somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মদিরা : (ফর অ্যাডাল্টস ওনলি)

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শচীন ভৌমিকের লেখা ফর এডাল্টস ওনলি থেকে কিছু কিছু অংশ যা পড়ে বেশ তৃপ্তি (!!) পেয়েছি। যারা বইটি পড়েননি তাঁরা পড়ে দেখতে পারেন।----




মদিরা



যৌবন আসার আগেই যৌবনের দুই চর চলে আসে।

সেই সময় ফ্যান্টাসীর জগতে নিজেকে মনে হয় ফ্যান্টাসটিক। কখনও কিং মনে হয়, কখনও কিংকং।

সে বয়েসে স্বপ্ন ছিল উত্তমকুমারের বাড়িতে, ক্যাডিলাক গাড়িতে ও সুচিত্রা সেনের শাড়িতে ঢােকার।
স্বপ্ন ছিল হেমন্ত মুখার্জির কণ্ঠ, তারাশঙ্করের চরণ, রবিশঙ্করের অঙ্গুলি, নেহেরুর হস্ত, সােফিয়া লােরেনের স্তন, এলিজাবেথ টেলরের নিতম্ব স্পর্শ করার।

স্বপ্ন ছিল দেখবার প্যারিসের ইফেল টাওয়ার আর ল্যুভর মিউজিয়াম, লণ্ডন শহর, রাশিয়ার ইলিয়া এরেনবুর্গ, মায়কোভস্কী ও টিউব ট্রেনের স্টেশন, আমেরিকার স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, মেরিলিন মনরাে, হলিউড, এলভিস প্রেসলি আর ন্যাট কিং কোল, স্পেনের যাঁড়ের লড়াই, মিশরের পিরামিড আর জাপানের গাইসা মেয়ে, আগ্রার তাজমহল, বীরভূমের শান্তিনিকেতন, সিংহগড়ের ভগ্নস্তুপ আর বৈজয়ন্তীমালার নগ্নরূপ—এই সবকিছুই দেখবার ইচ্ছে হত।

সে এক অদ্ভুত বয়েস। সব যৌবনবতী মেয়েই যেন বাসনার সােনা, সব নারীর জানুসন্ধির ক্ষেত্রই যেন তীর্থক্ষেত্র সেই বয়েসে।



যখনই চৌরঙ্গীর গ্র্যাণ্ড হােটেলের সামনে দিয়ে হেঁটে গেছি, ভাবতাম কখনও কি ঢুকতে পারব গ্র্যাণ্ডে?
গ্র্যাণ্ডের পাশে ও পার্ক স্ট্রীটের বিলিতি মদের বার-এর সামনে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে প্রায়ই ভাবতাম কখন সে সময় আসবে যে চট করে বার-এ ঢুকে অর্ডার দেব—এক পেগ হুইস্কি লাও। ভাবতেই কেমন ভয় আনন্দ কৌতূহল মিলিয়ে এক অদ্ভুত অনুভূতি হত।

এখন পার্টিতে গেলেই পাকা বিশেষজ্ঞের মত বলি, ড্যাস অফ সােড এণ্ড নাে আইস প্লিজ। দিনের বেলা হলে বলি, বিয়ার মেক্স মি লাউজী, মে আই হ্যাভ এ স্কু ড্রাইভার অর ব্লাডি মেরি? নাে ভডকা? জিন উইলবি ওকে। বাট লিটল মাের বিটার প্লিজ।
বিলেতে পাব ক্রলিং করার সময় বলেছি, মে আই হ্যাভ এ মার্টিনি? মেক ইট ভেরি ড্রাই। ইটালীতে, লেট মি হাভ এ ক্যাম্পারী। নাে, নট উইথ সােড়া। অন দা বক্স প্লিজ। হুইস্কি-টক শুরু হলে ঝগড়া করি ‘জনি ওয়াকার’, ‘ব্ল্যাক লেবেল’ আর ‘সিভাজ রিগ্যালের মধ্যে কোনটা উত্তম, বলি ‘হান্ডেড পাইপার্স’ থেকে ‘কাটি সার্ক’ লাইটার হুইস্কি, বলি ‘কিং অফ কিংস ঠিক আছে, কিন্তু নাথিং লাইক ‘ডিম্পল’, বলি, ‘এন্টিকোয়েরী’ ট্রাই কর, মাচ বেটার দ্যান ‘সামথিং স্পেশাল’। বলি, বেস্ট ইন দা ওয়ার্লড নাে ডাউট হল ‘রয়েল স্যালুট’। রয়েল স্যালুট’ হুইস্কির বটমস আপ এর চাইতে এখনও আমার কোন সুন্দরীর বটমস আপ অনেক বেশী সুস্বাদু, না, স্যরি, অনেক বেশী লােভনীয় মনে হয়।


মদ সভ্যতার আদিমতম আবিষ্কার। মনে হয় আগুন আর মদ একই সময়ে আবিষ্কৃত হয়েছিল।
আগে ছিল বর্বর যুগ বা বারবারিক এজ। আর এখন হল বার এজ। নাকি বলব বারি এজ। এখন ধনীদের গৃহে গৃহে বার। আমার এক বন্ধুর মতে এ যুগ হল বার আর বারাঙ্গনার। তাকিয়ে দেখুন ধনীপুত্রদের। চুল দেখে মনে হয় ছ'মাস কোন বারবারের কাছে যায় নি, কিন্তু গন্ধে টের পাবেন রােজ বােধহয় দু’বেলাই বারে যাতায়াত আছে।

সাহিত্যজগৎ, নাট্যজগৎ, চিত্রজগৎ, শিল্পীজগৎ, সংগীতজগৎ সর্বত্র মদিরার মত্ততা, সর্বত্র সুরার ফোয়ারা। শিল্পজীবনের গৌরব সুরার সৌরভ ছাড়া যেন হয়ই না। “দেবদাস’ একসময়ে ভগ্নহৃদয়ের জন্য মদ্যপান যেন অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত এই রকম একটা বিশ্লেষণ প্রচারিত করেছিল।

দেবদাসের সেই প্রভাব অবশ্য এখন কমে গেছে। এখন ভগ্নহৃদয়ে আর বড় কেউ পানপাত্র তুলে নেয় না। বরং দেখা যাচ্ছে যুগ্ম হৃদয়ে আজকাল নারী পুরুষ একসঙ্গেই পানপাত্র তুলে গ্লাসে ঠোকাঠুকি করে বলে, ‘চিয়ার্স, ফর আওয়ার এটার্নেল লাভ’ বা ‘চিয়ার্স, টু আওয়ার ম্যারেজ।

যুগ পাল্টাচ্ছে। অতি উদারতার যুগ এটা। সেক্স এখন শয্যার মশারীতে নেই, সেক্স এখন সজ্জার পসারীতে । আগে ছিল ‘চিয়ার্স টু আওয়ার লাভ’ এখন হয়ে গেছে ‘চিয়ার্স টু আওয়ার—-চার অক্ষরের সেই অতি জৈবিক শব্দ। এখন cocktail আর cock tale-এ কোন তফাত নেই।




ওমর খৈয়াম সম্ভবত প্রথম কবি, যার জীবনদর্শন ছিল সুরা, সাকী আর ভাগ্য নিয়ে। তাঁর রুবাইয়ৎ-এর প্রতি ছত্রে ছত্রে সুরার জয়গান। ওঁরই অনুপ্রেরণায় উদু কবিতার গালিব থেকে শুরু করে অনেক আধুনিক কবির প্রিয় বিষয়বস্তু হল মদিরা। সুরার প্রচারপত্র এইসব কবিতায় অনেক মণিমুক্তা ছড়ানাে আছে। সাহিত্যজগতে সুরার এই অবদান ভােলা যায় না।
শুনুন---

১।
কালাে কালাে সুরার বােতল,
যেন যৌবনের মাতাল রাত্রির দল এখানে বন্দী হয়ে রয়েছে।


২।
দিব্যির চাইতে অনেক ভাল আমার এই বােতল।
দিব্যি যদি ভেঙে ফেলি, কি হয় ? কিছুই না।
কিন্তু বােতল যখন ভেঙে যায়। তখন ভাঙা কাচের টুকরােতে পেয়ালা হয়ে যায়।
তাতে মদিরা কিছু কিছু টলটল অন্তত তো করে। সবটাই তত আর লােকসান নয়।



৩।
আকাঙ্ক্ষার বিক্ষত রক্তে জীবনের প্রানপাত্র আমার কানায় কানায় ভরে গেছে।
এ তাে আমার সহ্যশক্তির ক্ষমতা যে এক বিন্দুও ছলকে পড়ে নি।




৪।
আমার ওপর তোমার যদি অভিমান হয়ে থাকে, ঘেন্না হয়ে থাকে,
সামনে মদিরা গ্লাসে না ঢেলে দিতে চাও দিও না।
মদের পেয়ালা না হয় না-ই দিলে।
অঞ্জলি পেতে দিচ্ছি, সেই হাতের অঞ্জলিতে সুরা ঢেলে দাও।



৫।
ভ্রান্ত পণ্ডিত,
তুমি আমাকে বলছ মসজিদে আসতে। আমাকে তুমি চিনতেই পার নি।
আরে, আমার যদি হুশ থাকত তাহলে এতক্ষণে পানালয়ে চলে না যেতাম ?




৬।
বিদ্যুৎ কেন চমকায়, কোথা থেকে চমকায়?
এই গভীর প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হলে সাধু মহারাজ, তুমি তােমার শাস্ত্র তুলে নাও,
আমি আমার পানপাত্র তুলে নিচ্ছি।
সব রহস্যের উত্তর তুমি হয়তো শাস্ত্রে পাও,
কিন্তু আমি পাই এই অমৃতের গ্লাসে, এই সুরার বিন্দুতে।




৭।
হে সাধু, হে পণ্ডিত, এটা সুরাবিপনি, তােমার বিদ্যালয় নয়।
এখানে তো সুর দিয়ে মানুষ তৈরি করা হয়।
জ্ঞানের বিদ্যালয় তােমার জ্ঞানদানে মানুষ মানুষ হয়,
আর সুরার শিক্ষালয়ে মানুষ তৈরি হয় সুরাপানে।






৮।
সাকী বার বার মদির চোখে আমাকে দেখেছে।
মদিরার পাত্র হাতে আসার আগেই অনেক মদের নেশা আমার হয়ে গেছে।
সে আঁখির চাহনিতে পানপাত্রের চাইতে অনেক বেশী নেশা, কবির আর কি দোষ বলুন?




আঙুরের মধ্যে ছিল গােবেচারা রসের কয়েকটি বিন্দু,
সে রসকে নিংড়ে নিয়ে যখন সুরার রূপ নিল।
তখন সেই শান্ত রসবিন্দুরাই তরােয়ালের মত ধারালাে অস্ত্র হয়ে দাঁড়ালাে।




১০।
হে প্রেয়সী, তােমার হাতের, পানপাত্রের ছলকে যাওয়ার তুলনা হয় না।
কিন্তু তােমার রক্তিম উষ্ণ ঠোটের স্পর্শ
সে তাে তােমার ছলকানাে হাতের মদিরার চাইতে অরোও অনেক বেশি আকর্ষণীয়।
সে তাে অন্য এক অনুভব, অন্য এক স্বর্গ ।

বুঝা যাচ্ছে কবিরা প্রচুর মদ্যপদ্য রচনা করেছেন।





উর্দুতে সর মানে ফ্যাসাদ আর আব মানে জল।
তাহলে শরাব-এর মানে দাড়াল যে জল ফ্যাসাদ বাধায়। সত্যি, হাঙ্গামা ফ্যাসাদের উৎসই হল এই শরাব, মদ, সুরা, কারণ, মদিরা। কাব্য সাহিত্য ছাড়া সুরা আরেক সাহিত্য শাখাকে সমৃদ্ধ করেছে। সেটা হল হাস্যরসের কৌতুক সাহিত্য। রম্যরসের অনেক উপাদান যুগিয়েছে এই দ্রাক্ষারস।
তার কিছু নমুনা -




১।
এক ভদ্রলােক বার-এ একসঙ্গে দু গ্লাস মদ নিয়ে বসেছেন। একজন প্রশ্ন করল, একসঙ্গে দু গ্লাস কেন?
এক গ্লাস আমার জন্য, এক গ্লাস আমার মৃত বন্ধুর স্মরণে খাচ্ছি। সে ড্রিংক্স খুব পছন্দ করত। রােজই আমি ওর আর আমার দুজনের কোটা খাই।
মাস চারেক পরে দেখা গেল। সেই ভদ্রলােক বার-এ বসে মদ খাচ্ছেন, কিন্তু অবাক কাণ্ড -সামনে মাত্র একটিই গ্লাস।
সেই ভদ্রলােক প্রশ্ন করলেন, আজকে একটাই গ্লাস কেন?
ভদ্রলােক : আমি মদ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি। ডাক্তার মানা করেছেন। সেজন্য শুধু মৃত বন্ধুর গ্লাসটাই খাচ্ছি।



২।
স্বামী স্ত্রী বাড়িতে ককটেল পার্টি দিয়েছিল। সারারাত হৈ-হুল্লোড় গেছে।
পরদিন স্বামী স্ত্রীকে ডেকে প্রশ্ন করল, লিলি, একটা কথা জিজ্ঞেস করছি কিছু মনে কর না। ড্রিংক করার পর তাে হুশ থাকে না। লাইব্রেরী ঘরের সোফার পিছনে কাল রাতে যে মেয়েটির সঙ্গে সহবাস করেছি সেটা তুমিই ছিলে তাে?
স্ত্রী চিন্তিত মুখে জবাব দিল, টাইমটা কখন বল তাে? রাতের গোড়ার দিকে, না শেষ রাতে, না মাঝ রাতে?


৩।
এক মাতাল এসে লাইট পােস্টের গােড়ায় চাবি দিয়ে খােলার চেষ্টা করছিল।
একজন পুলিশ এসে বলল, কি করছো কি?
- ঘরের দরজা খুলছি।
- এটা কি তোমার বাড়ি নাকি?
- হ্যা বাবা, তুমি অন্ধ নাকি বাপু? দেখছ না দোতলার আলো জ্বেলে গিয়েছিলাম, এখনও সেটা জ্বলছে।
আরেকটা—দুই মাতাল প্রচুর মাল টেনেছে। তিনতলার ঘর


৪।
একজন পর পর পাঁচ পেগ মদ খেয়ে গেল। এক ভদ্রমহিলা বললেন, আপনি রােজ এরকম ড্রিঙ্ক করেন?
ভদ্রলােক : হ্যাঁ।
ভদ্রমহিলা : আপনি কি জানেন আপনি নিজেকে শ্লো পয়জন করে চলেছেন?
ভদ্রলােক : সে ঠিক আছে। মরবার জন্য আমার তেমন তাড়াহুড়ো নেই।


৫।
ছেলেটি ড্রিঙ্ক ঢালতে ঢালতে মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করল, Say when?
মেয়েটি লজ্জিত কণ্ঠে বলল, After second peg.
ছেলেটি মদের মাত্রা জানতে চেয়েছিল, মেয়েটি শয্যাযাত্রার সময় ভেবে বসেছিল।


৬।
একজন বার-এ ঢুকে বলল, বারটেণ্ডার, আমার একাউন্টে এখানে সবাইকে একটা করে ড্রিঙ্ক দাও। ম্যানেজার সাহেবকেও দাও।
সবাই খুশি হয়ে ড্রিঙ্কস করল।
এইবার বিল চাইতেই লােকটা বলল, আমার কাছে একটা পয়সাও নেই। ম্যানেজার লােকটাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ছুড়ে মারল। ধুলাে ঝেড়ে রাস্তা থেকে উঠে সে আবার বার-এ ঢুকে পড়ল। ঢুকেই চেঁচিয়ে বলল, বারটেণ্ডার, আমার একাউন্টে সবার জন্য একটা করে ড্রিঙ্ক দাও। কিন্তু ম্যানেজার সাহেবকে দিও না। মদ খেলেই ম্যানেজার বড্ড মিসবিহেভ করে।



কৌতুকের পরে এবার আসুন সিরিয়াস প্রসঙ্গে। মদের পরে কি সিরিয়াস কথা হয়? নিশ্চয়ই হয়। মদ থেকেই তো সিরােসিস হয়। আর সিরােসিসের চাইতে সিরিয়াস আর কিছু নাই।

নেশাটা কি? যখন আমরা মদ খাই সেটা সােজা পাকস্থলীর দেয়াল টেনে নেয় ও সেখান থেকে রক্তস্রোতে গিয়ে মেশে। লিভারের কাজ হল রক্তশুদ্ধি। সুতরাং লিভারের উপর চাপ পড়ে ও লিভার রক্ত থেকে এই বিষ আলাদা করে রক্তকে সুরামুক্ত করতে থাকে। লিভার মদের সারাংশকে ধ্বংস করে দেয়। মাত্র ২% পার্সেন্ট শেষ পর্যন্ত রক্তে ও প্রস্রাবে চলে আসে। মদ রক্তস্রোতে মিশলে স্বভাবতই রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, সেজন্য শরীরে সাময়িক উষ্ণতা এনে দেয়। কিন্তু স্নায়ুর ওপর অত্যাচারই সুরার বেশী হয়। স্নায়বিক প্রক্রিয়া শ্লথ হয়ে যায়। মস্তিষ্কে সুরাবৃ প্রকোপ আমাদের চিন্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিকে সাময়িকভাবে বিনষ্ট করে। সেজন্যই ব্যবহার, চলা-বলা থেকে বিচারশক্তি সব হারিয়ে ফেলি আমরা। সেটাকেই স্থূলভাষায় বলা হয় মাতলামী। স্নায়বিক প্রক্রিয়ার সামঞ্জস্য হারিয়ে ফেলার নামই নেশা। মদ কারুর রক্তস্রোতে দ্রুত প্রবেশ করে, কারুর বিলম্বিত লয়ে। সে অনুযায়ী এক একজনের নেশা। কম বেশী হয়। এলকোহলের শক্তির উপর, ব্যক্তিবিশেষের স্বাস্থ্যের উপরও নির্ভর করে পানোন্মক্ততার মাত্রা। ডাক্তারদের মতে এক পেগ হুইস্কি বা অর্ধ বােতল বিয়ার রক্তস্রোত থেকে নির্মূল করতে সুস্থ একটি লিভারের সময় লাগে এক ঘণ্টাটাক। বেশী মদ খেলে লিভার কাজ করতে করতে শ্লথ হয়ে যায়।


মানুষের শরীরে দুটো অঙ্গ সবচেয়ে নামজাদা ও শক্তিশালী। এই দুটি হল হার্ট ও লিভার। ছেলেদের এই দুই অঙ্গের প্রধান শত্রুও হল দুটি।। হার্টের শত্রু নারী, আর লিভারের শত্রু হল মদ-Woman আর Wine.
ইংরেজীতে বলে Rich drinkers are poor lovers.


শুরুতে বােতল আপনার দাস, ক্রমে ক্রমে ফ্রাঙ্কেনস্টাই হয়ে ওঠে সে বােতল, তখন মানুষই বােতলের দাস।
এক-আধটু কখনাে-সখনাে মদ মন্দ নয়। মদ তখন উর্দু কবিতার শরাব। মদ তখন মদিরা। মাত্রজ্ঞান হারালেই মদ হয়ে ওঠে বদ। তখন সে মদরূপী বদ আপনাকে বধ করে ছাড়বে। আমার মতে মদ আর মেয়ে অল্পবিস্তর দুটোই ভাল। দুটোর সঙ্গেই মাঝে-সাঝে ফ্লার্ট করুন, কিন্তু ধরা দেবেন না। নইলে মেয়ে আর মদ নাছােড়বান্দা হয়ে যাবে। শেষে দেখবেন আপনিই এই দুই আলেয়ার বান্দা হয়ে গেছেন। সুরার bottle আর নারীর bottom খুবই লােভনীয়। দু বস্তুই বটম, আপ, মানে খৈয়ামী নন্দনকানন। সমস্যা হচ্ছে আজকে যেটা নন্দনকানন, কাল সেটাই ক্রন্দনকানন, আজকে যেটা স্বর্গ কাল সেটাই বিসর্গ । মদের বিন্দু আর সিনেমার বিন্দু দুটো থেকেই দূরে থাকবেন। কেননা আজকে বিন্দুতে লােভ দিলে, কালকে সে বিন্দুই আপনার নামের আগে চন্দ্রবিন্দু হয়ে যাবে।

উর্দু কবি যতই বলুক - মদের দোকানে পৌঁছিবার পর আমি বুঝতে পেরেছি, সুরাব্যাপারী সুরা নয়, জীবন বিক্রি করছিল।
মিথ্যে কথা। জীবন নয়, মৃত্যু বিক্রি করছিল। বিশ্বাস করুন।

শচীন ভৌমিকের লেখা "ফর অ্যাডাল্টস ওনলি" বইয়ের "মদিরা" নামক অংশ থেকে।
ছবি : গুগলের সাহায্যে বিভিন্ন সাইট থেকে সংগৃহীত।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:১৫
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×