somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুম রহমান
শেষ পর্যন্ত লেখাটাই থাকে। টিভি, রেডিও, ওয়েবসাইট, চলচ্চিত্র, মঞ্চ, বিজ্ঞাপণ, ব্লগ - লেখার যতো মাধ্যম সবখানেই লিখতে হবে। পৃথিবী পাল্টে গেছে - এখন আমরা দুহাতের দশ আঙুলেই লিখি।

কাফকার অণু গল্প

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৪:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
অনুবাদ : মুম রহমান


একটি ছোট্ট উপকথা
‘হায়,’ ইঁদুর বললো, ‘দুনিয়াটা প্রতিদিনই ছোট হয়ে আসছে। শুরুতে এটা এতো বড় ছিলো যে আমি চিšিতত হয়ে গিয়েছিলাম, আমি দৌঁড়াতেই থাকি, দৌঁড়াতেই থাকি, এবং অবশেষে আমি দুরে ডানে ও বায়ে দেয়াল দেখে খুশি হই, কিন্তু এই দেয়াল দুটো ক্রমশ সরু হয়ে যেতে থাকে আর আমি ততক্ষণে কামরার শেষে এসে দাঁড়াই, এবং ওইখানে এককোণায় ফাঁদ পাতা রয়েছে যা অবশ্যই অতিক্রম করে যেতে হবে আমাকে।’
‘তোমার শুধু পথটা বদলানো দরকার ছিলো’ বিড়াল বললো এবং ওটাকে খেয়ে ফেললো।


প্রহরী
আমি প্রথম প্রহরীকে অতিক্রম করে গেলাম। তখন আমি ভয় পেলাম, আবার দৌঁড়ে ফিরে এলাম এবং প্রহরীকে বললাম, ‘আপনি যখন অন্য দিকে খেয়াল রাখছিলেন আমি তখন এখান দিয়ে দৌঁড়ে গিয়েছিলাম।’ প্রহরী তার সামনের দিকে তাকিয়ে থাকলো এবং কিছুই বললো না। ‘আমার মনে হয় আসলে আমার এমনটা করা উচিত হয়নি,’ আমি বললাম। প্রহরী তবুও কিছু বললো না। ‘আপনার নিরবতা কি আপনাকে অতিক্রম করে যাওয়ার অনুমতির ইংগিত দেয়?’


প্রমিথিউস
প্রমিথিউসকে কেন্দ্র করে চারটি কিংবদন্তী আছে :
প্রথম কিংবদন্তী অনুযায়ী, তাকে ককেসাস পর্বতের পাথরের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছিলো দেবতাদের গোপনীয়তার মানুষের কাছে প্রকাশ করার প্রতারণার অভিযোগে, এবং দেবতারা তার হৃদয় ছিঁড়ে খাওয়ার জন্যে ঈগল পাঠাতো, আর অবিরতভাবে সে হৃদয় পুনর্নিমিত হতো।
দ্বিতীয় কিংবদন্তী অনুযায়ী, প্রমিথিউস প্রতিনিয়ত বিদারিত হওয়ার যšত্রণায় নিজেকে ক্রমশ পাথরের গভীরে ঠেলে দিয়েছিলো যতক্ষণ না সে পাথরেরই অংশ হয়ে গেছে।
তৃতীয় কিংবদন্তী অনুযায়ী, হাজার বছরের সময় পরিত্রমায় প্রমিথিউসের প্রতারণার কথা ভুলে যাওয়া হয়, ভুলে যান দেবতারা, ভুলে যায় ঈগল এবং প্রমিথিউস নিজেও।
চতুর্থ কিংবদন্তী অনুযায়ী, প্রত্যেকেই এই অর্থহীন বিষয়ে ক্লাšত-বিরক্ত হয়ে যায়। দেবতারা বিরক্ত হয়ে যায়, ঈগল ক্লাšত হয়ে যায় এবং ক্লাšত-বিরক্ত হয়ে ক্ষতও সেরে যায়।
সেখানে ব্যখ্যাতীত পরিমানের পাথর ছিলো। কিংবদন্তী এই ব্যাখ্যাতীতকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছে। যখন এই সত্যের ভিত্তির উপর প্রকাশিত হেেছ তখন ব্যাখ্যাতীতভাবে এর সমাপ্তি ঘটেছে।


অন্যমনস্কের জানালা-দর্শন
ক্রমশ এগিয়ে আসছে যে বসšত দিনগুলি তা নিয়ে আমরা কী করবো? আজ খুব সকালেই আকাশ ছিলো ধুসর, কিন্তু তুমি যদি এখন জানালার কাছে যেতে তাহলে বিস্মিত হতে এবং গরাদহীন জানালর পাল্লায় তোমার চিবুক রাখতে।
ইতোমধ্যে সুর্য ডুবে যাচেছ, কিন্তু তুমি দেখবে সে নীচে অলসভাবে যে মেয়েটি হাঁটছে তার মুখে আলো ফেলছে, এবং একইসময়ে সে ঢাকা পড়ে যাচেছ, তাকে অতিক্রমরত একটি লোকের ছায়ার কারণে।
এবং তারপর লোকটি চলে গেছে এবং ছোট্ট মেয়েটির মুখ যথেষ্ট উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।

পরের গ্রাম
আমার দাদা সব সময়ই বলতেন, ‘জীবন বিস্ময়কর রকমের ছোট। আমার কাছে, পেছন ফিরে তাকালে জীবন এতোই ছোট মনে হয় যে আমি খুব সামান্যই এর অর্থ বুঝতে পারি। ধরা যাক, একজন তরুণ কীভাবে কোন দুঃশ্চিšতা ছাড়া পাশের গ্রামে যাওয়ার কথা ভাবতে পারে - কোন দুর্ঘটনা ছাড়াই – এমনকি স্বাভাবিক সুখের মুহুর্তেও রকম একটি ভ্রমণের জন্যে যে সময়ের প্রয়োজন সে বিবেচনা করলেও জীবন অত্যšত সংক্ষিপ্ত মনে হবে।’
গাছ
আমরা তুষার আবৃত গাছের কাণ্ডটি দেখতে পছন্দ করি। আপাতভাবে মনে হয় তারা খুব কোমলভাবে দাঁড়িয়ে আছে এবং একটু ধাক্কাতেই দুলে উঠবে। না, তা করা যাবে না, কেননা, তারা গভীরভাবে মাটির সঙ্গে একাÍ। কিন্তু, এমনকি এটাও শুধুই আপাতভাবে মনে হয়।



প্রস্থান
আমি আমার ঘোড়াটিকে আস্তা¯ngk¯¯বল থেকে নিয়ে আসার আদেশ দিলাম। ভৃত্য আমার আদেশটি বুঝতে পারলো না। তাই আমি নিজেই আ¯তাবলে গেলাম, ঘোড়ায় চাপালাম এবং ঘোড়ায় চড়লাম। দুরে ট্রা¤েপট বাজানোর শব্দ শুনতে পেলাম এবং আমি ভৃত্যকে জিজ্ঞেস করলাম এর মানে কী। সে কিছুই জানতো না এবং কিছু শোনেওনি। গেটে সে আমাকে থামালো এবং জিজ্ঞেস করলো : ‘প্রভূ কোথায় যাচেছন?’ ‘আমি জানি না,’ বললাম, ‘শুধু এই এলাকার বাইরে, এর বাইরে, বাইরে, আর কিছু নয়, এটাই একমাত্র পথ যাতে আমি লক্ষ্যে পৌঁছতে পারি।’ সে জিজ্ঞেস করলো, ‘তাহলে আপনি আপনার লক্ষ্য জানেন?’ ‘হ্যাঁ,’ আমি জবাব দিলাম, ‘আমি এইমাত্র তোমাকে বলেছি। এর বাইরে - সেটাই আমার লক্ষ্য।’
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×