বিল পরিশোধের মাধ্যমে আমাদের মনিকোঠায় তার আতিথেয়তার উৎকর্ষতা যেন আরো একধাপ এগিয়ে গেল। আবারো বলছি, যা হয়তো আমাদের এলাকায় চোখে পড়বে না। ইফতার সেরে বিপদের বাসায় গেলাম এবং তার ছোট ভাই ডিগ্রী পড়ুয়া আপদ মুন্ডার সাথে গল্প সেরে রাত্র দশটায় আহারান্তে ঘুমিয়ে পড়লাম। একটা কথা বলি এরা দুইভাই বিপদ এবং আপদ আশ্চর্য না ! আমরাও আশ্চর্য হয়েছিলাম কিন্তু চাম্পা রায় চা বাগানের সবাই এদেরকে এ নামেই ডাকে। অনুসন্ধানে বের হয়ে আসলো মূল তথ্য বিপ্লব ও আপন তাদের আসল নাম।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ভোর সাতটায় বাসা থেকে বের হয়ে দোকান থেকে নাস্তা সেরে হালকা খাবার সাথে নিয়ে ৭.২০ মিনিটে রওনা হলাম কাঙ্খিত হামহাম-এর উদ্দেশ্যে। সকালের সোনালী রোদ সদ্য গজানো চায়ের কুড়িগুলোর সাথে খেলা করছে। যেন নুতন রঙে সেজেছেন প্রকৃতির সবুজ কন্যা। দেখতে দেখতে মুগ্ধ হয়ে পথ চললাম। বাগান পেরিয়ে অন্য এক চা শ্রমিক পল্লী কলাবন বস্তি-তে পৌঁছলাম ৪০ মিনিটের মধ্যে। এই গ্রামটিই হামহাম-এর প্রবেশদ্বার হিসেবে এখন পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আমাদের গাইড বিপদ মুন্ডা সেখান থেকে একজন নিরাপত্তা গাইড বিজয়কে সাথে নেয়ার পরামর্শ দিলো। তার বর্ণনায় গহীন অরণ্যে অন্য কোন গোষ্ঠীর আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যই বিজয়কে নেয়া। কারণ কলাবন বস্তির কারো কোন বিপদে পুরো গ্রামের মানুষ উদ্ধারের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে। দশ মিনিটের মধ্যেই বিজয়কে নিয়ে আমরা রওনা হলাম চ্যালেঞ্জিং পথে হামহাম-এর উদ্দেশ্যে।
কিছুদূর যেতেই ছোট্ট সাঁকোতে এসে হামহাম এর যাত্রাপথের শুরু। এভাবে সামান্য কিছু উঁচু-নিচু সরু রাস্তা পেরিয়ে একটি ছোট্ট খালে নামার আগ মুহুর্তেই আমাদের একজন খেলো আছাড় এবং তার থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট এর প্রথম জানালার সৃষ্টি। খালে নেমে পাহাড়ে উঠার প্রস্তুতিস্বরূপ বাঁশ ঝাড় থেকে লাঠি সংগ্রহ প্রস্তুত করে দিলো আমাদের গাইডরা।

শুরু হয়ে গেল আমাদের দূর্গম পথযাত্রা। ঝিরিপথ দিয়ে ২০০৯-এর ঠিক এমন সময়ই যে বার বান্দরবনের বগা লেকে গিয়েছিলাম সেবার প্রথম পাহাড়ে উঠার সময় মনে হয়েছিল যদি এমন পথ পুরোটাই হয় তবে বোধ হয় বগা লেক দেখা হয়ে উঠবে না।

আমাদের ভাগ্য ভালো ছিল যে পুরো পথটা পাহাড়ী ছিল না। যদি কেউ সে পথে যেয়ে থাকেন তাদের জন্য বলছি ঝিরি জলপ্রপাতের পর থেকে বগা লেক পর্যন্ত অংশটুকু যেমন পাহাড়ী পথ ছিল এই পথে প্রথম দুই-তৃতীয়াংশ পথ এর চেয়েও ভয়ানক, দূর্গম, পাহাড়ী ও চমৎকার। পরবর্তী এক তৃতীয়াংশ হামহাম জলধারায় সৃষ্ট নদীপথ ভয়ানক নয় দূর্গম ও চমৎকার। অবশ্যই ট্রেকারদের জন্য এটা লোভনীয়। হামহাম ট্যুরে এমন একটি পথের সন্ধান পাবো তা আমাদের ধারণারও অতীত ছিল। দৈনিক পত্রিকার ফিচারে আমরা যে এক লাইনের তথ্য পেয়েছি তা হলো- ‘কলাবন বস্তি থেকে আরও প্রায় ৮ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে এগিয়ে গেলেই দেখা মিলবে প্রত্যাশিত সেই হামহাম জলপ্রপাতের।’ এই ভয়ানক দূর্গম পথের বর্ণনা এক লাইনে হয় না। আমরা কিছুদূর যেতেই টের পেলাম আমাদের একজনের পায়ে জোঁক ধরেছে। আমাদের গাইড বিপদ তার দা দিয়ে কেঁচে ফেলে দিল জোঁকটাকে। যে প্রাণীটাকে আমরা প্রত্যেকেই সবচেয়ে বেশি ভয় পেতাম আমাদের যাত্রাপথের অনেকটা সময় আমরা সে প্রাণীটার ভয়ে তটস্থ থেকে অরণ্যের রূপ অবগাহন করতে ব্যর্থ হয়েছি। এই মৌসুমে হামহাম পথের জোঁকের ভয়াবহতা আগে থেকে জানতে পারলে হয়তো আমাদের মত ট্যুরিস্টদের এ সৌন্দর্য অবগাহন সম্ভবই হতো না। আকাশ ছোঁয়া সেগুন, জারুল, কদম গাছ ও বাঁশ বাগানের ভেতর দিয়ে সংকীর্ণ পিচ্ছিল পথ। এই পাহাড়ী পথ এতটাই বন্ধুর ও পিচ্ছিল ছিল যে, বান্দারবানের স্পেশাল প্লাস্টিকের জুতাও কামড়ে ধরে রাখতে পারেনি মাটিকে। কিছুদুর পথ খাড়া সরু পাহাড় বেয়ে উঠছি তো উঠছিই। পথ এতটাই সরু যে দু-পা একসাথে পাশাপাশি রাখা যায়না, আর যদি পা পিছলাও তবে খাড়া তিন-চারশ ফুট নিচে। আবার যখন নামছি তো নামছিই। এরকম কয়েকবার উপরে উঠা আর নিচে নামা। যার মধ্যে নিচে নামাটাই যেন বেশী কঠিন। আমরা আবিষ্কার করলাম আমাদের সবার থ্রি-কোয়ার্টার-এর নিম্নদেশে বড় করে একেকটি জানালার সৃষ্টি হয়েছে। বিজয় ছাড়া আমাদের প্রত্যেককে বেশ কয়েকবার জোঁক আক্রমণ করেছে এবং আমার জুতার ফিতার নিচে এক জোঁক রক্ত চুষে বালিশ হয়ে গেছে। এ বিভীষিকাময় দৃশ্য ভোলার নয়। হিসাব করলে দেখা যাবে তিন জনের প্রত্যেককেই ছয়-সাতটি জোঁক ধরেছে।
এই বন্ধুর পথ পেরিয়ে দুই ঘণ্টায় আমরা জোঁক মুক্ত জল পথে নামি।
জলধারার হিমশীতল পানিতে মুখ ভিজিয়ে নতুন উদ্দীপনায় জলরাশি ভেঙ্গে আবারো হাঁটতে শুরু করলাম। ছোট বড় পিচ্ছিল পাথর ডিঙিয়ে এক ঘণ্টা হেটে কানে ভেসে আসলো সেই মন মাতানো চিরচেনা শব্দ ঝির..ঝির..ঝির.. .. .. ..। আমরা পৌঁছে গেছি জলপ্রপাতের পাদদেশে।

মনে হয়েছে বিধাতা কি বিচিত্র ভাবে সাজিয়েছে পৃথিবীকে। নারী তার রূপ যৌবন যেভাবে লুকিয়ে রাখে, মনে হয়েছে বিধাতাও বুঝি প্রকৃতির এ রূপ যৌবনকে এভাবেই গহীন অরণ্যে লুকিয়ে রেখেছে। আমাদের দেশে অন্য যে জলপ্রপাতগুলো দেখলাম সেগুলোর চেয়ে প্রশ্বস্ত এবং প্রাণবন্ত হামহাম। কিছণ পরেই দেখি আমাদের গাইড বিপদ জলপ্রপাতের চূড়ায় দাঁড়িয়ে। কিন্তু জোঁকাতঙ্ক এবারের মত আমাদেরকে সেখানে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়নি। সফল আমাদের ভ্রমণ। রক্তের মায়া, পথ শ্রমের কান্তি, পিছলিয়ে পড়ার ভয়, লেগে থাকা কাঁদা মাটি, জোঁকাতঙ্কের টেনশনে নিঃসৃত ঘর্ম সবকিছুই যেন নিমিষেই ফুরিয়ে গেছে। ঝাঁপিয়ে পরলাম শীতল জলধারায় ............।
ফিরতি পথের বর্ণনা না হয় জানাবো আরেকদিন এখন একটু জলে ঝাঁপাই।
Click This Link
কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকা থেকে মিতালী, রূপসী বাংলা কিংবা শ্যামলী পরিবহণ যোগে শ্রীমঙ্গল। প্রায় ২০০ কিলোমিটার পথ ভাড়া পড়বে ১৫০-৩০০ টাকা। সময় লাগবে ন্যূনতম চার ঘণ্টা। শ্রীমঙ্গল ভানুগাছ টেম্পু স্ট্যান্ড থেকে বাস/টেম্পু যোগে কমলগঞ্জ উপজেলার সামনে আনুমানিক ৩২ কিলোমিটার পথ ভাড়া পড়বে ১৬/২৫ টাকা। সময় লাগবে প্রায় এক ঘণ্টা। কমলগঞ্জ নেমে একই স্থান থেকে বাস/টেম্পু যোগে কুরমা চেক পোস্ট। আনুমানিক ২৫ কিলোমিটার পথ ভাড়া পড়বে ২০/৪০ টাকা। সময় লাগবে প্রায় এক ঘণ্টা। কুরমা চেক পোস্ট থেকে চাম্পারায় চা বাগান শ্রমিক পল্লী পর্যন্ত তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা। রিজার্ভ টেম্পুর ভাড়া পড়বে ১৫০ টাকা। তবে হেঁটে যেতেও ভালো লাগবে। সেখানে বিপদ মুন্ডার বাড়ি রাত্রি যাপন করতে পারেন। আবার পল্লীর যে কোন ঘরে অতিথি হয়ে থাকতে পারেন। পরদিন সকাল ৭ ঘটিকায় হামহাম-এর উদ্দেশ্যে রওনা হলে পায়ে হাঁটা দুর্গম পথে ৩-৪ ঘণ্টায় পোঁছা যাবে হামহাম-এর পাদদেশে।
সেখানে এক ঘণ্টা অবস্থান করে আবারো ৩-৪ ঘণ্টার পায়ে হাঁটা পথে চাম্পারায় পৌঁছতে সব মিলিয়ে সময় লাগবে ৭-৮ ঘণ্টা অর্থাৎ প্রায় ২/৩ ঘটিকায় দুপুরের খাবার ও গোসল সম্পন্ন করে সন্ধ্যার মধ্যেই শ্রীমঙ্গল পৌঁছতে পারবেন। শ্রীমঙ্গল থেকে ঢাকা পৌঁছতে ন্যূনতম সময় লাগবে চার ঘণ্টা।

এছাড়া যদি দিনে দিনে ফেরত আসতে চান তবে নিজম্ব পরিবহণে এমন সময় রওনা দিতে হবে যেন সকাল ৮ ঘটিকার মধ্যে চাম্পারায় চা বাগান পৌঁছা যায়। সেখানে গিয়ে পূর্ব নির্ধারিত গাইড নিয়ে ৯টার মধ্যে হাঁটতে শুরু করলেও হয়ত ৪-৫ টার মধ্যে চাম্পারায় ফিরে আসতে পারবেন। তারপর গাড়িতে উঠে লম্বা হয়ে শুয়ে পরবেন। আগে থেকে গাইডের সন্ধানে যোগাযোগ করতে পারেন এই নম্বরে - ০১৭৩৫-৬১০৪৮৮ (বিপদ মুন্ডা), ০১৮১৩-৫১৩৪২৪ (বাদল পানিকা)।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ বিকাল ৫:২৫
১২টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×