somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই লেখা আমার না!

১৯ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অনেক বছর আগে জন্ম নিলে এমনি এমনি আমার সিক্স প্যাক হয়ে যেতো। শিকারে যেতাম একটু হাত-পা ছোড়ার বয়স হলে। বাবা শেখাতেন কিভাবে বন্য শুয়োর বা ম্যামথ শিকার করতে হয়। শিকারে ব্যার্থ হলে নিজেও শিকারে পরিনত হতে সময় লাগতো না। কিল অর বি কিলড রাইট! প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হতো। এই ডিপ্রেশন, প্রোলংড প্রোক্যাস্টিনেশন নিয়ে ভাবার অবকাশ থাকতো না। আমার ক্ষিধে লাগতো। তা মেটানোর জন্য নিজেই বনবাদাড় থেকে খাদ্য যোগান দিতাম। এক এলাকার খাদ্যের অভাব হলে অন্য এলাকায় চলে যেতাম। কেউ আমার আইডি দেখতে চাইতো না। অপরিচিত জায়গায় আমি অবাঞ্চিত হতাম না। কেউ আমার ধর্ম দেখতো না, বর্ণও না। আমি প্রকৃতির অন্য সন্তানদের মতই একজন সন্তান হতাম। ইউর জাংগল, ইউওর সারভাইভাল মেনে চলতে হতো। হয় বাচতাম না হয় মরে যেতাম। মাঝামাঝি থাকতে হতো না।

আমার একজন সঙ্গী হতো। সেও জীবনযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতো। চাঁদের আলোয় একজনের চোখে আরেকজন বিভোর হয়ে মগ্ন থাকতাম। বন্য, উন্মত্ত, উশৃংখল কিন্তু পরিশেষে নিবিড় হতো আমাদের সম্ভোগ। এখনকার রাতের মতো এতো আলোর ভীড়ে জোছনা দেখার অভাবটা বোধ হতো না। প্রতিনিয়তই জীবন আর মৃত্যুর মধ্যে থেকে একজন আরেকজনের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হতো।অনেক সময় থাকতো আমাদের হাতে। নক্ষত্র দেখতাম। একসাথে । নিস্তব্ধতা, অন্ধকার আমাদের প্রিয় হতো। একে অপরের শ্বাসের শব্দ শুনতাম। অজানা রহস্যময় ভয়ই আপন হতো।আমার সন্তান হতো। তাকে কিভাবে বাচতে হয় তা শেখাতাম।

আমি টাকার কন্সেপ্ট নিয়ে ভাবতাম না। কতোটা পোশাক পড়ে আছি তা নিয়ে ভাবতাম না। সমাজ নামক ভন্ডামি নিয়ে ভাবতে হতো না। পঁচিশে চাকরি আটাশে বিয়ে নিয়ে ভাবতাম না। ব্লাডপ্রেসার,ডায়বেটিস, গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ ঘুষ,যৌনতা, বডিকাউন্ট,পরকীয়া, বেতন, ট্যুর, বাচ্চার রেজাল্ট, ফরমালিন, ভেজাল,প্রফিডেন্ট ফান্ড,প্যারানয়া,,,,,, এসব তখন অলীক। আমাকে শুধু বেচে থাকার উপায় খোজা নিয়ে বেচে থাকতে হতো।

এখন, আমার সামনে সমানে সবাই শব্দ করে যাচ্ছে। বিংশতম শতাব্দীর শব্দ। কাপড়ে পড়েও নগ্নতার শব্দ। সমাজের দোহাই দিয়ে ভন্ডামির শব্দ। সৎ পথে থেকে ধুলায় লুটিয়ে পড়ার শব্দ। চাহিদার শব্দ। লোভের শব্দ। কাপুরুষতার শব্দ। পাপ-পুন্যের শব্দ। আমার কানে তালা লেগে যাচ্ছে। আমার পরিচয় দিতে হচ্ছে সবখানে। শব্দ করে বেচে থাকতে হচ্ছে। অথচ শব্দ করলেই শিকার ফসকে যেতো আগে। আমিও শব্দ করছি। বেচে থাকতে শব্দ করতে হচ্ছে। ভন্ডামির শব্দ করছি শরীরের সর্বোচ্চ শক্তি খরচ করে। শরীরের আর মানিব্যাগের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে প্রাণপণে শব্দ করে যাচ্ছি। কেবল পরিপূর্ণ হচ্ছে না।

অথচ আমার শিকার করার কথা। পিনবতন নীরবতার মধ্য দিয়ে। গুহায় বসে সন্তানের, সঙ্গীর মুখে জোছনার আলো দেখার কথা। নক্ষত্র দেখার কথা। সবুজ ঘাসের মাঠে গরুর মতো ধীরে লয়ে বেচে থাকার কথা। শ্বাস নেবার কথা। সময় হয়ে এলে উবে যাবার কথা।

লেখাগুলোও আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। তাদেরও আকর্ষণীয় ভুমিকা,যবনিকার প্রয়োজন হচ্ছে। এবারে দিতে পারলাম না। দুঃখিত। এই লেখা আমার না। যারা এ সো কল্ড আধুনিক যুগে এমন অনুভব করেন, তাদের।



সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৪:০৯
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

পঁচে যাওয়া বাংলাদেশ আর্মি

লিখেছেন রিয়াজ হান্নান, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:২৫


একটা দেশের আর্মিদের বলা হয় দেশ রক্ষা কবজ,গোটা দেশের অব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে বহিরাগত দুশমনদের আতংকের নাম। ছোটবেলা থেকে এই ধারণা নিয়ে কয়েকটা জেনারেশন বড় হয়ে উঠলেও সেই জেনারেশনের কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×