somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অতিরিক্ত সেলফোন ব্যবহারে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিঃ নিরাপত্তার জন্য আবশ্যক এর পরিমীত ব্যবহার

১১ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাংলাদেশে সেল ফোনের গ্রাহক সংখ্যা ১৬ কোটি অতিক্রম করেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তাল মিলিয়ে দ্রুত লয়ে বাড়ছে সেলফোনের ব্যবহার। উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত এমনকি ভিখারীরাও ব্যবহার করছে একাধিক সেল ফোন। কেউ প্রয়োজনে কেউবা অপ্রয়োজনে কেউবা আবার সন্ত্রাসী কার্য পরিচালনার জন্যেও ব্যবহার করছে বিজ্ঞানের আশির্বাদ এই সেল ফোন। যে কোন কাজেরই থাকে একটা বিরূপ প্রতির্ক্রীয়া। সেল ফোন অনেক মানব জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও এর রয়েছে ক্ষতিকারক একটা ক্ষতিকর প্রভাব। বর্তমান সময়ে দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ সেলফোনের ব্যবহার মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। সম্প্রতি এক গবেষণার পর এই তথ্য প্রকাশ করেন বিজ্ঞানীরা। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
সেলফোন থেকে বের হওয়া বিকিরণের (রেডিয়েশন) ফলে মানবদেহের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। এর ফলে মাথা, হূদপিন্ড ও অস্থি সংযোগের ক্ষতি ছাড়াও কমে যাচ্ছে মানুষের প্রজননক্ষমতা। সেলফোন ব্যবহারের ফলে গ্রাহকরা সবচেয়ে বেশী যে সমস্যাটির সম্মুখীন হয় তা হলো হাত ও ঘাড়ের বিভিন্ন সংযোগের ব্যাথা। অধিক মেসেজ পাঠানোর ফলে আঙ্গুলের হাড়গুলোর সংযোগ দূর্বল হয়ে পড়ে। যার ফলে অল্প বয়সেই বাতের মতো আরও বিভিন্ন হাড়ের সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে উল্লেখ করেন অস্থি বিশেষজ্ঞ ড. নিরদ ভেংসরকার। যারা কাজের সময় ঘাড় ও কাধের সাহায্যে সেলফোন ধরে কথা বলেন তাদের ঘাড়ের হাড়ে ক্ষয় দেখা দিতে পারে। এছাড়াও মেসেজ পাঠানোর সময় সঠিকভাবে না বসার ফলে অন্যান্য হাড়ে সমস্যা দেখা দিতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। হাড়ের এই সমস্যার সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর থেকে মুক্তি পেতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে মেসেজ পাঠানো থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন ভেংসরকার।
সেলফোন থেকে উত্পন্ন বিকিরণে হূদপিন্ডেরও ক্ষতি হয়। হূদপিন্ডের স্বাভাবিক সঞ্চালনে এই বিকিরণ কোন বাধা সৃষ্টি করে কিনা এ ব্যাপারে এখনও গবেষণা চলছে। তবে যেসব মানুষ সার্জারির পর পেসমেকার বা ডিফাইব্রিলেটর ব্যবহার করেন তাদের জন্য এই বিকিরণ বেশ ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে জানান আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন হূদরোগ বিশেষজ্ঞ সুরেশ ভিজান। সেলফোনের বিকিরণ এই যন্ত্রগুলোর কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে। এমনকি এই বিকিরণের ফলে যন্ত্রগুলো বন্ধও হয়ে যেতে পারে। এক গবেষণায় দেখা যায় যে, বিকিরণের এই ক্ষতিকর প্রভাব হ্যান্ডসেট থেকে যন্ত্রগুলোর দূরত্ব বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জ্যামিতিক হারে হ্রাস পায়। সেলফোনের বিকিরণ থেকে পেসমেকার বা ডিফাইব্রিলেটরকে রক্ষার জন্য এদের জেনারেটর থেকে সেলফোনকে কম পক্ষে ছয় ইঞ্চি দূরে রাখার পরামর্শ দেন ভিজান।
সেলফোনের ব্যবহার মানুষের প্রজনন ক্ষমতাকেও বাধাগ্রস্ত করে। সেলফোনের বিকিরণ শুক্রাণুর স্বাভাবিক সৃষ্টি ও চলাচলকে ব্যাহত করে। সেলফোনের বিকিরণ ও এর থেকে উত্পন্ন তাপে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয় যন্ত্রের কাছাকাছি থাকা টিস্যুগুলো। এই টিস্যুগুলোর মধ্যে সবচেয়ে স্পর্শকাতর হলো পুরুষাঙ্গ। যারা ফোনে কথা বলার সময় তাদের সেলফোনগুলো প্যান্টের পকেটে রাখে তারা বিকিরণ থেকে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হন বলে জানান ধাত্রী ও বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞ নন্দিতা পালশেটকার। এক গবেষণায় দেখা যায়, মোবাইল বিকিরণ শুক্রাণুর কার্যক্ষমতা হ্রাস করে দেয়। এই গবেষণার জন্যে ৩২ জন পুরুষের থেকে শুক্রাণু সংগ্রহ করা হয়; এরা কমপক্ষে টানা এক ঘন্টা সেলফোনে কথা বলেন এবং এ সময় তাদের পুরুষাঙ্গ ও সেলফোনের দূরত্ব ছিল ২ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার। গবেষকেরা এই দূরত্ব নির্ধারণ করেন কারণ এটি প্যান্টের পকেট থেকে পুরুষাঙ্গের স্বাভাবিক দূরত্ব। তবে এই রেডিয়েশন ডিএনএর কোন ক্ষতি করেনা বলে জানান বিশ্লেষকেরা।
বিশ্ব দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে উন্নতির সর্বোচ্চ শিখরে। ডিজিটালের হাওয়া লেগেছে উন্নয়নের ছেড়া পালে। সুতরাং সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে আমরাও এগিয়ে যাবো সামনের দিকে তাই বিজ্ঞানের আশির্বাদ এই সেলফোনের ব্যবহার বর্জন নয় বরং এর পরিমীত ও প্রয়োজনীয় ব্যবহার করে অপব্যবহার রোধ করে আমরা নিরাপত থাকবো এই হোক আমাদের প্রত্যয়।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৭
১১টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×