somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প: গুড়িয়ার কত্ত কাজ! :) :)

২৫ শে জুন, ২০১০ রাত ১১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হ্যালো, তোমরা কেমন আছ? আমি তোমাদের সাথে পরিচিত হতে এলাম। আমার নাম গুড়িয়া। মাত্র দাড়াঁতে শিখেছি—দেখ ব্যালে-ড্যান্সারদের মত আঙ্গুলে ভর দিয়ে কেমন দাঁড়াই আমি। পারবে তোমরা?



আজ আমার বয়স এগার মাস ছাব্বিশ দিন--এখনো একও হয়নি। কিন্তু সে কথা আমার বাবামায়ের একদম মনে থাকে না। ওরা দুজনে পিএইচডি করছে তো, সারাদিন খুব ব্যস্ত থাকে। খুব কষ্ট করে ওরা দুজন -- এত পড়া দিনরাত। আমার খারাপ লাগে ওদের জন্য—তাই অন্য বাচ্চাদের মত কান্নাকাটি করি না--অনেক লক্ষী হয়ে থাকি। সত্যি বলছি। তেল নুন ছাড়া কেমন পানসে --বিচ্ছিরি দেখতে খিচুড়ি আমি হাসিমুখে খেয়ে নেই! গার্বার নামে একটা কোম্পানি আমাদের খাবার বানায়। এতই খারাপ খেতে, একদিন আমার বাবা আর মা টেস্ট করতে গিয়ে প্রায় ইয়্যাক ইয়্যাক করে ফেলেছিল! আমি সেগুলা পর্যন্ত খেয়ে নেই একটুও বিরক্ত না করে।

আমি ওদের লেখাপড়াতেও অনেক হেল্প করি। মাঝে মাঝে রাত জেগে ওদের এসাইনমেন্ট টাইপ করে দেই। এজন্য কত্ত পড়তে হ্য় আমার! আমার অবশ্য মজাই লাগে। আমি বুঝি না ওরা কেন সারাদিন বলে, গ্রাজুয়েট স্কুল অনেক কঠিন!







জান, ওদের কাছে ওদের ছাত্র-ছাত্রীরা এলে, পড়া আমিই বুঝিয়ে দেই।



আরো কত কি করে দেই! ওদের ল্যাপটপ নষ্ট হলে আমি ঠিক করে দেই। কি করব বল, ওদের কাজগুলো হারিয়ে গেলে তো আমাদের বাংলাদেশে যেতে দেরী হবে। আমার দাদু-দাদা আর আম্মিটা যে আমাকে অনেক মিস করে! প্রতিদিন স্কাইপে কথা হয় আমার সাথে। আহা, তোমরা মন খারাপ করো না। দেশে গেলে তোমাদের সাথেও দেখা করব। অনেক মজা করব আমরা, ঠিক আছে?



ওহো, তোমাদের কথা আমাকে আমার আম্মি, মানে আমার ফুপ্পি বলেছে। ও আমাদের বাসায় এসেছিল, তখন ওর সব ব্লগ কিন্তু আমিই লিখে দিয়েছি। তোমরা বুঝতে পেরেছিলে?



আমার বাবাটা একদম হিসাবে কাঁচা। ওর কোন ক্রেডিট কার্ডে কত লিমিট, কত, কবে ডিঊ সব ওকে আমাকেই তো বুঝিয়ে বলতে হয়।



জান, বাসায় যত ফোন আসে সব আমিই রিসিভ করি। কারন টেলিমার্কেটাররা অনেক যন্ত্রনা করে। আমি না ধরলে বাবা-মার সময় নষ্ট হবে না, বল! আমি না গান শুনতে খুব ভালবাসি—আমার আম্মির মত। আমার আইটাচে অনেক রবীন্দ্রসঙ্গীত, লালনগীতি, নজরুল সঙ্গীত আছে। মাঝে মাঝে আমার বাবা মা আমাকে বাচ্চাদের ছড়াগানও শোনায়! সেগুলাও ভাল লাগে আমার।



আমার আম্মি আমাকে একটা গান দিনরাত শোনাত, ও যখন এখানে ছিল। “চান্দা হে তু, মেরি সুরুয হে তু, ও মেরি আঁখোকা তারা হে তু”। জান, স্কাইপে আম্মি আবার শোনালে আমি খেলা ফেলে শুনি--ওকে মিস করি বলে। তাতে আমার মা-বাবা, দাদা-দাদু খুব অবাক হয়। আম্মি তো চিৎকার করতে থাকে। আচ্ছা দেখ, আমার অনেক বুদ্ধি, আমি সব বুঝি, সব মনে রাখতে পারি—এটা কেন ওরা বুঝে না? স্পেসালি এত কিছু করার পরও! বড়রা না অনেক বোকা- সিম্পল ব্যাপারগুলো মাঝে মাঝে বুঝে না। ওদের আবার বলে দিও না, মন খারাপ করবে শুধু শুধু।

যাক, আজকে আসি। কত্ত কাজ পরে আছে। আর মাত্র কয়েকদিন পর আমার জন্মদিন। তোমরা দোয়া কর আমার জন্য প্লিজ। আর ভাল থেক সব্বাই। আবার দেখা হবে। বাইইই!

-----

আমার ভাইয়ের মেয়েটার ১ম জন্মদিন। সাত সমুদ্দুর তের নদীর ওপারে থাকে আমার জানটা। ওর জন্মদিনের জন্য লিখেছি। ওর জন্য দোয়া করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১০ রাত ৯:০৫
৬০টি মন্তব্য ৫৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×