somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনেরা ২-৪শ টাকা ফাইন, আর আমরা ২-৪টা থাপ্পড় খাওনের কথা মাথায় রাইখাই নামি....

২৮ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘটনা বেশ পুরাতন। এক রিক্সায় যাচ্ছিলাম কোথাও; রিক্সাওয়ালাকে রং সাইডে ডুকতে দেখে অনুরোধ করলাম যে ৫টাকা বাড়িয়ে দিবো, তাও ঠিক রাস্তায় যান। রিক্সাওয়ালার ভাবগতি পরিবর্তন হলো না; কিন্তু বাঁধা সাধলো পুলিশ; একটা থাপ্পড় খেয়ে তারপর সে সঠিক পথ ধরলো।



রিক্সাওয়ালা মামাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে বিনা কারণে থাপ্পড়টা খাইলেন মামা..... তার উত্তর, এইরকম দুই-একটা প্রতিদিনই খায়! এবার জিজ্ঞাসা করা হলো যে, প্রতিদিন থাপ্পড় খাইয়াও কেন পরিবর্তন হন না? বিশাল জ্ঞানগর্ভ উত্তর আসলো।

তার কথা এমন, মটরসাইকেল-গাড়ি নিয়ে যারা বের হয়, প্রতিদিনই তাদের মাথায় থাকে যে ২-৪শটাকা ফাইন হইতে পারে; তাদের জন্য এই টাকা তেমন কিছু না; তাই তারা আইন মানে না। আর আমরা (রিক্সাওয়ালারা) বাসা থেকে বের হওয়ার সময় ২-৪টা থাপ্পড় খাওয়ার কথা মাথায় রেখেই বের হই; তাই আমরা পরিবর্তন হই না। কিন্তু পুলিশ যদি উল্টাটা করতো, তাহলে কাম হইতো!

কেমন?

উত্তর আসলো, গাড়ির মালিককে বা মটর সাইকেলের মালিককে থামায়ে কানসা যাইতা দুইটা চড়, আর রিক্সাওয়ালাকে ২-৪শ টাকা ফাইন.... ব্যাস, সবাই টাইট।

আজকে প্রথম আলোতে "মুখে পরার মাস্ক ব্যাগেও নেই" শিরোনামে সংবাদটা পড়ে রিক্সাওয়ালা ভাইয়ের কথা খুব মনে পড়ছিলো।

বসুন্ধরা আবাসিকের মত এলাকায় কাউকে মাস্ক না থাকার কারণে ১০০টাকা জরিমানা করে হাতে মাস্ক ধরায় দেওয়া এমন কিছু না। আবার মটরসাইকেলে বসা ভাইয়াটাকে দেখে ২০০ টাকা জরিমানাও এমন কিছু মনে হলো না।

আমি যে দেশে থাকি, সেখানের কথা বলি; (প্রায়) কেউ মাস্ক ছাড়া বের হয় না। অন্তত আমার সামনে পড়ে নাই। সেদিন রেস্টুরেন্টে ঢুকে মাস্ক খুলে বসতে যাবো, রেষ্টুরেন্টের একজন হাজির হয়ে বললো খাবার সার্ভ না হওয়া পর্যন্ত মাস্ক খোলা যাবে না! ঘটনা কি?

জানা গেলো তার আগের দিন রাত্রে পুলিশ রেষ্টুরেন্টে এসে তিন জনকে পেয়েছে যারা মাস্ক ছাড়া বসে ছিলো; সবাইকে জিজ্ঞাসা করতে তিনজনের একজন পকেটে মাস্ক দেখাতে পেরেছে। বাকি দুইজনের কাছে মাস্ক ছিলো না। অর্থাৎ তারা মাস্ক ছাড়াই বাড়ি থেকে বের হয়েছে (আসলে ঐ দুইজনই ঐ বিল্ডিংএরই বাসিন্দা)। দুইজনকে মাত্র ৫০০ রিয়াল করে (বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১১,০০০ টাকা) ফাইন করা হয়েছে। আর রেষ্টুরেন্টের মালিককে বলে দিয়ে গেছে যে এরপর কাউকে মাস্ক ছাড়া ঢুকতে দেখলে ১০,০০০ রিয়াল পর্যন্ত জরিমানা করা হবে (সরকারী নিয়ম এমনটাই)। ব্যাস, রেষ্টুরেন্টের সবাই ব্যাস্ত মাস্ক পরাতে।

একটু দূরেই আর এক কেরালা রেষ্টুরেন্টে এমনই এক কান্ড করা হয়েছে। ব্যাস, পুরা এলাকায় সবাই সতর্ক। রেষ্টুরেন্টতো রেষ্টুরেন্ট, যেখানেই যায় না কেন, মাস্ক কেউ ছাড়ে না।

আইনের এমন প্রয়োগের ফলে রাত দুইটার সময়ও ফাঁকা রাস্তায় খুব একটা কাউকে দেখা যায় না লাল সিগন্যাল ভেঙ্গে এগিয়ে যেতে। ১০-২০ মিটারের উল্টা পথের জন্য কখনও কখনও ৪/৫ কিলোমিটার গাড়ি চালি আসতে হয়; কিন্তু পুলিশ না থাকলেও কেউ এমনটা করতে চায় না।

খুব সম্ভবত ২০১৫ এর কথা। কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউয় এ রাস্তা পার হচ্ছি; পুলিশ খপ করে হাত ধরে নিয়ে গেলো ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে। কাছাকাছি একটা ফুটওভার ব্রিজ ছিলো; কিন্তু আমি সেটা ব্যবহার না করে জেব্রাক্রসিং ব্যবহার করছিলাম। এখন আমাকে ২০০ টাকা ফাইন করা হবে। জবাব দিলাম, আমাকে একটা আইন দেখান যে জেব্রা ক্রসিং দিয়ে পার হওয়া যাবে না। ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবের খুব সম্ভবত মন ভালো ছিলো সেদিন; বললেন, বাড়ি যান, ট্রাফিক আইন পড়ে দেখেন। ব্যাস, কোন ফাইন ছাড়া আমাকে বিদায় দিয়ে পিছনের জনকে ফাইন ধরলনে; তাকেও ঐ জেব্রাক্রসিং থেকেই ধরে আনা হয়েছে!

পুরা লেখার সার কথা হচ্ছে; যে কোন কিছু যদি সরকার কড়াকড়ি ভাবে প্রয়োগ চায়, তার ভঙ্গের বিষয়ে ক্লিয়ার ইন্সট্রাকশন, বড় ফাইন, এবং সঠিক প্রয়োগ দরকার। বাকিটা আপনা আপনিই হয়ে যায়।

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ মিডিয়াসার্কেল.আইএন / ঢাকাট্রিবিউন.কম
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১৮
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×