"নিঃসঙ্গ ব্যাঙ্গের ছাতা"
আছে অপেক্ষায় কখন আসিবে ব্যাং
আসন গাড়িবে তুলিয়া ঠ্যাং ।
যে সময়টায় আমেরিকা ভ্রমন করছিলাম সে সময়টা ছিলো সামার টাইম । ম্যানঞ্চেস্টারের পাহাড়ী এলাকায় সূর্য ডুবে সন্ধ্যা নামতো রাত সাড়ে আটটায় । সকাল হতো ভোর সাড়ে চারটায় । শীতকালে বিকেল সাড়ে চারটায় নামে গভীর রাত । সকাল হয় সকাল সাতটায় । তবে এতে স্থানীয় অধিবাসীদের তেমন কোন অসুবিধা হয়না ঘড়ির সাথে পাল্লা দিয়ে ওখানকার অধিবাসীরা জীবনের পথ পরিক্রমায় অভ্যস্ত।
সামারে স্বল্পকালীন রাত হলেও ভোরে সূর্য্যমামা উকি দিলে আর বিছানায় থাকতে মন চাইতোনা । সবাই ঘুমে কাদা হয়ে থাকলেও আমি বেড়িয়ে পড়তাম মর্নিং ওয়াকে । একেক দিন একেক দিকে। প্রতিদিনের ভিন্ন ভিন্ন দৃশ্যপটের ছবি উঠাবার লোভ সামলাতে পারতাম না ।
মাঝে মাঝে মনে হতো, আহা ! যদি প্রকৃতির গভীরতায় হারিয়ে যেতে পারতাম, যদি মনের সুখে প্রকৃতির রূপ সুধা পান করতে পারতাম, এবং এই বাস্তব নিষ্ঠুর জগতে আর যদি ফিরতে না হতো তাহলে কেমন হতো ! কিন্তু আসলে তা হবার নয়, বাস্তবতার কাছে মনের আবেগের কোন মূল্য নেই, হার স্বীকার করে আবার সেই শুরুতে ফিরে আসা, জীবন চক্রের ঘূর্নায়মান চাকায় আবার সেই আত্মসমর্পন ।
বনপথে একাকী হেটে চলা ।
গাছগাছালীর ভিতর বসবাস।
পরিচ্ছন্ন পথের শেষে পাহাড়ের উকিঁঝুকিঁ ।
রৌদ্রেস্নাত গাঢ়ো রঙ্গের ম্যাপল লিফ ট্রী ।
"কাছ থেকে ম্যাপল লিফ" এটা কানাডার জাতীয় পতাকায় শোভা পায় ।
পাহাড়ে গাছগাছালীর ভিতর দিয়েই বৈদ্যুতক লাইন টানা হয়েছে। ঝড়ে বাদলে গাছ পড়ে তার ছিড়ে গেলেও বৈদ্যুতিক শকে মানুষ মারা যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই কারন লাইন ভোল্ট মাত্র ১১০। আমরা কেন ২২০ ভোল্ট ব্যবহার করি এতে নিশ্চয়ই উৎপাদন খরচ বেশীএবং এটা প্রাণঘাতীও বটে। বিশেষজ্ঞরা কারনটা বলুন।
পাহাড়ের ঢালে বসবাস ।
বাড়ীর পশ্চাতে সুইমিং পুল ।
বনের ভিতর ছোট কেবিন ।
ডাকবাক্সও ফুলের অলঙ্কারে শোভিত ।
রৌদ্রকরোজ্জ্বল নীলাকাশ নীচে স্বযত্নে লালিত খ্রীষ্টমাস ট্রী।
লজ্জায় লাজুক কাঠবিড়ালী নীচে চড়ে বেড়াচ্ছিল। আমাকে দেখে নিমিষে নিরাপদ দুরত্বে গাছের উপর। ছবি নেওয়ার জন্য যতই আমি তার দিকে ফিরি ততই সে ঘুরে কান্ডের আড়ালে আশ্রয় নেয়। কত করে বললাম, "বাবা একটু দাড়া, তোর চাঁদ বদনটা ক্যামেরার স্মৃতিতে একটু ধরে রাখি, পারলে একটু হাসি মুখে পোজ দে!" কিন্তু কে শোনে কার কথা !!??
নীলাকাশের নীচে মনোমুগ্ধকর প্রকৃতি, বিশ্বাসই হয়না আর মাত্র মাস দুয়েক পর সব ঢেকে যাবে তুষারে ।
চেরী ফলের থোকা, ওরা বলে "আমেরিকান বড়ই" খেতে বেশ মজা, পাকলে রং বদলে কালো জামের মত হয়ে যায়। ইউরিক এসিড নিয়ন্ত্রনে নাকি সহায়তা করে তাহলে বয়স্কদের জন্য মহৌষধ !
একই ফল ।
ছোট ছোট লিলি ফুল ।
অচেনা গাছে আমাদের দেশের সজনার মত ফল ।
ক্লোজআপ ফল ।
দেখিলাম বিদেশ বিভূইয়ে একটি ঘাসের উপর ক্রিষ্টাল বলের মত শিশির বিন্দু ।
আরো কয়েকটি মুক্তোদানা ।
অজানা হালকা রং এর বেগুনী ফুলের থোকা ।
পথের ধারে অবহেলায় বেড়ে উঠে চলেছে নিঃস্বার্থে সৌন্দর্য্য বিলিয়ে, কমলা আর মেরুন মিশ্রিত লিলি ফুল।
অপাংক্তেয় হওয়ার ভয়ে লজ্জা নম্র ঘাসফুল।
ক্যামেরা জুম করে শেষ পর্যন্ত সেই ঘাসফুলটির হাস্যোজ্জ্বল রূপ আবিষ্কার।
পূর্বের পর্ব সমূহঃ
আমেরিকা ভ্রমন ১ ।
আমেরিকা ভ্রমন ২ ।
আমেরিকা ভ্রমন ৩ ।