somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বপ্নাকাংক্ষি কৃষি প্রেমিক

২৬ শে অক্টোবর, ২০১১ দুপুর ১২:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


স্বপ্নাকাংক্ষি প্রেমিক
লিখেছেন অসাধু বালক ২৪ অক্টোবর ২০১১, রাত ১১:১৩
>
কৃষক বাবার দ্বিতীয় সন্তান কায়সার হামিদ সূর্য দশম শ্রেনীতে পড়ে। আজ ক্লাশে বসে উদাস মনে জানালার বাহিরে বাগানের দিকে তাকিয়ে আছে। মনে মাঝে কি যেন এক হাহাকার হতাশা বিরাজ করছে। আজ তার ক্লাশেরই এক বন্ধু যে দুস্টামি করার কারনে স্যার এত পিটিয়েছে যে সে সোজা হয়ে দাড়াতে পারছে না। আর মাত্র তিন মাস পরে মাধ্যমিক পরীক্ষা, এই সময় কি স্যারের এই রকম পিটানোর কোন যোক্তিকতা খুজে পায় না। কায়সার ভাবছে স্কুলের সামনে কতবড় বাগান এটাকে তো কোন বাড়তি টাকা পয়সা ছাড়াই অনেক সবজি ফলানো যায় তার জন্য মালি রাখতে হয় না। যদি শাস্তি হিসাবে, না পিটিয়ে বলা হয় আজ পড়া না করার কারনে এইটুকু পরিমান মাটি কাটতে হবে অথবা কোন অন্যায় কাজ করলে বলতে হবে একঘন্টা বাগান পরিস্কার করতে হবে, যদি এটা করা হয় তাহলে পরিশ্রম করার ভয়ে যেমন ছেলে মেয়েরা পড়া তৈরী করবে এবং দুষ্টামি করার সময় একবার ভাববে, আর একদিকে শাস্তি পাওয়া ছাত্রদের পরিশ্রমের ফল হিসাবে বাগানে ভাল সবজির বা ফলের ফলন হতে পাওর যা দিয়ে গরীব মেধাবী ছাত্রদের খরচ মেটানো যায় । অনেক ছাত্র মাঝ পথে পড়া বন্ধ করে দিতে হয় অর্থের অভাবে যাদেরকে পিয়ন বা সিকিউরিটি গার্ড হিসাবেও কেউ রাখতে চায় না।
এরই মাঝে সার এসে ক্লাশ শুরু করলেও, কায়সারের সেদিকে কোন নজর নেই, স্যার তা দেখে কি ব্যপার আমি এসেছি আর তুমি অসভ্যের মতো বাহিরে তাকিয়ে আছ, বেঞ্চির উপর দাড়িয়ে থাক।
কি আর করা কায়সার ভয়ে ভয়ে বেঞ্চির উপর দাড়িয়েই ভাবতে থাকে যে ইস যদি স্যার না দাডিয়ে থাকতে বলে যদি বলতো সূর্য যা বাগান টা পরিস্কার কর, তাহলে দাড়িয়ে তেকে বেহুদা সময় নস্ট হত না সাথে সাথে বাগানও পরিস্কার হতো শাস্তি হিসাবে আমার কষ্টও কম হত না।
দাড়িয়ে থাকতে থাকতে কায়সার সিদ্ধান্ত নিলো যদি সে অনেক বড় হতে পাওর তাহলে প্রতিটি স্কুলে ফল-ফুল-সবজির বাগান রাখা বাধ্যতামুলক করবে সাথে সাথে যে কোন প্রকার শাস্তি হিসাবে তাকে বাগানের উন্নতি ও পরিচর্যার জন্য পরিশ্রম করতে হবে। সে মনে মনে এও চিন্তা করে মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষে যে তিন মাস সময় থাকে তাকে কাজে লাগানোর জন্য মিনিমাম একমাস ইর্ন্টানি ক্লাশ থাকবে, সেখানে শুধু কৃষিশিক্ষার উপর প্রাকটিকাল শিক্ষা দেয়া হবে শুধু তাই নয় চাকুরী পাবার ক্ষেত্রে এটা পয়েন্ট হিসাবে গন্য হবে। কৃষি পেশাকে ১ম শ্রেনীর মর্যাদায় উন্নিত করবে, চারিত্রিক সনদ হিসাবে একমাত্র কৃষকের মন্তব্যই গ্রহন যোগ্য হবে, শহওর যে সব স্কুলে বাগান করার মতো মাঠ নেই সেই সব স্কুলের ছাত্রদের বছরে একবার সিডিউল করে গ্রামে কৃষি কাজ করার জন্য পাঠাবে, কেউ তার ব্যক্তিগত জমি শূন্য ফেলে রাখতে পারবে না যদি রাখে তার জন্য জবাবদিহি করতে হবে, জমির মালিক যাতে তার জমি কৃষি কাজে ভাড়া দিতে পারে সেই ব্যবস্থা থাকবে।
তার এই চিন্তা গুলো যখন তার বন্ধুদেও সাথে শেয়ার করে তারা হাসতে থাকে এবং কৃষক বলে ক্ষেপাতে থাকে । আসলেই সে ক্ষিপ্ত হয় কিন্তু তা মনে মনে তার জিদ আরো রাড়তে থাকে।

২৫ বছর পর, কায়সার হামিদ আর ভাবুক কায়সার নেই , সে তার চিন্তাকে বাস্তবে রুপ দেয়ার জন্য এখনও চেষ্টা করে যাচ্ছে। সে এখন কৃষি মন্ত্রির সুযোগ্য সচিব। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ কওর সে তার স্বপ্ন পুরনের লক্ষে সরকারী চাকুরীতে যোগ দিয়েছিল। তার ৮ বছরের একটি ছেলে আছে যাকে তিনি এখন থেকেই শিক্ষা দিচ্ছেন দেশ প্রেমের , বছরের একটি সময় সে তার ছেলেকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন কৃষি কাজ করার জন্য। মানুষের মত মানুষ হবার জন্য। যেখান আজকের বাবা-মায়েরা চায় ছেলে বড় ব্যবসায়ি হবে, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হবে সেখানে সে স্বপ্ন দেখে ছেলে তার কৃষিবিদ হবে। দেশের কৃষিব্যবস্থার আরো উন্নয়ন ঘটাবে।
কায়সার হামিদের মাথা থেকে সেই চিন্তা সেই স্বপ্ন এখনও দূরভীত হয় নাই। কিন্তু সে সকল ক্ষেত্রে সফল হচ্ছে না। সে তার প্রভাব খাটিয়ে প্রতিটি স্কুল কলেজে বাগান তৈরী করতে সমর্থ হয়েছে । প্রতিটি ছাত্রকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবার পর একমাস ইন্টার্নি করার বাধ্যবাধকতা আরপ করতে পেরেছে কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সে সফল হয় নি সরকারের অন্যান্য মন্ত্রি ও মন্ত্রিদের চেলা-পেলার কারনে । কেননা যখনেই তাদের স্বার্থে আঘাত লেগেছে তখনই তার প্রতিটি ভাল কাজের বিরোধিতা করেছে। সরকারী আমলা হবার কারনে সেই কাজটি সে বাস্তবায়ন করতে পারেনি। তাই সে ভাবলো যদি সকলের মন-মানষিকতা পরিবর্তন করতে হয় তাহলে ক্ষমতায় যাওয়া ছাড়া বিকল্প নেই, এই জন্য সে ভাবতে লাগল চাকুরী ছেড়ে দিয়ে সে রাজনৈতিক দলে যোগ দিবে। তার মেধা, দক্ষতা , কর্মক্ষমতা, মানুষের ভালবাসা নিয়ে সে তার লক্ষে পৌছাতে পারবে। আসলে কি সে পারবে তার লালিত স্বপ্ন পুরন করতে ?
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×