আপাতত বিয়ের কথা বলবেন না- বলে ঠিক করলেন আছিয়া খাতুন। ছেলের সব ধরণের আবদার মেটাতে ব্যস্ত থাকছেন। কৌশলে ছেলেকে হাতের কাছে রাখার সব চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু মকুর মনতো সবসময় ছটফট করতে থাকে। এক জায়গায় বেশিদিন মন টেকেনা তার। বাল্যবন্ধু দেলোয়ারের সাথে গ্রামে হাঁটতে বেরুলে দেখা হয়ে যায় তাবলিগ জামাতের লোকদের সাথে। ওদের কথা শুনে ভীষণ ভক্ত হয়ে যায় তাবলিগের। দেলোয়ারকে সাথে নিয়ে ঐ দিনই বাড়ি থেকে বেরিয়ে তাবলিগ জামাতে যোগ দেয় মকু। বড়বড় চুলদাড়ি নিয়ে দেড়মাস পর আবার বাড়ি ফিরে আসে। কিছুদিন পর আবার দাড়ি ছেঁটে, লম্বা চুল নিয়ে যোগ দেয় ভান্ডারি দলে। সারা রাত চলে ভান্ডারি গান বাজনা আর জিকির। অনেক দূর থেকে মাইজভান্ডারির ভক্তরা চলে আসতো নেচে নেচে গান আর জিকির করতো। মহিলা ভক্তদের উপস্থিতিও কম ছিলনা। আসরের অবসরে সবাই গল্পগুজব, ঠাট্টা-মশকরায় ব্যস্ত থাকতো; বালুরকান্দির স্বামী পরিত্যাক্তা শাহীনূর মকুর সাথে খাতির জমাতে চেষ্টা করতো। মকুর লম্বা চুলে বিলি কেটে দিতো। প্রথম প্রথম ভালো না লাগলেও এখন তেমন খারাপ লাগেনা। বরং খুউবই আরাম বোধ করে শাহীনূরের যত্ন-আত্মি। আস্তে আস্তে মেয়েদের প্রতি লজ্জা-ভয় কমে গিয়ে একটা অব্যক্ত আকর্ষণ অনুভব করতে লাগলো মকু।
বাড়িতে ফিরে গিয়ে মা আছিয়া খাতুনের কাছে শাহীনূরকে বিয়ে করার ইচ্ছের কথা ব্যক্ত করলো মকু। বিয়ের ইচ্ছের জন্য ছেলের প্রতি খুশি হলেও খুশি নন শাহীনূরের ব্যাপারে। এই বাড়িতে বউ হয়ে এলে আসবে তার ভাইঝি মিতা; এ কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। কিছুদিনের মধ্যেই শাহীনূরের ভুত মাথা থেকে নেমে গেলো। মা আছিয়া খাতুন খুশি হয়ে ছেলেকে নিয়ে ভাইয়ের বাড়িতে গিয়ে মিতাকে বউ করে নিয়ে আসলেন।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:২৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



