বালিশ ছাড়া আমরা ঘুমাতেই পারি না।
অতি প্রাচীনকাল থেকেই বালিশের প্রচলন হয়ে আসছে। তবে আজকের মত এমন নরম তুলতুলে কোন বালিশ ছিল না তখন। তখনকার মানুষরা বালিশ হিসেবে ব্যবহার করত শক্ত কাঠ, গাছ, মাটি অথবা পাথর। বিশ্বের সব চাইতে প্রাচীনতম সভ্যতা মেসোপটেমিয়ায় গড়ে উঠেছিল। খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ অব্দে টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস ( ফোরাত ও দাজল) নদীর তীরে এ সভ্যতার বিকাশ ঘটে। এ সভ্যতায় বালিশের প্রাচীনতম ব্যবহার হয়েছিল।
বালিশ ছাড়া দীর্ঘক্ষন ঘুমানো যায় না।
প্রাচীন মিশরেও কাঠ ও পাথর বালশ হিসেবে ব্যবহার হত। তারা মনে করত শরীরের পবিত্র ও আধ্যাত্মিক কেন্দ্রে হচ্ছে মাথা। তাই মাথাকে সুরক্ষিত রাখা ও উচ্চতর জায়গায় রাখাই শ্রেয় বলে মনে করা হত। মিশরের বিভিন্ন মমি ও কবরে বালিশের ব্যবহার লক্ষণীয়। প্রাচীন চীনেও শক্ত বালিশের ব্যবহার ছিল। সে সময় সিরামিকের বালিশ খুব জনপ্রিয় ছিল। ৫৮১-৬১৮ সালে সুই রাজবংশে সিরামিক তৈরি বালিশের প্রথম দেখা মিলে। পরে তারা আস্তে আস্তে নরম বালিশের দিকে ধাবিত হয়।
শিমুল তুলার বালিশ সবচেয়ে আরাম দায়ক।
বিচি ছাড়া শুধু শিমুল তুলার বালিশ। শিমুল তুলা ৮০০ টাকা কেজি। এক কেজি তুলা দিয়ে একটা বালিশ বানালে আরাম করে ঘুমানো যায়। গত কয়েক বছর ধরে সিনথেটিক তুলার বালিশ বিক্রি হচ্ছে। তবে এসব বালিস প্রথম কিছুদিন ফোলা থাকে তারপর মিইয়ে আয়। প্রাচীন গ্রীসে ও রোমে বালিশ ব্যবহারকে দুর্বলতার প্রতীক হিসেবে ভাবা হত। তাদের মতে নরম বালিশ শুধুমাত্র গর্ভবতী মহিলাদের জন্যে। তারপরও অনেক উচ্চশ্রেণির লোকরা কিছু উচ্চমানের নরম বালিশ ব্যবহার করতেন। মানুষের আগেও বিভিন্ন প্রাণি (Reptiles & mammals) বসে বা শুয়ে থাকার সময় তাদের মাথা সাপোর্ট হিসেবে সামান্য উঁচু জায়গা বেছে নিত অথবা একে অন্যের শরীরের উপর মাথা, ঘাড় সাপোর্ট দিয়ে রাখত অথবা নিজের বাহু ব্যবহার করত ।
২।
টাকা কবে থেকে প্রচলন শুরু হয়?
কয়েক শত বছর আগে বাজার মানে ছিলো নদীর তীরে কয়েকটা ছনের ঘর, আর একটা কাঠের টুলে বসে থাকা শেঠ মহাশয়। শেঠ শব্দটার মানে শ্রেষ্ঠ। শেঠ মশায়ের কাজ ছিলো পারিশ্রমিকের পরিবর্তে মুদ্রার সঠিক বিনিময় মূল্য বের করে দেয়া। তখন মুদ্রা তৈরি হতো সোনা, রূপা, তামা ইত্যাদি ধাতু দিয়ে, শেঠ মশায় কোনো এক ধাতব পাতে সেই টাকা বাড়ি মেরে বুঝতে পারতেন এর মধ্যে কতটা ধাতু আর কতটা খাদ। এর মাধ্যমে তিনি বলে দিতে পারতেন এই মুদ্রা দ্বারা কতটুকু খরিদ করা সম্ভব।
সেই সময় আমার জন্ম হলে ভালো হতো!
যাই হোক, শেঠ মশায় যখন বাড়ি মারতেন, তখন 'টং' করে একটা শব্দ হতো। সেই থেকে 'টংকা' শব্দটার প্রচলন। সেই টংকা থেকে বিবর্তিত হয়ে আজকের 'টাকা' শব্দের উৎপত্তি। সম্রাট বা রাজারা তাদের আমলে নিজের নামে টাকা মুদ্রন করতেন। যেখান থেকে মুদ্রন করা হতো তার নাম দেয়া হলো 'টাকশাল'। টাকা বস্তুটা মুদ্রিত হতো বলে ''মুদ্রা' শব্দটির উৎপত্তি। মোটামুটি ৭০০ খ্রিস্টপূর্বের দিকে লিডিয়ায় (বর্তমান তুরস্কে) রাজা গাইজেস 'ইলেস্ট্রাম' নামক মিশ্র ধাতুর মুদ্রা প্রচলন করার পর গ্রিকদের হাত হয়ে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়া মুদ্রা ব্যাবস্থা বিনিময় প্রথার অসুবিধা দূর করলেও আরেক অসুবিধা নিয়ে আসে।
বাংলাদেশের টাকা ছাপানো হয় গাজীপুরের শিমুলতলীতে।
সেখানে বিরাট টাকশাল। অবশ্য ভিতরে বাহিরের মানুষ যাওয়া সম্পূর্ন নিষিদ্ধ। মাঝে মাঝে বাংলাদেশের টাকা বিদেশ থেকেও ছাপিয়ে আনা হয়। উপমহাদেশে প্রথম নোট ছাপা হয়েছিলো সম্রাট হুমায়ূনের মহানুভব শত্রু, গ্র্যান্ড ট্রাংক রোডের নির্মাতা শের শাহের রাজত্ব কালে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩৯