somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

ফুঁ দিলে গরম হয়, ঠাণ্ডাও হয়

০১ লা ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





একবার কিছু মানুষ এলাকার এক জ্ঞানী মানুষের কাছে কিছু শিখতে চাইলো। উপস্থিত মানুষদের কাছে জ্ঞানী মানুষটি জানতে চাইল, আমি তোমাদের আজ কি শেখাবো তোমরা কি জানো? উপস্থিত জনতা বলল, না। তখন জ্ঞানী মানুষটি বলল কিছু জানোনা যেহেতু আর জেনে লাভ নাই সবাই চলে যাও।
পরের দিন সবাই আবার জ্ঞানী মানুষটির বাড়িতে এলো। যথারীতি আজো জ্ঞানী মানুষটি একি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করল। আজ আমি তোমাদেরকে কি বলব তোমরা কি জানো? এবার আর তারা ফিরে যেতে চায় না। তারা সবাই বলল হ্যা জানি। তখন জ্ঞানী বলল জানো যেহেতু তাহলে আমার থেকে আর কি জানবে সবাই ফিরে যাও।
পরেরদিন তারা আবারও এলো কিন্তু এবার আর কিছু না শিখে ফিরে যেতে চায় না। যথারীতি জ্ঞানী আবারও সেই একি কথা জিজ্ঞেস করল। আজ আমি তোমাদেরকে কি বলব তোমরা কি জানো? এবার লোকগুলো দুই দলে ভাগ হয়ে গেল, এক দল বলল, জানি তো আরেকদল বলল আমরা জানি না। এবারও জ্ঞানী বলল যারা জান তারা যারা জানেনা তদেরকে জানিয়ে দাও।

মোল্লা নাসিরুদ্দিন হোজ্জা যার পূর্ণ নাম 'নাসির উদ্দীন মাহমুদ আল খায়ী'। গোপাল ভাড়ের গল্পটাও তার নামে দিব্যি চালিয়ে দেওয়া যায়, আবার তার গল্পও গুলিয়ে যায় গোপাল ভাড়ের সাথে। আজও তার গল্প গুলো মানুষের মুখে মুখে। মধ্য প্রাচ্য এবং মধ্য এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশই নাসিরুদ্দিনকে তাদের দেশের নাগরিক বলে দাবী করেছে। এর মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, ইরান, তুরস্ক এবং উজবেকিস্তান। আসলে তার জন্ম হয়েছিল ত্রয়োদশ শতাব্দীতে তুরস্কের খোর্তো গ্রামে। নাসিরুদ্দিন খুব জ্ঞানী ব্যক্তি ছিলেন। ধর্ম বিষয়ে তাঁর জ্ঞান ছিল অত্যান্ত প্রখর। নাসিরউদ্দিন হোজ্জা একজন বেঁটে মানুষ ছিলেন। মাথায় পাগড়ি আর গায়ে জোব্বা পরে একটা গাধার ওপর চড়ে তিনি ঘুরে বেড়াতেন। তুরস্কের আকসেইর শহরেই প্রতিবছর জুলাইয়ের ৫ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত ‘আন্তর্জাতিক নাসির উদ্দীন হোজ্জা উৎসব’ পালন করা হয়ে থাকে।

নাসিরুদ্দিন হোজ্জা তখন কাজী।
বিচার আচার করেন। একদিন বিচারে বসেছেন। বাদি মামলার আসামির সম্পর্কে যেসব অভিযোগ করছেন হোজ্জা তা মনোযোগ দিয়ে শুনছেন। বাদীর বলা শেষ হয়ে মাথা ঝাকিয়ে বললেন, হুম, তোমার কথাই ঠিক। এ কথা শুনে আসামি বলে উঠল, হুজুর, আমার কিছু কথা ছিল। হোজ্জা বললেন, ঠিকাছে, বলো তুমি কী বলতে চাও? আসামির বক্তব্যও মনোযোগ দিয়ে শোনার পর হোজ্জা বললেন- হুম, তোমার কথাও ঠিক।
হোজ্জার স্ত্রী পর্দার আড়ালে এতক্ষণ সব কথা শুনছিলেন। বিরক্ত হয়ে স্বামীকে তিনি বললেন, দুইজনের কথাই ঠিক হয় কিভাবে? হয় আসামির কথা ঠিক, না হয় বাদির কথা ঠিক।
হোজ্জা স্ত্রীর দিকে ফিরে হাসি দিয়ে বললেন, হুম, তোমার কথাই ঠিক।

তখন শীতকাল চলছিল।
একদিন মোল্লা নাসির উদ্দিন হোজ্জার কাছে এক লোক এসে বলল: মোল্লা সাহেব! শুনেছি আপনি অনেক জ্ঞানী মানুষ তাই আমি এলাম আপনার কাছে কিছু শিখব বলে। নাসির উদ্দিন বললেন: ঠিক আছে শিখতে চাইলে এখানে বসো। লোকটি বসল। কিছুক্ষণ পর মোল্লার স্ত্রী একটি বাটিতে করে জ্বালানো কয়লা দিয়ে গেলেন ঘর গরম করার জন্য। কয়লা যখন নিবু নিবু তখন নাসিরউদ্দিন তাতে ফুঁ দিতে লাগলেন আগুনের তাপ বাড়ানোর জন্য। এ কথা শুনে লোকটি বলল: হুজুর! কয়লাতে ফুঁ দিচ্ছেন কেন? উত্তরে মোল্লা বললেন: এতে আগুন বাড়ে আর ঘর গরম হয়। তখন লোকটি বলল: যাক একটা নতুন জিনিস শিখলাম। ফুঁ দিলে গরম হয়।

এর কিছুক্ষণ পর মোল্লার স্ত্রী দু'কাপ চা দিয়ে গেলেন।
মোল্লা চা খাওয়ার সময় আবার ফুঁ দিতে লাগলেন। লোকটি জিজ্ঞেস করল: এখন ফুঁ দিচ্ছেন কেন? জবাবে মোল্লা বললেন: এতে চা ঠাণ্ডা হবে। তখন লোকটি বলল: এটা কেমন কথা? ফুঁ দিলে গরম হয় আবার ঠাণ্ডাও হয়?
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৫
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×