somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসঙ্গঃ ই-ক্যাবের এক মাস

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গত ৮ নভেম্বর তারিখে জাতীয় প্রেসক্লাবে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশান অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর ঘোষণা সভাপতি হিসেবে আমি দিয়েছিলাম। দেখতে দেখতে এক মাস চলে গেল। আজ ডিসেম্বর মাসের ৮ তারিখ। এই এক মাসের মধ্যে কিছু ভুল ত্রুটি ছিল যা থেকে শিক্ষা নিয়েছি এবং অনেক কিছু শিখেছি আমরা। সামনের এক মাসে আশা করি আরও বেশি এগুতে পারবো।
ই-ক্যাবের ওয়েবসাইটঃ http://www.e-cab.net/
এক মাসে আমরা সাধারণ সদস্যদের নিয়ে ৩ বার মিটিং করেছি। ৩ টি সাধারণ সভাই বেশ কার্যকরী ও ফলপ্রসূ ছিল। সদস্য ছাড়াও যে কেউ সভাগুলোতে অংশ নিতে পেরেছেন। সবাই মন খুলে বিভিন্ন সমস্যার কথা বলেছেন। ঘুরে ফিরেই কিছু সমস্যার কথা আমরা শুনতে পেয়েছি এবং সেগুলোর তালিকা এখানে দিচ্ছিঃ
১। বাজার খুবই ছোট এবং এর ফলে বিক্রি বাড়ানো এবং লাভ করা বেশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
২। পেমেন্ট অপশন নিয়ে নানা সমস্যা এবং পেমেন্ট গেইটওয়ের চার্জ বেশি, ফলে ব্যবসায়ের খরচ বেশি।
৩। কুরিয়ার সার্ভিস নিয়ে নানা সমস্যা, সবচেয়ে বড় সমস্যা হল ঢাকার বাইরে ক্যাশ অন ডেলিভারি ব্যবস্থা নেই (এ নিয়ে সামনে একটা পোস্ট দেব এই ব্লগে)।
৪। ঢাকার বাইরের কোম্পানিগুলো নানা সমস্যায় জর্জরিত।
৫। ই-কমার্স খাতে দক্ষ মানবসম্পদের অভাব
৬। অনেকেই ই-কমার্স উদ্যোক্তা হতে চান কিন্তু তারা জানেন না কিভাবে শুরু করতে হবে।
আরও বেশ কয়েকটি সমস্যার কথা হয়তো লেখা যেত। এক মাসে সব সমস্যার সমাধান করা যাবে এমন আশা কেউ করেন না। আমরা সবাই জানি যে ২-৩ টি সমস্যা সমাধানে সময় লাগবে। আমরা নতুন সংগঠন হলেও এসব সমস্যা নিয়ে কাজ করা ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছি। উপরে উল্লেখিত প্রতিটি সমস্যা নিয়েই আমি আগামী দিনগুলোতে একে একে লিখবো। এজন্য দরকার সবার না হলেও অনেকের অংশগ্রহণ। আপনারা সবাই মিলে যদি আলোচনায় অংশ নেন তাহলে সমস্যা সমাধানে করনীয় বিষয় গুলো উঠে আসবে।
প্রথম থেকেই আমরা ই-কমার্সকে ঢাকায় সীমাবদ্ধ না রেখে ৬৪ জেলায় ছড়িয়ে দিতে চাই। এ লক্ষ্য নিয়ে নভেম্বর মাসের ২০ তারিখে চট্টগ্রাম যাই এবং ২১ ও ২২ তারিখে একাধিক কর্মসূচীতে ই-ক্যাবের ইসি কমিটির বেশ কয়েকজন অংশ নেয়। ২১ তারিখে চট্টগ্রামের মাননীয় জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাত এবং তাঁর থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস, বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ই-ক্যাব এর প্রেস কনফারেন্স এবং রাতে জেসিআই চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাত করি। ২২ তারিখে চট্টগ্রামের ই-কমার্স নিয়ে কাজ করছেন এমন প্রায় ৩০-৩৫ জন কোম্পানি মালিক/প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করি। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আমাদের সদস্য হয়ে গেছেন। আশা করছি চট্টগ্রামে মেলা করাও সম্ভব হবে।
চট্টগ্রাম ছাড়াও আমাদের ই-ক্যাব এর প্রতিনিধি ও সদস্য এখন সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ, কুমিল্লায় রয়েছে। পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজশাহী ও যশোর যাই যাই করছে। হয়তো আগামী এক মাসের মধ্যেই এসব জেলা থেকে সদস্য আসবে। ৬৪ জেলায় জেতে এক বছরেরও কম সময় লাগবে বলেই মনে হচ্ছে।
গত এক মাসে ব্যপক মিডিয়া কাভারেজ এসেছে এবং এজন্য আমরা সাংবাদিকদের কাছে কৃতজ্ঞ। সকল দৈনিক পত্রিকা, আইসিটি ম্যাগাজিন, অনেক নিউজ ওয়েবসাইট এবং কয়েকটি টিভি চ্যানেল আমাদের সংবাদ প্রচার করেছেন। চট্টগ্রামের প্রধান দৈনিক গুলো আমাদের প্রেস কনফারেন্সের সংবাদ গুরুত্ব দিয়ে প্রথম অথবা শেষ পৃষ্ঠায় প্রকাশ করে। এশিয়ান টিভি চ্যানেলে ই-ক্যাব এর ডিরেক্টর সেজান শামস ও আমি কথা বলি এক বিজনেস অনুষ্ঠানে।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও আমরা ভাল সাড়া পেয়েছি। আমার লেখা একটি পোস্ট সামহোয়ার ইন ব্লগে স্টিকি করা হয় এবং এতে অনেক ব্লগার আমাদের ই-ক্যাবকে স্বাগত জানান। একটিও নেতিবাচক কমেন্ট আসেনি। ফেইসবুকে অনেকেই আমাদের স্বাগত জানিয়েছেন। প্রথম দিকে কিছু নেতিবাচক পোস্ট ও কমেন্ট আসলেও তা সংখ্যায় খুবই কম ছিল এবং চেষ্টা করেছি প্রতিটি পোস্টে গিয়ে মন্তব্য করে ই-ক্যাব সম্পর্কে পরিষ্কার চিত্র তুলে ধরতে। এতে করে অনেকেই ই-ক্যাব সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। অনেকে আবার আমাদের ই-ক্যাবের ফেইসবুক গ্রুপে যোগ দিয়েছেন।
প্রথম থেকেই ই-ক্যাব অনলাইনে সক্রিয়। আমাদের ওয়েবসাইট মাত্র এক মাসে বাংলাদেশের সর্বাধিক ব্রাউজ করা ১৫০০ সাইটের এর মধ্যে চলে গেছে এলেক্সা র‍্যাঙ্কিং অনুসারে। ওয়েবসাইট নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন অনেক পরিকল্পনা। আমরা এই ওয়েবসাইটকে বাংলাদেশের ই-কমার্স সেক্টরের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এখানে ই-কমার্স নিয়ে সব কিছু থাকবে। ইতিমধ্যেই ব্লগ চালু হয়ে গেছে এবং ব্লগে অনেকেই লেখা দিচ্ছেন ই-কমার্স নিয়ে। ব্লগে ১,০০০ টি লেখা যখন থাকবে ই-কমার্স নিয়ে তখন আসলেই এটি হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যভাণ্ডার। সেদিন এখন অনেক দূরে মনে হলেও মনে হচ্ছে ৬ মাসের মধ্যেই তা হয়ে যাবে।
তবে গত একমাসে সবচেয়ে সফল উদ্যোগ হিসেবে নির্দ্বিধায় আমি ই-ক্যাবের ফেইসবুক গ্রুপকে উল্লেখ করবো। এর পুরো কৃতিত্ব গ্রুপের ৫৬৩ জন সদস্যের। এতটাই সক্রিয় এ গ্রুপ যে মাঝে মধ্যে আমার মনে হয় এর সদস্য সংখ্যা ৫০০ নয় বরং ৫০,০০০। আশা করি সবাই সক্রিয় হবেন এবং থাকবেন। একটু আগে সেজান ভাই আমাকে একটা লিংক দিলেনঃ ফেসবুকে অনলাইন শপ খুলে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ২
শিরোনাম বলে দিচ্ছে খবরের ভেতরে কি থাকতে পারে এবং ভেতরে আছেঃ
“শনিবার রাত ৮টার দিকে আনিসুল ও আরমান দিদার মার্কেট এলাকায় গেলে তাদের বাকলিয়া থানার নীলমহল বালুর মাঠ এলাকায় যেতে বলা হয়। দু’জন সেখানে গেলে রোকনুদ্দিন ও শুক্কুর মিলে তাদের ছোরার ভয় দেখিয়ে টাকাপয়সা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। “
এই একটা নেতিবাচক ঘটনা মিডিয়াতে প্রচারের ফলে অনেকেই অনলাইনে কেনাকাটা ও লেনদেনে ভয় পাবেন। না আমি মিডিয়াকে একটুও দোষ দেবনা। কারণ যা ঘটেছে তাই তারা প্রচার করেছে। কিন্তু আমরা যারা ই-কমার্স সেক্টরে আছি তাদের এক হতে হবে এবং এক থাকতে হবে। তাহলেই কেবল এই ধরনের ঘটনা পুরো বন্ধ না করা হলেও ৯৯% প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
গত এক মাসের পথ চলায় অনেকের নিঃস্বার্থ সহযোগিতা পেয়েছি। তাদের সংখ্যা মনে হয় ১০০ এর কম হবে না। সামনের দিন গুলোতে যত জনকে পারি ধন্যবাদ জানাতে চেষ্টা করবো। যারা আমাদের পথ রোধ করার চেষ্টা করেছেন তাদেরও ধন্যবাদ জানাতে চাই। তাদের জন্য আমাদের দিগুণ কষ্ট করতে হয়েছে এবং এর ফলে সাময়িক কষ্ট হলেও আমরা বেশ শক্ত ভিতের উপর দাড়াতে পেরেছি মাত্র একমাসেই।
আগামী এক মাসে আমাদের মূল লক্ষ্য হল ই-কমার্স সেবা কেন্দ্র চালু করা এবং একে জনপ্রিয় করা। পরীক্ষামূলক ভাবে এটি এখন চলছে। আমরা চাই দেশের যে কোন স্থান থেকে যে কেউ ফোন করে ই-কমার্স এবং ই-ক্যাব বিষয়ে তথ্য ও সেবা পেতে পারেন। মুখে বলা যতটা সহজ এটি বাস্তবায়ন করা ততটাই কঠিন। কিন্তু আমরা তা করতে চাই।
দ্বিতীয় যে বিষয়টির দিকে নজর দিচ্ছি তা হল ওয়ার্কশপ। ইতিমধ্যেই ৪ টি ওয়ার্কশপের প্রস্তাব ও পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। এসব ওয়ার্কশপে বিনা পয়সায় বা নাম মাত্র মূল্যে অংশ নেয়া যাবে তবে তা সীমাবদ্ধ থাকবে শুধু ই-ক্যাবের সদস্যদের জন্য। যারা আমাদের মেম্বার হয়েছেন তাদের অবশ্যই ভাল কিছু পাওয়া উচিত। আর যারা ই-ক্যাবের সদস্য নন কিন্তু ই-কমার্স এর ব্যপারে আগ্রহী এবং নতুন উদ্যোক্তা হতে চান তাদের জন্যও চিন্তা অবশ্যই করছি এবং তাদের জন্য একদিনের একটা ওয়ার্কশপ এর পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু এজন্য কয়েকজন একটিভ ভলান্টিয়ার দরকার।
আর আগামী এক মাসে আমাদের ব্লগকে যতটা সম্ভব জনপ্রিয় করতে চাই। ১০০ পোস্ট ব্লগে প্রকাশিত হোক। আশা করি তা হয়ে যাবে। তবে কাজের পোস্ট আসুক এবং ইংরেজিতে যেসব ভাল পোস্ট আসবে সেগুলো বাংলা অনুবাদের চেষ্টা করতে হবে। এটি অনেক কষ্ট সাধ্য কাজ তবে চেষ্টা করছি ১০ জনের একটা ভলান্টিয়ার গ্রুপ বানাতে যারা লেখালেখির জন্য সময় দেবে।
লেখাটি প্রথম ই-ক্যাব ব্লগে প্রকাশিত হয়ঃ Click This Link
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×