আজকে সকালে পেপারে চোখ রেখেই প্রথম পেজ-এ একটা খবরে চোখ আটকে গেলো।
হাসপাতালে পৌঁছাতে পারল না শিশুটি
শেখ সাবিহা আলম | তারিখ: ০৩-০৯-২০১০
রাজধানীর জয়কালী মন্দিরে যানজটে আটকা পড়ে আছে অ্যাম্বুলেন্সটি। অ্যাম্বুলেন্সের চালক জুলহাস মিঞা প্রাণপণে বাজিয়ে যাচ্ছেন হর্ন। সামনের রাস্তা বন্ধ, বেরোনোর কোনো পথ নেই। তাঁর গাড়িতে চার দিনের একটি ফুটফুটে ছোট্ট শিশু একটু পর পর কেঁদে উঠছে। শিশুটির সঙ্গে সঙ্গে তার মা-ও কাঁদছেন। কখনো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে, কখনো উচ্চ স্বরে। আশা-নিরাশার দোলায় দুলছে মায়ের মন। একেওকে জিজ্ঞাসা করেন, বাঁচবে তো তাঁর নাড়িছেঁড়া ধন? একমাত্র এবং প্রথম সন্তান? নামটাও রাখতে পারেননি। তবে সুস্থ হলেই...।
শিশুটি সুস্থ হয়ে আর বাড়ি ফিরতে পারেনি। গতকাল বৃহস্পতিবার মাতুয়াইলের শিশু-মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পথে শিশুটি মারা গেল। থেমে গেল অ্যাম্বুলেন্সের হর্ন, ট্রাফিক সার্জেন্টের যানজট ছোটানোর আপ্রাণ চেষ্টা। মৃত শিশুকে বুকে চেপে ফিরে গেলেন মা আমেনা বেগম আর বাবা হারুন অর রশীদ।
পুরো সংবাদ- Click This Link
কি আর বলবো? যানজট নিয়ে কথা বলতে বলতে সবাই ক্লান্ত। সরকার যানজট কমানোর জন্য কত কিছুই না করলো ... day light saving চালু করলো; স্কুল ও অফিসের সময় পরিবর্তন করলো- লাভটা কি হলো? যানজট কমার বদলে যানজট শুধু বেড়েই যাচ্ছে।
যানজটের আসল কারনগুলোতো এমনিতেই মানুষের চোখে পড়ে। রাস্তায় চোখ পড়লেই দেখা যায় রাস্তা আটকে আছে প্রাইভেট কার গুলো দিয়ে। এগুলোর বেশির ভাগেই দেখা যায় এক থেকে দুই জন যাত্রী। তার উপর সিএনজি ষ্টেশনগুলোর আশেপাশের রাস্তাগুলোতে দেখা যায় অপেক্ষারত গাড়িগুলোর ভীড়। জ্যাম ছুটবে কিভাবে? চারটা প্রমাণ সাইজের প্রাইভেট কার যে পরিমাণ জায়গা দখল করে - সেই পরিমাণ জায়গায় একটা বাস কমপক্ষে ত্রিশ জন যাত্রী বহন করতে সক্ষম। সদ্য হওয়া নব্যধনী লোকগুলো সামাজিক প্রতিপত্তি বজায় রাখার জন্য গাড়ী নিয়ে রাস্তায় হাওয়া খেতে বের হয়। আরে ভাই গাড়ী চড়ার এতো শখ থাকলে অক্টেন দিয়ে চালায় দেখান না- সিএনজি ভরা গাড়ি নিয়ে এতো কিসের ফুটানি? এম্নিতেই তো এসি গাড়ি নিয়ে সিএফসি ছুটাইয়া পরিবেশের বারটা বাজাচ্ছেন - এরপর আবার পরিবেশবান্ধব গ্যাস নিয়া এতো লাফান কেন? পরিবেশের উপর এতো মহব্বত থাকলে এসি গাড়ি ছাড়েন। আপনাদের জন্য আমরা রাস্তায় ঠিকমত চলাচল করতে পারিনা। গাড়ি থাকলেই কি গাড়ি দেখায় বেড়াইতে হবে নাকি? ঢাকা শহরে বাস সার্ভিস এখন অনেক ভালো। আসেন বাসে চড়ি। নিজে শান্তিতে থাকি। মানুষ গুলারেও শান্তিতে থাকতে দেই।
খবর থেকে আরেকটা লাইন পেস্ট দিলাম - "যানজটের এই নিষ্প্রাণ ঢাকা শহর সন্তানকে গিলে ফেলেছে—এই বলে বারবার বিলাপ করছেন বাবা-মা।"

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



