প্রতি বছর ২১শে বই মেলা উপলক্ষে প্রচুর বই ছাপা হয়। এছাড়াও সারা বছর ধরে বই ছাপা অব্যাহত থাকেই। সৃজনশীল এই বই গুলোর দাম কিভাবে নির্ধারণ করা হয়?
বইয়ের ছাপা খরচ, কাগজের দাম, বাইন্ডিং, প্রচ্ছদ ইত্যাদি সহ আরো নানান খরচ যোগ করে তার সাথে প্রকাশকের মুনাফা যোগ করে বইয়ের একটা দাম নির্ধারণ করা হয়।
এখানে লক্ষ্যনীয় বিষয় হল, বইয়ের দাম নির্ধারণে লেখা বা কন্টেন্টের দাম যোগ হয় না। অর্থাৎ লেখকের লেখার কোন দাম বইয়ের দামে সরাসরি প্রভাব ফেলে না।
তাহলে কী দাঁড়াল?
দাঁড়াল এই লেখকের লেখা উপেক্ষিত রইল। আমরা কাগজ, কালি, মলাট ইত্যাদি কিনলাম, কিন্তু লেখকের লেখা কিনলাম না।
অথচ লেখক থেকে পাঠক সকলেই ভাবে লেখকের লেখা বিক্রি হয়েছে আসলে তা নয়, লেখকের লেখা বিক্রি হয় নি, বিক্রি হয়েছে কাগজের মলাটবদ্ধ একটা বস্তু। যার নাম বই। লেখক পাঠক প্রকাশক বইয়ের পাতার মান, বাঁধাইয়ের মান ইত্যাদির উপর গুরুত্ব দিয়ে বইয়ের দাম নিয়ে বাধানুবাদ করে থাকেন।
বইয়ের দাম নির্ধারণের এই প্রকিৃয়া সঠিক নয় বলে আমি মনে করি। আমি মনে করি বইয়ের দাম নির্ধারণে কন্টেন্ট বা লেখার মানের বিবেচনা আমলে নেওয়া খুবই জরুরী। মনস্তাত্তি¡কভাবে পদ্ধতিটা বদলাতে হবে।
এই পদ্ধতিগত পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে পাঠক নিজে। এবং লেখক ও প্রকাশকও।
প্রচলিত পদ্ধতিতে পাঠক দেখে বইয়ের ছাপা ঝকঝকে কি না, বাঁধাই মজবুত হয়েছে কি না ইত্যাদি। সে একবারও কী ভাবে লেখার মান কতটা উন্নত। যদি লেখার মান নিয়ে ভাবে তবে সাথে সাথে দামটা তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কী না তা কী ভাবে?
যদি বইয়ের দামের সাথে মানের মানদন্ড সামনে থাকত তবে বই নিয়ে পাঠকরা সম্মিলিত সমালোচনা করার সুযোগ পেত। তখন তারা ভাবত কাগজ কিনি নাই, লেখা কিনেছি। টাকা জলে গেল কী না দেখি। অথচ এখন পাঠক ভাবে কাগজ কিনেছি, টাকা উসুল।
না! পাঠককে ভাবতে হবে,‘কাগজ নয়, লেখা কিনেছি।’ সেটা জলে গেল কী না দেখি।
এতে লেখক পাঠক প্রকাশক ইন্টারেকশন বাড়বে বলে মনে করি। ভাল ভাল লেখা বের হবে। মান সম্মত লেখা এবং লেখক উঠে আসবে। সবচেয়ে বড় কথা পাঠকের ঠকার সম্ভাবনা কমে যাবে। এতে লেখক মূল্যায়িত হবে।
তাই ‘কাগজের দামে নয়, লেখার দামে বই কিনুন’।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:৪৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



