
নীলা। মেয়েটার নাম নীলা। হঠাত নীলার কথা মনে পড়লো!
মুহুর্তের মধ্যে অতীতে চলে গেলুম। আহ আহা কি দিন গুলিই না পার করছি! আসলে মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় হচ্ছে- প্রেম ভালোবাসায় থাকা সময়টা। ভুলতে বসা প্রেমিকাকে হঠাত মনে পড়ে গেলো! যাইহোক, আমার প্রেমিকার চরিত্র ছিলো সহজ সরল সুন্দর এবং স্বচ্ছ ও পবিত্র। সে চিন্তা চেতনায় কর্মে ভীষণ সৎ ছিলো। আমি কসম খেয়ে বলতে পারি, তার মতো মানবিক মেয়ে ঢাকা শহরে আর একটাও নেই। নেই। আমি জানি না আজ নীলা কোথায় আছে। আমি তার কোনো খোজ রাখিনি।
আমার প্রাক্তন প্রেমিকা অসাধারণ ছিলো।
তার তুলনা হয় না। তার কথা আমি কখনও ভুলিতে পারব না। তাহার নাম ছিলো নীলা। সে আমার খুব সেবা যত্ন করতো। নীলা লেখাপড়ায় খুব ভালো ছিলো। লালমাটিয়া কলেজে পড়তো। নীলার বাসা ছিলো মোহাম্মদপুর। তাজমহল রোড। তার বাবা মা দুজনেই দুবাই থাকতো। নীলারা দুই বোন ছিলো। নীলা ছোট। তার বড় বোন ডাক্তারি পড়ছিলো। লেখাপড়া শেষ হলেই, তারা দুই বোন বাবা মায়ের কাছে দুবাই চলে যাবে। এতটুকু আমি জানতাম। নীলাদের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর।
নীলার সাথে কি করে পরিচয় হলো, সেটা বলা যেতে পারে।
তখন আমি বিয়ের অনুষ্ঠানের ছবি তুলে বেড়াই। এক বিয়ের অনুষ্ঠানের ছবি তুলতে গিয়েছি মুন্সিগঞ্জ বিক্রমপুর। লৌহজং থানা। এক ধনী লোকের ছেলের বিয়ে। যাইহোক, সেখানেই আমি প্রথম নীলাকে দেখি। খুব সুন্দর একটা মেয়ে। মুখে বিকট মেকাপ করেনি। জাস্ট চোখে মোটা করে কাজল দিয়েছে। মাথার চুল গুলো খোলা। কপালে একটা ছোট্র টিপ। একটা নীল সাদা শাড়ি পরেছে। তাতেই তাকে দেবী স্বরসতীর মতো লাগছে। সেদিন আমি নীলার বেশ কিছু ছবি তুলি। ছবি গুলো সুন্দর হয়। নীলা মুগ্ধ।
আমরা কখনো সিনেমা হলের অন্ধকার কোনা খুজি নাই।
ফাস্ট ফুডের দোকানে গা ঘেষাঘেষি করে বসি নাই। রিকশায় বসে কোমরে হাত রাখিনি। দূরের ভ্রমণে ঘুমের ভান করে নীলার কাধে মাথা রাখি নাই। রাতে মোবাইলে উল্টাপাল কথা বলি নাই। নীলা সাহিত্য, রাজনীতি ও ধর্ম নিয়ে আলোচনা করতে পছন্দ করতো। দেশের বর্তমান সমস্যা গুলো নিয়ে নীলা আমার সাথে ব্যাপক আলোচনা করতো। আমরা যখন সিএনজিতে করে কোথাও গেলে, গা ঘেষাঘেষি করতাম না। আমাদের দুজনের সম্পর্ক ছিলো সহজ সরল সুন্দর।
একবার কুলাউড়া রেলস্টেশনে আমি আর নীলা সারারাত বসে ছিলাম।
এগারোটায় ট্রেন আসার কথা। আমরা ঢাকা ফিরবো। কিন্তু সেই ট্রেন আর আসে না। শীতের রাত ছিলো। সেই রাতটা আমার জীবনে শ্রেষ্ঠ রাত ছিলো। আমার অনেক গুলো প্রেমের কবিতা মুখস্ত ছিলো। সব গুলো কবিতা সেদিন কাজে লাগিয়ে ছিলাম। শেষ রাতের দিকে নীলা আমাকে জড়িয়ে ধরে ছিলো। ঠিক তখন আকাশ ফর্সা হতে শুরু করেছিলো। একঝাক পাখি উড়ে যাচ্ছিলো। তারপর আমরা ট্রেনের অপেক্ষা না করে গাড়ি করে ঢাকা ফিরি। এবং তিন মাস পর নীলার বিয়ে হয়ে যায়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


