somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সবাইতো সুখি হতে চায়

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-পিনাকড্রিম (প্রিন্স এ ওয়াকী)


(দ্বিতীয় কিস্তি)

সুখি সুখি হাসিমুখ জীবনের জন্য প্রতিদিনের চর্চার উপাত্ত সমূহ।।

সকাল থেকে রাতে বিছানায় যাওয়ার আগে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোকে জোরালোভাবে নজরে রাখতে হবে, চর্চা করতে হবে প্রতিমুহূর্তেঃ
সব সময় হাসিমুখে থাকুন।

ধীরস্থির থাকুন।

তাড়াহুড়া করবেন না।

আত্মবিশ্বাস রাখুন কিন্তু খরগোস হবেন না।

অফিসে, কর্মক্ষেত্রে বা কোথাও বেরুবার আগে পরিবারের সদস্য বা সদস্যদের কাছ থেকে আন্তরিকতাপূর্ণ বিদায় নিন।
কারুর সাথে দেখা করার আগে পূর্বানুমতি নিতে ভুলবেননা যেনো।

সুযোগ পেলেই আত্মীয়-স্বজন,বন্ধুবান্ধব, পরিচিতিজনদের সাথে যোগাযোগ রাখতে সচেষ্ট হোন।

অন্যের সাফল্যে শুভেচ্ছা জানাবেন অবশ্যই।সুযোগ হলে ফুলেল শুভেচ্ছা দিতে পারেন।উপহার সামগ্রী পৌঁছে দিতে পারেন।একবেলা পছন্দের কোনও রেষ্টুরেন্টে খেতে খেতে আপনার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে পারেন।দারুণ ভাবে অনুপ্রাণিত হবে আপনার পাশের জন।শ্রদ্ধা বলেন, ভালোবাসা বলেন...আপনি ভাসবেন।

কাউকে নিরুৎসাহিত করবেন না।সাধ্যমতো পরামর্শ দিন আপনার অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার থেকে।

কাউকে ভুল করতে দেখলে শুধরে দিন।বকাঝকা না করে মিষ্টি শাসন হতেই পারে। ফলাফল আপনার প্রতি শ্রদ্ধা ভালোবাসার স্কেল বাড়তেই থাকবে এবং অন্তরের গভীরে এক টুকরো ভূমি আপনার জন্য নিশ্চিত বরাদ্দ হয়ে যাবে।

বাজার থেকে শুরু করে যেকোনো পাবলিক প্লেসে ইতিবাচক থাকুন।নিজের নিজস্বতাকে জলাঞ্জলি দেবেন না।দরদাম করেই কেনাকাটা করুন,খেয়াল রাখবেন বাড়াবাড়ি মোটেও যেনো পাত্তা না পায়।

যেখানে লাইনে দাঁড়াতে হয়,ইতস্তত করবেননা।সিস্টেমকে শ্রদ্ধা করতে শিখুন।দেখবেন এক সময় আপনার কাজটা হয়ে গেছে।
আগামীকাল করে নিব।একটু পরে করছি।উহু!ইচ্ছার এই মুহূর্তটাকে মোটেও আমলে নেবেন না।কিছু পেতে হলে কষ্ট করতেই হবে,পরে হাসিমুখ,সুখ সুখ অনুভব সব কিন্তু আপনার। তবে কেন শুধু শুধু পরে করবো বলে সময়কে অবজ্ঞা করবেন।দীর্ঘসূত্রিতা, আলসেমিকে কখনই হ্যাঁ বলবেন না।

নিজেকে নিজের কাছে ছোট হতে দেবেননা।যদি বুঝে যান কেউ আপনাকে সুযোগ পেলেই হেনস্তা করতে মুখিয়ে থাকে তাকে বা তাদের এড়িয়ে চলুন।নিজেকে মূল্যহীন হতে দেবেননা কখনই।

পরিস্থিতি এড়িয়ে যাবেননা।পিছপা হবেননা।নিজে মোকাবেলা করুন।প্রয়োজনে কারুর সাথে পরামর্শ করে নিজের দায়িত্ব নিজে পালনে স্বচেষ্ট হোন।একবারে না হলে আবার চেষ্টা চালিয়ে যান,দরকার মনে করলে অন্যকোনো উপায় বা পথ খুঁজে নিন।
হীনমন্যতায় ভুগবেন না।এটা নাই ওটা নাই ভেবে নিজের ভাগ্যকে দোষারোপ করা থেকে বিরত থাকুন।কারণ আপনার জন্য যা নির্ধারিত তা আপনার জন্যই অপেক্ষা করছে।চেষ্টা চালিয়ে যান কাজের মাধ্যমে, কর্ম পদ্ধতিতে যুগোপযোগী পরিবর্তন আনুন।দৃঢ় প্রত্যয় রাখুন এবং স্রষ্টায় আস্থা রাখুন।

সব সময় সংঘবদ্ধ থাকুন সৎ সঙ্গে।সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখুন।এব্যাপারে পরিবারের সদস্যদেরকেও সাথে রাখুন।

সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন অসহায়ের প্রতি।প্রতিদিন কিছু না কিছু দান করুন অসহায় নিপীড়িত কাউকে।যদি না বলতেই হয় তবে মার্জিতবোধে নিজের অপারগতা জানিয়ে দিন।বিরক্তির কারণ হবেননা।আর একটা বিষয় যেচে কাউকে সাহায্য করতে যাবেননা।তবে কেউ যদি আপনার সাহায্য চেয়েই বসেন হাসিমুখে এগিয়ে যান আর ব্যস্ততা থাকলে বিনয়ের সাথে না বলুন।
শ্রোতা হয়ে উঠুন। সবাই বলতে চায়।ধৈর্য নিয়ে শুনতে শিখুন।বলুন কম।নিজের কোনো বক্তব্য থাকলে ইতস্তত না করে দৃঢ়তার সাথে অল্প কথায় মতামত প্রকাশ করুন নির্বাচিত সঠিক শব্দ ব্যবহারে।

কাউকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেবেননা।আজ আসুন,কাল বিকালে আসুন এভাবেও বলাটা শোভন নয়।আপনার যদি অনিচ্ছা থাকে তাহলে ধানাইপানাই না করে সরাসরি না বলে দিন অবশ্যই হাসিমুখে। এতে করে নিজের অবস্থান ভালো না হোক খারাপ হবার ভয় থাকবেনা।কিছুটা অভিমান হয়তো হবে অন্যপক্ষ,পরে কোনো একটা সময় বুঝে সমস্যা মিটিয়ে নিন।

চলার পথে হঠকারিতার আশ্রয় নেবেননা।যা বলার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিন।উহু!এগ্রেসিভ হবার কোনো কারণ নেই।ধীরস্থির সহনশীলতায় নিজের ভূমিকা পালন করুন।

মিথ্যাকে জীবন থেকে না বলে দিন।মিথ্যা নেতিবাচক জগতে প্রবেশের অন্যতম প্রধান নিয়ামক।অতএব কখনই মিথ্যা না।
দৃঢ়তার সাথে নেতিবাচক চিন্তা, ধ্যান ধারনাকে প্রতিহত করতে শিখুন।নেতিবাচক শব্দ,ব্যবহার, কাজ এমনকি কোথাও গেলে বা কারুর সান্নিধ্যে এলে যদি নিজের ভেতরে ভাবনায় চেতনায় আচরণে নেতিবাচক প্রভাবের স্পর্শটুকুও বুঝতে পারেন,টিউন স্ট্রিক্টলি অফ করে দিন।কোনও রকম চিন্তার অবকাশ না দিয়ে ঐ স্থান ত্যাগ করুন।এটা পালিয়ে যাওয়া নয়,কাপুরুষোচিত সিদ্ধান্তও নয়,নিজেকে রেসকিউ করা, কারণ আপনার মূল্যবান সময় অপচয় করার মানেই হয় না অযথা নিজেকে অযাচিত পরিবেশে নিজেকে সঁপে দেওয়ায়।অর্থাৎ কোন কিছুতেই নেতিবাচকতাকে সুযোগ দেয়া যাবেনা।

নেতিবাচক কাউকে নিজের চারপাশে ভিড়তে দেবেননা,এব্যাপারে কোন ছাড় নয়।কখনই নয়।

সপ্তাহে অন্তত একদিন কিছুটা সময় বন্ধুদের সাথে বেহিসাবি নির্দোষ আনন্দে কাটিয়ে দিন, কাছে বা একদিনের দূরত্বে কোথাও থেকে বেড়িয়েও আসতে পারেন।সাথে যদি পরিবারের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করা যায় তাহলেতো সোনায় সোহাগা।তেমনি করে মাসে অন্তত একদিন কোনো নিকট আত্মীয়ের বাসা থেকে ঘুরে আসতে পারেন।তুঙ্গে থাকবেন বলে দিতে পারি চোখ বুজে।

বাসায় ফিরছেন।সাধ্যের মধ্যে ঘরের অপেক্ষারত প্রিয় বা প্রিয়ার জন্য একটা লাল গোলাপ,বেলিফুলের মালা নয়তো পছন্দসই কিছু নিয়ে যান।বাসায় বয়োজৈষ্ঠ্য কেউ থাকলে নিয়ম করে খোঁজ খবর নিন।তাঁর বা তাঁদের ইচ্ছা অনিচ্ছার মূল্য দিন সামর্থের মধ্যে।

সর্বোপরি ঘরে বাইরে কর্মক্ষেত্রে সমাজের প্রতিটি স্তরে মানবিক হয়ে উঠুন,বন্ধুত্বপূর্ণ হয়ে উঠুন।নিজেকে আড়াল করে রাখবেন না।সামাজিক কর্মকাণ্ডে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করুন।অফিসে বা কাজের জায়গায় মাঝেমধ্যে আনন্দ, মতামত শেয়ার করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিন কাজের ব্যত্যয় না ঘটিয়ে।এতে নিজের অবস্থান সুসংহত হবে,আপনার গ্রহণযোগ্যতা ঈর্ষণীয় পর্যায়ে পৌঁছে যাবে।
নিজেকে ভালোবাসতে শিখুন। খামখেয়ালিতে নিজের মূল্যবান সময় অপচয় করা থেকে বিরত থাকুন। কোনও কাজ করার আগে মেরিটস ডিমেরিটস ভেবে নিয়ে কাজে লেগে পড়ুন আর নির্দিষ্ট গোল বা টার্গেট মনের ক্যানভাসে এঁকে রাখুন।প্রয়োজন হলে কর্ম-পরিকল্পনা পুনঃবিবেচনা করে আবার কাজে লেগে পড়ুন। যদি বুঝতেই পারেন পণ্ডশ্রম হতে যাচ্ছে তাহলে একরোখা মানসিকতা ত্যাগ করে থেমে যান।সময় নিয়ে ভাবুন পরিকল্পনার কোথায় গলদ আছে,আপনার কাছে আপাতত আর কী কী পথ খোলা আছে আদ্যোপান্ত ভেবে আবার শুরু করুন, সাফল্য আপনার।

নিজেকে মাঝেসাঝে অবসর দিন আগুপিছু কিছু না ভেবে।স্রেফ শূন্য করে দিন নিজের অস্তিত্বকে।যেন আপনি কিছুই না।তারপর আবার হাসি খুশি প্রাণোচ্ছল উদ্দীপনা নিয়ে কাজে ডুবে যান।

উপভোগ করতে শিখুন নিজের কর্মজগৎ, নিজের চারপাশ, সামাজিকতা।

ভাবতে শিখুন জীবনের মূল্যটা কোথায়?

হাসুন প্রাণ খুলে দিল খোলা।

অযথা গাম্ভীর্যের মুখোশ ছুড়ে ফেলুন।

দিনে অন্তত কয়েকবার আয়নায় নিজেকে দেখুন।একটুখানি নিজেই নিজের সাথে দুষ্টুমিতে মেতে উঠুন।শব্দ করে হাসুন হা হা হা...

ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন।

নিজের সাথে বিন্দুমাত্র ফাঁকিবাজি নয়।

১৫১৩
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২।
লেখালেখির কারখানার নিজস্ব কক্ষ থেকে।
অ পা

শেষ কিস্তির জন্য অপেক্ষা করুন অনুগ্রহ করে।

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:২৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×