somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাঠ প্রতিক্রিয়া ৮ - রিপুচক্র (গল্প সংকলন)

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বইয়ের নাম: রিপুচক্র
লেখার ধরণ: গল্প সংকলন
লেখক: আরিফ এম. ইসলাম
প্রকাশনী: অনুজ প্রকাশনী
প্রচ্ছদ: নওসীম তাসনিম
প্রকাশ: বইমেলা, ফেব্রুয়ারী ২০২৩
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১২০
মলাট মূল্য: ২৫০/=

গল্পকার আরিফ ইসলামের লেখার সাথে প্রথম পরিচিত হই ২০২১ সালে গল্পের অলিগলি নামে একটা গল্প সংকলন প্রকাশিত হওয়ার পরে। আমাদের দুজনেরই গল্প সেখানে প্রকাশিত হয়েছিল। কিছুটা ব্যতিক্রমী জনরার গল্পকার উনি, যে কারণে উনার গল্পগুলো সুযোগ পেলেই আমি পড়ার চেষ্টা করতাম। গতানুগতিক টিনেজ প্রেম, পরকীয়া বা যাচ্ছে তাই হাস্যকর প্রেম পিরিতি ভালোবাসার কাহিনী বাদ দিয়েও বাংলা সাহিত্যে যে আরও অনেকগুলো জনরা আছে লেখার, অথচ সেইগুলো নিয়ে সহজে কেউ গল্প লিখতে চায় না। অথচ গল্পকার আরিফ এই সীমাবদ্ধতা থেকে বের হয়ে এসে ঠিকই ফিকশন, হরর, অকাল্ট ফিকশন, এলিয়েন ইত্যাদি টপিক নিয়ে নিয়মিত গল্প লিখে যাচ্ছেন। তাই এবারের বইমেলায় যখন দেখতে পেলাম উনার গল্প সংকলন প্রকাশিত হচ্ছে, বেশ আগ্রহ নিয়ে বইটা অগ্রীম সংগ্রহ করলাম আমি।

যে কোনো গল্প সংকলন আমার খুব ভালো লাগে পড়তে। কারণ একটা বইতে একইসাথে বিভিন্ন রুচির অনেকগুলো গল্প পড়া যায়। পাঠক হিসাবে আমি খুবই ধীরস্থির স্বভাবের এবং যেকোনো লেখা আমি খুব গভীর মনোযোগের সাথে পড়ি। সম্ভবত এটাই উনার বইয়ের প্রথম রিভিউ লেখা হচ্ছে, তাই চেষ্টা করেছি রিভিউটা যেন পরিপক্ক এবং প্রায় ভুলহীণ হয়।

সর্বমোট ৮০ পৃষ্ঠার এই বইতে ১৩টি ভিন্ন ভিন্ন রুচির গল্প জায়গা পেয়েছে। নিচে স্বল্পপরিসরে প্রতিটা গল্প নিয়েই অল্প করে আলোচনা করার ইচ্ছে আছে আমার। এই গল্প সংকলনের প্রচ্ছদ তৈরি করেছেন মেধাবী শিল্পী নওশীন তাসনিম। প্রচ্ছদ পছন্দ হয়েছে নওশীন। তবে বইয়ের ভেতরে প্রচ্ছদ শিল্পীর নামের জায়গায় সম্ভবত টাইপিং মিসটেক হয়েছে। আশা করছি পরবর্তী সংস্কারের সময় এটা ঠিক করে দেয়া হবে।

গল্প ১ – কর্মফল
অবৈধ সম্পর্কের পরে পেটে সন্তান চলে আসলে সুদীপ ও তার গর্ভবতী প্রেমিকা জোর করে বাচ্চাটাকে এবরশন করে ফেলে দেয়। এবরশন করার পরেই সুদীপ ও সেই মেয়েটা শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এদিকে যে মহিলা ডাক্তার এই এবরশন করিয়েছেন তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়লেন। এভাবে একের পর এক অসুস্থ হওয়ার ঘটনাটা পেছনে আসলে কী গোপন সত্য লুকিয়ে আছে সেটা এই ভৌতিক গল্পে ফুটে উঠেছে।‌

গল্প ২ – দেবতার দ্বীপ

সমুদ্রের বুকে ভেসে থাকা অদ্ভুত একটা আইল্যান্ড হচ্ছে সিকারু। এখানে একবার কেউ আসলে আর কিছুতেই ফেরত যেতে পারে না। কেন পারে না সেটা বাইরের কেউ জানে না। নায়কের বন্ধু জিমি ঠিক এখানে এসেই হারিয়ে গিয়েছিল। বন্ধু জিমিকে খুঁজতে এসে নায়ক এক অভূতপূর্ব গোপন সত্য আবিষ্কার করলো। রাত এগারোটার সময় হঠাৎ করেই এই আইল্যান্ডের চারপাশে টাইম ডাইমেশনে পরিবর্তন হওয়া শুরু করে। তারপর কী কী অদ্ভুত ঘটনা ঘটলো সেটা জানতে পড়তে হবে গল্পটার শেষ পর্যন্ত।
দুর্দান্ত গল্প এটা। আমার পছন্দ হয়েছে।

গল্প ৩ – অমানিশা
গ্রামের ছেলে সুমন লেখাপড়া শেষ করে নতুন চাকুরির সুবাদে এক অচেনা জায়গায় এসে থাকার জন্য বাসা ভাড়া করলো। বিল্ডিংয়ের ছাদের এককোণায় বাসা ভাড়া নেওয়ার কারণে মাঝে মাঝেই ছাদে এসে ঘোরাঘুরি করতো ও। হুট করেই মধ্যরাতে সেখানে পরিচিত হলো নীলা নামের একটা অল্পবয়সী মেয়ের সাথে। সুমনের কাছে প্রাইভেট পড়ার জন্য নীলা নিজেই প্রস্তাব দেয়। নীলাকে পড়াতে গিয়ে পরিত্যক্ত এক বাড়িতে সুমন এক ভয়ংকর সত্যের মুখোমুখি হলো যা ও কখনোই আগে কল্পনা করেনি।

গল্প ৪ – শ্বাপদ
অতনু অবলা পশুদের খুব আদর যত্ন করে। এলাকায় কোনো পশু বিপদে পড়লে অতনু তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এভাবে একটা কুকুরকে উদ্ধার করতে গিয়ে বীভৎস এক কুকুরের মৃতদেহকে উদ্ধার করে ও। সেখানে বিপদে পড়া একটা মেয়েকে উদ্ধার করতে গিয়ে আরও ভয়ংকর বিপদে পড়ে যায় ও।

এই গল্পের ফিনিশ আমার পছন্দ হয়নি। বরং গল্পের শেষ পৃষ্ঠার মাঝখানে গল্পটা শেষ করে দিলেই বোধহয় আরও ভালো হতো। গল্পের যে ফিনিশ দেওয়া আছে সেটা পড়ার পর অনেক পাঠকই বিভ্রান্ত হবেন। সম্ভবত প্রুফ রিডার লেখা পান্ডুলিপি ফরম্যাটের সময় লেখা এদিক ওদিক করে ফেলতে পারে।

গল্প ৫ – ডেভিল’স আওয়ার
বাসার ছাদে মধ্যরাতে বারান্দার দরজাটা লাগাতে গিয়ে নায়কের সাথে অপরিচিতা এক মেয়ের পরিচয় হলো। নিঃসঙ্গ দুইটা মানুষ খুব তাড়াতাড়ি একে অপরের বন্ধু হয়ে উঠে নিয়মিতই গল্প করতো। হঠাৎ করেই একদিন মেয়েটা তার নিজের জীবনের এক ভয়ঙ্কর সত্যের কথা নায়কের কাছে বলে দেয়। অবিশ্বাস্য এই ঘটনা নায়ক বিশ্বাস করতে না পেরে নিজেও কী করে সেটাই এই গল্পে ফুটে উঠেছে।

গল্প ৬ – আত্মারাম বাবুর দালানবাড়ি

এই গল্পটা এই সংকলনের সবচেয়ে সেরা গল্প বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। হুট করে অপঘাতে মৃত্যু হলে কেউই ঠিক বুঝে উঠতে পারে না তার মৃত্যু হয়েছে। এই নির্মম বাস্তবতা বুঝে উঠতেও বেশ কয়েকদিন সময় লেগে যায়। এভাবেই রাস্তায় রোড এক্সিডেন্টে মারা যাওয়া এক লোকের সাথে আত্মারাম বাবুর পরিচয় হলো। আত্মারাম বাবু এই লোকটাকে নিজের বাসায় নিয়ে আসলে একের পর এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে শুরু করলো।
অপূর্ব গল্প। দুর্দান্ত লেখা। লেখায় কলিকাতার টোন ব্যবহার করা হয়েছে।

গল্প ৭ – কৃতজ্ঞতা
এই গল্পটাও খুব সুন্দর হয়েছে। ইমন লেখাপড়ায় খুব মনোযোগী একটা ছাত্র। হুট করে মা মারা গেলে ওর বাবা আরেকটা বিয়ে করে। নিজের সৎ মায়ের সাথে ইমন চেষ্টা করে মানিয়ে নিতে। একদিন রাস্তার পাশে এক দোকানে খাবার খেতে গিয়ে এক অবলা কুকুরকে খাবার খাইয়ে সেটাকে কৃতজ্ঞতার নাগপাশে আবদ্ধ করে ফেলে ইমন।‌ জীবনের ভয়ংকর এক দুঃসময়ে কুকুরটা কীভাবে ওকে উদ্ধার করে, সেটাই এই গল্পে খুব সুন্দর করে ফুটে উঠেছে। অঘোরী তান্ত্রিকদের নিয়ে লেখা এই গল্পে পাঠক এক নতুন অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ পাবে।
তবে শব্দটা ওঘোরী না, হবে অঘোরী।

গল্প ৮ – আঁধার রাতের অতিথি

একটা খুনের আসল রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে নায়ক এক নির্মম সত্য উদ্ধার করলো, যার সাথে নিজেই জড়িত ছিল।‌ এক প্রকাশকের কাছে একটা রহস্যময় পান্ডুলিপি পাওয়া যায় যার লেখক কখনোই সেই পান্ডুলিপি প্রকাশকের কাছে পাঠায়নি।‌ তাহলে কে সে পাণ্ডুলিপি প্রকাশকের কাছে পাঠিয়েছিল?
খুব চমৎকার একটা গল্পের প্লট। কিন্তু গল্পটি লেখার সময়, স্থান ও কালের সাপেক্ষে প্যারাগুলোর অবস্থান সুসংযত না হওয়ার কারণে, পাঠক পড়তে গিয়ে তাল মিলাতে পারবেন না। এই ধরনের ভিন্ন ভিন্ন স্থান ও কালের গল্প লেখার সময় প্যারাগুলো আলাদাভাবে নাম্বারিং করে দিলে অনেক ভালো হতো।

গল্প ৯ – খুন লুকানোর সহজ উপায়

থ্রিলার জনরার এই গল্পটা একদম শেষ লাইন পর্যন্ত পড়তে হয়। পাঁচ মাসের এক নবজাতক শিশুকে জোর করে মাটি চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। কিছুদিন পরে সেই বাসায় বসবাসকারীদের ১০ বছরের একটা সন্তান মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে যায়। কিন্তু সাইকোলজিস্ট এসে পরীক্ষা করে কোনোকিছু উদ্ধার করতে পারে না। বাচ্চাটা কয়দিন পর নিজের বাবা-মাকে নির্মমভাবে খুন করে ফেলে। কেন নিজের বাবা মাকে খুন করল ছেলেটা এবং কে তার এই কাজের পিছনে ইন্ধন দিয়েছিল সেটাই এই গল্পে সুন্দর করে লুকিয়ে রাখা হয়েছে শেষ পর্যন্ত।

গল্প ১০ – একটি কালো বিন্দু
পৃথিবীর বিশেষ একটা অঞ্চলে টাইম ডাইমেনশন পরিবর্তিত হয়ে যাওয়ার কারণে চতুর্থ মাত্রার কিছু অদৃশ্য প্রাণীরা অন্য গ্রহ থেকে পৃথিবীতে চলে এসেছে। পৃথিবীর বিজ্ঞান এখনো অতটা উন্নত হয়নি তাদেরকে লুকিয়ে থাকা অস্তিত্ব আবিষ্কার করার। খুব শীঘ্রই সেই আগত এলিয়েনদের সংস্পর্শে আসার কারণে ব্যাপকহারে মানুষের মৃত্যু ঘটা শুরু করলো। পৃথিবীর মানুষরা কি কোনোভাবে মুক্তি পাবে এই অমোঘ আঘাত থেকে? মানবজাতির অস্তিত্ব কি আদতে সত্যিই বিলুপ্ত হয়ে যাবে?

গল্প ১১ – সঞ্জীবনী সুখ
রাশেদের স্ত্রী অনু হুট করে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। স্ত্রী শোকে পাগল হয়ে বিভিন্ন জায়গায় অনুর মতো আরেকটা মেয়েকে খুঁজে বেড়াতো রাশেদ। কোথায় যেন শুনেছিল ও পৃথিবীতে একই সাথে একই রকমের সাতটা মানুষ জন্মগ্রহণ করে। তাই অনুর মৃত্যুর পরে অনুর মতোই সাদৃশ্য আরেকটা মেয়েকে খুঁজতো ও।‌ রাশেদ কি অনুকে শেষ পর্যন্ত খুঁজে পেয়েছিল?
গল্পের শুরুতে দেয়া প্রথম প্যারাগ্রাফটা একেবারে অপ্রয়োজনীয় এই গল্পের জন্য। একজন গল্পকার একটা গল্প লিখে পাঠককে দেবে এবং পাঠক সেটা পড়ার পরে গল্প সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিবে। গল্পকার যদি শুরুতেই নিজেই সিদ্ধান্ত দিয়ে দেয়, তাহলে পাঠকরা কই যাবে?

গল্প ১২ – হ্যালুইন পার্টি
রোমানিয়ার একটা অঞ্চলে একরাতে হ্যালোইন পার্টির আয়োজন করে চারজন বন্ধু। চারজন বন্ধু ছাড়াও আরো দুইটা মেয়ে এসে সে পার্টিতে যোগ দেয়। ইতোমধ্যেই টেলিভিশনে ও মিডিয়াতে প্রচার করা হয় রাতের বেলা এই অঞ্চলে ভ্যাম্পায়ার ছড়িয়ে পড়েছে মানুষ খুন করার জন্য। দুইটা মেয়েকে অনেক রাতে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য দুই বন্ধু বের হয় বাসা থেকে। কিন্তু তারপরই এরা দুইজন প্রচন্ড আতঙ্কে এক বিভীষিকাময় সত্যের মুখোমুখি হয়। কী সেই সত্য?

গল্প ১৩ – রাহু দশা
অরুণাচল প্রদেশে ভ্রমণ করতে গিয়ে মিতা সেখানে এক পুরনো তিব্বতি মন্দির থেকে বৃদ্ধ এক লামাকে ফাঁকি দিয়ে এক জাদুকরি বই চুরি করে নিয়ে আসে যেটাতে আমৃত্যু বেঁচে থাকার মন্ত্র লুকিয়ে রাখা ছিল। দেশে ফিরে এসে মিতা সেই ভাষা শিখে একদিন সেই বই পড়তে বসলো। মিতা কি পেয়েছিল অনন্তর জীবনের অবশেষে সেই সন্ধান?

চরিত্র চিত্রায়ন:
গল্প সংকলনের বেশিরভাগ গল্পই ছোট গল্পের আকারে লিখে থাকার কারণে কোনো চরিত্রকে নিয়ে বিস্তৃতভাবে লেখার কোনো সুযোগ গল্পকারের ছিল না। তবে কিছু কিছু গল্পে লেখক প্রধান চরিত্রকে পাঠকের কাছে সীমিত পরিসরে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। গল্পকার এক্ষেত্রে চরিত্র চিত্রায়নে মনোযোগের চাইতে গল্পগুলোর থিম বা প্লটের দিকে বেশি মনোযোগ দিয়েছেন বলেই মনে হয়েছে।

কোনো গল্পেই নোংরা, সস্তা বা খোলামেলা দৈহিক বর্ণনা এখানে দেওয়া হয়নি সস্তা রাস্তায় বই বিক্রির জন্য, যেটা অবশ্যই বাহাবা পাওয়ার যোগ্য। সস্তা খ্যাতির জন্য লেখক উনার লেখক সত্ত্বাকে বিসর্জন না দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। লেখায় উৎকর্ষতার সাথে শালীনতা সহও যে গল্প লিখা যায় এই গল্পগুলো তারই দারুণ উদাহরন।

যা ভালো নাও লাগতে পারে:
এখন আমি যে মতামতটা দেবো সেটা সম্পূর্ণই একজন পাঠক হিসাবে আমার একান্ত ব্যক্তিগত অনুভূতি, যা হয়তো অন্যকারোর সাথে মিল নাও হতে পারে।

বেশ কয়েকটা গল্পে লেখার ক্ষেত্রে দেখা গেছে গল্পকার পার্শ্ববর্তী একটি দেশের বাংলা সাহিত্যের অনেক আগে প্রচলিত একটা ধারাকে অনুসরণ করার চেষ্টা করেছেন, বিশেষ করে কথোপকথন দেয়ার সময়। সেই ধারাটা অনেক আগেই অপ্রচলিত হয়ে গেছে আমাদের দেশে। তাছাড়া এই ধারার সাথে আমাদের দেশের পাঠকরা খুব বেশি পরিচিত নয়। লো সহ এইধরনের বেশ কয়েকটা শব্দ আমাদের দেশের প্রমিত বাংলা ভাষায় ব্যবহার করা হয় না।

বইয়ের ফ্ল্যাপে লেখা অংশে শুধুমাত্র একটা গল্পের বিবরণ দেওয়া আমার পছন্দ হয়নি। ছোট করে আরও কিছু আকর্ষনীয় সার-সংক্ষেপে দিয়ে দেওয়া যেত। শুধু উপন্যাসে ক্ষেত্রেই একটা সার-সংক্ষেপ দেওয়া হয়।

প্রতি পাতায় লেখার ফরম্যাটের মাঝে সামান্য গোলমাল দেখা গিয়েছে। সীমিত পৃষ্ঠায় ছাপানোর জন্য সম্ভবত প্যারাগ্রাফগুলোর মাঝে যথাযথভাবে গ্যাপ দেওয়া হয়নি। স্থান, কাল ও সময় পরিবর্তনের সময় ভিন্ন ভিন্ন পারাগ্রাফের মাঝে গ্যাপ বা নাম্বারিং না দেওয়া হলে পাঠক পড়ার সময় কিছুটা বিভ্রান্ত হতে পারেন। তাছাড়াও কথোপকথনের বেলায় কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়ম মানা হয়নি। প্যারাগ্রাফের ভেতরে কথোপকথন কিংবা আলাদা লাইনে কথোপকথন কীভাবে দিতে হয় সেটার নিয়ম মানা হয়নি এখানে।‌ একই গল্পের ভেতর কথোপকথন দেওয়ার সময় একই ফরমেট ব্যবহার করলে পাঠকের জন্য বুঝতে সুবিধা হয়।

প্রমিত বাংলা ব্যাকরণের নিয়ম মোতাবেক খুব কমসংখ্যক ভুলই পাওয়া গিয়েছে যার জন্য অবশ্যই লেখক এবং প্রকাশককে ধন্যবাদ দিতে হয়।

পরিশেষ:
একটা প্রকাশিত বইকে তুলনামূলকভাবে রেটিং জন্য নিন্মোক্ত পদ্ধতি আমি সবক্ষেত্রে ব্যবহার করি-
* থীম / প্লট - ১
* কথোপকথন - ১
* চরিত্র বিন্যাস - ১
* ট্যুইষ্ট / পাঠকের আকর্ষন - ১
* লেখার মুন্সিয়ানা - ১

আমার দৃষ্টিতে ‘রিপুচক্র' এর জন্য মার্কিং হবে-
* থীম / প্লট – ১
* কথোপকথন – ০.৫০
* চরিত্র বিন্যাস – ০.৭৫
* ট্যুইষ্ট / পাঠকের আকর্ষন – ১
* লেখার মুন্সিয়ানা – ০.৭৫

উৎসর্গঃ গল্পকার @আরিফ এম. ইসলাম, প্রতিভাবান এই লেখকের আরেকটা বই পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

যারা এর আগে আমার লেখা পাঠ প্রতিক্রিয়াগুলো পড়তে চান তাদের জন্য-
পাঠ প্রতিক্রিয়া ১ - সাদাত হোসাইনের অর্ধবৃত্ত
পাঠ প্রতিক্রিয়া ২ - শায়মা হক এর “বসন্তদিন (বরুণা ও প্রতিফলন)”
পাঠ প্রতিক্রিয়া ৩ - যে সূর্যটা রানুর জন্য উঠেছিল
পাঠ প্রতিক্রিয়া ৪ – তামান্না জেনিফার এর ‘আঁধারের কাহন'
পাঠ প্রতিক্রিয়া ৫ - মেঘ ছুঁয়েছে মনের আকাশ
পাঠ-প্রতিক্রিয়া ৬ - জীবন ও জীবিকার গল্প (গল্প সংকলন)

সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, ফেব্রুয়ারি ২০২৩



সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৫১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×