পালং গাছ ৩০ সেমি পর্যন্ত লম্বা হয়।
বাংলাদেশে শীতকালে এর চাষ হয়। পালং শাকের বর্ণনার প্রাচীনতম নিদর্শন পাওয়া গেছে চীনে। সেখানে বলা হয়েছে, এই শাক নেপাল থেকে চীনে এসেছে ৬৪৭ খৃঃ। ইংরেজি নাম - Spinich. বৈজ্ঞানিক নাম - Spinacea olerocea. পালং শাক শরীর ঠান্ডা রাখে। জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য এই শাক বিশেষ উপকারী। এই শাককে বলা হয় রক্ত পরিষ্কারক খাদ্য। রক্ত বৃদ্ধিও করে। চোখের জ্যোতি বাড়ায় এবং মুখের লাবন্য বৃদ্ধি করে। পোড়া ঘায়ে, ক্ষতস্থানে, ব্রনে বা কোথাও কালশিরা পড়লে টাটকা পালং পাতার রসের প্রলেপ লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
‘পপাই দ্য সেইলর ম্যান’ কার্টুনের কথা মনে আছে? একটি টিনের কৌটায় রাখা ‘স্পিনাচ’ বা পালং শাক খেয়ে পপাই শক্তিশালী হয়ে উঠত নিমিষেই। বাস্তবেও কিন্তু পালং শাক খুবই পুষ্টিকর। কিন্তু ভুল পদ্ধতিতে রান্না করার কারণে এর পুষ্টিগুণ কমে যায় একেবারেই। কচি পালংয়ের কিছু পাতা সবুজ সালাদের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারে। বাদাম কিংবা ফলের সালাদের সঙ্গেও পালং শাক মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। ডালের সঙ্গে পালং খুব ভালো মেশে। রান্না করা কিংবা ঘন ডালের সঙ্গে পালং কুচি যুক্ত করা যেতে। ডাল-পালং রান্না করা শুধু সহজ নয়, এটি স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো।
আমার মা পালং শাক দিয়ে চিংড়ি মাছ রান্না করতো।
খেতে ভালোই লাগতো। সুরভি মাঝে মাঝে মসুরির ডাল দিয়ে পালংশাক রান্না করে। একদিন গরুর মাংস দিয়েও রান্না করেছিলো। আমি খাই নি। তবে বাধাকপি দিয়ে গরুর মাংস খেতে ভালোই লাগে। পালং শাক ভর্তা খেয়েছিলাম একবার। খুব ভালো লেগেছিলো।
পালং শাকের অসাধারণ কিছু গুণঃ
১। পালং শাকে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ এবং বিটা কেরোটিন থাকায় তা কোলনের কোষগুলোকে রক্ষা করে।
২। বাতের ব্যথা, অস্টিওপোরোসিস, মাইগ্রেশন, মাথাব্যথা দূর করতে প্রদাহনাশক হিসেবে পালং শাক কাজ করে।
৩। পালং শাক স্মৃতিশক্তি এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুবই কার্যকর।
৪। পালং শাকে প্রচুর আয়রন ও ভিটামিন ‘সি’ থাকায় রক্তস্বল্পতা দূর করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
৫। পালং শাক পেট পরিষ্কার রাখতে অপরিহার্য। তাছাড়া রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে, দৃষ্টিশক্তিও বাড়ায়।
৬। কিডনিতে পাথর থাকলে, তা গুড়ো করতে সাহায্য করে। দেহ ঠাণ্ডা ও স্নিগ্ধ রাখে পালং শাক।
৭। অনেকের মেদবৃদ্ধি ও দুর্বলতায় হাঁফ ধরে, তারা পালং পাতার রস খেলে উপকার পাবেন। পালং শাক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
৮। পালং শাকে ১৩ প্রকার ফাভোনয়েডস আছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটা প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে খুবই কার্যকর।
৯। পালং শাকে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেলস থাকায় এটি মাসিকজনিত সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
১০। পালং শাক দাঁত ও হাড়ের ক্ষয়রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য পালং শাক খুব উপকারী।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:১৪