সত্যিকারের ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি বাংলাদেশ বা ভারতে নেই, এমনকি বিশ্বের অন্য কোনো দেশেও নেই। ইউরোপের তখাকখিত উন্নত দেশগুলো যতোই ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলুক না কোন, তারাও তাদের দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মকেই কোনো না কোনো ভাবে প্রাধান্য দিয়ে থাকে।
তাহলে সংখ্যালঘুর দোষ কি? এই দোষ কি তাদের জন্মসূত্রেই প্রাপ্য? আমি তা মানি না, একজন মানবতাবাদী মানুষ হিসেবে মানতে পারি না। কিন্তু যে বিশ্বাসের কোনো প্রয়োগ নেই, বিশ্বের কোথাও যার সত্যিকারের কোনো প্রতিষ্ঠা নেই, তার অনুসারী হয়ে কি হতাশাই প্রাপ্য?
আমি সেটি মনে করি না। লক্ষ্য আর নীতিবোধকে যতোটা উঁচুতে রাখা হয়, অর্জন তার থেকে সবসময়েই কিছুটা হলেও নী্চে। এটিই স্বাভাবিক পক্রিয়া। কারণ আমরা মানুষ। আমাদের দোষ থাকবে, আমাদের ত্রুটি থাকবে। আমাদের ভেতরে ভালো থাকবে, মন্দও থাকবে। আমরা কখনো জেনে, কখনো না জেনে কাউকে কষ্ট দিতে পারি, কখনো আবার সেই মানুষটিকেই ভালোবাসা দিয়ে আনন্দে উদ্বেলিত করতে পারি। লক্ষ্যের উচ্চ এই শিখরে আমাদের পক্ষে কি আমাদের এই মানবিক বৈশিষ্ট নিয়ে পৌঁছানো সম্ভব? আমার মনে হয় না। কিন্তু যতোটা সম্ভব তার কাছাকাছি পৌঁছানোর চোষ্টা করা মানুষ হিসেবে আমাদের উচিত বলে মনে করি। আর সেটি তখনি সম্ভব, যদি নজরটি উঁচুতে রাখা হয়।
ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী, এমন কোনো রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে নেই। আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষ তো নয়ই, এর কাছাকাছিও নয়। বাকীদের কথা আর বলার কোনো দরকার পড়ে না। আর যেসব দল বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নয় ও এই দেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে যারা, তাদের মদদপুষ্ট বা তাদেরকে মদদ দিয়ে থাকে, তাদের এই দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার আছে বলে আমি মনে করি না। আপামর জনগনের ঘৃণাই তাদের একমাত্র প্রাপ্য। এখানে কোনো আপোস করার ক্ষমতা আমার নেই।
কে নাস্তিক, বা কে আস্তিক, কে মুসলিম বা কে হিন্দু, সেটি আমার বিচার্য বিষয় নয়। কোন মানুষটি ভালো, সেটি বিচার করতে চাইলে ধর্মপরায়ণতা বা ধর্মহীনতার বিচার করার দরকার পড়ে না। যে মানুষটি ভালো, সে ধর্মপ্রাণ হয়ে, ধর্মহীন হয়ে, স্বধর্মী হয়ে, বিধর্মী হয়েও ভালো। যে মানুষটির ভেতরে মানবিকতা আ্ছে, তার নাস্তিকের বা আস্তিকের লেবাস পরার দরকার পড়ে না।
এই অর্জনের জন্যে যে বৈশিষ্ট একটি মানুষের ভেতর বিশেষ ভাবে থাকা দরকার,তার অন্যতম হচ্ছে সহিষ্ণুতা। তাহলেই অন্যকে সন্মান করা সম্ভব হয়। আমি নিজেও কি তা সবসময় পেরে উঠি? আসলে সবসময় পারি না। তারপরও একসময় ফিরে পাই নিজেকে। তখন আত্মসমালোচনায় শুধরানোর চেষ্টা করি নিজেকে। নিজের নজরটি আবার উঁচু করার চেষ্টা করি। আসুন, সবাই মিলে সেটিই করি।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৩:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



