আবু কালাম আমাকে বলল, দোস্ত বউ এর সাথে সহবাস করতে ইচ্ছা করে না।
আমি বললাম, কার সাথে সহবাস করতে ইচ্ছা?
বন্ধু আবু কালাম বলল, কারো সাথেই সহবাস করতে ইচ্ছা করে না। আমার শুধু ভালো লাগে থ্রি এক্স ভিডিও ছেড়ে হস্তমৈথুন করতে। সহবাস করে আরাম পাই না। এরচেয়ে বড় বরং হস্তমৈথুন করে আনন্দ বেশি।
বন্ধুর কথা শুনে আমি প্রচন্ড অবাক! আবু কালাম খুব ভালো একটা ছেলে। আমরা একসাথে স্কুল-কলেজে পড়েছি। আবু কালাম লেখাপড়া শেষ করে, ভালো একটা চাকরী করছে এখন। তিন বছর প্রেম করে বিয়ে করেছে সোনিয়াকে। বিয়ের বয়সও প্রায় পাঁচ বছর হয়ে গেছে। সোনিয়া খুবই ভালো একটা মেয়ে। চমৎকার হাতের রান্না। আমি বহুদিন সোনিয়া ভাবীর হাতের রান্না খেয়েছি। চা-টাও চমৎকার বানান। খুব হাসি খুশি মেয়ে।
আমি আবু কালামকে বললাম, সমস্যা কি তোর আমাকে বুঝিয়ে বল।
আবু কালাম বলল, দোস্ত সোনিয়ার মুখে গন্ধ, শরীরে গন্ধ। ও যখন আমার কাছে আসে, কেন জানি আমার খুব বিরক্ত লাগে। ইচ্ছা করে লাথথি দিয়ে খাট থেকে ফেলে দেই। গত তিন মাস আমি সোনিয়াকে ছুঁয়েও দেখিনি। এখন সোনিয়া রাগ করে আমার সাথে একই খাটে ঘুমায় না। পাশের ঘরে গিয়ে ঘুমায়। তাতে আমি মনে মনে খুশিই হয়েছি।
আমি বললাম, সোনিয়া কি গোছল করে না? দাঁত ব্রাশ করে না?
আবু কালাম বলল, আমার কাছে আসার আগেই দাঁত ব্রাশ করে, গোছল করে আসে। কিন্তু আমার ভালো লাগে না। আমি তাকে প্রতিদিন ফিরিয়ে দেই। আমি বলি, আজ না। আমি ক্লান্ত। ঘুম পাচ্ছে। ইত্যাদি।
আমি বললাম, তোর কি কারো সাথে সম্পর্ক হয়েছে? তোর কি কাউকে ভালো লাগে?
আবু কালাম বলল, না। কখনও না।
আমি বললাম, আবু কালাম ঘটনা কি পরিস্কার করে বল তো।
আবু কালাম বলল, সেক্স ব্যাপারটা আমার কখনই ভালো লাগে না। কেমন একটা গা ঘিন ঘিন করা ব্যাপার। তবু সোনিয়াকে খুশি করার জন্য মাসে দুই একবার মিলিত হই। কিন্তু সোনিয়া চায় প্রতিদিন। প্রতিদিন কি করে সম্ভব বল?
আমি বললাম, তোর কি শারীরিক কোনো সমস্যা আছে?
আবু কালাম বলল, না।
আমি বললাম, তবুও তুই একজন ডাক্তার দেখা। আর বিয়ে করেছিস পাঁচ বছর হয়ে গেছে। বাচ্চা নিস না কেন?
আবু কালাম বলল, বিয়ে করলেই বাচ্চা নিতে হবে তার কোনো মানে নেই। এইসব পুরোনো নিয়ম কানুন বাদ দিতে হবে। এই নোংরা, জটিল আর কুটিল সমাজে একটা বাচ্চা পৃথিবীতে আনার কোনো মানে হয় না।
গত শুক্রবার আবু কালাম আবার আমার বাসায় এলো।
আমি বললাম, ঘটনা কি? সমস্যার সমাধান হয়েছে?
আবু কালাম মন খারাপ করে বলল, সোনিয়া আমার সাথে রাগ করে বাপের বাড়ি চলে গেছে। চলে যাওয়ার আগে বলল, আমি নাকি অন্য কোনো মেয়ের সাথে বিছানায় যাই। যদি না যাই তাহলে অবশ্যই সোনিয়ার সাথে থাকতাম। এসব ক্ষেত্রে ছেলেরাই নাকি স্ত্রীর কাছে আসে। আহবান জানায়। এরকম নানান বাজে বাজে কথা বলে সোনিয়া চলে গেছে। বলেছে তার বাপের বাড়িতে খাওয়ার অভাব নেই। এবং একদিন আমি নাকি কাঁদতে কাদতে তার কাছে যাবো। আমার ভুলের জন্য তার হাতে পায়ে ধরবো।
আবু কালামের অনুরোধে আমি সোনিয়া ভাবীকে ফোন দিলাম।
বাসায় ফিরে আসেন ভাবী। ভাবী কাঁদতে কাঁদতে বলল, গত তিন মাস সে আমার হাত ধরেনি। অন্য ছেলেরা স্ত্রীর সাথে কত রঙ ঢং করে। আর আমি তার সামনে গেলেই সে বিরক্ত হয়। আমার দিকে ফিরেও তাকায় না। অফিস থেকে ফিরে এসেই, হয় টিভি দেখে বা বই পড়ে। কোনো কথা বার্তা নেই আমার সাথে। একটা সন্তান পর্যন্ত আমাকে দেয় না। বলে এই সমাজে একটা শিশু পৃথিবীতে এনে কশট দেওয়ার কোনো মানে হয়।
আমি জানি আমার বন্ধু আবু কালাম ভালো মানুষ।
সোনিয়া ভাবীও ভালো। খুব ভালো। কিন্তু এই সমস্যা মিটমাট করা যায় কিভাবে? আবু কালাম বাচ্চা নিতে চায় না। সহবাস করতে চায় না। এছাড়া তার কোনো সমস্যা নেই। চাকরী করছে। দুই হাত ভর্তি বাজার করছে। সংসারের সমস্ত দায়-দায়িত্ব পালন করছে। অন্যদিকে সোনিয়া ভাবী খুব সাংসারিক মেয়ে। নিজের সংসার ছাড়া কিচ্ছু বুঝেন না। শ্বশুর বাড়ির সবার প্রতি দায়িত্ব পালন করেন। প্রায়ই রান্না বান্না করে কাছের মানূষদের দাওয়াত করে খাওয়ান।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:০৮