somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

দুনিয়ার কাউকে গ্রাহ্য করতে ইচ্ছা করে না

১১ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



একটা ছোট্র গল্প দিয়ে লেখাটা শুরু করবো-
রাজার বাড়ির সিংহ-দ্বারের পাশে, লোহার খাঁচার একটা মস্ত বাঘ ছিল। রাজার বাড়ির সামনে দিয়ে যত লোক যাওয়া-আসা করত, বাঘ হাত জোড় করে তাদের সকলকেই বলত, ‘একটিবার খাঁচার দরজাটা খুলে দাও না দাদা!’ শুনে তারা বলত, ‘তা বইকি! দরজাটা খুলে দি, আর তুমি আমাদের ঘাড় ভাঙো।’

এর মধ্যে একদিন রাজার বাড়িতে খুব নিমন্ত্রণের ধুম লেগেছে। বড়-বড় পণ্ডিত মশাইয় দলে-দলে নিমন্ত্রণ খেতে আসছেন। তাঁদের মধ্যে একজন ঠাকুর দেখতে ভারি ভালো মানুষের মতো ছিলেন। বাঘ এই ঠাকুরমশাইকে বারবার প্রণাম করতে লাগল। তা দেখে ঠাকুরমশাই বললেন, ‘আহা, বাঘটি তো বড় লক্ষ্মী! তুমি কি চাও বাপু।’ বাঘ হাত জোড় করে বললে, ‘আজ্ঞে, একটি বার যদি এই খাঁচার দরজাটা খুলে দেন! আপনার দুটি পায়ে পড়ি।’

ঠাকুরমশাই কিনা বড্ড ভালো মানুষ ছিলেন, তাই তিনি বাঘের কথায় তাড়াতাড়ি খাঁচার দরজা খুলে দিলেন। তখন হতভাগা বাঘ হাসতে-হাসতে বাইরে এসেই বললে, ‘ঠাকুর, তোমাকে তো খাব!’
গল্প এখানেই শেষ নয়। এখান থেকেই গল্পের শুরু। যদিও আমি আজ অন্য গল্প বলব।

মধ্য দুপুর। মধ্য দুপুর সময়টা খুব অদ্ভুত!
বুকের মধ্যে যেন কেমন করে! সূর্য ঠিক মাথার উপর থাকে বলে- নিজের ছায়াও খুঁজে পাওয়া যায় না। চারপাশে যা দেখা যায় সবই ভালো লাগে। ঢাকা শহরের রাস্তার পাশের চায়ের দোকান গুলো আমার খুব প্রিয়। আসলে এই চায়ের দোকান গুলো জ্ঞানের ভান্ডার। আমি নিয়মিত রাস্তার পাশের চায়ের দোকান গুলোতে যাই। চা খাই আর আশেপাশের লোকজনদের কথা গুলো খুব মন দিয়ে শুনি। কত রকম বিষয় নিয়ে যে আলোচনা হয়- তা চায়ের দোকানে না গেলে বুঝা সম্ভব নয়।

এক সময় আমার খুব ইচ্ছা ছিল- বড় করে একটা চায়ের দোকান দিবো। সারাদিন দুনিয়ার মানুষজন এসে আমার দোকানে চা খাবে-গল্প করবে। আর আমি খুব মন দিয়ে তাদের গল্প শুনব। এই ইচ্ছাটা আমার এখনও আছে। ব্লগার চাঁদগাজী কি আমার চায়ের দোকানে আসবেন? তাকে আমি ফ্রি চা খাওয়াবো।

আজ দুপুরবেলা চারিদিকে কাঁচের মতোন স্বচ্ছ রোদ ছিল। আমি রোদে পুড়তে পুড়তে রাস্তার পাশের এক দোকান থেকে এক কাপ চা খেলাম। খুব মুগ্ধ হলাম। আশ্চর্য ব্যাপার সাথে সাথে আমার রবীন্দ্রনাথের কথা মনে পড়ল। আমার এক সময় ধারনা ছিল রবীন্দ্রনাথ চা খেতেন না। বিশেষ করে রাস্তার পাশের কোনো দোকান থেকে। রবীন্দ্রনাথ কি কখনও এমন কড়া রোদে মধ্যদুপুরে রাস্তার পাশের দোকান থেকে চা খেয়েছেন? খেলেও আমার মতো মুগ্ধ কী কখনও হয়েছিলেন?

আমার চা খাওয়া শেষ। আরেক কাপ খাবো কিনা ভাবছি- ঠিক এই সময় আমার সামনে একটি ছেলে এসে দাঁড়ালো। হাসিখুশি মুখ। কাধে ক্যামেরার ব্যাগ। ছেলেটি আমার খুব অস্থির মনে হচ্ছিল। ছেলেটির সামনে দিয়ে একটা মেয়ে যাচ্ছিল । মেয়েটিকে খুব রুপসী বলা যাবে না। শুধু চোখে মোটা করে কাজল দেওয়া। আর কপালে একটা টিপ। ছেলেটা, মেয়েটিকে বলল- শুনুন। মেয়েটি এক আকাশ অবাক দৃষ্টি নিয়ে ফিরে তাকালো। ছেলেটি বলল- আচ্ছা, ক’টা বাজে বলেন তো? মেয়েটি বলল, আমার হাতে ঘড়ি নেই, জানি না কয়টা বাজে। ছেলেটি বলল- আহ হা আন্দাজে বলুন। মেয়েটি বলল- আমার আন্দাজ ভালো না। ছেলেটি বলল- আচ্ছা, মোবাইলে সময় দেখে বলুন। মেয়েটি হেসে ফেলল। বলল- আমার মোবাইল আজ ভুলে বাসায় রেখে এসে পড়েছি।

মাইকেলের কয়েকটা লাইন আজকাল প্রায়ই মনে পড়ে-
''কি কুক্ষণে দেখেছিলি, তুইরে অভাগী,
কাল পঞ্চবটীবনে কালকূটে ভরা
এ ভুজগে?
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:০৮
৩০টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিসের সনদের মান নির্ধারণ করা শয়তানী কাজ

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪০



সূরাঃ ৯ তাওবা, ১০১ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০১। মরুবাসীদের মধ্যে যারা তোমাদের আশেপাশে আছে তাদের কেউ কেউ মুনাফিক। মদীনাবাসীদের মধ্যেও কেউ কেউ মোনাফেকী রোগে আক্রান্ত। তুমি তাদের সম্পর্কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×