somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরিখা

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১...
সূয্যি মামা আর পিতার উত্তাপ সহ্য করতে হয়।এদের একজন যদি আলো ছড়ানো বন্ধ করে দেয়, তবে পুরো দুনিয়া অন্ধকার। প্রেমিকার উত্তাপ কতটুকু সহ্য করা উচিত? এ নিয়ে কবি লেখকের কোন বাণী নেই।উনারা কেবল প্রেমিকার শারিরীক সৌন্দর্য আর ছেড়ে যাওয়ার কষ্টকে গুরুত্ব দিয়েছেন।
প্রেমিকার উত্তাপ ভালোমত টের পাচ্ছে সাব্বির।
জান্নাতের ৮ টায় আসার কথা, ১০ টা বাজে! এখানো আসেনি!সাব্বির দু'ঘন্টা ধরে উত্তরা ইউনিভার্সিটির ইংলিশ ডিপার্টমেন্টের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
ও দেরি করে আসলে সমস্যা নেই, সাব্বির একটু দেরি করলেই একেবারে গাল ফুলিয়ে একাকার!

অবশ্য সাব্বিরের দাঁড়িয়ে থাকতে খারাপ লাগছে না।একটা ফ্ল্যাট বাড়িতে ইংলিশ ডিপার্টমেন্ট, তাই বলে শিক্ষার্থীদের আনন্দের কমতি নেই! দলে দলে সিড়িতে আড্ডা দিচ্ছে, একটা মেয়ে খালি গলায় গান করছে।
"প্রেমে পরা বারণ, কারনে অকারণ
আঙুলে আঙুল রাখলেও
হাত ধরা বারণ....."
বাহ!দারুণ পরিবেশ।এদের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মত অত জায়গা নেই, কিন্তু তাতে অসুবিধা হচ্ছেনা। এরা ঠিকই আনন্দ খুজে নিচ্ছে।
সবাই গল্প থামিয়ে গান শুনছে, মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছে।কেবল একটা ছেলে নিচে তাকিয়ে পায়ের বুড়ো আঙুল দিয়ে কাটাকুটি খেলছে!ওর চোখ দেখা যাচ্ছে না, ছেলেদের ভালোবাসা নাকি চোখে প্রকাশ পায়!
ঠিক পাশেই একটা পিচ্চি মেয়ে বসে আছে, সাব্বির শুরু থেকেই দেখছে পিচ্চিটা দাঁড়িয়ে আছে।একটুও নড়েনি।হয়তো মা বলে গিয়েছে, এখানেই থাকবে, একটুও নড়বে না!

১১ টা বাজে।জান্নাত এখনো আসেনি। আসবে মনে হচ্ছে না।আজ ওদের বিয়ে করার কথা!না এসে ভালোই করেছে, কি হবে ওকে বিয়ে করে?কি আছে ওর?না আছে গাড়ি-বাড়ি, টাকা পয়সা! ওর বয়সটাও বেশি।মাস্টার্স, এমফিল করতে করতে কখন বয়সটা বেড়ে গেছে টের পায়নি।সে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটিতে লেকচারার পদে চাকরি পেয়েছে, অবশ্য এখনো জয়েন করেনি।
বিয়ের জন্য যে পাঞ্জাবি পরে এসেছে সেটাও এক বন্ধুর, গায়ে ফিট হয়েছে। ও নাড়াচাড়া করতে পারছে না।বিয়ে উপলক্ষে সেভ করেছে, গাল কুটকুট করে কামড়াচ্ছে।সেভ করলেই ওর গালে সাদা সাদা ফুস্কুড়ি ওঠে!

আর কতক্ষণ ফুটপাতে বসে থাকা যায়।সাব্বির চলে যাবে ভাবছে।জান্নাত ওর ছাত্রী, একেবারে কম বয়সী মেয়ে।এই মেয়ের কথায় একদম গুরুত্ব দেয়া উচিত হয়নি।
উঠে দাড়াতেই পিচ্চি মেয়েটা ওর পাঞ্জাবি টেনে ধরলো,বললো,"আব্বু, তুমি এখানে দাঁড়িয়ে আছো?আমি তোমার জন্য ওপাশে দাঁড়িয়ে আছি।আব্বু, মা কখন আসবে?আমার পিপাসা পেয়েছে।আব্বু, আমি সকাল থেকে কিছুই খাইনি।"

সাব্বিরের মায়া লাগলো। মা বাবা হয়তো দাঁড় করিয়ে কোথাও গেছে, কোন কারণে ফিরতে দেরি করছে।মেয়েটি ক্ষুদা পিপাসায় কাতর, তাকেই বাবা ভাবছে।সে মেয়েটিকে পানি আর এক প্যাকেট বিরিয়ানি কিনে দিলো, ছোট মেয়েটাকেতো আর রুটি কলা খাওয়ানো যায়না। দোকানে একটা চেয়ারও খালি নেই, বোঝাই যাচ্ছে ভালো বিরিয়ানি রান্না করে।ও ইচ্ছে করলেও খাচ্ছে না, তাহলে কাজীর ফি কম পরে যাবে।

মেয়েটি আগ্রহ করে খাচ্ছে,বিরিয়ানি চারপাশে ছিটিয়ে পরছে।সাব্বির ওকে হাত দিয়ে খাইয়ে দিচ্ছিল।বাচ্চাদের খাইয়ে দেয়ার মধ্যে এত আনন্দ!সাব্বির সিদ্ধান্ত নিল, তার ছেলেমেয়েদের সে খাইয়ে দিবে।
"তোমার নাম কি আম্মু?"
"বাহ!নিজের মেয়ের নামও জানো না!আর কত নাটক করবে,সাব্বির?"
জান্নাত কখন এসে পিছনে দাঁড়িয়েছে, সাব্বির টের পায়নি।জান্নাত কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়েই চলে গেল।

পরের কয়েক দিন সাব্বির খুব ব্যস্ত সময় কাটালো।উত্তরা ৪ নং সেক্টরে সব বাসায় খোজ নিলো, মেয়েটাকে কেউ চিনতে পারে না!মেয়েটা নিশ্চয়ই ঊড়ে ঐ এলাকায় আসেনি। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হল, ওর বাবা-মার কোন হদিস পাওয়া গেল না।পুলিশ কোন সাহায্য করলো না, করবে কেন?পিচ্চিটা যে ওকেই আব্বু ডাকছে।বরং আরও শাসাতে লাগলো, মেয়ের মা কোথায় এ নিয়ে।

২...
রাঈদ এক সপ্তাহ ধরে স্কুলে যাচ্ছে না।ওর বিরাট আনন্দের দিন।কিন্তু ওর আনন্দ হচ্ছে না, কারণ ওর বাড়ির বাইরে যাওয়া নিষেধ। ও বারবার উঁকি দিয়ে দেখছে, পাগলটা যায়নি।গেটের সামনেই বসে আছে। অবশ্য বাসার ভিতরে খেললে কিছু হবার কথা না, তাও ও যেতে পারবে না।মা ভীষণ রাগী! বাবা বাসায় নেই, তাহলে বাইরে যাওয়া যেত। বাবা বসে পেপার পড়তো, ও খেলতো।বাবাকে সবাই ভয় পায়, ওর বাবা পুলিশ। পাগলটাও নিশ্চয়ই ভয় পাবে!

মা ওকে মারলেও মাকেই ও বেশি ভালোবাসে। মা ছাড়া রাতে ঘুম আসতে চায় না।মাঝে মাঝে যখন দিদা বেড়াতে আসে, রাঈদকে দিদার সাথে ঘুমাতে হয়।ও খুব মন খারাপ করে, কিন্তু কিছু করার নেই। ও মায়ের জামা নিয়ে ঘুমাতে যায়,যাতে মায়ের শরীরে ঘ্রাণ পাওয়া যায়।তাতেও কাজ হয় না, ঘুম আসে না।তবে জেগে থাকতেও খারাপ লাগে না, দিদা সারারাত প্যাচাল পাড়ে। গল্পের মত লাগে।

ও চাইলেই নিহানের সাথে খেলতে যেতে পারে। নিহান ওর ক্লাসেই পড়ে। গেলেও সমস্যা, নিহানের পুতুলকে বিয়ে করতে হবে।নাক বোচা, মাথায় চুল নেই, ঐ পুতুলকে রাঈদ কিছুতেই বিয়ে করবে না।অবশ্য নিহানকে বিয়ে করতে বললে, সে রাজি আছে।
নিহান ওকে একেবারে দেখতে পারে না।সেদিন বলেছে,"রাইদ, তুই একটা বলদ।তোর সাথে মিশা একদম উচিত না।তবু মিশি, কারণ তোর মা আকাশ থেকে নেমে আসা পরী!দেখবি, একদিন উড়াল দিবে।"
এরপর যেটা বলেছে সেটা আরও ভয়াবহ!বলেছে,"রাঈদ, একবার ভেবে দেখ পাগলটা যদি মেয়ে হত তোকে দুদু খাইয়ে দিত।তোর মুখে তার নোংরা দুদু জোর করে গুজে দিত!হাহা.....তুই বড় বাচা বেচেছিস!"
এরপরেও ওর সাথে খেলতে যাওয়া যায় না।আজ কি বলবে ঠিক নেই!

এই পাগলটাই যত সমস্যা করেছে।পাগলটা ওকে দেখলেই দৌড়ে আসে, হাতে এটাসেটা খাবার থাকে।জোর করে মুখে তুলে দেয়।বলে, "খাও ভাই, খাও।না খেয়ে খেয়ে কেমন শুকিয়ে গেছ!" পাগলটা নোংরা, গা থেকে ময়লা গন্ধ আসে।
কারও সাথে এ নিয়ে কথাও বলা যাচ্ছে না।বাবা যে কবে আসবে? নানা ভাই আসলেও রাঈদ এ নিয়ে গল্প করতে পারতো!

৩...
রাঈদের নানা সাব্বির খান, বাবা এসআই টুটুল, মা দিপা সোফায় বসে আছেন। রাঈদ সাব্বির খানের কোলে। রাঈদ কথা বলার জন্য হাসফাস করছে, নানা ভাই তিন মাস পর এসেছেন আর বাবা প্রায় ১৫ দিন।
সাব্বিরের মাথায় এক ঝাক সাদা চুল, গালে দাড়ির বালাই নেই, চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা।শরৎচন্দ্রের সাথে ওর অনেক মিল, শরৎচন্দ্র কেবল চশমা পরতেন না। রাঈদ সাব্বিরকে 'সাদা নানা ভাই' ডাকে।
টুটুল অনেক ক্লান্ত। গা থেকে পুলিশের পোশাক খোলেননি।তিনি পাগল নিয়ে বেশ চিন্তিত। এ কেমন পাগল!কাউকে কিছু বলে না,কেবল রাঈদকে দেখে দৌড়ে আসে, খাবার দেয়, ওর মায়ের কথা জিজ্ঞেস করে।
উনার ইচ্ছে, পাগলটাকে রাতে গাড়িতে উঠিয়ে কোন নির্জন পার্কে নিয়ে গিয়ে দু'ঘা লাগিয়ে দিলেই কাজ হবে। সে জানে, তার মতের সাথে শ্বশুর সাব্বির খান অমিল হবেন!শ্বশুরকে তিনি অনেক কঠিন কথা বলতে চান, পারেন না। তিনি যাই বলেন, মনে হয় ঠিকই বলেছেন।

দিপাকে বিয়ের সময় কাবিননামায় মায়ের নাম ছিল না।টুটুল ভেবেছেন, শ্বশুরকে জিজ্ঞেস করবেন,"আপনে কি মেয়ে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনেছেন? নাকি আপনার অবৈধ সন্তান?" পুলিশ হবার এই সমস্যা, ভালো চিন্তা মাথায় আসে না।
পরক্ষণেই মনে হয়েছে, দিপার মত মেয়ে তার সাথে কেউ বিয়ে দিবে না। তার বাবা ছিলেন জুয়া চোর, মা মানুষের বাসায় কাজ করে তাকে পড়িয়েছেন।ঘর বাড়ি নাই।পড়াশোনা না করলে তাকে লেগুনা চালক বা ময়লার গাড়ি চালক হতে হত।

"আব্বা, আপনি কি বলেন, থানায় নিয়ে দু'এক ঘা লাগিয়ে দেই।এখানে থেকে চলে যাবে আর আসবে না।"
সাব্বির খান চুপ করে আছেন। কথা বললো রাঈদ,"বাবা, তুমি তাকে মেরে ফেলবে!আমি টিভিতে দেখেছি, পুলিশ মানুষকে গুলি করে মারে।উনাকে মেরো না, উনিতো পাগল। ও নানা ভাই, তুমি কিছু বল।"
সাব্বির খান নাতির মাথা-গায়ে হাত বুলিয়ে দিলেন।
দিপা বললো,"টুটুল, বাবা, যা ইচ্ছে কর।কলোনিতে একটা পাগল থাকে, সেটাও আমাদের বাসার সামনে। সবাই নানা কথা বলে।ভালো লাগে না।আর রাঈদ বাইরে যেতে পারে না।মন খারাপ করে বসে থাকে। খারাপ লাগে!
"দিপা মাগো, লোকটা তোমার কথা জিজ্ঞেস করে, রাঈদকে আদর করে।হয়তো তোমার সাথে কথা বলতে চায়, তুমি গিয়ে কথা বল।দেখবে সমস্যা শেষ!হয়তো, তোমার মত তার একটা মেয়ে ছিল বা রাইদের মত ছেলে!"

৪...
টুটুল, সাব্বির খান পাগলের সাথে কথা বলতে এসেছেন।পাগলে সাথে সমঝোতার কথা বলা যায় না, পাগল সবাইকে বিরক্ত করবে, এটাই নিয়ম। এই পাগল কেবল রাইদকে বিরক্ত করছে, দিপাকে দেখতে চাচ্ছে, এই পাগল ভাবের পাগল। এর সাথে কথা বলা যায়।
টুটুলের হাতে লাঠি। রাঈদ জানালার ফাক দিয়ে তাকিয়ে আছে, কিছুটা আতঙ্কিত। বাবা পাগলকে মারবে নাতো!

পাগলটা কথা বললো,"সাব্বির ভাই, আপনি এত দিন পর এলেন।সাত দিন এখানে বসে আছি, খালি মশা আর মশা!"
সাব্বির খান কিছু বললেন না।
টুটুল আতঙ্কিত। আতঙ্কিত মানুষ যাচ্ছেতাই করতে পারে।বিচ্ছিরি একটা গালি দিয়ে, টুটুল লাঠি উঁচিয়ে পাগলটাকে বাড়ি মারতে যাবে তখনি পাগল একটা ছবি বের করে দিলো।
ছবিতে হাসোজ্জল দিপা, একটা সুদর্শন যুবক আর পিচ্চি একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। টুটুল রেগে চলে গেল।
স্ত্রীকে রাখতে হয় মাইরের মধ্যে, তিনি স্ত্রীকে অতিরিক্ত ভালোবাসেন, মারেন না।ভুল হয়েছে।এখন দিপা অন্যলোকের সাথে লটরপটর করছে!আর পাগলটা প্রমাণ নিয়ে বসে আছে।সারা জীবন সে অন্যের পরকিয়ার প্রমাণ সংগ্রহ করেছে, এখন নিজের.....!

ঘরে আগের চেয়ে থমথমে পরিবেশ। টুটুল রাগে গজগজ করছেন।সে দিপাকে নিয়ে সংসার করবে না। যে মেয়ে স্বামী বাসায় থাকে না এই সুযোগে পরকীয়া করে তাকে নিয়ে সংসার করা যায় না।দেখা যাবে, সে ছেলে মেরে টাকা পয়সা নিয়ে ভেগে গেছে।
"আব্বা, আপনে যাই বলেন আপনার মেয়ে আমি রাখবো না।আপনে মেয়ে নিয়ে যাবেন, আমার ছেলে আমার কাছে থাকবে।"

সাব্বির খান বললেন,"ছবিতে লোকটি দিপার বাবা, হাসোজ্জল মেয়েটি দিপার মা আর পিচ্চি মেয়েটি দিপা!"
টুটুল অবাক, এই চিন্তা তার মাথায় আসেনি কেন? মেয়েরা বেশিরভাগ দেখতে মায়ের মত হয়।পুলিশ হবার এই এক অসুবিধা, সৎ চিন্তা মাথায় আসে না!

৫...
ডা. সাঈদ আগ্রহ করে খাবার খাচ্ছেন।কে বলবে? এই লোকটা একটু আগেও পাগল ছিল।ময়লা পোশাক, উস্কুখুস্কু চুল নিয়ে রাস্তায় বসে ছিল প্রায় ৭ দিন ধরে।নেড়িকুত্তা আর তিনি একসাথে ঘুমিয়েছেন।
তাকে বেশ সুদর্শন লাগছে।যে কেউ দেখেই বলবে দিপা তারই মেয়ে।দুজনের চেহারা অবিকল এক।
সাব্বির খান মুখ ভার করে বসে আছেন।

রাঈদ বেশ খুশি, বাইরে যাবার জন্য উতলা।ওর দুটা নানা, নিহানকে এই খবর দেয়া উচিত। নিহানের দাদা, নানা কেউ নেই!হিংসায় নিহান কি বলবে?

ডা. সাঈদ কথা বললেন,"সাব্বির ভাই, আপনি আমার মেয়েকে বড় করেছেন, বিয়ে দিয়েছেন।আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ, আপনার ঋণ আমি শোধ করতে পারবো না।কিন্তু এটা অস্বীকার করার কি উপায় আছে, দিপা আমার মেয়ে।এটা আপনি খারাপ করেছেন, পুলিশের সাথে বিয়ে দিয়েছেন!
ধর্মে আছে, তোমাদের দেহে যদি এক টুকরো হারাম খাদ্য থাকে তবে ইবাদত হবে না।হারাম টাকায় কেনা খাবার হারাম হবে কিনা?কুকুর গু খাবে, পুলিশ ঘুষ খাবে;এই নিয়ম। আচ্ছা, যা করে ফেলেছেন তা নিয়ে কথা বলবো না।
আসলে হয়েছে কি! আমি তখন উঠতি ডাক্তার, দিপার মাকে সময় দিতে পারি না।সে অন্য একজনের সাথে ভেগে গেল।দুশ্চরিত্র মায়ের মেয়েও হবে দুশ্চরিত্র, এই ভয়ে আমি দিপাকে ওখানে রেখে এসেছি।ওর মায়েরও একটা শিক্ষা হোক!
আমি দিপা দিপা করছি কেন?ওর নাম রাইসা সুলতানা রেবা।
বিকালে এসে দেখি ওখানে রেবা নেই।কোথায় কোথায় খুজেছি, মেয়ের কথা ভুলতে পারিনি!শেষে আধা পাগল হয়ে রাস্তায় রাস্তায় মেয়েকে খুজছি, একদিন দেখলাম, LPS স্কুলের গেটে রেবা!রেবা একদম ওর মায়ের মত!"

দিপা রাঈদকে ডা. সাইদের কাছ থেকে কোলে নিয়ে সাব্বির খানে পাশে বসলো। সাব্বির খানের কাধে মাথা রেখে উনার হাত শক্ত করে ধরলো, বললো,"আপনার স্ত্রীর নিশ্চয়ই উচিত শিক্ষা হয়েছে। শুনুন, আমার বাবা-মা দুটোই সাব্বির খান।আপনি চলে যান, রাস্তায় রাস্তায় মেয়েকে খুজুন।আমি রেবা না, আমি দিপা।"
সাব্বির খান কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলেন।

কিছুলোক থাকে যারা তুচ্ছ অজুহাতে নিজের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করে না।অন্যকেউ নিজ দায়িত্বে যখন শূণ্যস্থান পূরণ করে বেশ ভালোভাবেই পূরণ করে, তখন তারা ফিরে আসে।এমন আচরণ করে, যেন সব আগের মতই আছে। এতে কষ্ট তিনজনেরই হয়, যিনি ঠিক কাজ করেননি, যার প্রতি দায়িত্ব ছিল, যিনি দায়িত্ব পালন করেছেন! এদের জন্য খুব মায়া হয়!

কোন রহস্যময় কারণে ডা. সাঈদ এবং রাঈদের একে অপরের প্রতি মায়া একটু বেশি। ডা. সাঈদ প্রায়ই LPS স্কুলে রাঈদের সাথে দেখা করতে আসেন। রাঈদ হাত নাড়িয়ে গল্প করে, হাসতে হাসতে তার গায়ে পরে যায়। দিপা দূর থেকে এ দৃশ্য দেখে, কাছে আসে না।রহস্যময় কারনে রাঈদকে এ নিয়ে কেউ কিছু বলে না। "তিনি" রহস্য পছন্দ করেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৫১
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমিও যাবো একটু দূরে !!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২২

আমিও যাবো একটু দূরে
যদিও নই ভবঘুরে
তবুও যাবো
একটু খানি অবসরে।
ব্যস্ততা মোর থাকবে ঠিকই
বদলাবে শুধু কর্ম প্রকৃতি
প্রয়োজনে করতে হয়
স্রষ্টা প্রেমে মগ্ন থেকে
তবেই যদি মুক্তি মেলে
সফলতা তো সবাই চায়
সফল হবার একই উপায়।
রসুলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×