
প্রথম কথা হলো আমি কাউকে উপদেশ দেই না।
বাঙ্গালী উপদেশের মূল্য বুঝে না। হাসে। ফ্রি'তে যে জিনিস পাওয়া যায়, তার কোনো মূল্য নেই। আমি মানুষকে 'অনুরোধ' করি। আমার অনুরোধ মানলে হয়তো তার উপকার হবে। না মানলে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একজন মেয়েকে অবশ্যই মন দিয়ে লেখাপড়া করতে হবে। ভালো সাবজেক্ট নিয়ে পড়তে হবে। ভালো রেজাল্ট করতে হবে। সঠিক লেখাপড়াই একজন মানুষের ভবিষ্যৎ গড়ে দেয়। হোক সে ছেলে বা মেয়ে। বেশির ভাগ মেয়ে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে তারপর বিয়ে, এই চিন্তা মাথা থেকে তাড়াতে হবে। একটা মেয়ে লেখাপড়া শেষ করে কাজ করতে হবে। হোক সেটা চাকরী বা বিজনেস।
প্রতিটা মেয়ের উচিৎ নিজেকে যোগ্য ও দক্ষ করে গড়ে তোলা।
আর কতকাল মেয়েরা বিয়ের আগে বাবা আর বিয়ের পর স্বামীর উপর নির্ভরশীল থাকবে? এজন্য মেয়েদের চাকরী করতে হবে। ইনকাম করতে হবে। যেন তাঁরা নিজেদের ইনকাম দিয়ে নিজে চলতে পারে। বাবা এবং স্বামীর উপর যেন ভরসা করতে না হয়। বরং মেয়েরা চাকরী করে বাবা মাকে স্বাচ্ছন্দ দেবে। বিয়ের পর সংসারে স্বামীর পাশাপাশি সে নিজেও অবদান রাখবে। তাহলে সংসারে নারীকে শ্বশুর বাড়িতে অবহেলা সহ্য করতে হবে না। কটু কথা শুনতে হবে না। একজন নারীর উচিৎ সমাজের প্রতিও কিছু অবদান রাখা। নারীরা হচ্ছেন ধরনী।
মেয়েদের উচিৎ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা।
একজন প্রতিষ্ঠিত নারীর ব্যাক্তিত্ব অন্য নারী থেকে আলাদা। অনেক মেয়েকে দেখেছি মাস্টার্স পাশ করেছে। তারপর বিয়ে করেছে। সংসার নিয়ে ব্যস্ত। একজন নারী যদি শুধু সংসার'ই করে তাহলে তাঁরা এত লেখাপড়ার দরকার কি? অনেক নারী বলেন চাকরী পাওয়া সহজ না। এই কথাটা ভুল। যোগ্যতা ও দক্ষতা থাকলে চাকরী পাওয়া কঠিন কিছু না। যারা কোনো রকমে গোঁজামিল দিয়ে কোনো রকমে পাশ করে তাঁরা ভালো চাকরী পায় না। শুধু কপাল চাপড়ায় আর হায়া হায় করে। স্কিল বাড়াতে হবে। তীব্র ইচ্ছা থাকলে একজন নারী সব বাঁধা বিপত্তি ডিঙ্গিয়ে এগিয়ে যেতে পারে।
নিজেকে যোগ্য ও দক্ষ করার আগে প্রেম ভালোবাসা থেকে বিরত থাকতে হবে।
নারীরা যখন নিজেকে এই সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে, তখন কোনো পুরুষ তাকে অবহেলা, অপমান করতে পারবে না। এমন কি শ্বশুর বাড়িতে অপমান অবহেলা পেতে হবে না। এমনকি স্বামী অত্যাচার জুলুম করতে পারবে না। এজন্য একজন নারীকে নিজের পায়ের নিচের মাটি শক্ত করতে হবে। এই সমাজে এখনও বহু লোক মনে করে মেয়েদের ঘর দুটা- রান্নাঘর আর আঁতুড় ঘর। কাজেই মেয়েদের বিয়ের আগেই নিজেকে প্রতিষ্টিত হওয়া জরুরী। যেসব মেয়ে লেখাপড়া শেষ করার আগেই এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার আগেই বিয়ে করে, তাদের কপালে অনেক দুঃখ থাকে।
আমাদের সমাজের পুরুষেরা ভালো না।
তাঁরা নারীদের সম্মান করে না। এজন্য নিজেকে যোগ্য ও দক্ষ করে গড়ে তুলে সম্মান আদায় করে নিতে হবে। একজন নারী যখন নিজের যোগ্যতায় সমাজে নিজের অবস্থান করে নেবেন, তখন পুরুষেরা সেই নারীর ব্যাক্তিত্বের কাছে আপনাতেই মাথা নিচু করবে। আর সেই নারী চলবে মাথা উঁচু করে। নারীরা ভালো থাকলে পরিবারের সদস্যরা ভালো থাকবে। সমাজ ভালো থাকবে। দেশ ভালো থাকবে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজা রামমোহন, বেগম রোকেয়া, তসলিমা নাসরিন প্রমুখ সব সময় বলেছেন, নারীদের এগিয়ে যেতে হবে। শেষ কথা হলো- নিজেকে যোগ্য ও দক্ষ করুন। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করুণ।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১১:৫২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




