somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

চাঁদগাজী এবং অন্যান্য ব্লগারগন

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ধরুন, আমি কাওরানবাজার এলাকার রাস্তায় ডাব বিক্রি করছি। সময় মধ্য দুপুর। কড়া রোদ উঠেছে। আমার ভ্যান ভরতি ডাব। সদরঘাটের বাদামতলি ঘাট থেকে এক শ' ডাব এনেছি। ডাব কিনেছি প্রতি পিস ২৫ টাকা করে। বিক্রি করছি ষাট টাকা করে। ভ্যানটাও নিজের না, সারাদিনের জন্য ভাড়া নিয়েছি। পথচারীরা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে আমার কাছ থেকে ডাব কিনে খাচ্ছে। আমি ধারালো দা দিয়ে কচকচ করে ডাব কেটে দিচ্ছি। এমন সময় আমার সামনে দিয়ে চাঁদগাজী সাহেব হেঁটে যাচ্ছেন। তার হাতে একটা কালো রঙের ছাতা। অথবা তিনি আমাকে ডাব বিক্রি করতে দেখেই আমার কাছে এলেন।
উনি আমাকে দেখেই হয়তো বলবেন- কি খবর ব্লগার রাজীব নূর? আজকাল ব্লগে দেখি না!
আমি বলল- ওস্তাদ, ব্যবসা শুরু করেছি। সময় পাই না ব্লগে যাওয়ার।
আমি নিজের হাতে ওস্তাদকে একটা ডাব কেটে দিব।

মনে করুন, আমি একজন মাছ বিক্রেতা। ঠাঠারি বাজারে মাছ বিক্রি করি। বড় বড় রুই মাছ বিক্রি করি। আমার কাছ থেকে মাছ কিনলে, আমি মাছ কেটে দেই ফ্রি। মাছ কিনে কাটতে গেলেও ৫০ টাকার উপরে লাগে। আমি জানি এই পঞ্চাশ টাকা বাঁচাতে গিয়ে সকলে আমার কাছ থেকেই মাছ কিনবেন। একদিন কবি জাহিদ অনিক ভাই আসবেন ঠাঠারি বাজারের মাছের বাজারে। আমাকে দেখে উনি প্রচন্ড অবাক হবেন। চশমার কাচ মুছে আবার ভালো করে আমার দিকে তাকাবেন। আমি বলল, কবি সাহেব আপনি ভুল দেখছেন না। আমিই আপানদের ব্লগার রাজীব নূর। কোনো পথ না পেয়ে মাছ বিক্রি শুরু করেছি। বেঁচে তো থাকতে হবে। নিজের হাতে বেছে এবং কেটে কবি জাহিস অনিক ভাইকে একটা রুই মাছ দিয়ে দিব। প্রিয় জাহিদ অনিক ভাই বলবেন- কত টাকা দিতে হবে? আমি বলল- আপনার অনেক কবিতা পড়েছি। আনন্দ পেয়েছি। তাই মাছের দাম দিতে হবে না। এটা আমার পক্ষ থেকে।

ধরুন, সিজনাল ব্যবসা শুরু করেছি। আমের সময় আম বিক্রি করি, পেয়ারার সময় পেয়ারা বা তরমুজ। আড়ৎ থেকে ফল কিনে রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে বিক্রি করি। স্বাধীন ব্যবসা। কখনও দৈনিক বাংলার মোড়ে, কখনও গুলিস্তান মোড়ে, কখনোবা সিটি কলেজের সামনে অথবা লালমাটিয়া আড়ং এর সামনে। একদিন হয়তো ছড়াকার 'বিএম বরকতউল্লাহ' বা 'বাকপ্রবাস' আমাকে দেখবেন রাস্তায় ফল বিক্রি করতে- আর প্রচন্ড অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করবেন আপনাকে চেনা চেনা লাগছে কেন? আমি বলল- আমি বিখ্যাত ব্লগার রাজীব নূর। তারা হয়তো আমার দিকে মানে ফল বিক্রেতার দিকে করুন চোখে তাকাবেন। আমি তাদের জোর করে আমি কেটে খাইয়ে দিব। এবং সাথে করে কিছু আম দিয়েও দিব।

ধরুন, রেল লাইনের পাশে একটা চায়ের দোকান দিয়েছি। সমস্ত বাংলাদেশের চায়ের দোকান খুব চলে। চায়ের দোকানে শুধু চা না, আরও অনেক কিছু থাকবে। রুটি-কলা, কয়েক রকমের বিস্কুট। চা থাকবে দুই রকমের লাল চা আর দুধ চা। গনমাধ্যম কর্মী এবং ব্লগার নূর মোহাম্মদ নূরু আমার দোকানে চা খেতে আসবেন। আমাকে দেখে প্রচন্ড অবাক হবেন। এতটাই অবাক হবেন যে তিনি মাথায় হাত দিয়ে বসেই পড়বেন। তিনি মনে মনে ভাববেন- শেষমেষ একজন ব্লগারকে চা বিক্রি করতে হচ্ছে! হায় খোদা! আমি নূর মোহাম্মদ নূরু ভাইকে নিজের হাতে চা বানিয়ে খাওয়াবো। কুশলাদি জিজ্ঞেস করবো। উনি যদি সিগারেট খান, তাহলে একটা সিগারেটও খাইয়ে দিব। একদিন ব্লগার ''পদাতিক চৌধুরি' দাদা আসবেন আমার দোকানে। এসে অনেক গল্প করবেন।

ধরুন, আমি পাঠাও বা উবার চালাই। একদিন আমার গাড়িতে উঠলেন শ্রদ্ধেয় 'খায়রুল আহসান' স্যার। আমি বলল, কেমন আছেন স্যার? শরীরটা ভালো? উনি বললেবন- তুমি কে? আমি বলব স্যার আমি একজন ব্লগার। উনি বলবেন কোন ব্লগে লিখো? আমি বলব সামুতে স্যার। কি নামে লিখো? আমি বলব স্যার আমি আমার নামেই লিখি। উনি বলবেন, তোমার নাম কি? আমি বলব, স্যার আমার নাম রাজী নূর খান? এইভাবে অনেক কথা হবে। কথা বলতে বলতে স্যারকে আমি তার গন্তব্যে নামিয়ে দিব। এবং অবশ্যই ভাড়া নিব না।

মনে করুন, আমি সারা ঢাকা শহর ঘুরে ঘুরে ঝাল মুড়ি বিক্রি করি। বিশেষ করে শপিং মল বা স্কুল কলেজের সামনে। ব্লগার শায়মা আমার কাছ থেকে ঝালমুড়ি খাবেন। এবং আমাকে বলবেন- আচ্ছা, ঝাল মুড়িওয়ালা ভাই আপনাকে চেনা চেনা লাগছে কেন বলুন তো? আমি মিটি মিটি হাসবো।
'সনেট কবি' আমাকে ঝালমুড়ি বিক্রি করতে দেখে দৌড়ে আসবেন। বলবেন, এ কি ভাতিজা তোমার এই অবস্থা কেন? আহারে--- আসলেই তোমাকে দেখে খুব খারাপ লাগছে। ঝালমুড়ি বিক্রি করে বেড়াও বলেই আজকাল তোমাকে ব্লগে দেখি না।
ব্লগার ঢাবিয়ান আমাকে দেখে হয়তো বলবেন- আমি জানতাম আপনার পরিস্থিতি এরকম হবে। ঝালমুড়ি বিক্রি করতে কেমন লাগে? এ বিষয়ে আপনি কি কোনো পোষ্ট লিখেছেন?
ব্লগার 'আব্দুল্লাহ্ আল মামুন' আমাকে ঝালমুড়ি বিক্রি করতে দেখে ভাববেন- গ্রেট। রাজীব ভাইয়ের তুলনা হয়। এই ঢাকা শহরে রাজীব ভাইয়ের মতো এত সুন্দর করে কেউ ঝালমুড়ি বানাতে পারে না।
ব্লগার 'বিজন রয়' আমাকে দেখে বলবেন- কখনও ভাবিনি আপনাকে ঝালমুড়ি বিক্রি করতে দেখব! খুব দঃখজনক।
ব্লগার 'নীলপরী' এবং 'রাকু হাসান' আমাকে রাস্তায় ঝালমুড়ি বিক্রি করতে দেখে ব্লগে লিখবেন 'একজন ব্লগার যখন ঝালমুড়ি বিক্রেতা'। সেই লেখা অবশ্যই হিট হবে।
'বিচার মানি তালগাছ আমার' এবং 'সাইন বোর্ড' উনারে দুইজন আমাকে দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলবেন।
ব্লগার 'শিখা রহমান' এবং 'আরোহী আশা' আমাকে দেখে বলবেন- বেশি করে মরিচ দিয়ে ঝালমুড়ি দেন ভাইয়া।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৪২
৬১টি মন্তব্য ৫৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×