এই পৃথিবী জন্মের পর একটুও জায়গা বাড়েনি। বরং আমরা প্রতিনিয়ত পৃথিবীর ক্ষতি করে চলেছি। এজন্য মাঝে মাঝেই প্রকৃতি প্রতিশোধ নেয়- ঝড়, বন্যা আর ভূমিকম্প দিয়ে। কাজেই প্রতিটা মানুষকে সচেতন হতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা- এই পৃথিবী কোনো দিনও বদলাবে না। যেমন আছে, তেমন'ই থাকবে। মানুষ বদলে যাবে। খুন, রাহাজানি, দুর্নীতি আরও বাড়বে। দুর্ঘটনা আরও বাড়বে। ডিভোর্স আরও বাড়বে। জ্যাম আরও বাড়বে। অর্থ্যাত বর্তমানের চেয়ে অনেক বেশি খারাপ অবস্থা হবে। এগুলো মেনে নিয়েই আমাদের জীবনয আপন করতে হবে। যারাই পৃথিবীতে আসবে তাদের এই সব সহ্য করতে হবে। কাজেই সন্তান পৃথিবীতে আনার আগে বাপ মায়ের একশ' বার ভাবা উচিত।
আমরা গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের এমন এক পর্যায়ে আছি যা আরেকটু বেশি হলে সেখান থেকে ফিরে আসা সম্ভব নয়। জলবায়ু পরিবর্তন পৃথিবীতে 'সবচেয়ে বড় বিপদ', অথচ সেদিকে কারো নজর নেই। মানব সংঘাত কমার কোনো লক্ষণ নেই। চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়েই চলেছে। বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর প্রচন্ড ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় আছে। অলরেডি এন্টার্কটিকার বরফ গলতে শুরু করে। এদিকে বাংলাদেশের কারখানাগুলোর মালিকেরা পরিবেশ নিয়ে কখনও ভাবে না। সমস্ত পৃথিবী জুড়েই নানান ধরনের আন্দোলন চলছে। দারিদ্র মুক্ত পৃথিবীর আন্দোলন, ক্ষুধা মুক্ত পৃথিবীর আন্দোলন, নিরক্ষর মুক্ত পৃথিবীর আন্দোলন। কিন্তু পৃথিবীর টিকে থাকার আন্দোলন এবং পৃথিবীতে যেন মানুষ সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে পারে, প্রকৃতি যেন তার ভারসাম্য না হারায়- সেদিকে কারো নজর নেই।
বাংলাদেশের ভালো আর বুদ্ধিমান লোক গুলো এক আকাশ রাগ আর ক্ষোভ নিয়ে সব বিদেশ চলে গেছে। বাংলাদেশ উন্নতবিশ্বের দেশ না। এই দেশের নাগরিকেরা যতই আবেগ নিয়ে বলুক বা দাবী করুক, এদেশ সোনার দেশ। এতা একটা ফালতু কথা। বাস্তবতা হল, এদেশের মাটির তলায় সোনাও নেই, প্লাটিনামও নেই। পুরো দেশ ভরা দুষ্টলোক দিয়ে। নব্য ধনীরা শুধু বুঝে ক্ষমতা। শাসকগোষ্ঠী বোঝে শুধুই অর্থ, ভোগ, বিলাস। আমাদের দেশের ধনীরা এবং রাজনীতিবিদরা নির্বোধ শ্রেনীর মানুষ। পৃথিবীর সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পেশা কৃষি ও শ্রমিকের কাজ। অথচ এদেরকে অবহেলার চোখে দেখা হয়। কৃষক ও শ্রমিকের ঘাম যত বেশি ঝরে রাষ্ট্রের ততবেশি উন্নতি হয়। আমরা সিনেমার নায়ক-নায়িকাকে নিয়ে লাফালাফি করি। ক্রিকেট খেলোয়াড়দের নিয়ে মাতামাতি করি।
কখনও কি ভেবেছেন- যে দেশে জন্মগ্রহন করলেন, সে দেশের জন্য কিছু করা উচিত কিনা? এই মানসিকতা তো কারো মধ্যে দেখি না। নিজের পরিবারের জন্য করার পর দেশের কথা ভাবুন। দেশের জন্য কিছু করতে চেষ্টা করুন। যাই হোক, অন্য কথা বলি- পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে অলস জাতী হচ্ছে- কুয়েত আর পরিশ্রমী জাতি হচ্ছে- আফ্রিকার দেশ উগান্ডা। তবে আশার কথা হচ্ছে আমাদের দেশের মানূষ অলস নয়। একটা চাকরির ইন্টারভিউ'র জন্য হাজার-হাজার সিভি জমা পরে। অথচ নিবে মাত্র সতের জন্য। আমাদের দেশের নারীরাও কর্ম প্রিয়। তারাও বেকার থাকতে পছন্দ করে না।
বঙ্গবন্ধুর লিখা 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' বইতে ৪৮নং পৃষ্ঠায় লেখা- ''সকল জাতির মধ্যে কিছু কিছু আছে কিন্তু বাঙালিদের মধ্যে আছে পরশ্রীকাতরতা, ভাই, ভাইয়ের উন্নতি দেখলে খুশি হয়না। এই জন্যই বাঙালি জাতির সকল রকম গুন থাকা সত্ত্বেও সারা জীবনভর অন্যের অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। সুজলা, সুফলা বাংলাদেশ সম্পদে ভর্তি। এমন উর্বর জমি দুনিয়ার খুব অল্প দেশেই আছে। তবুও এরা গরীব। কারণ যুগ যুগ ধরে এরা শোষিত হয়েছে নিজেদের দোষে।নিজকে এরা চিনেনা, আর যতদিন এরা চিনবেনা এবং বুঝবেনা না ততদিন এদের মুক্তি আসবেনা।''
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৩০