ইতালীয় কথাসাহিত্যিক আলবার্তো মোরাভিয়া ১৯০৭ সালে রোমে জন্মগ্রহণ করেন। সারাবিশ্বে আলবার্তো মোরাভিয়া নামে পরিচিত হলেও তাঁর আসল নাম কিন্তু আলবার্তো পিনচেয়ার্ল। যৌবনে তিনি স্বাস্থ্যহীনতায় ভুগেছিলেন যদিও এসময়ে প্রচুর পড়াশোনাও করেছেন।
১৯২৯ সালে জিল ইন্দেফ্রেন্তি ( দ্য টাইম অব ডিফ্রেন্স) প্রকাশের সাথে সাথে ইউরোপ জুড়ে মোরাভিয়ার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। এই উপন্যাসে মোরাভিয়ার অস্তিত্ববাদী চিন্তা প্রকাশিত হয়েছে। উপন্যাসের পাত্রপাত্রী কার্লা ও মিশেল দুই ভাইবোন। তাদের মা মারিয়াগ্রাযিয়া একজন বিধবা এবং তাঁর প্রেমিক লিও। অন্যদিকে লিওর সাবেক প্রেমিকা মারিয়াগ্রাযিয়ার বান্ধবী লিসাও পরিবারটির নিত্য শুভাকাঙ্ক্ষী। লিসা যৌবনের শেষপ্রান্তে এসে বান্ধবীর ছেলে মিশেলের প্রতি যৌনআকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেন যদিও মিশেল তার আগ্রাসী মনোভাবের প্রতি বিরক্ত। অন্যদিকে কার্লা মায়ের প্রেমিক লিওকে নিয়ে নতুন জীবন শুরু করতে আগ্রহী। প্রথম গ্রন্থের ন্যায় মোরাভিয়ার পরবর্তীকালের উপন্যাস ও গল্পগুলোতেও অস্তিত্ববাদী চিন্তার পাশাপাশি যৌনতা, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা ইত্যাদির প্রাধান্য ছিল।
জিল ইন্দিফ্রেন্তি প্রকাশের পরপরই তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন এবং ফ্যাসিস্টরা তাঁর বই নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ১৯৪৭ সালে রচিত 'রোমের রমণী' তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃত। এখানে আদ্রিয়ানা নামক একজন গণিকার নিষ্ঠুর বাস্তবতা বর্ণিত হয়েছে।
১৯৫৪ সালে প্রকাশিত হয় 'রোমান টেলস' গল্পগ্রন্থ। এই গ্রন্থে মোরাভিয়া একেবারেই সাধারণ মানুষের হাসি-কান্নার কথা বলেছেন যেখানে প্রেম বয়ে যায় অনাড়ম্বর বাস্তবতায়। লেখকের আরোপিত ভাষা নয় বরং তাদের মুখের ভাষাই যেন গল্পগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে।
এছাড়া তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে 'দ্য কনফরমিস্ট', 'দুই রমণী' 'হিম এন্ড মি', 'দ্য ফ্যাটিশ' (ছোটগল্পগ্রন্থ) ইত্যাদি অন্যতম।
১৯৯০ সালে আলবার্তো মোরাভিয়াকে তাঁর রোমের অ্যাপার্টমেন্টের বাথরুমে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।