১৯৯৬ সাল ! ! আমি তখন ক্লাস ফোরে পড়ি । একদিন সকালে বিটিভি তে শুনতে পাই সালমান শাহ এর মৃত্যুর খবর । তখন পর্যন্ত দু তিনটা ছবি মনে হয় দেখেছিলাম। কিন্তু আজও সালমান শার কথা মনে হলেই ওই দিনটি শুক্রবার ছিল আমার স্পষ্ট মনে আসে ।
পরবর্তীতে মৃত্যু নিয়ে পত্রিকা মারফত অনেক ঘটনা শুনেছি । প্রিয় নায়কের অকাল মৃত্যুর পিছনে যা শুনেছি তার অর্ধেক ও যদি বিশ্বাস করি তাহলে সাংস্কৃতিক অঙ্গন , সমাজের উপর শুধু ঘৃনাই আসে । অবশ্য তাতে কারো কিছু যায় আসে না। শুধুমাত্র মেন্টাল স্ট্রেস নিয়ে নিজের কয়েক ঘন্টা নষ্ট হয় । তাতেও হলিউড,বলিউড আর তামিল মুভির ভিড়ে প্রিয় এই নায়কের কথা মনে হলেও শান্তি লাগে।
চলচিত্র পাড়ায় কাদা ছুড়াছুঁড়ি সম্পর্কে সবাই আবগত আছি । বিগত কয়েক মাস ধরে যে পরিমান রাজনৈতিক বিষয় এফডিসি তে দেখা গিয়েছে তা বিগত কয়েক দশকেও হয়েছে কিনা সন্দেহ ।অথচ এই মানুষ গুলোর মাধ্যমেই ফুটে উঠে সমাজের চিত্র। যাবতীয় সামাজিক কোলাহল সেরে মানুষ নির্মল আনন্দ পেতে চায় তাঁদের ঘিরেই। আর তাঁদের মধ্যেই যদি এত নোংরামি থাকে তবে তা সাধারনের জন্য বুকে চাপা কষ্টের মতই। তবে একটা বিষয় তো স্পষ্ট, দেশের রাজনীতির যে বিকাশ ও বিনাশ চলছে তার ছোয়ায় তাঁরাও আবিষ্ট ! !
রাজনীতি কখনই খারাপ জিনিস ছিল না । এটি তখনই খারাপ হয়েছে যখন মানুষ একে খারাপ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছে। প্রিয় এই জন্মভূমিও পেয়েছি রাজনৈতিক সচেতনতার মাধ্যমেই।
সালমান শাহ্র মৃত্যুর বিষয় নিয়ে যদি তাঁরা আন্দোলন করত , কিংবা অগ্রগতির জন্য রাস্তায় নামত তবে তা দর্শক যারা তাঁদের সেলিব্রেটি বানায় তাঁদের মনে শান্তি পেত। তাঁদের একতা ও শক্তিগুলো যদি চলচিত্রের উন্নয়নের জন্য হয় তবে তাই সমাজের উন্নয়ন।কারন চলচিত্র তো সমাজেরই প্রতিবিম্ব স্বরূপ।
দুঃখের বিষয় হল বিগত বছর গুলোতে মনে হয়েছে সালমান শাহ প্রসঙ্গে উপরের শ্রেনীর খুব একটা স্বার্থ জড়িত নেই। জাতিসংঘের মত একটা বিবৃতি দিয়েই যেন সব খলাস ।
সালমান শাহ র মৃত্যুর ২১ বছর পর ও রহস্য উদ্ঘাটন হয়নি। তাঁর মা ছাড়া সবাই নিজ নিজ সুখের জায়গা খুঁজে নিয়েছে। মাঝে মাঝে মনে হয় সালমান শাহ কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী ছিলেন না বলেই হয়ত তাঁর মৃত্যুর রহস্য নিয়ে এত নাটক। তাঁর জন্ম হয়েছিল একটি পরাধীন দেশে (১৯ সেপ্টেম্বর,১৯৭১ ; তখনও বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি)। আইনের শাসন কিংবা সুশাসন শব্দ গুলো ছিল তখন সপ্নের মত।
দেশ স্বাধীন হয়েছিল , সপ্নগুলোও পূর্ণতা পেয়েছিল । স্বাধীন দেশের সবচেয়ে কম সময়ে সর্বোচ্চ জনপ্রিয়তাও পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জাতির অস্থিমজ্জায় মিশে থাকা বিষাক্ত ছোবল থেকে মুক্ত হতে পারেন নি। তাই ২১ বছর ধরে মৃত্যুর রহস্য বের করা সম্ভব হয়নি ।
আগামী ১৯ সেপ্টম্বর প্রিয় এই নায়কের জন্মদিন । তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি ।
প্রতিবাদের ভাষায় কলম কখনো থেমে থাকেনি। সামু পরিবারের সবার প্রতি অনুরোধ আসুন সবাই সালমান শাহর মৃত্যু রহস্য উদ্ঘাটনে সবাই প্রতিবাদ করি।
আবেগের মুক্তির চাইতে বড় স্বাধীনতা আর কি হতে পারে ! !
ভালো আছি ভালো থেকো
আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখ.....
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:১৪