আজ সন্ধেয় একটা পরি এসেছিলো, ফুটফুটেও না ছটফটেও না, শান্ত আর লক্ষী একটা পরী। দরজার সামনে থমকে গিয়ে মিনিট দুয়েক দেখলো আমাকে, ভাবখানা যেন, আমার মত এই কদাকার রাক্ষসটার সাথে ভাব কা যায় কি না এরকম!
খাতির হতে দশ মিনিটও লাগে নি। তারপর থেকেই সেই ছোট্ট লক্ষী বব-ছাঁট পরিটা আমার কোলে। আহ্লাদের কৌটো যেনো! কোলে উঠে এক হাতে গলাটা জড়িয়ে ধরা, আরেক হাতে কলার, তারপর বেড়াল ছানার মতন কিছুক্ষন গালে গাল চেপে ধরে চুপচাপ!
একটু ক্যারাম খেলা হলো, হলো টিভি দেখাও, তারপরে আয়নার সামনে গিয়ে মুখ ভেঙচিও খেলা হলো। আস্তে করে কানে ফিসফিস - "চানাচুর"। খাবে সেটাও কোলে বসেই! ক্যামনে কি!!!
বাম পায়ে পুরোটা ভর রেখে, ডান পা টা বিছানায় তুলে একটা টেম্পোররী টুল বানিয়ে বসানো গেলো পরীটাকে, এবারে এক হাতে চানাচুরের প্লেট, আরেক হাতে গায়ের সাথে চেপে রেখে চানাচুর খাওয়ানো, যাতে পড়ে না যায়।
একটা একটা করে বাদাম তুলে দিই ঠোঁটে, কপ করে খেয়ে নেয় হাঁসের ছানার মত! দুষ্টুমি করে জানতে চাইলাম, "ঐ মেয়ে, দাঁত আছে তোমার? দেখো কাম্মি দিওনা যেনো! " আর যাবে কোথায়! পাগলকে বলো, "ব্যাটা সাঁকো নাড়াস না"? ইন্সট্যান্ট একটা হেভি-ডিউটি কামড় পড়লো আঙুলে!
অবশ্য হাসির মলম পড়তে দেরী হয়নি
এরপরে কিছুক্ষন ফিসফিসিয়ে গপ্পোগুজব, যাতে মা না শুনে ফেলে
তারপরে সটান দুটো হাই তুলে দুহাতে গলা জড়িয়ে ধরে, কাঁধে মুখ ডুবিয়ে ঘুমুবার চেষ্টা!
কি আর করা! পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে সারা ঘর হাঁটা শুরু, মেয়ে ঘুমুবার তালে, মায়ের চোখ ছানাবড়া - মেয়ে নাকি বাপ-মা আর বড় বোন ছাড়া কারো কোলে যায় না!!
রাত বাড়ছে, অর্ধঘুমন্ত বার্বিটাকে নিয়ে নামলাম মায়ের পিছুপিছু, গাড়ীতে বসার পরে যেই না ওকে মার কোলে দেবো, দেখি কাহিনী খারাপের দিকে! ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে ঘুম ঘুম চোখে ডিসাইড করার চেষ্টা - কান্না স্টার্ট করা যায় কি না!
যাই হোক, শেষমেষ কাঁদেনি।
তবে খুব খারাপ লাগছিলো আমার ইশ!! ওরকম একটা মেয়ে থাকতো আমার!
মাঝে মাঝে সময়টা বড় দ্রুত হাঁটতে থাকে
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০১৬ রাত ১২:৪৭