

০৪/১০/২০১৪
আমাদের পরিবারের নতুন সদস্য আমাদের বাবুটা মাশাআল্লাহ দেখতে ভীষন কিউট। আগের দিন (বৃহস্পতিবার) রাত ৯টা পর্যন্ত ব্যাংকে প্রচন্ড কাজের চাপের মধ্যে থাকলেও বাবুনীর আগমনের খবর মিলন ভাইয়ের ফোনে জানলাম। বাবু ভালো আছে শুনে এত প্রশান্তি লাগলো যা শুধু অনুভবই করা যায়,কিন্তু আমাদের “লেইজ্জা”র জন্য টেনশন বাড়তে লাগলো। রিনু এমনিতেই শারিরীক ভাবে দূ্র্বল,তার উপর সিজার।
টেনশন কিছুটা কমলো যখন রাত ৯.৩০ এর দিকে রিনু আমাকে কল দিয়ে বললো “ভাইয়া,তোর অনেক সুন্দর একটা ভাগনী হইছে”......আমার চোখও যে অশ্রুসিক্ত হয়, তা অনুভব করলাম।
বাবুনীকে আমি দেখতে গেলাম শুক্রবার ১২টার দিকে,দেখি বাবু তার নানীর কোলে দোল খাচ্ছে। কি যে ভালো লাগছিল ওর সবকিছু। চুলভর্তি মাথা, হালকা গোলাপ রাঙ্গা ঈষৎ গোল মুখ, টুকটুকে লাল ওষ্ঠধর, পরিমিত মাপের নাক কান, মিটমিটে চোখ, চোখের উপর ভ্রুর হাল্কা রেখা, শ্বেতশুভ্র বাহুডোর, মুষ্টিবদ্ধ হাত, হাত পায়ের শাপলা লাল তালু ,ক্ষুদ্র হাতের ক্ষুদ্র লম্বাটে নখ...ও এই কাঁদে,এই চুপ,চোখ মেলে এই দিক সেদিক তাকায়,পরক্ষণে চোখ বন্ধ করে ফেলে,আবার আধা খোলা চোখে মিটমিট করে তাকায়,সামান্য একটু হাসি দিয়েই আবার কান্না ।
মাঝে মাঝে হাত দুটো মুষ্টিবদ্ধ করে সোজা উপরের দিকে উঠে আসতে চেষ্টা করে,বা মনে হয় তার উপর আরোপিত জগতের সব চাপ—বায়ু চাপ,জগত পরিবেশের চাপ,মাতৃগর্ভকালীন জীবন যাপনের বাইরে তার বর্তমান জগতে আমাদের উপস্থিতির চাপ সে একা একা নিজের ছোট্ট দুহাতে উপরের দিকে ঠেলে সামলে নিচ্ছে। অথবা অন্যভাবেও আমি নিজেকে বুঝ দেই,যদিও নিছকই ফান,বাবুনী মায়ের জঠরের পবিত্র পৃথিবী থেকে নিষ্পাপ অবস্থায় আমাদের এই আপাপবিদ্ধ জগতে চরম অসহায়, পাপ পন্কিলতার বিষবাষ্প কে দুহাতে সরিয়ে দিতে সকরুন প্রচেষ্টা, আর দয়াময় প্রভু তাকে এই কুলষিত জগতে লড়াই করে টিকে থাকার যাবতীয় প্রোগ্রাম সফটওয়ার এবং অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়ার মস্তিষ্কে ডাউনলোড করে দিচ্ছেন,সেগুলো একটা একটা করে সেট-আপ দিচ্ছেন,বার বার স্টার্ট-রিস্টার্ট দিচ্ছন---তাতে বাবুনী ঝাঁকি খাচ্ছে, দুহাতে শূণ্যে হাতড়িয়ে নিজে নিজে সাপোর্ট দিচ্ছে। বুঝে নিচ্ছে,এই ভাবে একা একাই সব সামলে নিতে হবে । আল্লাহ বাবুনী কে সব সময় সাহায্য করুন।
বাবুনী এখনো মায়ের দুধ খায় নাই । পুরো ২৪ ঘন্টা ধরে উপবাস, মায়ের দুধ না পেয়েই হয়তো পিচ্ছি টা নিজের পিচ্ছি পিচ্ছি আংগুলের একধার নিজের অজান্তেই চোষে । সে দেখতে কেমন কেউ জানতে চাইলে আমি বলব, সে তার নিজের মতোই । বাবুনী তার মায়ের আর দাদীর কাধেঁ মাথা রেখে খুব শান্তি পায় দেখলাম । নানীর কোলে শুয়ে শুয়ে উপরের দিকে আশপাশে তাকায় । একবার দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছে ।
বাবুনী,মামা এইতো একটু পরেই তোমার নানী কে নিয়ে আসছি,তোমাকে দেখতে ।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৮:২১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



