বইয়ের নাম : তেঁতুল বনে জোছনা
লেখক : হুমায়ূন আহমেদ
লেখার ধরন : উপন্যাস
প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ২০০১
প্রকাশক : অন্যপ্রকাশ
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১৩৬ টি
সতর্কীকরণ : কাহিনী সংক্ষেপটি স্পয়লার দোষে দুষ্ট
কাহিনী সংক্ষেপ :
বিরাট নগরে হঠাৎ দুই মিনিটের ঝড়ে বিশাল এক বটগাছ উড়ে যায়, পুকুরের মাছগুলি কোন কারণ ছাড়াই পানির উপরে ভেসে ওঠে। শতশত পাখি মারা পরে। মতি সেখান থেকে কয়েকটা মৃত পাখি রান্না করে তার পছন্দের বাজারের মেয়েকে খাওয়ায়। মেয়েটি বিষয়টা জানতে পেরে মতিকে গালমন্দ মতি কিছুটা ছিচকে চোর টাইপের লোক, ট্রেন স্টেশনে মাঝে মাঝে কুলির কাজও করে।
ডাক্তার আনিস বিরাট নগরে আছে অনেক দিন যাবত। বিরাট নগর আর আশেপাশে সে সাইকেল ডাক্তার হিসেবে পরিচিত। সবাই বলে তার সাইকেলের ঘন্টি শুনলে রোগ পালিয়ে যায়, রোগী উঠে বসে ভাত খেতে চায়। ডাক্তার আনিস কিছুদিন আগে বিয়ে করেছেন, নতুন বৌ থাকে ঢাকায় তার বাবার বাড়িতে, ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। আনিস বিদেশে যাবে পিএইচডি করতে। তার স্ত্রীও খুবই ভালো মেয়ে, আনিসও সহজ সরল মালোমানুষ। তবুও তাদের দুজনের মাঝে কেমন যেন একটা ছাড়াছাড়া সম্পর্ক।
আনিস গ্রামের বাইরের জংলার ধারে নদীর পাশে শ্মশান ঘাটে একাএকা বসে অনেকটা সময় কাটায়। সেখানে বসে সে চিঠি লেখে, তার স্ত্রী নবনীর চিঠি পড়ে। ডাক্তার আনিসকে সব সময় চোখে চোখে রাখে মতি। মতি তাঁর কয়েকটি শার্ট চুরি করেছে। একদিন শ্মশান ঘাট থেকে তাঁর সাইকেলটাও চুরি করে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেয়।
গ্রামের ধারে মসজিদের ইমাম সাহেব খুবই ভালো মানুষ। একা একা থাকেন মসজিদের পাশে তার ঘরে। তাঁর পরিবারের লোকেরা থাকে তাঁর নিজের গ্রামে। তিনি দেখতে অনেকটা মতির মত। মসজিদের পাশে তাঁর লাগানো তেঁতুল গাছের তেঁতুল তিনি নিজে নবনীকে দিয়েছে। সেই ভালো মানুষ ইমামের নামে হঠাৎ করেই বদনাম ছড়িয়ে পরে। চেয়ারম্যান গ্রামের স্কুলের মাঠে তার বিচার করেন। উলঙ্গ হয়ে কানে ধরে গ্রামে ঘুরানোর কথা থাকলেও শেষে শুধু কানে ধরে মাঠে ঘুরানো হয় ইমামকে।
এই অপমানে ইমাম অসুস্থ হয়ে পরে। ডাক্তার এসে তাকে ওষধ দিয়ে যান, কিন্তু রাতে তিনি তেঁতুল গাছে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরদিন তার লাশ পুলিশ নিয়ে গেলেও নানান ঝামেলার কারণে আবার লাশ ফিরিয়ে দেয়। কিন্তু মোল্লারা তাঁর জানাজা পড়াতে রাজি হয় না। পরে তাকে তেঁতুল গাছের নিচে গোর দেয়া হয়।
এদিকে নবনী আসে আনিসের কাছে বেরাতে, দুদিন থাকবে বলে। সে লখ্য করে চেয়ারম্যান আনিসকে প্রতিদন্দী মনে করছে। চেয়ারম্যানের আরেক প্রতিদন্দী আজিজ মিয়া। ছেলে বিদেশ থেকে টাকা পাঠায়। সেই টাকায় আজিজ অনেক জমি কিনেছে, বাজারে দোকান কিনেছে, নতুন ব্যবসা করেছে, বাড়ি করেছে, বিশাল পুকুর কাটাচ্ছে। চেয়ারম্যানের ষাড়ের সাথে লড়ায়ের জন্য ষাড় কিনেছে। আজিজ মিয়া ভয় পাচ্ছে চেয়ারম্যান তার ক্ষতি করবে, তাই সে রাতে একা বের হয় না। তাছাড়া রাতে মাঝে মাঝেই ইমামের ভূতকে দেখা যাচ্ছে। তাই সন্ধ্যার পরে বিরাট নগর শুনশান হয়ে পড়ে।
একদিন রাতে চেয়ারম্যান দেখেন ইমাম সাহেব হেঁটে হেঁটে আসছে, মাঝে মাঝে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। অন্ধকারে চাঁদের আলোয় তিনি ঠিকই চিনলেন ইমামকে। তিনি বন্দুক এনে গুলি করলেন, তখন ইমাম দৌড়ে অদৃশ্য হয়ে গেলো। আরো অনেকেই নাকি ইমামকে দেখতে শুরু করেছে। আনেকের কাছেই নাকি তিনি তার জানাজা পড়ানোর কথা বলছে। এরমধ্যে একদিন রাতে আজিজ মিয়া দোকান থেকে বাড়ি ফিরার সময় তাকে ইমাম সাহেব তাড়া করে। ভয় পেয়ে আজিজ পুকুরে ঝাপ দেয়। সকালে তার লাশ ভাসতে দেখা যায় পুকুরে।
মতি একদিন চুপি চুপি ডাক্তারের চুরিকরা সাইকেল ফিরিয়ে দিয়ে যায়। মতি ষ্টিশন থেকে নবনীকে আনিসের বাড়িতে নিয়ে আসে। এরমধ্যে নবনী খুব জ্বরে পরে। তখন নবনী আনিসকে বলে তাদের সম্পর্কটা ঠিক জমছে না তাই তাদের উচিত আলাদা হয়ে যাওয়া। কষ্ট হলেও আনিস তাতে রাজি হয়। শেষে বিদায়ের সময় যখন ট্রেনে নবনীকে তুলে দিতে আসে আনিস তখন তাঁর চোখের জল দেখে ফেলে নবনী। নবনী ঢাকায় ফিরে আনিসকে জানায় তাঁরা একসাথেই থাকবে, আলাদা হবে না।
মতি ইমামের জোব্বা পরে নকল দাড়ি লাগিয়ে সবাইকে ভয় দেখাচ্ছে নবনী এটা ধরতে পারে এবং ঢাকায় ফিরে সেটি আনিসকে জানিয়ে দেয়।
----- সমাপ্ত -----
=======================================================================
আমার লেখা হুমায়ূন আহমেদের অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ
আমার লেখা অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ:
ভয়ংকর সুন্দর (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মিশর রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
খালি জাহাজের রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ভূপাল রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
সবুজ দ্বীপের রাজা (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
তিতাস একটি নদীর নাম - অদ্বৈত মল্লবর্মণ
ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড - টমাজ হার্ডি
কালো বিড়াল - খসরু চৌধুরী
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:০৯