পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ, এমবিএ করা এক ছাত্রকে একটা বুদ্ধি দিলাম। তাকে বললাম, যেহেতু ছাত্রাবস্থায় চাকরীর জন্য প্রস্তুতি নিতে পারনি-
(আমাদের দেশের সিলেবাস দুইটা, একটা ডিগ্রি পাশ করার জন্য, আরেকটা চাকরীর জন্য। দুইটা সম্পূর্ণ ভিন্ন সিলেবাস। চালাকগুলা দুইটা একসাথে চালায়। ধরা খায় অতি চালাকগুলা)
তাই নিজেকে আরও দুই বছর সময় দাও। চাকরীর জন্য দরজা বন্ধ করে পড়। এই সময়ে কোন ধরণের চাকরীর জন্য দৌড়াদৌড়ি করবা না। তাতে শুধু সময় এবং টাকাই নষ্ট হবে।
সে যুক্তি দিল, নারে ভাই, এই মূহুর্তে আমার চাকরী দরকার। না হলে মরে যাব। এতদিন আমার পক্ষে অপেক্ষা করা সম্ভব নয়।
আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজেকে সামলে নিলাম।
ফলাফল: সেই দুই বছরের পরে আরও দুই বছর গেছে। তার চাকরী হয়নি।
বয়স শেষ হয়েছে বহু আগেই। এখন যে চাকরীটা করে তার এ্যাকাডেমিক ডিগ্রির সাথে এটা কিছুতেই যায় না।
সময় ঠিকই চলে গেছে কিন্তু এখনি চাই, এই কারনে কিছুই পাওয়া হল না।
তো এই মানসিকতা শুধু এই ছেলেটার নয় এটা আমাদের সকলের। আমরা কোন কিছুতেই ধৈর্য রাখতে চাই না। সেটা হোক এক বছর বা এক মিনিট।
কভিড-১৯ ভাইরাসের আক্রমনে যে মহামারীর ভিতর দিয়ে আমরা যাচ্ছি, তার কোন চিকিৎসা এখন পর্যন্ত বিজ্ঞান দিতে পারে নি। তবে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। সামাজিক দুরত্ব, হোম কোয়ারেন্টাইন ইত্যাদি মেইন্টেইন করা।
প্রশাসনের কোন নির্দেশ এই জনপদের মানুষ ঠিকমত একদিনও মানে নি। কেউ না। বরং প্রশাসনকে বিভিন্নভাবে বেকায়দায় ফেলেছে। নাজেহাল করেছে।
ফলশ্রুতিতে জাতীয় বিপর্যয়। মহামারী ঠেকানোর কোন উপায় আর নেই। এদিকে বৈশ্বিকভাবেও আমাদেরকে একঘরে করার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়ে গেছে।
জাপান বাংলাদেশ সহ বেশ কয়েকটি দেশকে তাদের দেশে এন্ট্রান্স বন্ধ ঘোষণা করেছে। আরও কয়েকটি দেশ তা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে।
আমরা দুইটা মাস নিজেদেরকে আটকাতে পারলাম না। দুইটা দিন ধৈর্যের সাথে আপোষ করতে পারলাম না। এই দুইমাস সময় ঠিকই চলে গেছে কিন্তু রয়ে গেছে বিপর্যয়!
সময় ঠিকই চলে যায়, রয়ে যায় আমাদের মূর্খামি।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:৩৭