somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

১৬ নভেম্বরঃ আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবস আজ, আসুন সকলের প্রতি সহনশীল হই

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১৬ নভেম্বরঃ আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবস আজ। বিংশ শতাব্দীর ৯০ দশকের প্রথম দিকে স্নায়ু যুদ্ধ শেষ পর্যায়ে, আন্তর্জাতিক পরিমান্ডলে সহিংসতা বৃদ্ধির আশংকায় ইউনেস্কো 'সহনশীলতা' দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৯৬ সালে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে এক প্রস্তাবে বিভিন্ন দেশের সরকারকে আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচী আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়। যাতে শিক্ষা ও প্রচারসহ বিভিন্ন উপায়ে সহনশীলতার দিকটিকে সবার কাছে তুলে ধরা যায়। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৯৬ সালের ১৬ নভেম্বর ইউনেস্কোর ২৮তম অধিবেশনে 'সহনশীলতার মৌলিক নীতি ঘোষণা' গৃহীত এবং প্রতি বছরের ১৬ নভেম্বরকে আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ইউনেস্কো ঘোষিত এই আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবস প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য হচ্ছে বহুমুখী সমাজে সহনশীলতা শিক্ষার মাধ্যমে পৃথিবীর সকল মানুষের সুষম ও শান্তিপূর্ণভাবে জীবন-যাপন নিশ্চিত করা।


সহনশীলতা হচ্ছে এক ধরনের ইতিবাচক সঠিক দৃষ্টিভংগী এবং তা অন্য মানুষের অবাধ ও অধিকারের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। সহনশীলতার অর্থ ধৈর্য-সহ্য, সহিষ্ণুতা, সহনীয়তা, ক্ষমাশীলতা ইত্যাদি। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, 'হে মোমিনরা! তোমরা ধৈর্য বা সহনশীলতা ও নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।' (সূরা বাকারা : ১৫৩)। অন্যত্র এরশাদ হয়েছে, 'তোমরা ধৈর্য ধারণ করো। নিশ্চয় আল্লাহ মোহসিনিনদের কর্মর্ফল বিনষ্ট করেন না।' (সূরা হুদ : ১৫)। 'যারা সচ্ছলতায় ও অভাবের সময় ব্যয় করে, যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, বস্তুত আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।' (সূরা ইমরান : ১৩৪)। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী (সা.) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ধৈর্য তথা সহনশীল হওয়ার চেষ্টা করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে সেই শক্তি প্রদান করবেন। আর সহনশীলতার চেয়ে অর্থাৎ ধৈর্যের চেয়ে অধিক উত্তম ও ব্যাপক কল্যাণকর বস্তু আর কিছুই কাউকে দান করা হয়নি। (সহিহ বোখারি ও সহিহ মুসলিম)।


'সহনশীলতার মৌলিক নীতি ঘোষণা'-এ বলা হয়েছে যে, প্রয়োজন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে সহনশীলতাকে বাস্তবায়ন করা। কারণ 'সহনশীলতা হচ্ছে শান্তি স্থাপনের পাশাপাশি সবার অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদাকে উন্নত করার অপরিহার্য নীতি'। আমাদের সমাজে পারিবারিক, সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সহনশীলতার অভাব মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। সমাজে নানামুখী চাপের কারণে মানুষ সহনশীল থাকতে পারছেন না। বাংলাদেশে এই সমস্যাটা দিনে দিনে বাড়ছে। সব ক্ষেত্রেই মানুষ ধৈর্যহারা হয়ে পড়ছে। মূল্যবোধের অভাবেও মানুষ অধৈর্য হয়ে নানা ধরনের অন্যায়-অনিয়ম করছে। এ থেকে পরিত্রানের জন্য পরিবার থেকেই সহনশীলতার চর্চা শুরু করে সমাজ ও দেশে এর সুফল পৌঁছে দিতে সচেতন এবং বিবেকবান মানুষকে আন্তরিক হতে হবে। সহনশীল ও সত্যনিষ্ঠ সমাজ নির্মাণ মাত্র দিন ও রাতের কাজ নয়। তা সময় ও সমাজের বিভিন্ন পক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। ইউনেস্কো জোর দিয়ে বলেছে, সহনশীলতা শিক্ষার জন্য শিশুদের থেকে, বাবা,মাসহ সবার উচিত শব্দ ও আচরণগত দিকে নিবিড় মনোযোগ দেয়া। এক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীর প্রতি, স্ত্রী স্বামীর প্রতি, মা-বাবা সন্তানের প্রতি, শিক্ষকের ছাত্রদের প্রতি, সমাজপতিদের সমাজের প্রতি এবং রাজনীতিবিদদের তাদের কর্মীদের প্রতি সহনশীল হওয়া উচিত।


সহনশীল ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত পছন্দ করেন। যে সহনশীল হয়, আল্লাহ তায়ালা তাঁর সম্মান, মর্যাদা বহুগুণে বাড়িয়ে দেন। আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবসে আসুন আমরা সকলের প্রতি সহনশীল হই।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:২৭
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×