সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতি প্রণয়ন একটি খুবই সময়োপযোগী একটি পদক্ষেপ এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। প্রশ্ন হচ্ছে এই পদ্ধতি প্রণয়ন এর ফলে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা কতটুকু বৃদ্ধি পাচ্ছে? আমার ব্যাক্তিগত মতামত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধির পূর্বে প্রয়োজন শিক্ষকদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করা। এক্ষেত্রেও একটি প্রশ্ন থেকে যায়। শিক্ষকরা কতটা সৃজনশীল? আমার দু'জন ছাত্র আছে তাদের কে পড়ানোর সুবাদে আমি ব্যাপারটি সম্পর্কে কিছুটা দুঃশ্চিন্তায় আছি।
সৃজনশীল পদ্ধতি বলতে যতটুকু বুঝেছি তা হল শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা যাচাই করা। তারা পাঠ্য বই -এর বিষয়বস্তু কতটা হৃদয়ঙ্গম করতে সক্ষম হয়েছে তা বিচার করা। এক্ষেত্রে পরীক্ষায় কি ধরনের প্রশ্ন থাকবে সে সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের কোন ধারনা থাকবে না। তাদেরকে নির্দিষ্ট সিলেবাস থেকে প্রশ্ন করা হবে এবং তারা নিজেদের মত করে উত্তর পত্রে উত্তর লিখবে। কিন্তু একটা বিষয় লক্ষ করলাম সৃজনশীলতার নামে শিক্ষার্থীরা বাজারের নোট বই এর প্রতি বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। আর পাঠ্য বইয়ের বিষয়বস্তুতে কোন পরিবর্তন না আনায় শিক্ষার্থী এবং নোট বই প্রস্তুতকারীরা খুব সহজেই ধারণা করতে পারছে পরীক্ষায় কি ধরনের প্রশ্ন থাকতে পারে।
এবার আমার আরো একটি প্রশ্ন। এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা কতটুকু লাভবান হচ্ছে? আমার জানা বিষয় থেকেই বলছি। চট্টগ্রামের একটি স্বনামধন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদেরকে নির্দিষ্ট করে বলে দেয় যে তোমরা অমুক গাইড কিনবে। অমুক গাইড থেকে না লিখলে নাম্বার দিব না, ইত্যাদি ইত্যাদি। এতে শিক্ষার্থীরাও একদিক দিয়ে খুশি হয়। তারা ভাবে আরে ওই গাইড থেকে প্রশ্নত্তোরগুলো শিখলেইতো হল। সিলেবাসের সবকিছু পড়ার কি দরকার? কারণ শিক্ষকরাতো ওই গাইড থেকেই প্রশ্ন করবেন। সুতরাং এত পড়ে কি লাভ?
আমাদের দেশের শিক্ষা নীতি প্রণয়নকারীরা আসলে কি ভেবে প্রতি বছর নতুন নতুন পদ্ধতি প্রণয়ন করেন তা আমি ভেবে পাই না। এই ধরনের পদ্ধতি প্রণয়নের আগে তাদের উচিত ছিল নোট বই বাজার থেকে তুলে দেয়া। তুলে দেয়া তো দূরের কথা সরকারী নিয়ন্ত্রনাধীন টিভি চ্যানেল বিটিভিতে তো ঘটা করে এসব নোট বই-এর বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়।
আশাকরি আপনাদের মনে আছে প্রথম যখন গ্রেডিং সিস্টেম চালু করা হয়েছিল তখন গ্রেডিং সিস্টেম কি জিনিস এটাই অনেকে জানতেন না। আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থা এতই বাজে যে বলার মত না। একজন শিক্ষার্থী দেখা গেল ৬ষ্ঠ শ্রণীতে এক পদ্ধতিতে পড়াশুনা করল তো ৭ম শ্রেণীতে উঠে আরেক পদ্ধতি। আজকে আবার দেখলাম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নাকি ভেঙ্গে দেয়া হবে। শিক্ষা ব্যবস্থার নামে এই হয়রানি আর কতদিন?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



