somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্যদিন – হুমায়ূন আহমেদ (কাহিনী সংক্ষেপ)

১১ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
বইয়ের নাম : অন্যদিন
লেখক : হুমায়ূন আহমেদ
লেখার ধরন : উপন্যাস



পাঠকদের মনে রাখতে হবে আমার লেখা অন্যসব কাহিনী সংক্ষেপের মতো এই কাহিনী সংক্ষেপটিও স্পয়লার দোষে দুষ্ট। এই কাহিনী সংক্ষেপে সম্পূর্ণ উপন্যাসের মূল কাহিনীর ধারাবাহিক বর্ননা করা হয়েছে। প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাই এখানে উল্লেখ আছে। যেহেতু আমার কাহিনী সংক্ষেপ স্পয়লার দোষে দুষ্ট হয়, তাই আমি সবসময় অনেক দিনের পুরনো বইয়ের কাহিনী সংক্ষেপ লিখি।
=======================================================================

কাহিনী সংক্ষেপ :
নীলগঞ্জ থেকে রঞ্জু এসেছে ঢাকায় তার বন্ধু শফিকের কাছে। রঞ্জুর গ্রামের বাড়িতে আছে অতি দরিদ্র বেকার বাবা, মা আর দুই ভাই বোন আনজু ও পারুল। রঞ্জু অনেক কষ্টে শফিকের মেস খুঁজে বের করে এসে দেখে শফিক নেই। তার পাশের রুমের জ্যোতিষী নিশানাথ বাবু বললেন সারা দিন রঞ্জুর জন্য অপেক্ষা করে কিছুক্ষণ আগে শফিক বেরিয়ে গেছে। নিশানাথ বাবুর ঘরেই রঞ্জু শফিকের ফেরার অপেক্ষা করতে লাগলো।

রাতে শফিক ফিরে রঞ্জুকে তার ঘরে নিয়ে গেলো। পরদিন সকালে মেসের ম্যানেজার রশীদ মিয়ার কাছে রঞ্জুর নাম লিখিয়ে আসলো নতুন মেম্বার হিসেবে। শফিক আর রঞ্জু এক সাথে পড়তো। শফিত পাটটাই চাকরি আর টিউশানির পরে সময় পায়না বলে এবছর ইউনিভার্সিটিতে পড়া ছেড়ে দিয়েছে ।

রঞ্জুদের আর্থিক অবস্থাও খুব খারাপ। পয়সার অভাবে গত তিনটি বছর রঞ্জুর পড়াশুনা বন্ধ ছিল, ছোট বোন পারুলের স্কুলের বেতন দিতে পারছেনা। জমি থেকে সামান্য কিছু আসে। মামারা কিছু দেয়, তাই দিয়ে সংসার চলে।

শফিক রঞ্জুর কলেজে ভর্তির ব্যবস্থা করলো, তার জন্য একটা টিউশানির ব্যবস্থা করলো। দেখতে দেখতে ৫/৬ মাস কেটে গেল। রঞ্জু লক্ষ্য করেছে শফিকের রাতে ঘুম হয় না, ছটফট করে, অনেক রাতে উঠে চা বানিয়ে খায়। শরীর ভেঙ্গে যাচ্ছে, চোখের নিচে কালি।

এদিকে বাড়ি থেকে মার চিঠিতে রঞ্জু জানতে পারে তার বাবার মাথায় সামান্য সমস্যা দেখা দিয়েছে। এক শীতের দিনে হঠাৎ করেই তিনি এসে হাজির হন মেসে, রঞ্জু জানতে পারে তার বোনটি নেত্রকোনায় কোন এক ছেলেকে বিয়ে করে চলে গেছে। এদিকে মেসের সবার সাথে খুব খাতির হয়ে যায় রঞ্জুর বাবার। তিনি মেসের এক বোডারের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে চলে যান, সেখানে তার ছোট বনের সাথে শফিকের বিয়েও ঠিক করে আসেন।
রঞ্জু তার পুরনো টিউশানি ছেড়ে দিয়ে নতুন আরেকটি টিউশানি নিয়েছে, শেলী নামের নাইনে পড়ুয়া লাজুক একটি মেয়েকে সে পড়ায়। রঞ্জুর কলেজের বেতন মৌকুফ হয়ে গেছে তাই হাতে কিছু টাকাও থাকে। অন্যদিকে শফিকের চাকরিটা চলে যায়, ফুটপাতে কাপর বেচার একটা ব্যবসা শুরুকরে ধরা খায়, তার শরীর আরও ভেঙ্গে যায়, প্রায় প্রতি রাতেই জ্বর আসে।

অন্য দিকে জ্যোতিষী নিশানাথ বাবুর দিনকাল খুব খারাপ হয়ে পরে, তিনি কয়েক মাসের ভাড়া দিতে পারেন না। একদিন দুপুরে তিনি মেস ছেড়ে চলে যান, তার পরপরই চলে যান মেসের সবচেয়ে বৃদ্ধ মেম্বার। অফিস থেকে কোয়াটার পেয়ে চলে যান আরো একজন মেম্বার।

তিলে তিলে জমানো অল্প কিছু টাকা নিয়ে শফিক প্রস্তুত হয় চায়ের দোকান দেয়ার জন্য। একদিন নিশানাথ বাবু ফিরে আসেন ওদের সাথে দেখা করে বিদায় নিয়ে যেতে, তিনি চলে যাবেন মেঘালয়। রঞ্জুও উঠে যাবে তার ছাত্রী শেলীদের বাড়িতে। এভাবেই খালি হতে থাকে শফিকদের মেস বাড়িটি।

এপিগ্রাম:
১। দূর্লভ জিনিস পেতে কষ্ট পেতেই হয়।
২। সুখী হবার অভূত ক্ষমতা আছে মানুষে। অতি সামান্য জিনিসও মানুষকে অভিভূত করে ফেলতে পারে।
৩। সান্ত্বনার কথা বলা খুব কঠিন, সবাই বলতে পারে না, সান্ত্বনার কথা বলতে হলে খুব হৃদয়বান লোক হতে হয়।
৪। একজন সফল মানুষের মুখে তার দুর্ভাগ্যের দিনের কথা শুনতে ভালোই লাগে।


==================================================================
আমার লেখা অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ:
১৯৭১ - হুমায়ূন আহমেদ
অচিনপুর - হুমায়ূন আহমেদ
অয়োময় - হুমায়ূন আহমেদ
অদ্ভুত সব গল্প - হুমায়ূন আহমেদ
অনিল বাগচীর একদিন - হুমায়ূন আহমেদ
অনীশ - হুমায়ূন আহমেদ
অন্যদিন - হুমায়ূন আহমেদ
আজ আমি কোথাও যাব না - হুমায়ূন আহমেদ
আজ চিত্রার বিয়ে - হুমায়ূন আহমেদ
আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ - হুমায়ূন আহমেদ
গৌরীপুর জংশন - হুমায়ূন আহমেদ
হরতন ইশকাপন - হুমায়ূন আহমেদ

ভয়ংকর সুন্দর (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মিশর রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
খালি জাহাজের রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ভূপাল রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
সবুজ দ্বীপের রাজা (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

তিতাস একটি নদীর নাম - অদ্বৈত মল্লবর্মণ

ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড - টমাজ হার্ডি
কালো বিড়াল - খসরু চৌধুরী
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৫১
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কথা: দাদার কাছে—একজন বাবার কিছু প্রশ্ন

লিখেছেন সুম১৪৩২, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৫



দাদা,
কেমন আছেন? আশা করি খুবই ভালো আছেন। দিন দিন আপনার ভাই–ব্রাদারের সংখ্যা বাড়ছে—ভালো তো থাকারই কথা।
আমি একজন খুবই সাধারণ নাগরিক। ছোটখাটো একটা চাকরি করি, আর নিজের ছেলে–মেয়ে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×