somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

স্বীকারোক্তি (১৮+)

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ভাই বিমল মজুমদার আমার সালাম নিও।
বয়সের বাড়ে আমি নুয়ে গেছি। অথচ আমার সমান বয়সী অনেকেই গাড়ি ঘোড়া চালাচ্ছে। দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেন আমি বুড়িয়ে গেলাম, নিজেও জানি না। অনেককাল বাদে আজ তোমাকে লিখতে বসেছি। আসলে মনে অনেক কথা জমা হইয়া আছে। কিন্তু তুমি ছাড়া আর কাহাকে বলিবো। তুমি আমার বাল্যবন্ধু। বুঝিলে তুমিই বুঝিবে। তুমি হচ্ছো গাছের মতো। মেরে ফেললেও মুখ খুলবে না। তাই তোমাকে খুন করিয়া আসিয়া বলিলেও তুমি তা অন্য কাউকে জানাইবে না। এর প্রমান জীবনে বহুবার পাইয়াছি। এজন্য বহু বছর ধরিয়া মনের গোপন কথা গুলি তোমাকেই বলি। বুকের থেকে পাষান ভার নামিয়া যায় ধীরে ধীরে। আজ আমি তোমাকে যাহা বলিব আগে তাহা কখনও বলি নাই। সবই গোপন কথা। মানুষ যখন মৃত্যুর কাছাকাছি চলে যায়, তখন সে কারো না কারো কাছে নিজের সব মন্দ কথা গুলি বলিতে চায়। স্বীকারোক্তিও বলতে পারো। খিস্টানরা ফাদারের কাছে যেমন মন্দ কাজের কথা খুলে বলে।

ভাই বিমল, স্বীকার করিতে লজ্জা নাই-
ছেলেবেলা থেকেই আমি নারীঘেষা ছিলাম। যখন আমার এগারো বছর বয়স তখন আমি দূর থেকে লুকাইয়া রমনীদের স্নান দৃশ্য দেখিতাম। বড় সুখ হইতো। রাতে বিছানা ভিজাইয়া দিতাম। যেটাকে ভদ্রলোকেরা স্বপ্নদোষ বলিয়া থাকো। অথচ তোমরা আমাকে অবুঝ শিশু ভাবিতে। বড় হতে থাকি আর আমার গোপন বেহায়াপনা এবং কুকর্ম চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়িতে ছিলো। আমার কুপ্রবৃত্তি গুলো আমি সযত্নে লুকাইতে সক্ষম হইয়াছি। এযুগে যাহারা জন্মাইছে তাহারা ভাগ্যবান। আমাদের যুগে যাদুর বাক্স ছিলো না। ছিলো না বিজ্ঞানের মহান আবিস্কার 'ইন্টারনেট'। কি এক জব্বর ব্যাপার। ক্লিক করিলেই সমস্ত কিছু চক্ষের সামনে চলিয়া আসে। সে এক অন্য দুনিয়া! স্মার্ট ফোন চালাইতে শিখিয়াছি বন্ধু। সময় বড় ভালোই কাটিয়া যাইতেছে। বউ আছে আমার। সে তো এখন বুড়ি। স্তন ঝুলিয়া গিয়াছে। এদিকে আমার বয়স বাড়িলেও যৌবন একেবারে চলিয়া যায় নাই। স্ত্রীলোকের বয়স এত দ্রুত বাড়ে কেন বলিতে পারো? তোমার জোছনার কথা মনে আছে? আহ দেখতে যা ছিলো! সে এখন রীতিমত বৃদ্ধা। মাথার সমস্ত চুল সাদা হইয়া গেছে। ইয়া মোটা হইয়া গেছে। হাটিলে পুরো শরীর থলথল করিয়া তরঙ্গ তোলে।

বন্ধু বিমল মজুমদার-
ফরিদপুরেই চিরকাল কাটাইয়া দিলাম। ঢাকায় গেলে আজীবন তোমার বাসাতেই উঠিয়াছি। তুমি খাতির যত্ন কম করো নাই। তোমার বাসায় চার তলায় এক রমনী থাকে। দেখতে বড়ই সরস। তাহাকে একদিন স্বপ্নে দেখিয়াছি। স্বপ্নে কি দেখিয়াছি তাহা জানিতে চাহিও না। সে যাগগে, বিয়ের আগে একবার তুমি যাত্রাবাড়ির দিকে এক বাড়িতে নিয়া গিয়াছিলে। তুমি হয়তো আমার গোপন মনের কথাটা বুঝিয়াছিলে। যাত্রাবাড়ির সেই নারীর কথা আমি ভুলি নাই। তার চিবুকের তিলটা আজও আমায় আনন্দ দেয়। বড় সরস ছিলো সে। ছলাকলাও ভালো জানিতো। এরকম নারীরাই আজীবন পুরুষকে ভুল পথে লইয়া গেছে। সেই নারীর সাথে মিলিত হবার আগে 'ভিগোরেক্স' নামে একটা ওষুধ খাইয়া ছিলাম। মারাত্মক ওষুধ। ভাই বিমল আজ তোমার কাছে কিছুই গোপন করবো না। এরপরও আমি যাত্রাবাড়ির সেই বাড়িতে অনেকবার গিয়েছি তোমাকে না জানাইয়া। রক্ষিতা রাখার সুযোগ থাকলে সেই নারীকে আমি অবশ্যই রক্ষিতা হিসাবে রাখিতাম। বিষয় সম্পত্তি আমার কম নাই। অবশ্য আমার স্ত্রী একজন রক্ষিতা মানিয়া নেবার মানুষ না। স্ত্রীলোক আজীবন হিংসুক হয়। চিরকালই আমি অসহায়। কারো সাথে কিছুতেই পারিয়া উঠি না। বউ, ছেলেমেয়ে কারো সাথেই তাই কোনো বিবাদে যাই নাই। তাহাদের টাকা দিয়া সুখী করিয়াছি।

বন্ধু, আজ আমি বড় যন্ত্রনাবিদ্ধ, বড় হতাশ।
স্ত্রী সারাদিন শুইয়া থাকে। তার দিন রাত্রি সব সমই বাতের ব্যথা। মরে গেলেও জ্বালা একটা আমার কমিয়া যাইতো। এদিকে ছেলে মেয়ের বিবাহের পর তারা নিমিষেই দূরের বস্তু হইয়া গেছে। রসুলপুর বাজারে গিয়ে যে এক কাপ চা খাবো, সেটাও পারি না। ইচ্ছে যায় না। সারাদিন উঠানে বসিয়া থাকিতেই ভালো বোধ করি। বাস্তবে কিছুই করি না। অথচ মনে মনে উত্তর মেরু থেকে দক্ষিন মেরু চলিয়া যাই। আকাশ পাতাল আর সাত পাচ ভাবিয়া ভাবিয়া মেঘের মধ্যে প্রাসাদ তুলিয়া ফেলি। বাস্তবে একটা কুড়াও নাড়ি না। চিরকালই আমি বাইরে ভদ্র, ভিতরে শয়তান। আমার স্ত্রী পর্যন্ত বুঝিতে পারে নাই, আমি কত বড় শয়তান। নির্বোধ মাইয়ালোক। সে এখনও বলে, আবার যদি মানব জনম পাইগো, স্বামী হিসাবে তোমারেই চাই। এই জন্যই বলে মাইয়া লোকের বুদ্ধি হাঁটুর নিচে। পাপ কাজ জীবনে বহু করিয়াছি। তবে পরকাল নিয়া আমি চিন্তিত নহে। ধর্মকর্ম কোনো কালেই পালন করি নাই। ইচ্ছা জাগে নাই। ঈশ্বর বিশ্বাস আমার তীব্র নয়। যেহেতু সমাজে বাস করি, তাই মসজিদে যেতে হয় নিয়ম করে। জাকাত ফেতরাও দিতে হয়। আদতে ধর্মের গন্ডির মাধ্যে থাকে নির্বোধেরা। আমি নির্বোধ নই। অত্যন্ত এক চতুর লোক।

বড়ই জ্বালা হইলো, শুধুই লিখিতে ইচ্ছা করে।
বয়সের এই এক জ্বালা। শোনো বিমল মজুমদার- বয়সকালে শুধু বলিতে ইচ্ছা করে। লিখিতে ইচ্ছা করে। অতীত নিয়া ভাবিত ইচ্ছা করে। কোনো কিছুই নিজের কন্টোলে থাকে না। এমনকি পিসাব পর্যন্ত। আসল কথায় আসি। তুমি তো পূর্বপাড়ার মতিনন্দীর বিধবা ললিতাকে চিনো। মেয়েটাকে যতই দেখি, ততই মুগ্ধ হই। কি সুন্দর বক্ষ! কি সুন্দর কোমর! কি স্নিগ্ধ কোমরের খাঁজ! কি বলব বিমল তোমায়! ভনিতা না করে আসল কথাই বলি- ললিতাকে আমি বিবাহ করিতে চাই। আমার একজন লাগবেই। বুড়ো বয়সে একা থাকা যায় না। হ্যা জানি ললিতা আমার চেয়ে ৩৮ বছরের ছোট। আমি বলব পুরুষ লোকের আবার বয়স কি? বয়স বাড়ে, পুরুষের চাহিদাও বাড়ে। ইহা অন্যায় নহে। ধর্মের হিসাবেও অন্যায় নহে। ধর্ম আমাদিগকে বড়ই সুযোগ সুবিধা প্রদান করিয়াছে। এইজন্যই নামাজ রোজা করি। কপালে দাগ বসাইয়া ফেলিয়াছি। মতিনন্দী শালা মাতাল। দুই বোতল ভদকা কিনে দিলেই আমার প্রস্তাব মেনে নিবে। তারপর ললিতা আমার। ললিতার জন্য বাতের ব্যরামযুক্ত আমার স্ত্রীকে মাইনাস করিয়া দিতে পারি।

ভাই মজুমদার আমাকে মন্দ ভাবিও না।
জনকল্যাণকর কাজ কম করি নাই। একবার জয়দেবপুর রেলস্টেশনের কাছে এক মহিলা বাচ্চা কোলে নিয়ে কাঁদছিলো। বাচ্চা দুধ খাবে। মায়ের বুকে দুধ নাই। মহিলা আমার কাছে এসে কান্না করিলো। আমি সাথে সাথে বাচ্চার মাকে এক বোতল দুধ কিনিয়া দেই। আরেকবার, আলামিন বাজারে এক পাগল আমার কাছে আসিয়া, হাসিয়া হাত পাতিলো। দিয়ে দিলাম তাকে নগদ একশ টাকা। আশেপাশে শতেক লোক বিস্ময়ে চাহিয়া দেখিলো। লোকজনের বিস্ময় চাহনি বড় আনন্দ দিয়াছিলো। যাইহোক, সকালের নাস্তা খাইয়া লেখিতে শুরু করেছিলাম। এখন যোহরের আযান দিয়া দিছে। নামাজের সময় হইল আমার। সময় মতো নামাজতা পড়তে না পারলে আমার ভালো লাগে না। তোমাকে আবার পড়ে বিস্তারিত লিখিব। আজ এই পর্যন্তই। তুমি ছাড়া আমাকে আর কেউ বুঝিতে পারিবে না। কারন ভাই বিমল মজুমদার তুমি আমি একই পথের পথিক। এক হিসাবে তুমি আমার গুরু। যাইহোক, নিশ্চয়ই তুমি মানিবে এই সমাজে তোমার আমার মতো লোকের সংখ্যাই বেশি।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৪৯
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গৃহবধূ থেকে প্রধানমন্ত্রী; অভিভাবক শূন্য হলো বাংলাদেশ |

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১২


খালেদা জিয়া। ইস্পাতসম বজ্রকঠিন দেশপ্রেমের নাম খালেদা জিয়া। যিনি ভালো বেসেছেন দেশকে, নিজের জীবনের চেয়েও দেশকে ভালো বেসেছেন। দেশের বাহিরে যার নেই কোন লুকানো সম্পদ। নেই বাড়ি, গাড়ি অথবা... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৫ সালের সেরা মশকরা কোনটি

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৪



ইয়ে মানে বছর শেষ। ২০২৫ সাল বিদায় নিচ্ছে । তা আপনার কাছে ২০২৫ সালের সেরা মশকরা কোনটি ?


আমার কাছে সেরা মশকরা হচ্ছে- এনসিপির জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা করা।

আরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেগম খালেদা জিয়াঃ এক দৃঢ়চেতা, সাহসী অধ্যায়ের সমাপ্তি

লিখেছেন সামহোয়্যারইন ব্লগ টিম, ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৩৭



প্রিয় ব্লগার,
আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বেগম খালেদা জিয়া আর আমাদের মাঝে নেই, ইন্না লিল্লাহি ওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু রাজনীতির মাঠে বিরাট শূন্যতা

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৯

 
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়া এক উল্লেখযোগ্য চরিত্র। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির টালমাটাল পরিস্থিতিতে তিনি দলটির হাল ধরেন। সেনানিবাসে গড়ে উঠা দলটাকে রাজপথে বেড়ে উঠতে গৃহবধূ থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খালেদা জিয়া মরিয়া প্রমাণ করিলেন , তিনি মরেন নাই ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৩৮


বেগম খালেদা জিয়া মারা গেছেন। এই খবরে জাতি শোকাহত। কিন্তু একদল মানুষ আছে যারা উনার মৃত্যুর পরেও নিজেদের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক স্বার্থে তার মৃত্যু নিয়ে ঘৃণ্য মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। বদনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×