somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কক্সবাজার ভ্রমণ ২০২০ : রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহার

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কক্সবাজার ভ্রমণ ২০২০ এর যাত্রা শুরু ২৮শে সেপ্টেম্বর ২০২০ বাংলাদেশ বিমানের দুপুর ২টার ফ্লাইটে। ঢাকা থেকে রওনা হয়ে ৪০ মিনিটে প্লেন থেকে পাখির চোখে দেখা অপরূপ দৃশ্যের স্বাদ নিতে নিতে আমরা ৪ জন পৌছে যাই কক্সবাজার এয়ারপোর্টে। এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে একটি ইজিবাইক ভাড়া করে চলে আসি কক্সবাজারের লাবনী পয়েন্টের কল্লোল হোটেলের রেস্টুরেন্ট কাশুন্দি-তে। এখানে দুপুরের খাবার খেয়ে পাশেই হোটেল অভিসারে উঠে আসি। তারপর চলে যাই সাগর সৈকতে প্রথম দিনে সূর্যাস্ত দেখবো বলে। বিকেল আর সন্ধ্যেটা কাটে সাগর পারে ভাড়া করা বিচ চেয়ারে আয়েসী আলসেমীতে চারধার দেখতে দেখতে।

পরদিন ২৯ সেপ্টেম্বরে সকালে নাস্তা সেরে চলে আসি সাগর পারে। শুরু হয় কক্সবাজার ভ্রমণ ২০২০ এর দ্বিতীয় দিনের সমূদ্র স্নান। অনেকটা সময় নিয়ে চলে সমূদ্র স্নান আর ছবি তোলা। সমূদ্র স্নান শেষে হোটেলে ফিরে দুপুরে লাঞ্চ শেষে আমরা বেড়াতে যাই রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ডের রঙ্গীন মাছের দুনিয়ায়। বেশ কিছুটা সময় নিয়ে নানান প্রজাতির মাছ দেখা শেষে সেখান থেকে বেরিয়ে চলে যাই পুরনো বার্মীজ মার্কেটের পিছনে অবস্থিত আগ্গ মেধা বৌদ্ধ ক্যাং দেখতে।

৩০ সেপ্টেম্বর সকালের নাস্তা সেরে বেরিয়ে পরি সারাদিনের জন্য বেড়াতে। সম্ভবতো ১,২০০ টাকায় একটি সিএনজি ভাড়া করি সারা দিনের জন্য। রুট প্লান হচ্ছে কক্সবাজার > রামু > ইনানী > কক্সবাজার



প্রথমেই দেখে নেই অতি পুরনো কক্সবাজার বিজিবি ক্যাম্প মসজিদ। সেখান থেকে চলে যাই রামুতে ভুবন শান্তি ১০০ সিংহ শয্যা গৌতম বুদ্ধ মূর্তি দেখতে।


সেখানে বেশ কিছু ছবি তুলে নেমে আসি নিচে। এবার যাবো রামুর প্রধান বৌদ্ধ মন্দির “রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহার” দেখতে।



এটিই কয়েক বছর আগে উগ্রপন্থীরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিলো। পরে আবার সরকারের উদ্দোগে সেনাবাহিনীর সহায়তায় নতুন করে তৈরি করে দেয়া হয়েছে এটি। আগে কেমন ছিলো জানি না, এখন দেখতে বেশ লাগালে মূল ভবনটি। পাশেই আরো কয়েকটি স্থাপনা আছে। আমি যখন গেছি তার কয়েকদিন পরেই বৌদ্ধদের কিছু একটা অনুষ্ঠান আছে বলে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হচ্ছে দেখলাম।












একটি পুরনো বিশাল বোদিবৃক্ষ রয়েছে একপাশে। অন্য পাশে আছে একটি বেশ বড় পাখিফুল গাছ। পাখি ফুল বললেও এর আসল নাম সুপ্তি ফুল। কেউ কেউ একে পারিজাত বলতে পছন্দ করে। আসলে এটি পারিজাত নয়। যাইহোক রেয়ার এই গাছটিকে আমি প্রথম দেখেছি আতদিনাথ মন্দিরে। হিন্দু এবং বৌদ্ধদের মন্দিরে এই গাছটি লাগানো হয়।










প্রবেশদ্বার পেরিয়ে সামনেই হাতের বামে আছে একটি বৌদ্ধ মূর্তি। চারধারে জলের মাঝে ফনাতোলা সাত মাথাওয়ালা একটি সাপের প্যাচানো শরীরের উপরে একটি পরিষ্ফুটিত পদ্মে তিনি ধ্যানমগ্ন অবস্থায় আছেন। আর সাপের সাতটি ফনা তার মাথার উপরে ছাউনি হয়ে ছায়া দিচ্ছে। কারুকাজও চমৎকার দৃষ্টিনন্দন।
















আর ডান দিকে আছে এক হাত তুলে দাঁড়ানো আরো একটি বুদ্ধ মূর্তি। এটির মাথার উপরে আছে ছায়াদেয়ার কারুকাজময় ছায়াদানি।












সামনের মূল দালানের ভিতরে আরো মূর্তি আছে। মূল বৌদ্ধ বুদ্ধমূর্তির ডানে একজন বুদ্ধ ভিক্ষুর মূর্তি আছে। দূর থেকে প্রথম দর্শনে রক্ত-মাংসের সত্যিকারের ভিক্ষ ভেবে আমি ভুল করেছিলাম। পরে বুঝতে পেরেছি এটি মূর্তি। আর মূল বুদ্ধ মূর্থিটি কাঁচের ভিতরে ছিলো বলে কোনো ভাবেই পরিষ্কার ছবি তুলতে পারি নি।





















প্রচন্ড রোদ আর গরমের কারণে আমার বিবি-বাচ্চারা ক্লান্ত হয়ে পরেছিলো বলে তারা এখানে আসতে চায়নি। বাইরেই ছায়ায় দাড়িয়ে ছিলো। তাই তাড়াতাড়ি কয়েকটা ছবি তুলে আমিও বেরিয়ে পড়ি সেখান থেকে। আশে পাশে আরো কয়েকটি বৌদ্ধ মন্দির আর স্তুপ থাকলেও এবার আর সেগুলি দেখা হচ্ছে না। আগামীতে আবার কখনো আসা যাবে সময় নিয়ে।









এখান থেকে বেরিয়ে এবার রামুর শেষ দ্রষ্টব্য লামাছড়ার “রাংকূট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার” যাবো আমরা।

ছবি তোলার স্থান : রামু, কক্সবাজার, বাংলাদেশ।
GPS coordinates : 21°25'49.8"N 92°06'05.7"E
ছবি তোলার তারিখ : ৩০/০৯/২০২০ ইং

চলবে.....


=========================
আমার লেখা অন্যান্য ভ্রমণ কাহিনী ও চিত্র:
সিলেট ভ্রমণ : হযরত শাহজালাল ও শাহপরান দরগাহ, চাষনী পীরের মাজার, বিছনাকান্দি, লালাখাল, জাফলং, হরিপুর পরিত্যাক্ত গ্যাস ফিল্ড
শ্রীমঙ্গল : লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক,
খাগড়াছড়ি ভ্রমণ : আলুটিলা গুহা, রিছাং ঝর্ণা, শতবর্ষী বটগাছ, ঝুলন্ত সেতু, অপরাজিতা বৌদ্ধ বিহার
রাঙ্গামাটি ভ্রমণ : সুভলং ঝর্ণা ও কাপ্তাই হ্রদ, ঝুলন্ত সেতু, রাজবাড়ি ও রাজবন বিহার
বান্দরবন ভ্রমণ : নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, নীলাচল, মেঘলা, স্বর্ণ মন্দির
কক্সবাজার ভ্রমণ : রঙ্গীন মাছের দুনিয়া, আগ্গ মেধা ক্যাং, বিজিবি ক্যাম্প মসজিদ, ভুবন শান্তি ১০০ সিংহ শয্যা গৌতম বুদ্ধ মূর্তি, সেন্টমার্টিন, ছেড়া দ্বীপ
নারায়ণগঞ্জ : ১নং ঢাকেশ্বরী দেব মন্দির, টি হোসেন বাড়ি, কদম রসুল দরগাহ, সোনাকান্দা দূর্গ, হাজীগঞ্জ দূর্গ, বাবা সালেহ মসজিদ, বন্দর শাহী মসজিদ, সিরাজ শাহির আস্তানা, কুতুববাগ দরবার শরিফ, বালিয়াপাড়া জমিদার বাড়ী, পালপাড়া মঠ, বীরেন্দ্র রায় চৌধুরী বাড়ি, মহজমপুর শাহী মসজি
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:১৪
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাঘ আর কুকুরের গল্প......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৩২

বাঘ আর কুকুর দুটোই হিংস্র এবং সাহসী প্রাণী। বাঘ, কুকুর যতই হিস্র হোক মানুষের কাছে ওরা নেহায়েতই পোষ মেনে যায়। আমাদের সমাজে, রাজনীতিতে অনেক নেতাদের 'বাঘের বাচ্চা' বলে বিরাটত্ব জাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমরা উকিলরা কেউ চিন্ময়ের পক্ষে দাঁড়াবো না , না এবং না

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২




সাবাস বাংলাদেশের উকিল । ...বাকিটুকু পড়ুন

আগরতলায় হাইকমিশনে হামলা কাকতালীয় না কি পরিকল্পিত?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩২

গতকাল (২ ডিসেম্বর) ভোরে আগরতলার হিন্দু সংগ্রাম সমিতির বিক্ষোভকারীদের দ্বারা বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের প্রাঙ্গণে হিংসাত্মক বিক্ষোভের পর ন্যাক্কারজনকভাবে আক্রমণ করে। বিভিন্ন তথ্যে চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত যে বিক্ষোভকারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের সাথে যুদ্ধ করে ভারত লাভবান হবে বলে মনে করি না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০



আমাদের দেশে অনেক মুসলিম থাকে আর ভারতে থাকে অনেক হিন্দু। ভারতীয় উপমহাদেশে হিন্দু-মুসলিম যুদ্ধে মুসলিমদের সাফল্য হতাশা জনক নয়। সেজন্য মুসলিমরা ভারতীয় উপমহাদেশ সাড়ে সাতশত বছর শাসন করেছে।মুসলিমরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড. ইউনূস গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড - শেখ হাসিনা।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৩৬


৫ই আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পলায়নের পর বাংলাদেশের ক্ষমতা গ্রহণ করা নতুন সরকার কে বিপদে ফেলতে একের পর এক রেকর্ড ফোন কল ফাঁস করতে থাকেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×