somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পবিত্র আল কোরআন-এ মহাবিশ্বের সৃষ্টি ও মহাকাশ

২৬ শে মে, ২০০৯ রাত ১১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মহাবিশ্বের সৃষ্টির ব্যাপারেও পবিত্র কোরআন-এ দেয়া আছে সুরা আল আন-আম এর আয়াত - ১০১ এ

" তিনি নভোমন্ডল ভূ-ন্ডল এর আদি স্রষ্টা"

কোরআন-এ দেয়া তথ্যগুলোকে সমসাময়িক বিজ্ঞানও সমর্থন করে। মহাকাশ বিজ্ঞান মহাবিশ্ব, বস্তু ও সময়ের মাত্রা সম্পর্কে যে সিদ্ধান্তে এসেছে তা হল- মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে বিশাল এক বিষ্ফোরনের ফলে। এটা বিগ ব্যাং নামে পরিচিত যা প্রমাণ করে যে মহাবিশ্ব একটি বিন্দু থেকে সৃষ্টি হয়েছে। আধুনিক বিজ্ঞানীরা এই ব্যাপারে এক মত যে, বিগ ব্যাং হল মহাবিশ্ব সৃষ্টির একমাত্র যুক্তিযুক্ত এবং প্রমাণযোগ্য ব্যাখ্যা।



(মহাবিশ্ব এক মহাবিষ্ফোরনের ফলে সৃষ্টি হয়েছিল। যাকে বিজ্ঞানীরা বিগ ব্যাং বলে অভিহিত করেন)

বিগ ব্যাং এর পূর্বে কোন বস্তু, সময়, শক্তি এমনকি সময়ের অস্তিত্ব ছিল না। এই ব্যাপারগুলো আধুনিক পদার্থ বিদ্যা সাম্প্রতিক আবিষ্কার করেছে কিন্তু ১৪০০ বছর আগে কোরআন-এ এর উল্ল্যেখ ছিল।

যখন আল কোরআন অবতীর্ণ হয়েছিল তখন মহাকাশ বিদ্যা ছিল একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে। তখনই আল কোরআনে মহাবিশ্বের বিস্তার সম্পর্কে বিবরণ দেয়া ছিল সুরা আয যারিয়াত আয়াত - ৬০ এ

"আমি স্বীয় ক্ষমতা বলে মহাকাশ সৃষ্টি করেছি এবং আমিই এর বিস্তার ঘটিয়েছি"

কোরআন-এর বিভিন্ন সুরায় বিভিন্ন আয়াতে মহাশূন্য ও মহাবিশ্বের কথা বলার সময় বেহেশত এর কথা উল্ল্যেখ করা হয়েছে এবং কোরআনে বলা হয়েছে যে, মহাবিশ্ব বিস্তার (Expand) লাভ করে। যা কিনা সাম্প্রতিক সময় বিজ্ঞানে উল্ল্যেখ করা হয়েছে।

বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে বিজ্ঞান মনে করত পৃথিবী অনন্তকাল ধরে আছে। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে মহাকাশে গবেষনা এবং পর্যবেক্ষন এর মাধ্যমে বিজ্ঞান জানতে পারল যে পৃথিবী একটি নির্দিষ্ট সময়ে সৃষ্টি হয়েছিল এবং এটি ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করেছে।


(মহাবিশ্ব বিস্তার লাভ করে এভাবে)

বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে রাশিয়ার পদার্থ বিজ্ঞানী আলেক্সান্ডার ফ্রিডম্যান এবং বেলজিয়াম বিজ্ঞানী জর্জেস লেমেট্রে তাত্ত্বীক ভাবে বিশ্লেষন করেন যে মহাবিশ্ব সম্প্রসারণশীল। এই তত্ত্বটি পর্যবেক্ষনের সাহয্যে প্রমাণ করা হয়েছে ১৯২৯ সালে। টেলিস্কোপ নিয়ে মহাকাশ দেখার সময় আমেরিকান মহাকাশ বিজ্ঞানী এডউইন হাবল দেখেন যে নক্ষত্র ও ছায়া পথগুলো একটি আরেকটি থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে।



(এডউইন হাবল তার বিশালাকার টেলিস্কোপে মহাকাশ পর্যবেক্ষন করছেন)

এর কয়েক বছর পরে এটাই প্রমাণিত হয়েছে মহাকাশ সম্প্রসারণশীল। যা ১৪০০ বছর আগে কোরআনে উল্ল্যেখ করা আছে।

পবিত্র আল কোরআন-এর সূরা আম্বিয়া আয়ত - ৩০ এ বলা হয়েছে -

"কাফেররা কি ভেবে দেখেনা যে, আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবী এক ছিল, অতপর আমি উভয়কে পৃথক করলাম, এবং প্রণবন্ত সবকিছু আমি পানি থেকে সৃষ্টি করলাম, এরপরও কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না?"

অর্থাৎ, আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবী একসাথে ছিল। তারপর আল্লাহ দুটোকে পৃথক করলেন। একটি আরেকটি থেকে বেরিয়ে এলো। প্রথমে যখন বিগ ব্যাং এর মাধ্যমে মহাবিশ্ব সৃষ্টি হল তখন মহাবিশ্বের সব বস্তু একটি বিন্দুতে ছিল। অন্যভাবে বলতে গেলে "বেহেশত এবং পৃথিবী" একটি বিন্দুর মধ্যে ছিল। এরপর যখন বিন্দুটি প্রচন্ডভাবে বিষ্ফোরিত হল তখন পুরো মহাবিশ্ব সৃষ্টি হল।



(এভাবেই আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবী পৃথক হয়েছিল)

যখন কোরআন-এর এই আয়াত কে বৈজ্ঞানিকভাবে বিশ্লেষন করা হল তখন বিজ্ঞান-এর বক্তব্য আর কোরআন-এর এই আয়াতের কোন অমিল ছিল না। একটাই শুধু পার্থক্য ছিল - কোরআন-এ এর ব্যাখ্যা ১৪০০ বছর আগে দেয়া হয়েছিল এবং বিজ্ঞান তা প্রমাণ করেছে বিংশ শতাব্দীতে।

চন্দ্র ও সূর্যের কথা কোরআনের সুরা আম্বিয়া আয়াত - ৩৩ এ বলা আছে।

"তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন, চন্দ্র ও সূর্য। সবাই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ করে"

এই সত্যিগুলো আমরা জানতে পারছি খুব বেশি দিন হয়নি। কিন্তু কোরআন-এ তা দেয়া হয়েছে ১৪০০ বছর পূর্বেই। দক্ষ মহাকাশ গবেষকদের মতে, সূর্য প্রতি ঘন্টায় 'ভেগা' নক্ষত্রের দিকে ৭২০,০০০ কি.মি পথ অতিক্রম করে 'সোলার এপেক্স' নামে একটি কক্ষ পথ ধরে। অর্থাৎ, সূর্য প্রতিদিন ১৭,২৮০,০০০ কি.মি পথ অতিক্রম করে। সূর্যের মহাকর্ষের মধ্যে পড়ে এমন গ্রহ, উপগ্রহও প্রতিদিন সূর্যের সাথে সমপরিমাণ পথ অতিক্রম করে।



(এভাবেই ছায়াপথ ছুটে চলে)

কোরআন-এর সুরা - আয-যারিয়াত আয়াত - ৭ এ উল্ল্যেখ আছে,

"পথবিশিষ্ট আকাশের কসম"

অর্থাৎ মহাকশের প্রতিটি নক্ষত্র, গ্রহ, উপগ্রহের নির্দিষ্ট কক্ষপথ আছে।

মহাবিশ্বে প্রায় ২০০০ বিলিয়ন ছায়া পথ আছে, যার প্রতিটি তে প্রায় ২০০ বিলিয়ন নক্ষত্র আছে। এসব নক্ষত্রের প্রায় প্রতিটির আছে গ্রহ এবং প্রায় সব গ্রহের আছে উপগ্রহ। এর সবকিছুই নির্দিষ্ট কক্ষপথে চলে। কোটি কোটি বছর ধরে এরা নিজস্ব পথে সাবলীল ভাবে চলছে। আরো আছে অনেক ধূমকেতু যেগুলোরও নির্দিষ্ট পথ আছে। এই চলাচলের পথে কোনটাই আরেকটির পথে যায় না বা পথ অতিক্রম করে না।



(কক্ষপথ)

নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে কোরআন যখন অবতীর্ণ হয় তখন মানুষের কাছে কোন টেলিস্কোপ ছিল না যার মাধ্যমে তারা মহাবিশ্বের কোটি কোটি কি.মি পথ পর্যবেক্ষন করতে পারতো। পাশাপাশি ওই সময়ে বৈজ্ঞানিক ভাবে এটাও প্রমান করা সম্ভব ছিল না যে, মহাবিশ্ব পথ ও কক্ষ পথ এ পরিপূর্ণ।

এটা পবিত্র আল কোরআন-এ স্পষ্ট করেই বলা আছে যে কোরআন-এ যা কিছুই ঘোষনা করা হয়েছে তা আল্লাহর বানী।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০০৯ রাত ১২:১১
১৪টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×