১। মূর্তি আর ভাষ্কর্য এক নয় কথাটা আসছে কেনো! মূর্তি হলে আপনি সেটা ভেঙে দেওয়ার অনুমতি দিতেন?
২। আপনি গান করবেন না বলে আর কেউ গান করবে না? আপনি নাচ করবেন না বলে আর কেউ নাচবে না? আপনি বিজ্ঞান গবেষণা করবেন না বলে আর কেউ সেটা করবে না? অপনি অভিনয় করবেন না বলে আর কেউ সেটা করবে না? আপনি চিত্রকলা ও ভাস্কর্যের চর্চা করবেন না বলে আর কেউ সেটা করবে না? আপনি সাহিত্য চর্চা করবেন না বলে আর কেউ সেটা করবে না? আপনি কি মনে করেন, সবাই আপনার মতো মুখস্ত কথা বিক্রি করে অলস পথে বেঁচে থাকবে? তাহলে পৃথিবী এগোবে কীভাবে? খুব গভীরে গিয়ে চিন্তা করে দেখুন, আপনারা এসব পারবেন না। এসব আপনাদের ব্রেনে ধরে না। শিল্প-সাহিত্য-বিজ্ঞান গবেষণা কঠিন সাধনার বিষয়।
৩। আপনারা 'ভাস্কর্য' আর 'মূর্তির' পার্থক্য বুঝাতে থাকেন আর ওরা মেরে দেয়ার কাজ সারতে থাকুক। বহুত চিল্লাইছি। আর গলা ধরে না। সময় নাই আর। আলোচনায় বসানোর পায়তারা এই ভাঙচুর আর যদি ভাবেন আলোচনায় বসলেই সাপের বিষ কেনা যাবে তাহলে শেষ সর্বনাশ করবেন। ডান্ডার বাইরে কোন আলোচনা নাই। হুশ ফিরান, প্লিজ।
৪। আশা করি আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়াবে, তার শত্রু-মিত্র চিনতে পারবে, তার ঐতিহ্যে ফিরে যাবে, এই রাষ্ট্রের গন্তব্য ঠিক করবে। এবং এই মৌলবাদী অপশক্তিকে আওয়ামী লীগকেই দমন করতে হবে। তা না করলে অচিরেই যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্নতার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে হাঁটতে শুরু করবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
৫। ভাষ্কর্য জামাতিদের রাজনৈতিক ইস্যু! দেশে ধর্মীয় অন্ধত্ব ছড়িয়ে দেয়ার এই ষড়যন্ত্র পাকিস্তান আফগানিস্তানে ব্যবহার করেছিল।ভূয়া অভিভাবক সাজিয়ে ফ্লাইং ক্লাবে বিমান উড়ানোর প্রশিক্ষণ নেয়াও তারই অংশ।
৬। জেলা প্রশাসক বলেছেন, জেলায় যতগুলো ভাস্কর্য আছে সবগুলো সিসি ক্যামেরার আওতায় নেওয়া হয়েছে। বোঝেন অবস্থা! স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনকালে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যরক্ষার জন্য আমাদের যুদ্ধ করতে হচ্ছে।
৭। বঙ্গবন্ধুর যে মূর্তি মানুষের হৃদয়ে স্থাপিত আছে চাইলেও কেও তাকে কোটি বাঙালীর হৃদয় থেকে নির্মূল করতে বা ভাঙতে পারবে না।
তাই কুষ্টিয়া ৫ রাস্তার মোড়ে নির্মিতব্য বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য্য কে রাতের আধারে যে কাপুরুষের দল বিনষ্ট করেছে, তাদের এই কর্মকান্ডে তাদের মানসিক দৈণতাই শুধু প্রকাশ হলো। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য্য ভাঙার সাথে যে বা যারা জড়িত তাদের উপযুক্ত শাস্তি কামনা করছি।
৮। জানি জানি, শেখ মুজিবের উদ্ধত তর্জনিতে, চেহারায় কাদের ভয়। ঐ এক আঙ্গুলের নির্দেশনায় দেশের নাম পূর্বপাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ হয়ে গিয়েছিলো। ঐ চেহারা চোখে রেখে মুক্তির যোদ্ধারা প্রাণ তুচ্ছ করে লড়ে দেশ স্বাধীন করেছিলো। মুজিবের ঐ আঙ্গুল - ঐ চেহারা আজো তাদের বুকে কাঁপন ধরায়। তাই তো তারা মুজিবের ভাষ্কর্য্যের ঐ আঙ্গুল ভেঙ্গে দিচ্ছে আর মুখের আদল নষ্ট করে দিচ্ছে। তারা জানেনা, মুজিব কোনো ভাষ্কর্য্য নয়। মুজিব একটা আদর্শ। যতোদিন বাংলাদেশে একজনও বাঙ্গালী থাকবে ততোদিন মুজিব বেঁচে থাকবে। স্বাধীনতার প্রতিক হয়ে। ভাঙ্গুক, ভাংতে থাকুক তারা। ভাংতে ভাংতে ক্লান্তিতে একদিন তারা নিজেরা ভেঙ্গে পড়বে কিন্তু যে আশায় তারা ভাংছে সে আশা তাদের কোনোদিনও পূর্ণ হবেনা। জয় বাংলা।
৯। যদি বিমানবন্দরে লালন সাঁইজির ভাষ্কর্য ভাঙার সময় মৌলবাদীদের প্রতিহত করা হতো। তাইলে আজ এই দিন দেখা লাগেনা।
১০। যারা একসময় ছবি হারাম বলত তারা এখন ছবি তুলতেছে। একসময় যারা টিভি দেখত না, এখন টিভি শুধু দেখেই না, টিভিতে তারা যান, ফেসবুক লাইভ করেন, ইউটিউব চ্যানেল চালান। এত প্রগ্রেসিভ অবস্থানের পরেও আপনারা তাদের মৌলবাদী বলেন। আর নিজেরা নিজেদের অবস্থান একই রেখে, ভিন্নমত নিতে না পারার পরেও, বিরোধিতাকে নির্মূল করতে চাওয়ার খায়েশ নিয়েও নিজেদের প্রগতিশীল বলেন কোন লজিকে?
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৩