somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আগুনের পরশমণি – হুমায়ূন আহমেদ (কাহিনী সংক্ষেপ)

২৬ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
বইয়ের নাম : আগুনের পরশমণি
লেখক : হুমায়ূন আহমেদ
লেখার ধরন : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস



সতর্কীকরণ : কাহিনী সংক্ষেপটি স্পয়লার দোষে দুষ্ট

কাহিনী সংক্ষেপ :
১৯৭১ সালের জুলাই মাসের ৬ তারিখে মতিন সাহেব সারাদিন বদিউল আলম নামের একটি ছেলের আসার অপেক্ষা করে কাটিয়ে দিলেন, কিন্তু সেই বদিউল আলম নামের ছেলেটি যখন এলো তখন সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে, কারফিউ শুরুর সময় হয়ে গেছে ঢাকায়। বদিউল আলম ঢাকা শহরে ৭ জনের একটি দল নিয়ে এসেছে গেরিলা অপারেশন করার জন্য। সে একজন মুক্তিযোদ্ধা।

মতিন সাহেবের স্ত্রী সুরমা বেগম বদিউল আলমকে দেখে কিছু বললেন না। রাতের খাওয়া শেষে বদিউল আলমকে শোয়ার ব্যবস্থা করে দিয়ে তিনি বললেন, এখানে তিনি তার দুটি মেয়ে নিয়ে থাকেন, তাই তিনি চাননা কোন ঝামেলা এখানে হোক, সকালে উঠেই যেন বদিউল আলম চলে যায়। কিন্তু বদিউল আলম স্পষ্টভাবে বলে দিল সেটা সম্ভব না। তাকে ৭ দিন এখানেই থাকতে হবে, কারণ যারা তার সাথে যোগাযোগ করবে তাদেই এই ঠিকানাই দেয়া আছে।

এরপরে সুরমা বেগম সহজ ভাবেই বদিউল আলমকে মনে নিলেন, দেখতে দেখতে মতিন সাহেবের বাড়িতে ৩ দিন কেটে গেলো কিন্তু যাদের আসার কথা তারা কেউই দেখা করতে এলো না। বদিউল আলম তাদের গোপন মিটিং এর স্থানে গিয়ে দেখে সেখানেও কেউ নেই। পরে ৩ দিন বাদে সাদেক আসে দেখা করতে। তারা তাদের পরিকল্পনা পাকাপাকি করে ফেলে। কিভাবে কি করবে সব ঠিক করে ফেলে তারা। দুপুরে দু’জন এক সাথে খেতে বসে, তাদের সাথে খেতে বসে বাড়ি বড় মেয়ে রাত্রি।

বদিউল আলমরা তাদের পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট দিনে সবাই একে একে নির্দিষ্ট স্থানে জড়ো হয়। আজকেই তাদের একটা গেরিলা অপারেশানে যাওয়ার কথা। কিন্তু দেখা গেলো তাদের বিষ্ফরক নিয়ে যে কাজ করবে সে খুবই অসুস্থ, সে কিছুতেই যেতে পারবে না। নানান দিক চিন্তা করে শেষে তাকে বাদ দিয়েই হামলার আয়োজন করা হয়। দুটি গাড়ি যোগার করা হয়, যার একটি তাদের নিজের আর আরেকটি গাড়ি অন্য এক ভদ্রলোকের। ভদ্রলোক যখন জানলো এই গাড়ি মুক্তি যোদ্ধারা ব্যবহার করবে তখন কোন কথা না বাড়িয়ে সাথে সাথে গাড়িটি দিয়ে দেন তিনি।

দলটি যখন যাত্রা শুরু করলো তখন কিছু দূর যেতেই সামনে একটা বিপদ দেখা দিলো। রাস্তায় কয়েকজন পাকিস্তানি সামরিক লোক চেক পোস্ট বসিয়েছে। বদিউল আলমরা দু’জন সেখানে ভালো মানুষের মত নেমে কথা বলতে বলতে হঠাৎ করে আক্রমন করে। অনায়াসে শত্রুদের খতম করে এগিয়ে যায় ফার্মগেটের দিকে। সেখানে ২০-২৫ জন মিলিটারির একটা চৌকি আছে। আলমরা সেখানে পৌছে অতর্কিতে দুটো গ্রেনেট ছুড়ে আর একরাশ গুলি করে সবাইকে ধরাশায়ী করে। এরপর তারা এগিয়ে যায় হোটেল ইন্টারকনের দিকে। সেখানে চলতি অবস্থায় দুটি গ্রেনেড ছুড়ে চলে যাবে। বিদেশী সাংবাদিকরা তখন বুঝতে পারবে ঢাকাতেও যুদ্ধ চলছে।

এদিকে সুরমা বেগম তার বড় মেয়ে রাত্রির অচরণ দেখে বুঝতে পারেন রাত্রি বদিউল আলমকে পছন্দ করতে শুরু করেছে। তাই তিনি সেদিনই বদিউল আলম ফিরে এলে তাকে চলে যেতে বলেন। বদিউল আলম রাত্রিদের বাড়ি থেকে চলে যায় তার মামার বাড়িতে। কদিনের মধ্যেই আরো কয়েকটা গেরিলা বাহিনী ঢাকাতে ঢুকে পরে। তারা পাওয়ার স্টেশান উড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করে। এরমধ্যে বদিউল আলমরা যায় একটি পেট্রল পাম্প উড়িয়ে দিতে। পেট্রলপাম্প উড়িয়ে দিয়ে ফেরার সময় একটি মেলিটারি ট্রাকের সাথে তাদের যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। সেখানে বদিউল আলমে শরীরে গুলি লাগে। বদিউল আলমের সহযোদ্ধা আশফাক তাকে রাত্রিদের বাড়িতে রেখে চলে যায় ডাক্তার ঢাকতে। কিন্তু সে ধরা পরে যায় আর্মি ইন্টেলিজেন্সের হাতে। তখনও তার গাড়িতে তার দুজন শহীদ সহযোদ্ধার লাশ।

বদিউল অলমকে সবাই মিলে নানা ভাবে সেবা করে। বদিউল আলম ব্যথায় অস্থির হয়ে যায়। আশফাক ডাক্তার নিয়ে আসবে এই আশায় পথ চেয়ে থাকে সবাই, কিন্তু ওরা জানে না আশফাক ধরা পরে গেছে। আশফাককে তখন টর্চার করা হচ্ছে তার সঙ্গীদের ঠিকানা বলার জন্য। একে একে আশফাকের হাতের ৪টি অঙ্গুল ভেঙ্গে ফেলা হলেও সে কোন ঠিকানাই দেয় না। তাই তাকে হত্যা করার হুকুম দেয়া হয় আর ডাক্তারের অপেক্ষায় অপেক্ষায় রাত শেষ হয়ে ভোর হওয়ার সময় হয়ে আসে ঢাকার বুকে।

----- সমাপ্ত -----


=======================================================================
আমার লেখা অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ:
১৯৭১ - হুমায়ূন আহমেদ
অচিনপুর - হুমায়ূন আহমেদ
অয়োময় - হুমায়ূন আহমেদ
অদ্ভুত সব গল্প - হুমায়ূন আহমেদ
অনিল বাগচীর একদিন - হুমায়ূন আহমেদ
অনীশ - হুমায়ূন আহমেদ
অন্যদিন - হুমায়ূন আহমেদ
অন্যভুবন - হুমায়ূন আহমেদ
অন্ধকারের গান - হুমায়ূন আহমেদ
অনন্ত নক্ষত্র বীথি - হুমায়ূন আহমেদ
অপেক্ষা - হুমায়ূন আহমেদ
অপরাহ্ন - হুমায়ূন আহমেদ
অমানুষ - হুমায়ূন আহমেদ
অরণ্য - হুমায়ূন আহমেদ
অঁহক - হুমায়ূন আহমেদ
আকাশ জোড়া মেঘ - হুমায়ূন আহমেদ
আজ আমি কোথাও যাব না - হুমায়ূন আহমেদ
আজ চিত্রার বিয়ে - হুমায়ূন আহমেদ
আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ - হুমায়ূন আহমেদ
গৌরীপুর জংশন - হুমায়ূন আহমেদ
হরতন ইশকাপন - হুমায়ূন আহমেদ

ভয়ংকর সুন্দর (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মিশর রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
খালি জাহাজের রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ভূপাল রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
সবুজ দ্বীপের রাজা (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

তিতাস একটি নদীর নাম - অদ্বৈত মল্লবর্মণ

ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড - টমাজ হার্ডি
কালো বিড়াল - খসরু চৌধুরী
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:০৬
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×