শত বাঁধা, যুদ্ধ, মারামারি, ষড়যন্ত্র, বিভেদের পরও প্রেমিক-প্রেমিকা বিচ্ছিন্ন হয়না। প্রয়োজনে এটম বোমা হজম করে ফেলবে, বিরোধী পক্ষের হাজার হাজার মানুষ মারা যাবে, যারা তাদের প্রেমের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে, তারা যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন, ধ্বংস করে দিয়ে মিলন ঘটবে।
বলছি সিনেমার কথা। বাংলা সিনেমার সব কাহিনী প্রায় একই। বাঙ্গালী প্রেমিক-প্রেমিকা বিচ্ছিন্ন হতে জানেনা, পারেনা। সিনেমার কাহিনী দেখে মনে হবে, প্রেম ভালবাসা রক্ষার জন্য বিশ্বযুদ্ধ লেগে যাবে, কিন্তু প্রেমিক-প্রেমিকা কেউ কাউকে ছাড়বে না, ছাড়াতে পারবে না। আহারে কেমন কঠিন প্রেম! সুপার গ্লু'র চেয়েও কঠিন...!
কিন্তু যে নায়ক-নায়িকারা দেশের কোটি কোটি যুবক-যুবতীকে কঠিন প্রেম, বিবাহ ও সংসার গড়া শিক্ষা দেয়, তাদের বাস্তব জীবনের অবস্থা কি?
একজন অভিনেত্রীকে সহজ সরল চেহারা ও আচরণের জন্য পছন্দ করতাম। নাটক-সিনেমা দেখা তেমন হয় না। মনে করেছিলাম তার এখনো বিয়ে হয়নি। কিন্তু আশ্চর্য! সে নাকি এখন চার বা পাঁচ নম্বর স্বামীর সাথে আছে। তাও কয়দিন ঠিকে থাকবে বলা যায়না! বলে কি?! আকাশ থেকে পড়ার মতো আশ্চর্য হয়েছি।
নায়ক-নায়িকাদের খবর খুব বেশি জানিনা। তারপরও বর্তমান অশ্লীলতার যুগে মনে করেছি অতীতে যারা নাটক-সিনেমা করতো তারা অন্ততঃ বর্তমানের মতো নয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে পরিচিত নায়ক-নায়িকাদের কারো সংসার জীবন খুব বেশি স্থায়ী নয়। সেটা কবরী হোক, সুবর্ণা মুস্তফা হোক, তিন্নি বা প্রভা হোক বা অন্য কেউ হোক না কেন...!
সাম্প্রতিক উদাহরণ সুচরিতা। দীর্ঘ ২৩ বছর পর আনুষ্ঠানিক ভাবে ডিভোর্স নিয়েছেন তিনি। তিন সন্তানের জননী সুচরিতা নাকি গত ১৪বছর ধরে স্বামীর সংসার করছেন না। সন্তানরাও কেউ তার সাথে নেই। এটা তার দ্বিতীয় ডিভোর্স। আগে নাকি নায়ক জসিমের সাথে বিয়ে হয়েছিল। সেটিও ঠিকেনি।
ডিভোর্স বাংলাদেশে অনেক হয়। কিন্তু তুলনামূলক ভাবে সিনেমা-নাটক যারা করে তাদের ভিতর অনেক অনেক বেশি। রূপ-যৌবনের খেলা, বেশি দিন কেউ কাউকে ধরে রাখতে পারেনা! যেদিকে সুযোগ বেশি সেদিকে ছুটে চলে যায়। এ ক্ষেত্রে সংসার, সন্তান কেউই গুরুত্ব পায়না। নাটক-সিনেমাতে প্রমিক-প্রেমিকা, স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের জন্য যত ভালবাসা প্রদর্শন করুক না কেন, বাস্তব জীবনে তাদের ভালবাসা স্থিতিশীল নয়। একেক সিনেমায় যেমন একেক নায়ক-নায়িকার সাথে সংসার বাঁধে তেমন বাস্তবেও একেক বয়সে একেক পুরুষ-নারীর সাথে সংসার বাঁধে। এই জীবন মানুষের জীবন নয়। এই পেশা সুখের নয়। কি ভুল পেশাই না সিলেক্ট করেছিলেন সুচরিতা! নিজেরা যেমন হাজারো তরুন-তরুনীর নৈতিক জীবন ধ্বংসের হাতিয়ার হয়েছিলেন, তেমন নিজেদের জীবনও সুখের করতে পারেন নি...!
রিলেটেড পোস্ট- ডিভোর্স দাও, নতুন হয়ে যাও!
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ৯:১৬